alt

উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : আমার আসল আব্বা গো, তুমি কোই

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কিরে ভাই আসল বাপের সন্ধান করতাছেন। ক্যা, আপনের বাপ কি হারায়া গ্যেছেনি? আরে বুড়বক আজকাল ডিজিটাল যুগ, বাপ হয় দুই রকম। মানে কী? আপনি কি আম্মিজানের ওপর দোষারোপ করছেন। আরে গর্দভ প্রতিটি জননী সন্তানের কাছে সতী সাবিত্রী দেবী। তবে আসল বাপের সন্ধান! তুই কি জানো না, আজকাল সব মানুষের দুই-দুইটি বাপ।

একটা তার জন্মদাতা মানে বায়োলজিক্যাল বাপ, আর একটা তার আদর্শের বাপ। যেমন মনে কর, কারো আদর্শের বাপ, মহাত্মা গান্ধী, করো মাওসেতুং, কারো ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন, কারো আব্রাহাম লিংকন, প্যাট্রিস লুমুম্বা, মার্টিন লুথার কিং এই রকম আরকি। মানে এখন প্রতিটি মানুষের বাপ দুইটা। একটি বায়োলজিক্যাল বাপ আর আপরটি মতাদর্শের বাপ। পল্টনের ছবি বাঁধাইয়ের দোকানে গিয়ে দ্যাখ এখন সব তাদের আসল বাপের ছবি বাঁধাই করছে। তো আপনে কোন বাপরে খুঁজতাছেন, মতাদর্শের বাপ নাকি বায়োলজিক্যাল বাপ ... দ্যেখ যদিও তুই ঠাট্টা করে বায়োলজিক্যাল বাপের কথা বললি, কিন্তু আসলেই আমি আমার বায়োলজিক্যাল বাপের বা বায়োলজিক্যাল ফাদারের জন্য কাঁদছিরে। তুই তো জানিস ১৯৭১ সালে আমার পিতা সাচ্চা মুসলমান পবিত্র পাকিস্তান থেকে এই বাঙ্গাল মুলুকে এসে কত লোকের মা-বাহেনের ইজ্জত লুটল, সেই সাচ্চা মুসলমান লহু প্রবাহিত হচ্ছে আমাদের ধমণীতে। আমরা সেই বাঙালি মা-বাহেনের ইজ্জত লোটার ফসল, ওয়ার বেবি, যুদ্ধ শিশু।

সবাই বলে নাইন মান্থস টু ফ্রিডম, কিন্তু আমি বলি ইট ইজ নাইন মান্থস ফর আস টু ভিজিট দি হোলি ওয়ার্ল্ড। কিন্তু ভাই এই যে এক লক্ষের মতো পাকিস্তানি সাচ্চা মুসলিম সোলজার এসেছিলেন বাংলার বুক থেকে মালাউনের বাচ্চাদের, কাফেরদের খতম করতে, এখন কোনজন যে আপনার বায়োলজিক্যাল ফাদার সেটা আপনে চিনবেন কী করে? এটা তুই ঠিকই বলেছিস প্রকৃতপক্ষে কার ঔরসে আমার জন্ম সেটা ঠিক ঠাহর করতে পারব না, কিন্তু যখন টেলিভিশনে দেখি যে রেসকোর্সের ময়দানে, প্রায় লাখখানেক পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসর্মপণ করছেন কতগুলা মালাউনের বাচ্চার কাছে, তখন যেমন আনন্দ লাগে ওই যে ওই এক লক্ষের কোনো একজন আমার বাপ, গা-টা শিউরে ওঠে, আবার তেমনি খারাপও লাগে, কারণ পৃথিবীর আনেক দেশে লাখখানেক সৈন্যই নাই অথচ মহান রাব্বুল আল আমিন, আল্লাহতায়ালার লীলা কে বুঝতে পারে যে কাফেরদের আব্বারা খতম করতে এসেছিলেন সেই কাফেরের কাছেই আব্বাজানরা নতজানু হয়ে বসলেন। মহান রাব্বুল আল আমিন খোদাতায়ালা হয়তো ইহার মধ্যেই আমাদের মঙ্গল নিহিত রাখিয়াছেন।

