alt

উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : দারিদ্র্য নয়, শিল্পকলা জাদুঘরে...

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪

ওয়া কী? আপনে না কইলেন, পৃথিবীর সব দেশের দারিদ্র্য যাবে জাদুঘরে। আর অহন দেহী ছলাকলা না কইরা সোজা-সাপ্টা, নিজের দেশের শিল্পকলা পাঠাইলেন জাদুঘরে। ক্যা? হরসোটা কী?

অই ব্যাটা গাড়ল। তুই শিল্পকলার বোজটা কী? তুই শিল্পকলার কিছু বোজ??

ক্যা, শিল্পকলা বুঝুমনা ক্যা। পাবলিকরে দিয়া বিশ্বসেরা নাটক নভেল, কবিতা, নাচ, গান করাইবো,

শোহরাব-রোস্তম, কারবালার প্রান্তর, লাইলী-মজনু, শিরী-ফরহাদ, রোমিও-জুলিয়েট, এইসব দিয়া মানুষের মনে মনুষত্ব জাগাইবো। জানোয়ারের মতো মানুষের ভেতরে যে পশুত্ব আছে, যেমন, লোভ, কাম, ক্রোধ, পরশ্রী-কাতরতা, এইসব পশুত্ব বধ করবো, এইতো শিল্পকলা, আমি শিল্পকলা বুজিনা কইলেই হইবো!

ও রে ব্বাবারে তুই দেহী অল্প কথায় পুরা শিল্পকলা বুঝায়া দিলি। দে গুরু দে, তোর পায়ের ধুলা দে, মাথায় তুইল্লা রাখি।

ধুলা তো পরে মাথায় রাখবেন, এখন কন দারিদ্র্য থুয়া, শিল্পকলা জাদুঘরে পাঠাইতেছেন ক্যেন?

আরে না, ওই যে নুরুদ্দিন-আল-মাসুদ, সাবেক তথ্য সচিবের ভাইগনা, জামিল আহমেদ, তোগো দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক, মঞ্চে চলা নাটক মাঝপথে বন্ধ কইরালাইছে।

উয়া কী! জামিল স্যার কি শিখে নাই, “দ্য শো, মাস্ট গো অন”। তাছাড়া জামিল আহমেদ স্যার না দিল্লির এন এস ডি, মানে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা থ্যেইক্কা নাটকের উপর ডিপ্লোমা করছে! হ্যায় ক্যেমনে মঞ্চে চলা নাটক বন্ধ করে! অহন আল-কাজী স্যার বাইচ্চা থাকলেতো সুইসাইড করতো।

আল কাজী এই ব্যাডা, আবার ক্যেডা??

আরে মি. আল-কাজী হলেন জামিল আহমেদের শিক্ষক, দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামার মহাপরিচালক, উনি যদি জানতো জামিল তার ছাত্র মঞ্চে চলা নাটক মাঝপথে থামিয়ে দিয়েছে, তায়লে হালা খালি কইতো আমি এতো বছর ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা থ্যেইক্কা কি জন্ম দিলাম! কি জন্ম দিলাম! কইতে কইতে নিজের মাথায় পিস্তল দিয়া গুল্লি কইরা আত্মহত্যা করতো।

ঠিক আছে ভাই সুইসাইড করেন কোনো অসুবিধা নাই, তয় জামিল স্যার, মঞ্চে চলা নাটক বন্ধ করলো ক্যান।

আরে বলিস না, দেশ নাটকের প্রযোজনা “নিত্যপুরাণ” নাটকের ১২৭তম, শো’ শিল্পকলা একাডেমির হলরুমে অভিনীত হচ্ছিলো। হলে দর্শক প্রায় শ-দুইশো হবে। এমন সময়, কবে নাকি ফেসবুকে, দেশ নাটকের জনাব এহসানুল এজাজ বাবু, জিন্না টুপি পরা ড. ইউনূসের আর সমন্বয়কদের ছবি সংবলিত চিত্র পোস্ট করেছে, আর তাই কিছু বাংলার জনসাধারণ শিল্পকলা একাডেমির গেটের সামনে জড়ো হয়ে এর প্রতিবাদ করেছে আর বলেছে, এহসানুল এজাজ বাবুকে ওদের হাতে তুলে না দিলে সারা দেশের সব শিল্পকলা একাডেমিতে আগুন লাগাই দিবে। তাই জামিল স্যার সারা দেশের শিল্পকলা একাডেমি বাঁচাবার জন্য, নাটক মাঝপথে থামিয়ে দিয়েছেন।

