আবু জুবায়ের
বর্তমান বিশ্বে টেকসই উন্নয়ন একটি অপরিহার্য বিষয়। বিশেষ করে যখন আমরা জলবায়ু পরিবর্তন, সামাজিক অসমতা এবং অর্থনৈতিক সংকটের মতো সংকটগুলোর মুখোমুখি হচ্ছি। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ২০১৫ সালে গৃহীত হওয়ার পর থেকে এটি বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন পরিকল্পনার একটি মূল দিক হয়ে উঠেছে। টেকসই উন্নয়ন হলো এমন একটি উন্নয়ন প্রক্রিয়া, যা বর্তমান প্রজন্মের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে গিয়ে ভবিষ্যত প্রজন্মের সম্ভাবনা ক্ষুণœ করে না। এই প্রক্রিয়া পরিবেশ সুরক্ষা, সামাজিক সমতা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সমানভাবে গুরুত্ব দেয়।
বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন চিত্র
বাংলাদেশের উন্নয়ন গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০০ সালের পর দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬-৭% এর মধ্যে স্থির রয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। (বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন-২০২১) ২০২০ সালের বিশ্ব ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দেশ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। তবে দেশের টেকসই উন্নয়নে কিছু বড় চ্যালেঞ্জও রয়েছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মারাত্মক। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, বিশাল জনসংখ্যা এবং দরিদ্রতা এই সমস্যাকে আরও ঘনীভূত করেছে। প্রতি বছর গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টিপাত ও বন্যার ফলে দেশের কৃষি, অবকাঠামো এবং মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ২০১৯ সালের জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রতি বছর প্রায় ১০ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই
বাংলাদেশের সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জাতীয় জলবায়ু পরিবর্তন অ্যাকশন প্ল্যান অনুযায়ী, সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যেমন- বাঁধ নির্মাণ, নদী খনন এবং পানির ব্যবস্থাপনা।
বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বাংলাদেশের জলবায়ু অভিযোজন কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান করছে, যা দেশের জলবায়ু স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি। এছাড়া আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রযুক্তির উন্নয়ন বাংলাদেশের জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং টেকসই উন্নয়ন
বর্তমান সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) টেকসই উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং পরিবেশ সুরক্ষায় এআই প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনাকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশের কৃষি খাতে, কৃষকদের জন্য সঠিক তথ্য ও উপকরণ প্রদান করে ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য এআইয়ের ব্যবহার সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাটির স্বাস্থ্য বিশ্লেষণ করে কৃষকদের জন্য প্রয়োজনীয় সার ও সেচের পরিমাণ নির্ধারণ করা যেতে পারে। এর ফলে কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
স্বাস্থ্য খাতে, রোগ নির্ণয়ের জন্য এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এআইভিত্তিক সফটওয়্যার দ্রুত রোগ নির্ণয় করে এবং চিকিৎসকের জন্য তথ্য সরবরাহ করে। যেমন- ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং অন্যান্য জটিল রোগের ক্ষেত্রে প্রাথমিক সঠিক তথ্য প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে।
শিক্ষাক্ষেত্রে এআইয়ের ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের জন্য কাস্টমাইজড শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব, যা তাদের দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্মে এআইভিত্তিক প্রশিক্ষণ এবং কুইজ সিস্টেম শিক্ষার্থীদের শেখার অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক উন্নয়ন
নারীর ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা টেকসই উন্নয়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেলেও সমাজে এখনও বহু ধরনের বৈষম্য বিদ্যমান। বিশেষ করে নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত। সরকার ও বিভিন্ন এনজিও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যাতে নারীরা শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তাদের অধিকার এবং সুযোগ পায়।
নারীদের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি করা হলে তারা পরিবার ও সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে। নারীরা যদি অর্থনীতির মূল স্তম্ভ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে, তবে দেশ দ্রুত উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে।
প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং সামাজিক সচেতনতা
বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তির উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি। প্রযুক্তির ব্যবহার দেশের প্রতিটি খাতকে উন্নত করতে সক্ষম। তবে প্রযুক্তির সুফল গ্রহণের জন্য জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন। তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার, ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরকারি সেবা প্রদান এবং বিভিন্ন শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে।
অর্থাৎ একটি দেশের উন্নয়নের জন্য শুধু সরকার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নির্ভরশীল নয়, বরং জনগণের অংশগ্রহণ এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার ওপরও নির্ভরশীল। যদি আমরা জাতীয় স্বার্থে সচেতন এবং সংহতভাবে কাজ করি, তবে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ এবং টেকসই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব।
বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে আমাদের আরও অনেক কাজ করতে হবে। পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়ন, সঠিক নেতৃত্ব এবং জনগণের অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার আমাদের এ লক্ষ্য অর্জনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আমাদের হাতেই। আমাদের উচিত, বর্তমান সংকটকে একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে উন্নয়ন ও পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত সব দিক থেকে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে সঠিক পরিকল্পনা এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ এবং সরকারকে একসঙ্গে কাজ করে একটি সুন্দর, উন্নত ও টেকসই ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হতে হবে।
[লেখক : ডক্টরাল গবেষক (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞ), প্যারিস]
আবু জুবায়ের
শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪
বর্তমান বিশ্বে টেকসই উন্নয়ন একটি অপরিহার্য বিষয়। বিশেষ করে যখন আমরা জলবায়ু পরিবর্তন, সামাজিক অসমতা এবং অর্থনৈতিক সংকটের মতো সংকটগুলোর মুখোমুখি হচ্ছি। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ২০১৫ সালে গৃহীত হওয়ার পর থেকে এটি বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন পরিকল্পনার একটি মূল দিক হয়ে উঠেছে। টেকসই উন্নয়ন হলো এমন একটি উন্নয়ন প্রক্রিয়া, যা বর্তমান প্রজন্মের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে গিয়ে ভবিষ্যত প্রজন্মের সম্ভাবনা ক্ষুণœ করে না। এই প্রক্রিয়া পরিবেশ সুরক্ষা, সামাজিক সমতা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সমানভাবে গুরুত্ব দেয়।
বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন চিত্র
বাংলাদেশের উন্নয়ন গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০০ সালের পর দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬-৭% এর মধ্যে স্থির রয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। (বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন-২০২১) ২০২০ সালের বিশ্ব ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দেশ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। তবে দেশের টেকসই উন্নয়নে কিছু বড় চ্যালেঞ্জও রয়েছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মারাত্মক। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, বিশাল জনসংখ্যা এবং দরিদ্রতা এই সমস্যাকে আরও ঘনীভূত করেছে। প্রতি বছর গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টিপাত ও বন্যার ফলে দেশের কৃষি, অবকাঠামো এবং মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ২০১৯ সালের জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রতি বছর প্রায় ১০ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই
বাংলাদেশের সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জাতীয় জলবায়ু পরিবর্তন অ্যাকশন প্ল্যান অনুযায়ী, সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যেমন- বাঁধ নির্মাণ, নদী খনন এবং পানির ব্যবস্থাপনা।
বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বাংলাদেশের জলবায়ু অভিযোজন কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান করছে, যা দেশের জলবায়ু স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি। এছাড়া আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রযুক্তির উন্নয়ন বাংলাদেশের জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং টেকসই উন্নয়ন
বর্তমান সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) টেকসই উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং পরিবেশ সুরক্ষায় এআই প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনাকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশের কৃষি খাতে, কৃষকদের জন্য সঠিক তথ্য ও উপকরণ প্রদান করে ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য এআইয়ের ব্যবহার সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাটির স্বাস্থ্য বিশ্লেষণ করে কৃষকদের জন্য প্রয়োজনীয় সার ও সেচের পরিমাণ নির্ধারণ করা যেতে পারে। এর ফলে কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
স্বাস্থ্য খাতে, রোগ নির্ণয়ের জন্য এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এআইভিত্তিক সফটওয়্যার দ্রুত রোগ নির্ণয় করে এবং চিকিৎসকের জন্য তথ্য সরবরাহ করে। যেমন- ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং অন্যান্য জটিল রোগের ক্ষেত্রে প্রাথমিক সঠিক তথ্য প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে।
শিক্ষাক্ষেত্রে এআইয়ের ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের জন্য কাস্টমাইজড শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব, যা তাদের দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্মে এআইভিত্তিক প্রশিক্ষণ এবং কুইজ সিস্টেম শিক্ষার্থীদের শেখার অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক উন্নয়ন
নারীর ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা টেকসই উন্নয়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেলেও সমাজে এখনও বহু ধরনের বৈষম্য বিদ্যমান। বিশেষ করে নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত। সরকার ও বিভিন্ন এনজিও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যাতে নারীরা শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তাদের অধিকার এবং সুযোগ পায়।
নারীদের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি করা হলে তারা পরিবার ও সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে। নারীরা যদি অর্থনীতির মূল স্তম্ভ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে, তবে দেশ দ্রুত উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে।
প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং সামাজিক সচেতনতা
বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তির উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি। প্রযুক্তির ব্যবহার দেশের প্রতিটি খাতকে উন্নত করতে সক্ষম। তবে প্রযুক্তির সুফল গ্রহণের জন্য জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন। তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার, ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরকারি সেবা প্রদান এবং বিভিন্ন শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে।
অর্থাৎ একটি দেশের উন্নয়নের জন্য শুধু সরকার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নির্ভরশীল নয়, বরং জনগণের অংশগ্রহণ এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার ওপরও নির্ভরশীল। যদি আমরা জাতীয় স্বার্থে সচেতন এবং সংহতভাবে কাজ করি, তবে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ এবং টেকসই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব।
বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে আমাদের আরও অনেক কাজ করতে হবে। পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়ন, সঠিক নেতৃত্ব এবং জনগণের অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার আমাদের এ লক্ষ্য অর্জনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আমাদের হাতেই। আমাদের উচিত, বর্তমান সংকটকে একটি সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে উন্নয়ন ও পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত সব দিক থেকে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে সঠিক পরিকল্পনা এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ এবং সরকারকে একসঙ্গে কাজ করে একটি সুন্দর, উন্নত ও টেকসই ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হতে হবে।
[লেখক : ডক্টরাল গবেষক (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞ), প্যারিস]