কী কন লাখখানেক সোলজার এসব ফকিরনির পোলার মতো মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে হায়রা গেল গা। ক্যেনো হারল জানিস? নিশ্চয়। মুক্তিযোদ্ধাগো ঠেল্যায় আর ভারতীয় সোলজারগো যৌথ বাড়ির চোটে হালাগো পরাজয় অবধারিত। তোর কথাটা আংশিক সত্য। তয়, কইন চান দেখি, আসল সত্যটা কী? আসল সত্যটা হলো আমার আব্বুজানদের তো বলা হৈলো, ইসলাম খাতরেমে, চলো চলো, চালো ইস্ট- পাকিস্তান, ইসলামি ঝা-া ফিরসে উঁহা গাড়না হ্যেয়। এটাতো ভালো কথা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ শান্তির ধর্ম ইসলামকে রক্ষা করা প্রতিটি নেক মোমিনুল মুছলিমের কর্তব্য। কিন্তু প্রবলেম হলো, আমার প্রকৃত আব্বুজানরা ইস্ট-পাকিস্তানে এসে দ্যেখে ওম্মা, সবাই বাঙালি মুসলমানরা কলেমা তৈয়ব পানির মতো মুখস্ত বলে। এক হিন্দু ডাক্তার, রাম গোপাল, নাকি ভাঁড় গোপাল, মালাউনটা তো কলেমা তৈয়ব বলে পাকিস্তানি সৈন্যদের হাত থেকে জান বাঁচাইল।

তাছাড়া বাঙালিরা, সুরায়ে নাস, আয়তুল কুরসি, সুরা আখলাক, সুরায়ে এখলাস, সুরা বাকারা এই সব নির্ভুল বলে। আরা যারা দু-একজন পারে না আব্বুজানরা, তাদের লুঙ্গী আলগা করে ভিতরে উঁকি দিয়ে দ্যেখে যে ছতর মুছলমানি করা। ফলে সাধারণ সৈন্যদের মাঝে দোনোমনো শুরু হলো তারা মুসলমান হয়ে মুসলমানের বুকের ওপর গুলি চালাতে নারাজ। এ তো ভাই ইতিহাসের ঘটনা কিন্তু আপনি যে বললেন আসল বাপ খুঁজছেন? ভাই তুই বুঝিস না কেন? এইযে দ্যেখ, বাংলাদেশের প্রায় সব মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতির জন্য স্মৃতিসৌধ বা কবরস্থানের জায়গা নির্দিষ্ট করেছে, কিন্তু আমার আব্বুজানরা যারা বাংলাদেশে শহীদ হোলেন তাদের কুনো কোবরস্থান নাই। চোট্টগ্রামে, কুমিল্লায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শহীদ সৈন্যদের কোবরস্থান হইল অথচ বাংলাদেশে, হামার শহীদ পিতাদের একটি ভি, কোবোরস্থানের খবোর নাই! কিন্তু ভাই আপনারা যে পাকিস্তানি মহান নেতার জন্মদিন পালন করলেন, এটা কি ঠিক হলো! যারা আপনার মাকে অত্যাচার করল তাদের নেতার জন্মদিন পালন করলেন? এতে তো হামি কুনো দোষ দেখি না। মহান রাব্বুল আল আমিনের ইচ্ছায় সাচ্চতা মুছলমান পাকিস্তানি সৈন্যের ইসলামের তরতাজা খুন এখোনো আমার শিরায় শিরায় ধাবিত। তাহলে আমি আমার পিতার আদর্শেও নেতার জন্মদিন পালন করলাম এতে তো কোনো দোষ দেখি না। তুই তো জানো ডিজিটাল বর্তমানে সোকলের দুইটা বাপ একটা বায়োলজিক্যাল আর একটা আদর্শগত পিতা।