ও মা, এইডা কি কস! এক ব্যাডার ফেসবুকের স্ট্যাটাসের সঙ্গে মাসুম আজিজের লেখা, দেশ নাটকের প্রযোজনা “নিত্যপুরাণ”র সম্পর্ক কী?? এহসানুল এজাজ দেশ নাটকের কর্মী।

তো! এহসানুল এজাজ দেশ নাটকের কর্মীর একার জন্য পুরা নাটক বন্ধ! মগের মুল্লুক, নাকি উল্লুকের মুল্লুক, এতোগুলা দর্শকের টিকিটের টাকা কে ফেরত দেবে? নাটকের প্রডাকশানের খরচ, হল ভাড়া, আর প্রদীপ যে মেয়েদের নিয়ে নিত্যপুরাণ দেখতে গেলো, তাগো তোমরা আতঙ্কিত করলা এই সাইকোলজিক্যাল ক্ষতি পূরণ কে দেবে? এ যেন অনেকটা এমন- দেবতাই যদি না থাকে তায়লে দেবালয় দিয়া কি হইবো! অর্থাৎ নাটক-নভেলই যদি জাদুঘরে যায়, তায়লে শিল্পকলা একাডেমি দিয়া কি হইবো!

আরে আমার কথা হইলো জামিল স্যার যখন দেখলো গ-গোল হ্যেয় ৯৯৯-এ, ফোন দিলো না ক্যান?

আরে রাখ ব্যাটা তোর ৯৯৯, শিল্পকলা একাডেমির ভেতরে রয়েছে, সেনাবাহিনীর ক্যাম্প।

তায়লে রহস্যটা কী? জামিল স্যার সেনাবাহিনীরে কল দিলো না ক্যান?

ও মনু তুমি বোজনা,“নিত্যপুরাণ” মহাভারতের দ্রৌপদী, যার একারই পাঁচ স্বামী, আবার একলব্য, মনে মনে দ্রোণাচার্য্যেের গুরু মানে। এইসব লয়া এক ভজঘট গল্প যা পাবলিকরে বিপথগামী করতে পারে।

ওম্মা, ১২৬তম, শো’ পর্যন্ত পাবলিক বিপথগামী হইলো না, আর ১২৭তম শো’তে পাবলিক বিপথে হাঁটা ধরবো! না মানতে পারলাম না।

তুই না মানলে কি হইবো জামিল স্যারতো, মাইন্না নিছে। মঞ্চে চলা নাটক মাঝপথে বন্ধ।

কোনো ব্যাটার লজ্জা থাকলে এই কাম করতো না।

আরে তুই তো জানো, নাটক-নভেলের মানুষগো লজ্জা-শরম একটু কম। এগো ঘরে বৌ থাকলেও চামেচুমে একটু এদিক ওদিক ঘুইরা বেড়ায় (নাটকের দল নিয়া)। ঘুরাফিরা ওগো ব্যক্তিগত ব্যাপার, কিন্তু ভাইডি, এই যে, বিগত স্বৈরাচারের আমলে কার্টুন আঁইকা কান চাপাতিতে থাপ্পড় খায়া কার্টুনিস্ট মরলো, এখন তো দেখি একই কারবার চলতাছে! আমিতো ভাবছিলাম জামিল আহমেদ স্যার দিল্লির এনএসডি, থ্যেইক্কা নাটকের উপর ডিপ্লোমা করছে! উনি এতোদিন কত কষ্ট কইরা নাটকের প্রডাকশান নামাইছেন। অহন রাব্বুল আল আমিন তারে দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক বানাইছেন, উনি এখন বিজয় টেন্ডুলকারের “চরণ দাস চোর”র মতো বৃহৎ প্রডকশান কইরা, জার্মানি যায়া শো’ করব, আমাগো বাঙালি ফুটবল মায়াগো মতুন, বিদেশ থেইক্কা প্রাইজ আনবো। তা না, হ্যেয় নিজেই দিলো মঞ্চে চলা নাটক মাঝপথে থামায়া! বড় দুঃখ হয়।

কিন্তু দ্যেখ দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ টেলিভিশনের ডিজি বিটিভির সব দুই নাম্বার চেক চুরি বন্ধ করছে। কেনা কাটায় স্বচ্ছ। কুনো দুই নম্বরি নাই।

ও আমাগো মাহবুবুল আলম গোরা যিনি “ক্রীতদাসের হাসি” নিয়া কবিতা লিখছিলেন?

