কামরুজ্জামান
গাজীপুর জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত বেলাই বিল গাজীপুর তথা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যের এক গুরুত্বপূর্ণ আধার। গাজীপুর জেলায় যতগুলো প্রাকৃতিক জলাশয় রয়েছে এর মধ্যে অন্যতম প্রধান হচ্ছে গাজীপুর জেলার ঠিক মাঝখানে অবস্থিত বেলাই বিল। বেলাই বিলকে ঘিরে রয়েছে অর্ধ সহস্র বছরের ইতিহাস। এই বেলাই বিলের জীববৈচিত্র্য ও এখানকার মানুষের জীবন যেন একই সুতায় গাঁথা। এখানকার কয়েক প্রজন্মের মানুষ কৃষি কাজ ও মাছ শিকার করে জীবীকা নির্বাহ করে আসছে সহজসরল জীবনবোধে। বেলাই বিলের প্রকৃতি এবং সম্পদ এখানকার মানুষের জীবনে আশীর্বাদস্বরূপ।
বর্তমানে বিলটি ৮ বর্গমাইল এলাকায় বিস্তৃত হলেও একসময় এটি আরও অনেক বড় ছিল। বাড়িয়া, ব্রাহ্মণগাঁও, বক্তারপুর ও বামচিনি মৌজা নিয়ে বেলাই বিল এলাকা বিস্তৃত। আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে বেলাই বিলে কোনো গ্রামের অস্তিত্ব ছিল না। খরস্রোতা চেলাই নদীর কারণে বিলটিও খরস্রোতা রূপে বিরাজমান ছিল। বর্ষা মৌসুমে জেলেরা বিলের চারপাশে মাছ ধরার জন্য ডাঙ্গি খনন করে রাখত। পানি কমে গেলে মাছ ধরত। যার ঐতিহ্য এখনও রয়েছে।
গাজীপুর সদর, কালীগঞ্জ, কাপাসিয়া ও শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকাজুড়ে প্রায় ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনে বিস্তৃত ছিল মূলত এই বেলাই বিল। বন্যা ও জলাবদ্ধতা ঠেকাতে এ বিল কয়েকশ বছর ধরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এছাড়া এটি দেশি মাছের সমৃদ্ধ ভা-ার। গাজীপুরের মাছের চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ মেটায় এ জলাশয়। বেলাই বিলকে ঘিরে চার উপজেলার শত শত মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। বিশেষ করে, বর্ষাকালে বিল পাড়ের মানুষের কর্মসংস্থান মাছ ধরে ও শাপলা তুলে। কয়েকটি নদী ও খালের সঙ্গে যুক্ত থাকা বেলাই বিলের পানি দিয়ে চাষাবাদ করেন চার উপজেলার কৃষক।
বেলাই বিল প্রাকৃতিক সম্পদের সমৃদ্ধ ভা-ার হলেও বিভিন্ন কারণে আজ হুমকির সম্মুখীন। লাখো মানুষের ভরসাস্থল বেলাই বিল আজ ভালো নেই। হুমকিতে এ বিলের পরিবেশ। একদিকে ভূমিখেকো কোম্পানি ও ব্যক্তিদের দখল, অন্যদিকে শিল্প কারখানাগুলোর বর্জ্যরে কারণে প্রাণ হারাচ্ছে এ বিল। চিলাই নদীর দখল ও দূষণ বেলাই বিলের প্রাকৃতিক পরিবেশকে ক্ষতি করছে। বেলাই বিলের অনেক জায়গায় শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। কৃষক কৃষি জমি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছে। আবার অনেক জায়গা জবরদখল হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন কোম্পানি জায়গা ক্রয় ও দখল করে বিলবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে। আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে। বিনোদন কেন্দ্র ও রিসোর্স গড়ে উঠায় বেলাই বিল তার স্বাভাবিক পরিবেশ হারিয়ে ফেলছে। অনেক স্থানে বেলাই বিলকে কেন্দ্র করে রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। পর্যটকরা বেলাই বিলে ভ্রমণের সময় বিভিন্ন রকমের বর্জ্য চিপসের প্যাকেট, খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ, পলিথিন ইত্যাদি পানিতে ফেলার কারণে বিলের পানি ও মাটি প্রতিনিয়ত দূষণের কবলে পড়ছে।