আপনার আদর্শ তো আপনার বায়োলজিক্যাল বাপের সঙ্গে না-ও মিলতে পারে? সেটা ঠিক আছে, কিন্তু আমার পিতার আদর্শের নেতা যিনি মহান পাকিস্তানের জন্ম দিলেন আমরা তার জন্মদিন পালন করলে দোষ কী? আজকে চিন্তা করে দ্যাখো, পাকিস্তান না হইলে বাংলাদেশও হইতো না, হামরা মুছলমানরা সব হিন্দুস্তানে হিন্দুর গোলাম থাকতাম। তাই আমি বলি কী, দুনিয়ার সব মুছলমান ভাই ভাই। তাই তুমরা সবকিছু বিভেদ ভুলে আবার এক হও আবার তুমরা তুমাদের নেতার পাশাপাশি হামার পিতাজীর নেতার জন্মদিনও পালন কর। তবেই দেশে শান্তি আসবে, তবেই প্রমাণ হইবে যে ইসলাম আসলেই মহান শান্তির ধর্ম।

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

ভূমি অধিগ্রহণে কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হলে কী করবেন?

ছবি

নিবেদিত প্রাণ এক কৃষিবিজ্ঞানী

জনমনে স্বস্তি ফিরুক

দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার সুযোগ

মাদকের বিরুদ্ধে লড়তে হবে

মানুষের পর কারা হবে বিশ্বজয়ী

স্বাস্থ্য খাতে ফার্মাসিস্টদের অবদান

টেকসই রাষ্ট্রীয় সংস্কারে শিক্ষা ব্যবস্থার অব্যাহত বিনির্মাণের বিকল্প নাই

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সামাজিক অর্থায়নের ভূমিকা

বিশ্ব নরসুন্দর দিবস

মধু পূর্ণিমা ও প্রাসঙ্গিক কথা

‘মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়ন জলে ভাসি’

ছয়টি কমিশন গঠিত হলো কিন্তু শিক্ষা কোথায়?

বৃষ্টি হলেই নগরে জলাবদ্ধতা

‘মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়ন জলে ভাসি’

শিক্ষাব্যবস্থার বিনির্মাণে শিক্ষা প্রশাসনের পুনর্গঠন ও প্রাসঙ্গিক আলোচনা

বন্যা পরবর্তী রোগবালাই

রম্যগদ্য : থামব কবে কাইজ্জা-ফ্যাসাদ

প্রসঙ্গ : জাতীয় সংগীত

পানির ব্যবহার, পানির রাজনীতি

রবীন্দ্র ভাবনায় কৃষি এবং আজকের প্রেক্ষাপট

শিক্ষা ব্যবস্থার বিনির্মাণে শিক্ষা প্রশাসনের পুনর্গঠন ও প্রাসঙ্গিক আলোচনা

‘আবার তোরা মানুষ হ’

ভোজ্যতেল সংকট মেটাতে পাম চাষের গুরুত্ব

গোপনে ধারণকৃত ভিডিও ও ছবি দিয়ে প্রতারণা

হুন্ডি কেন বন্ধ করা যাচ্ছে না

আকস্মিক বন্যা প্রতিরোধ ও প্রস্তুতির কৌশল

পতিতাবৃত্তি কি অপরাধ?

বন্যা-পরবর্তী কৃষকের সুরক্ষা করণীয়

নদী সংস্কার : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ

নিজের চরকায় তেল দেবার নাম দেশপ্রেম

রম্যগদ্য : ডাক্তারি যখন আইসিইউতে

ডায়াবেটিস ও মুখের স্বাস্থ্য

বাঙালির ইলিশচর্চা

এসডিজি অর্জনে চ্যালেঞ্জ হতে পারে কুষ্ঠ রোগ

প্রসঙ্গ : পরিসংখ্যানের তথ্য বিকৃতি

tab

উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : আমার আসল আব্বা গো, তুমি কোই

জাঁ-নেসার ওসমান

শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কিরে ভাই আসল বাপের সন্ধান করতাছেন। ক্যা, আপনের বাপ কি হারায়া গ্যেছেনি? আরে বুড়বক আজকাল ডিজিটাল যুগ, বাপ হয় দুই রকম। মানে কী? আপনি কি আম্মিজানের ওপর দোষারোপ করছেন। আরে গর্দভ প্রতিটি জননী সন্তানের কাছে সতী সাবিত্রী দেবী। তবে আসল বাপের সন্ধান! তুই কি জানো না, আজকাল সব মানুষের দুই-দুইটি বাপ।

