alt

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

রাসায়নিক দূষণ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি

সাঈদ চৌধুরী

: বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

রাসায়নিক চক্রের মাধ্যমে আমাদের খাদ্য ও শরীরে প্রতিনিয়ত ক্যান্সারের জীবাণু ঢুকছে। এবং সেই সুযোগ তৈরি করছি আমরা নিজেরাই। কখনও কি ভেবে দেখেছেন-আজ যে নতুন কাপড়টি বাজার থেকে কিনে আনলেন, ধোয়ার সময় যে রং উঠল, সেই কাঁচা রং আপনাকে আনন্দ দিলেও তা আপনার স্বাস্থ্যের ওপর কতটা ঝুঁকি সৃষ্টি করছে?

বিভিন্ন উৎস থেকে কেমিক্যাল আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে-কখনো মাটির মাধ্যমে ফসল হয়ে, কখনো প্লাস্টিক বা অন্যান্য রাসায়নিকজাত পণ্য সরাসরি স্পর্শের মাধ্যমে। আর যেসব রাসায়নিক আমরা মাটিতে দিচ্ছি, সেগুলোই আবার খাবার হয়ে আমাদের শরীরে ফিরে আসছে

আপনি কি ভেবেছেন-বাজার থেকে যেসব টাটকা সবজি কিনে আনছেন, তার মধ্যেই থাকতে পারে বিপুল পরিমাণ বিষ? আমরা এসব কখনো গুরুত্ব দিয়ে ভাবি না। বরং সেই রঙিন কাপড় পরে শিশুকে দুধ খাওয়াই, নিজেরাও সারাদিন তা পরে থাকি। বাজার থেকে আনা সবজি দ্রুত রান্না করে নিশ্চিন্তে খেয়ে ফেলি-ভাবি, টাটকা বলে নিশ্চয়ই নিরাপদ।

গরমে ঘাম হলে কাপড়ের রং চামড়ায় লেগে যায়-তবু আমাদের কোনো অস্বস্তি নেই। আমরা বুঝি না, এটি এক ধরনের রাসায়নিক জাল। বিভিন্ন উৎস থেকে কেমিক্যাল আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে-কখনো মাটির মাধ্যমে ফসল হয়ে, কখনো প্লাস্টিক বা অন্যান্য রাসায়নিকজাত পণ্য সরাসরি স্পর্শের মাধ্যমে। আর যেসব রাসায়নিক আমরা মাটিতে দিচ্ছি, সেগুলোই আবার খাবার হয়ে আমাদের শরীরে ফিরে আসছে।

এই দূষণের মধ্যে থাকতে পারে কার্সিনোজেনিক উপাদান, থ্যালেট, অ্যামিন বা ভারী ধাতু-যা একসময় না একসময় আমাদের শরীরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবেই। ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগের ঝুঁকি তাই ক্রমেই বাড়ছে। ভেজালযুক্ত খাবার আমাদের প্লেটে সরাসরি আসে, অথচ আমরা বুঝতেই পারি না নিজেদের কী ক্ষতি করছি।

যেখানে ইউরেনিয়াম বা ক্রোমিয়ামের মতো ভারী ধাতু অতিরিক্ত পরিমাণে উপস্থিত, সেখানে নিরাপদ থাকার উপায় নেই। তাই যে কাপড় থেকে সহজে রং উঠে আসে, তা কেনা বা পরা-দুটো থেকেই বিরত থাকা উচিত। নিজের এবং সন্তানের সুস্থতার জন্য এ সতর্কতাই ন্যূনতম প্রয়োজন।

বাজার থেকে আনা সবজি এনে সঙ্গে সঙ্গে রান্না করবেন না। অন্তত একদিন রেখে, পরিষ্কার পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে তারপর রান্না করুন। রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করতে দিলে ভয়াবহ দিন সামনে অপেক্ষা করছে। ইতিমধ্যে অসংখ্য মানুষ ক্যান্সারের মতো রোগ বয়ে বেড়াচ্ছেন-বেশির ভাগই অসহায়।