চিলাই নদীর দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। চিলাই নদীর পাড়ে অনেকগুলো শিল্প কারখানা ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে। যেগুলোর তরল বর্জ্য চিলাই নদীর পানিকে প্রতিনিয়ত দূষিত করছে। এই দূষণের প্রভাব গিয়ে পড়ছে বেলাই বিলের জীববৈচিত্র্যের ওপর।
দীর্ঘ ত্রিশ বছর সময় ধরে বেলাই বিলের পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য পরিবর্তন হয়েছে অনেক। একসময়ের দিগন্ত বিস্তৃত থৈ থৈ জলরাশিতে ভরপুর বেলাই বিল এখন অনেকটাই আয়তনে ছোট হয়ে এসেছে। অনেক জায়গা বালু দিয়ে ভরাট হওয়ার কারণে বেলাই বিল তার সৌন্দর্য হারাচ্ছে। অনেক জায়গায় গড়ে উঠেছে নানা রকমের শিল্পকারখানা। হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। সবমিলিয়ে ভালো নেই গাজীপুরের বেলাই বিল। বেলাই বিলের প্রতিবেশ ও পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ যতœ প্রয়োজন।
বেলাই বিলের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে। জলজ উদ্ভিদ এবং প্রাণীর এক প্রাকৃতিক মেলবন্ধন হলো বেলাই বিল। বেলাই বিলের উঁচু জমি, রাস্তার পাশে হরিতকি, বহেরা, তিতি জাম, আমলকি, বাবলাগাছ ইত্যাদি দেখা যেত। শেয়াল, সজারু, বেঁজি গুইসাপসহ বন্যপ্রাণীর ছিল অবাধ বিচরণ। শঙ্খিনী, দারাস, গোখরো, দোড়া সাপ ইত্যাদি সাপ চোখে পড়ত অহরহ। পাখপাখালিতে মুখরিত থাকত বেলাই বিলের জীববৈচিত্র্য। অতিলোভী মানুষের থাবায় বেলাই বিলের জীববৈচিত্র্য আজ হুমকির সম্মুখীন। দেশীয় মাছসহ বেলাই বিলের বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।
বেলাই বিলে শুষ্ক মৌসুমের কৃষি ফসল উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে। কৃষি কাজ করে এই বিলের আশপাশের মানুষ জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। ছোটবেলায় আমরা দেখেছি বেলাই বিলের ধান উঠানোর জন্য দূরদূরান্ত থেকে একশ্রেণীর লোক গরু মহিষের গাড়ি নিয়ে ১০ দিন ১৫ দিন কিংবা ১ মাসের জন্য চলে আসত। কৃষকের ঘরে ধান উঠানো শেষ করে তাদের পাওনা বুঝে নিয়ে আবার চলে যেত। জমি থেকে গরুর গাড়ি মহিষের গাড়ি দিয়ে ধান উঠানোর সেই দৃশ্য এখনও চোখে ভাসে। আরও একশ্রেণীর লোক আসত ধান কাটার জন্য। এখন এই সব চোখে পড়ে না। তবে কৃষি কাজ এখনো হয়, ধান এখনো উৎপাদন হয় তবে পরিমাণে কম। আগের সেই কর্মযজ্ঞ চোখে পড়ে না। আরও একটি বিষয়Ñ আগে প্রচুর পাট উৎপাদন হতো এবং এই পাটগাছ ভেজানো হতো বেলাই বিলে। পাট সংগ্রহের দৃশ্য এবং বিলের পাড়ে পাটখড়ি শুকানোর দৃশ্য সত্যি অসাধারণ ছিল। এখন এসব দৃশ্য চোখে পড়ে না।
বেলাই বিলের সীমানা চিহ্নিত করা খুবই জরুরি। প্রতিনিয়ত যেভাবে বেলাই বিলের জমি বিক্রি, দখল আর ভরাট হচ্ছে এতে করে বেলাই বিল তার অস্তিত্ব হারাতে সময় লাগবে না। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে পরিবেশ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বেলাই বিল সংরক্ষণ কমিটি গঠন করা এখন সময়ের দাবি। বেলাই বিল রক্ষায় সবার সচেতনতা প্রয়োজন। ভাওয়াল পরগণা তথা গাজীপুরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বেলাই বিলের ঐতিহ্য ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
[লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ভূগোল বিভাগ, মুক্তিযোদ্ধা কলেজ, গাজীপুর]
কামরুজ্জামান
শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪
গাজীপুর জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত বেলাই বিল গাজীপুর তথা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যের এক গুরুত্বপূর্ণ আধার। গাজীপুর জেলায় যতগুলো প্রাকৃতিক জলাশয় রয়েছে এর মধ্যে অন্যতম প্রধান হচ্ছে গাজীপুর জেলার ঠিক মাঝখানে অবস্থিত বেলাই বিল। বেলাই বিলকে ঘিরে রয়েছে অর্ধ সহস্র বছরের ইতিহাস। এই বেলাই বিলের জীববৈচিত্র্য ও এখানকার মানুষের জীবন যেন একই সুতায় গাঁথা। এখানকার কয়েক প্রজন্মের মানুষ কৃষি কাজ ও মাছ শিকার করে জীবীকা নির্বাহ করে আসছে সহজসরল জীবনবোধে। বেলাই বিলের প্রকৃতি এবং সম্পদ এখানকার মানুষের জীবনে আশীর্বাদস্বরূপ।
বর্তমানে বিলটি ৮ বর্গমাইল এলাকায় বিস্তৃত হলেও একসময় এটি আরও অনেক বড় ছিল। বাড়িয়া, ব্রাহ্মণগাঁও, বক্তারপুর ও বামচিনি মৌজা নিয়ে বেলাই বিল এলাকা বিস্তৃত। আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে বেলাই বিলে কোনো গ্রামের অস্তিত্ব ছিল না। খরস্রোতা চেলাই নদীর কারণে বিলটিও খরস্রোতা রূপে বিরাজমান ছিল। বর্ষা মৌসুমে জেলেরা বিলের চারপাশে মাছ ধরার জন্য ডাঙ্গি খনন করে রাখত। পানি কমে গেলে মাছ ধরত। যার ঐতিহ্য এখনও রয়েছে।
গাজীপুর সদর, কালীগঞ্জ, কাপাসিয়া ও শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকাজুড়ে প্রায় ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনে বিস্তৃত ছিল মূলত এই বেলাই বিল। বন্যা ও জলাবদ্ধতা ঠেকাতে এ বিল কয়েকশ বছর ধরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এছাড়া এটি দেশি মাছের সমৃদ্ধ ভা-ার। গাজীপুরের মাছের চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ মেটায় এ জলাশয়। বেলাই বিলকে ঘিরে চার উপজেলার শত শত মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। বিশেষ করে, বর্ষাকালে বিল পাড়ের মানুষের কর্মসংস্থান মাছ ধরে ও শাপলা তুলে। কয়েকটি নদী ও খালের সঙ্গে যুক্ত থাকা বেলাই বিলের পানি দিয়ে চাষাবাদ করেন চার উপজেলার কৃষক।
বেলাই বিল প্রাকৃতিক সম্পদের সমৃদ্ধ ভা-ার হলেও বিভিন্ন কারণে আজ হুমকির সম্মুখীন। লাখো মানুষের ভরসাস্থল বেলাই বিল আজ ভালো নেই। হুমকিতে এ বিলের পরিবেশ। একদিকে ভূমিখেকো কোম্পানি ও ব্যক্তিদের দখল, অন্যদিকে শিল্প কারখানাগুলোর বর্জ্যরে কারণে প্রাণ হারাচ্ছে এ বিল। চিলাই নদীর দখল ও দূষণ বেলাই বিলের প্রাকৃতিক পরিবেশকে ক্ষতি করছে। বেলাই বিলের অনেক জায়গায় শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। কৃষক কৃষি জমি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছে। আবার অনেক জায়গা জবরদখল হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন কোম্পানি জায়গা ক্রয় ও দখল করে বিলবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে। আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে। বিনোদন কেন্দ্র ও রিসোর্স গড়ে উঠায় বেলাই বিল তার স্বাভাবিক পরিবেশ হারিয়ে ফেলছে। অনেক স্থানে বেলাই বিলকে কেন্দ্র করে রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। পর্যটকরা বেলাই বিলে ভ্রমণের সময় বিভিন্ন রকমের বর্জ্য চিপসের প্যাকেট, খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ, পলিথিন ইত্যাদি পানিতে ফেলার কারণে বিলের পানি ও মাটি প্রতিনিয়ত দূষণের কবলে পড়ছে।