হ হ, যিনি একবার জনাব শফিক রেহমানরে তাঁর অভব্যতার জন্য, সোনারগাঁও হোটেলের এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়ায়া ধিক্কার জানাইছিলেন? আরে বাঘের বাচ্চা! দেশে এখনো ভালো মানুষ আছে।

আশাকরি একদিন এইসব ভালো মানুষরা দেশ সেবার সুযোগ পাবে, তখন “দারিদ্র্য যাবে জাদুঘরে,

শিল্পকলা আসবে মঞ্চে”।

[লেখক : চলচ্চিত্রকার ]

জ্ঞানই শক্তি

বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস : জোর দিতে হবে প্রতিরোধে

ঋণ ব্যবস্থা : তেলা মাথায় ঢালো তেল, ন্যাড়া মাথায় ভাঙো বেল

বিচারকের ওপর হামলা কেন

বৈশ্বিক নিষ্ক্রিয়তার কবলে রোহিঙ্গা ইস্যু

আন্তর্জাতিক দাসপ্রথা বিলোপ দিবস

বৈষম্য ঘোচাতে চাই একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়

রাজনীতির মূল লক্ষ্য জনকল্যাণ

সমস্যার সূতিকাগার

ছবি

বাংলাদেশে আলু চাষে আধুনিক উৎপাদন পদ্ধতি

দলীয় লেজুড়বৃত্তির শিক্ষক রাজনীতি বন্ধের পথ কী?

ব্যাংক সংস্কার : কাটবে কি অন্ধকার?

ছবি

নিত্যপণ্যের দামে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস

রম্যগদ্য: ম্যাড় ম্যাড়ে সোনা-কাহিনী

রাষ্ট্র সংস্কারে পাঠাগার

কেন এত ধ্বংস, কেন এত মৃত্যু

জলবায়ু সম্মেলন থেকে আমরা কী পেলাম

উচ্চশিক্ষায় মান বজায় রাখার চ্যালেঞ্জ

ছবি

যানজট আর্থ-সামাজিক বিড়ম্বনাকে প্রকট করে তুলছে

যাচ্ছে দিন, বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা

ছবি

স্বপ্ন দেখতে তো ভুল নেই

ছবি

আহমদুল কবির : সাংবাদিকতা এবং রাজনীতিতে

ইতিহাসের কাছে মানুষ কী চায়?

আর্থিক সংকট কতটা গভীর

আদিবাসী নেতাদের দেখে নেয়ার হুমকি

সম্পত্তিতে এতিম নাতি-নাতনির অংশ ও বাস্তবতা

দলীয় লেজুড়বৃত্তির শিক্ষক রাজনীতির নেতিবাচক প্রভাব

বোস-আইনস্টাইন সংখ্যায়ন তত্ত্বের শতবর্ষ

প্রাকৃতিক জলাশয়গুলো বাঁচানো জরুরি

রঙ্গব্যঙ্গ : শাব্বাশ বিটিভি, জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ

নবজাগরণ : সত্যিই কি জাতি জেগেছে?

গ্রামভিত্তিক কর্মসংস্থানে জোর দিতে হবে

ছবি

কে যাস রে ভাটির গাঙ বাইয়া

লটারিতে ভর্তি : কবে দূর হবে সরকারি স্কুলগুলোর ‘করোনা মহামারী’?

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য নীতি খুব একটা পরিবর্তন হবে কি

অবমূল্যায়ন, মুদ্রাস্ফীতি, মূল্যস্ফীতি এবং প্রাসঙ্গিক কিছু চিন্তা

tab

উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : দারিদ্র্য নয়, শিল্পকলা জাদুঘরে...

জাঁ-নেসার ওসমান

শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪

ওয়া কী? আপনে না কইলেন, পৃথিবীর সব দেশের দারিদ্র্য যাবে জাদুঘরে। আর অহন দেহী ছলাকলা না কইরা সোজা-সাপ্টা, নিজের দেশের শিল্পকলা পাঠাইলেন জাদুঘরে। ক্যা? হরসোটা কী?

অই ব্যাটা গাড়ল। তুই শিল্পকলার বোজটা কী? তুই শিল্পকলার কিছু বোজ??