একটা তার জন্মদাতা মানে বায়োলজিক্যাল বাপ, আর একটা তার আদর্শের বাপ। যেমন মনে কর, কারো আদর্শের বাপ, মহাত্মা গান্ধী, করো মাওসেতুং, কারো ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন, কারো আব্রাহাম লিংকন, প্যাট্রিস লুমুম্বা, মার্টিন লুথার কিং এই রকম আরকি। মানে এখন প্রতিটি মানুষের বাপ দুইটা। একটি বায়োলজিক্যাল বাপ আর আপরটি মতাদর্শের বাপ। পল্টনের ছবি বাঁধাইয়ের দোকানে গিয়ে দ্যাখ এখন সব তাদের আসল বাপের ছবি বাঁধাই করছে। তো আপনে কোন বাপরে খুঁজতাছেন, মতাদর্শের বাপ নাকি বায়োলজিক্যাল বাপ ... দ্যেখ যদিও তুই ঠাট্টা করে বায়োলজিক্যাল বাপের কথা বললি, কিন্তু আসলেই আমি আমার বায়োলজিক্যাল বাপের বা বায়োলজিক্যাল ফাদারের জন্য কাঁদছিরে। তুই তো জানিস ১৯৭১ সালে আমার পিতা সাচ্চা মুসলমান পবিত্র পাকিস্তান থেকে এই বাঙ্গাল মুলুকে এসে কত লোকের মা-বাহেনের ইজ্জত লুটল, সেই সাচ্চা মুসলমান লহু প্রবাহিত হচ্ছে আমাদের ধমণীতে। আমরা সেই বাঙালি মা-বাহেনের ইজ্জত লোটার ফসল, ওয়ার বেবি, যুদ্ধ শিশু।

সবাই বলে নাইন মান্থস টু ফ্রিডম, কিন্তু আমি বলি ইট ইজ নাইন মান্থস ফর আস টু ভিজিট দি হোলি ওয়ার্ল্ড। কিন্তু ভাই এই যে এক লক্ষের মতো পাকিস্তানি সাচ্চা মুসলিম সোলজার এসেছিলেন বাংলার বুক থেকে মালাউনের বাচ্চাদের, কাফেরদের খতম করতে, এখন কোনজন যে আপনার বায়োলজিক্যাল ফাদার সেটা আপনে চিনবেন কী করে? এটা তুই ঠিকই বলেছিস প্রকৃতপক্ষে কার ঔরসে আমার জন্ম সেটা ঠিক ঠাহর করতে পারব না, কিন্তু যখন টেলিভিশনে দেখি যে রেসকোর্সের ময়দানে, প্রায় লাখখানেক পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসর্মপণ করছেন কতগুলা মালাউনের বাচ্চার কাছে, তখন যেমন আনন্দ লাগে ওই যে ওই এক লক্ষের কোনো একজন আমার বাপ, গা-টা শিউরে ওঠে, আবার তেমনি খারাপও লাগে, কারণ পৃথিবীর আনেক দেশে লাখখানেক সৈন্যই নাই অথচ মহান রাব্বুল আল আমিন, আল্লাহতায়ালার লীলা কে বুঝতে পারে যে কাফেরদের আব্বারা খতম করতে এসেছিলেন সেই কাফেরের কাছেই আব্বাজানরা নতজানু হয়ে বসলেন। মহান রাব্বুল আল আমিন খোদাতায়ালা হয়তো ইহার মধ্যেই আমাদের মঙ্গল নিহিত রাখিয়াছেন।