চিলাই নদীর দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। চিলাই নদীর পাড়ে অনেকগুলো শিল্প কারখানা ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে। যেগুলোর তরল বর্জ্য চিলাই নদীর পানিকে প্রতিনিয়ত দূষিত করছে। এই দূষণের প্রভাব গিয়ে পড়ছে বেলাই বিলের জীববৈচিত্র্যের ওপর।
দীর্ঘ ত্রিশ বছর সময় ধরে বেলাই বিলের পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য পরিবর্তন হয়েছে অনেক। একসময়ের দিগন্ত বিস্তৃত থৈ থৈ জলরাশিতে ভরপুর বেলাই বিল এখন অনেকটাই আয়তনে ছোট হয়ে এসেছে। অনেক জায়গা বালু দিয়ে ভরাট হওয়ার কারণে বেলাই বিল তার সৌন্দর্য হারাচ্ছে। অনেক জায়গায় গড়ে উঠেছে নানা রকমের শিল্পকারখানা। হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। সবমিলিয়ে ভালো নেই গাজীপুরের বেলাই বিল। বেলাই বিলের প্রতিবেশ ও পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ যতœ প্রয়োজন।
বেলাই বিলের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে। জলজ উদ্ভিদ এবং প্রাণীর এক প্রাকৃতিক মেলবন্ধন হলো বেলাই বিল। বেলাই বিলের উঁচু জমি, রাস্তার পাশে হরিতকি, বহেরা, তিতি জাম, আমলকি, বাবলাগাছ ইত্যাদি দেখা যেত। শেয়াল, সজারু, বেঁজি গুইসাপসহ বন্যপ্রাণীর ছিল অবাধ বিচরণ। শঙ্খিনী, দারাস, গোখরো, দোড়া সাপ ইত্যাদি সাপ চোখে পড়ত অহরহ। পাখপাখালিতে মুখরিত থাকত বেলাই বিলের জীববৈচিত্র্য। অতিলোভী মানুষের থাবায় বেলাই বিলের জীববৈচিত্র্য আজ হুমকির সম্মুখীন। দেশীয় মাছসহ বেলাই বিলের বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।
বেলাই বিলে শুষ্ক মৌসুমের কৃষি ফসল উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে। কৃষি কাজ করে এই বিলের আশপাশের মানুষ জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। ছোটবেলায় আমরা দেখেছি বেলাই বিলের ধান উঠানোর জন্য দূরদূরান্ত থেকে একশ্রেণীর লোক গরু মহিষের গাড়ি নিয়ে ১০ দিন ১৫ দিন কিংবা ১ মাসের জন্য চলে আসত। কৃষকের ঘরে ধান উঠানো শেষ করে তাদের পাওনা বুঝে নিয়ে আবার চলে যেত। জমি থেকে গরুর গাড়ি মহিষের গাড়ি দিয়ে ধান উঠানোর সেই দৃশ্য এখনও চোখে ভাসে। আরও একশ্রেণীর লোক আসত ধান কাটার জন্য। এখন এই সব চোখে পড়ে না। তবে কৃষি কাজ এখনো হয়, ধান এখনো উৎপাদন হয় তবে পরিমাণে কম। আগের সেই কর্মযজ্ঞ চোখে পড়ে না। আরও একটি বিষয়Ñ আগে প্রচুর পাট উৎপাদন হতো এবং এই পাটগাছ ভেজানো হতো বেলাই বিলে। পাট সংগ্রহের দৃশ্য এবং বিলের পাড়ে পাটখড়ি শুকানোর দৃশ্য সত্যি অসাধারণ ছিল। এখন এসব দৃশ্য চোখে পড়ে না।
বেলাই বিলের সীমানা চিহ্নিত করা খুবই জরুরি। প্রতিনিয়ত যেভাবে বেলাই বিলের জমি বিক্রি, দখল আর ভরাট হচ্ছে এতে করে বেলাই বিল তার অস্তিত্ব হারাতে সময় লাগবে না। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে পরিবেশ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বেলাই বিল সংরক্ষণ কমিটি গঠন করা এখন সময়ের দাবি। বেলাই বিল রক্ষায় সবার সচেতনতা প্রয়োজন। ভাওয়াল পরগণা তথা গাজীপুরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বেলাই বিলের ঐতিহ্য ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
[লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ভূগোল বিভাগ, মুক্তিযোদ্ধা কলেজ, গাজীপুর]