ক্যা, শিল্পকলা বুঝুমনা ক্যা। পাবলিকরে দিয়া বিশ্বসেরা নাটক নভেল, কবিতা, নাচ, গান করাইবো,

শোহরাব-রোস্তম, কারবালার প্রান্তর, লাইলী-মজনু, শিরী-ফরহাদ, রোমিও-জুলিয়েট, এইসব দিয়া মানুষের মনে মনুষত্ব জাগাইবো। জানোয়ারের মতো মানুষের ভেতরে যে পশুত্ব আছে, যেমন, লোভ, কাম, ক্রোধ, পরশ্রী-কাতরতা, এইসব পশুত্ব বধ করবো, এইতো শিল্পকলা, আমি শিল্পকলা বুজিনা কইলেই হইবো!

ও রে ব্বাবারে তুই দেহী অল্প কথায় পুরা শিল্পকলা বুঝায়া দিলি। দে গুরু দে, তোর পায়ের ধুলা দে, মাথায় তুইল্লা রাখি।

ধুলা তো পরে মাথায় রাখবেন, এখন কন দারিদ্র্য থুয়া, শিল্পকলা জাদুঘরে পাঠাইতেছেন ক্যেন?

আরে না, ওই যে নুরুদ্দিন-আল-মাসুদ, সাবেক তথ্য সচিবের ভাইগনা, জামিল আহমেদ, তোগো দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক, মঞ্চে চলা নাটক মাঝপথে বন্ধ কইরালাইছে।

উয়া কী! জামিল স্যার কি শিখে নাই, “দ্য শো, মাস্ট গো অন”। তাছাড়া জামিল আহমেদ স্যার না দিল্লির এন এস ডি, মানে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা থ্যেইক্কা নাটকের উপর ডিপ্লোমা করছে! হ্যায় ক্যেমনে মঞ্চে চলা নাটক বন্ধ করে! অহন আল-কাজী স্যার বাইচ্চা থাকলেতো সুইসাইড করতো।

আল কাজী এই ব্যাডা, আবার ক্যেডা??

আরে মি. আল-কাজী হলেন জামিল আহমেদের শিক্ষক, দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামার মহাপরিচালক, উনি যদি জানতো জামিল তার ছাত্র মঞ্চে চলা নাটক মাঝপথে থামিয়ে দিয়েছে, তায়লে হালা খালি কইতো আমি এতো বছর ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা থ্যেইক্কা কি জন্ম দিলাম! কি জন্ম দিলাম! কইতে কইতে নিজের মাথায় পিস্তল দিয়া গুল্লি কইরা আত্মহত্যা করতো।

ঠিক আছে ভাই সুইসাইড করেন কোনো অসুবিধা নাই, তয় জামিল স্যার, মঞ্চে চলা নাটক বন্ধ করলো ক্যান।

আরে বলিস না, দেশ নাটকের প্রযোজনা “নিত্যপুরাণ” নাটকের ১২৭তম, শো’ শিল্পকলা একাডেমির হলরুমে অভিনীত হচ্ছিলো। হলে দর্শক প্রায় শ-দুইশো হবে। এমন সময়, কবে নাকি ফেসবুকে, দেশ নাটকের জনাব এহসানুল এজাজ বাবু, জিন্না টুপি পরা ড. ইউনূসের আর সমন্বয়কদের ছবি সংবলিত চিত্র পোস্ট করেছে, আর তাই কিছু বাংলার জনসাধারণ শিল্পকলা একাডেমির গেটের সামনে জড়ো হয়ে এর প্রতিবাদ করেছে আর বলেছে, এহসানুল এজাজ বাবুকে ওদের হাতে তুলে না দিলে সারা দেশের সব শিল্পকলা একাডেমিতে আগুন লাগাই দিবে। তাই জামিল স্যার সারা দেশের শিল্পকলা একাডেমি বাঁচাবার জন্য, নাটক মাঝপথে থামিয়ে দিয়েছেন।

ও মা, এইডা কি কস! এক ব্যাডার ফেসবুকের স্ট্যাটাসের সঙ্গে মাসুম আজিজের লেখা, দেশ নাটকের প্রযোজনা “নিত্যপুরাণ”র সম্পর্ক কী?? এহসানুল এজাজ দেশ নাটকের কর্মী।

তো! এহসানুল এজাজ দেশ নাটকের কর্মীর একার জন্য পুরা নাটক বন্ধ! মগের মুল্লুক, নাকি উল্লুকের মুল্লুক, এতোগুলা দর্শকের টিকিটের টাকা কে ফেরত দেবে? নাটকের প্রডাকশানের খরচ, হল ভাড়া, আর প্রদীপ যে মেয়েদের নিয়ে নিত্যপুরাণ দেখতে গেলো, তাগো তোমরা আতঙ্কিত করলা এই সাইকোলজিক্যাল ক্ষতি পূরণ কে দেবে? এ যেন অনেকটা এমন- দেবতাই যদি না থাকে তায়লে দেবালয় দিয়া কি হইবো! অর্থাৎ নাটক-নভেলই যদি জাদুঘরে যায়, তায়লে শিল্পকলা একাডেমি দিয়া কি হইবো!