কী কন লাখখানেক সোলজার এসব ফকিরনির পোলার মতো মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে হায়রা গেল গা। ক্যেনো হারল জানিস? নিশ্চয়। মুক্তিযোদ্ধাগো ঠেল্যায় আর ভারতীয় সোলজারগো যৌথ বাড়ির চোটে হালাগো পরাজয় অবধারিত। তোর কথাটা আংশিক সত্য। তয়, কইন চান দেখি, আসল সত্যটা কী? আসল সত্যটা হলো আমার আব্বুজানদের তো বলা হৈলো, ইসলাম খাতরেমে, চলো চলো, চালো ইস্ট- পাকিস্তান, ইসলামি ঝা-া ফিরসে উঁহা গাড়না হ্যেয়। এটাতো ভালো কথা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ শান্তির ধর্ম ইসলামকে রক্ষা করা প্রতিটি নেক মোমিনুল মুছলিমের কর্তব্য। কিন্তু প্রবলেম হলো, আমার প্রকৃত আব্বুজানরা ইস্ট-পাকিস্তানে এসে দ্যেখে ওম্মা, সবাই বাঙালি মুসলমানরা কলেমা তৈয়ব পানির মতো মুখস্ত বলে। এক হিন্দু ডাক্তার, রাম গোপাল, নাকি ভাঁড় গোপাল, মালাউনটা তো কলেমা তৈয়ব বলে পাকিস্তানি সৈন্যদের হাত থেকে জান বাঁচাইল।

তাছাড়া বাঙালিরা, সুরায়ে নাস, আয়তুল কুরসি, সুরা আখলাক, সুরায়ে এখলাস, সুরা বাকারা এই সব নির্ভুল বলে। আরা যারা দু-একজন পারে না আব্বুজানরা, তাদের লুঙ্গী আলগা করে ভিতরে উঁকি দিয়ে দ্যেখে যে ছতর মুছলমানি করা। ফলে সাধারণ সৈন্যদের মাঝে দোনোমনো শুরু হলো তারা মুসলমান হয়ে মুসলমানের বুকের ওপর গুলি চালাতে নারাজ। এ তো ভাই ইতিহাসের ঘটনা কিন্তু আপনি যে বললেন আসল বাপ খুঁজছেন? ভাই তুই বুঝিস না কেন? এইযে দ্যেখ, বাংলাদেশের প্রায় সব মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতির জন্য স্মৃতিসৌধ বা কবরস্থানের জায়গা নির্দিষ্ট করেছে, কিন্তু আমার আব্বুজানরা যারা বাংলাদেশে শহীদ হোলেন তাদের কুনো কোবরস্থান নাই। চোট্টগ্রামে, কুমিল্লায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শহীদ সৈন্যদের কোবরস্থান হইল অথচ বাংলাদেশে, হামার শহীদ পিতাদের একটি ভি, কোবোরস্থানের খবোর নাই! কিন্তু ভাই আপনারা যে পাকিস্তানি মহান নেতার জন্মদিন পালন করলেন, এটা কি ঠিক হলো! যারা আপনার মাকে অত্যাচার করল তাদের নেতার জন্মদিন পালন করলেন? এতে তো হামি কুনো দোষ দেখি না। মহান রাব্বুল আল আমিনের ইচ্ছায় সাচ্চতা মুছলমান পাকিস্তানি সৈন্যের ইসলামের তরতাজা খুন এখোনো আমার শিরায় শিরায় ধাবিত। তাহলে আমি আমার পিতার আদর্শেও নেতার জন্মদিন পালন করলাম এতে তো কোনো দোষ দেখি না। তুই তো জানো ডিজিটাল বর্তমানে সোকলের দুইটা বাপ একটা বায়োলজিক্যাল আর একটা আদর্শগত পিতা।

আপনার আদর্শ তো আপনার বায়োলজিক্যাল বাপের সঙ্গে না-ও মিলতে পারে? সেটা ঠিক আছে, কিন্তু আমার পিতার আদর্শের নেতা যিনি মহান পাকিস্তানের জন্ম দিলেন আমরা তার জন্মদিন পালন করলে দোষ কী? আজকে চিন্তা করে দ্যাখো, পাকিস্তান না হইলে বাংলাদেশও হইতো না, হামরা মুছলমানরা সব হিন্দুস্তানে হিন্দুর গোলাম থাকতাম। তাই আমি বলি কী, দুনিয়ার সব মুছলমান ভাই ভাই। তাই তুমরা সবকিছু বিভেদ ভুলে আবার এক হও আবার তুমরা তুমাদের নেতার পাশাপাশি হামার পিতাজীর নেতার জন্মদিনও পালন কর। তবেই দেশে শান্তি আসবে, তবেই প্রমাণ হইবে যে ইসলাম আসলেই মহান শান্তির ধর্ম।

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

back to top