আরে আমার কথা হইলো জামিল স্যার যখন দেখলো গ-গোল হ্যেয় ৯৯৯-এ, ফোন দিলো না ক্যান?

আরে রাখ ব্যাটা তোর ৯৯৯, শিল্পকলা একাডেমির ভেতরে রয়েছে, সেনাবাহিনীর ক্যাম্প।

তায়লে রহস্যটা কী? জামিল স্যার সেনাবাহিনীরে কল দিলো না ক্যান?

ও মনু তুমি বোজনা,“নিত্যপুরাণ” মহাভারতের দ্রৌপদী, যার একারই পাঁচ স্বামী, আবার একলব্য, মনে মনে দ্রোণাচার্য্যেের গুরু মানে। এইসব লয়া এক ভজঘট গল্প যা পাবলিকরে বিপথগামী করতে পারে।

ওম্মা, ১২৬তম, শো’ পর্যন্ত পাবলিক বিপথগামী হইলো না, আর ১২৭তম শো’তে পাবলিক বিপথে হাঁটা ধরবো! না মানতে পারলাম না।

তুই না মানলে কি হইবো জামিল স্যারতো, মাইন্না নিছে। মঞ্চে চলা নাটক মাঝপথে বন্ধ।

কোনো ব্যাটার লজ্জা থাকলে এই কাম করতো না।

আরে তুই তো জানো, নাটক-নভেলের মানুষগো লজ্জা-শরম একটু কম। এগো ঘরে বৌ থাকলেও চামেচুমে একটু এদিক ওদিক ঘুইরা বেড়ায় (নাটকের দল নিয়া)। ঘুরাফিরা ওগো ব্যক্তিগত ব্যাপার, কিন্তু ভাইডি, এই যে, বিগত স্বৈরাচারের আমলে কার্টুন আঁইকা কান চাপাতিতে থাপ্পড় খায়া কার্টুনিস্ট মরলো, এখন তো দেখি একই কারবার চলতাছে! আমিতো ভাবছিলাম জামিল আহমেদ স্যার দিল্লির এনএসডি, থ্যেইক্কা নাটকের উপর ডিপ্লোমা করছে! উনি এতোদিন কত কষ্ট কইরা নাটকের প্রডাকশান নামাইছেন। অহন রাব্বুল আল আমিন তারে দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক বানাইছেন, উনি এখন বিজয় টেন্ডুলকারের “চরণ দাস চোর”র মতো বৃহৎ প্রডকশান কইরা, জার্মানি যায়া শো’ করব, আমাগো বাঙালি ফুটবল মায়াগো মতুন, বিদেশ থেইক্কা প্রাইজ আনবো। তা না, হ্যেয় নিজেই দিলো মঞ্চে চলা নাটক মাঝপথে থামায়া! বড় দুঃখ হয়।

কিন্তু দ্যেখ দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ টেলিভিশনের ডিজি বিটিভির সব দুই নাম্বার চেক চুরি বন্ধ করছে। কেনা কাটায় স্বচ্ছ। কুনো দুই নম্বরি নাই।

ও আমাগো মাহবুবুল আলম গোরা যিনি “ক্রীতদাসের হাসি” নিয়া কবিতা লিখছিলেন?

হ হ, যিনি একবার জনাব শফিক রেহমানরে তাঁর অভব্যতার জন্য, সোনারগাঁও হোটেলের এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়ায়া ধিক্কার জানাইছিলেন? আরে বাঘের বাচ্চা! দেশে এখনো ভালো মানুষ আছে।

আশাকরি একদিন এইসব ভালো মানুষরা দেশ সেবার সুযোগ পাবে, তখন “দারিদ্র্য যাবে জাদুঘরে,

শিল্পকলা আসবে মঞ্চে”।

[লেখক : চলচ্চিত্রকার ]

back to top