খাদ্য ও পরিবেশচক্রে রাসায়নিকের ব্যবহার কমাতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। খাদ্যে ভেজাল রোধ, কেমিক্যালের বিস্তার ঠেকানো, অর্গানিক খাবার উৎপাদন বৃদ্ধি ও গবেষণায় বিনিয়োগ-এসবই জরুরি। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকারসহ সবার সচেতনতা ও পদক্ষেপ সময়ের দাবি।

[লেখক: রসায়নবিদ]

আছদগঞ্জের শুটকি : অতীতের গৌরব, বর্তমানের দুঃসময়

নবান্নের আনন্দ ও আমনের ফলন

‘প্রশ্ন কোরো না, প্রশ্ন সর্বনাশী’

ভূমিকম্প, অর্থনৈতিক চাপ এবং অনিশ্চয়তা: মানসিকতার নতুন অর্থনীতি

নবম পে স্কেল ও এর আর্থসামাজিক প্রভাব

মৃত্যুদণ্ড, তারপর...

জমির ভুয়া দলিল কীভাবে বাতিল করবেন?

জুলাই সনদ আদিবাসীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি

ব্যাংকের দুরবস্থা থামানো যাচ্ছে না কেন

আমন ধানে ব্রাউন প্ল্যান্টহপারের প্রাদুর্ভাব

বৈষম্য, অপচয় ও খাদ্যনিরাপত্তার সংকট

“বাঙালি আমরা, নহিতো...”

নারী নির্যাতন, মানসিক স্বাস্থ্য এবং সমাজের দায়

কাঁপছে ডলারের সিংহাসন

ত্রিশতম জলবায়ু সম্মেলন : প্রতীকী প্রদর্শনী, নাকি বৈশ্বিক জলবায়ু রাজনীতির বাঁক নেওয়ার মুহূর্ত?

অপরিণত নবজাতক : ঝুঁকি, প্রতিরোধ ও যত্নের জরুরি বাস্তবতা

বাংলাদেশী উত্তরাধিকার: প্রবাস-জীবন ও আমাদের সংস্কৃতি

রাজনীতিতে ভাষার সহনীয় প্রয়োগ

ভারত : এসআইআর এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজন

মনে কী দ্বিধা নিয়ে...

নিরাপদ সড়ক ভাবনা

অপরিকল্পিত বাঁধ-শিল্পায়নে বিপর্যস্ত বরেন্দ্র কৃষি

ছবি

মামদানি দেখালেন নেতৃত্বের মূল পরিচয় কী

চেকের মামলায় বৈধ বিনিময়, লেনদেন, দেনা-পাওনা প্রমাণ ছাড়া আর জেল নয়

নবাগত শিক্ষকদের পেশাগত ভাবনা

মাদকাসক্তি: শুধু নিরাময় নয়, চাই সমাজ ব্যবস্থার সংস্কার

আমেরিকার “নো কিংস” আন্দোলন

ঘি তো আমাদের লাগবেই, নো হাংকি পাংকি!

“মামদানি না জামদানি...”

ভাষার বৈচিত্র্য রক্ষায় নীরব বিপ্লব

উপাত্ত সুরক্ষা আইন : গোপনীয়তা রক্ষা নাকি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ?

সমতা কি ন্যায্যতা নিশ্চিত করে?

ডেঙ্গু সংকট দূরদৃষ্টির ব্যর্থতা

ষাটের দশকে বামপন্থী ভাবনার উত্থান ও বিবর্তন

দেখিতে পাও না তুমি মৃত্যুদূত দাঁড়ায়েছে দ্বারে!

বায়ুর অপর নাম জীবন

tab

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

রাসায়নিক দূষণ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি

সাঈদ চৌধুরী

বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

রাসায়নিক চক্রের মাধ্যমে আমাদের খাদ্য ও শরীরে প্রতিনিয়ত ক্যান্সারের জীবাণু ঢুকছে। এবং সেই সুযোগ তৈরি করছি আমরা নিজেরাই। কখনও কি ভেবে দেখেছেন-আজ যে নতুন কাপড়টি বাজার থেকে কিনে আনলেন, ধোয়ার সময় যে রং উঠল, সেই কাঁচা রং আপনাকে আনন্দ দিলেও তা আপনার স্বাস্থ্যের ওপর কতটা ঝুঁকি সৃষ্টি করছে?

বিভিন্ন উৎস থেকে কেমিক্যাল আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে-কখনো মাটির মাধ্যমে ফসল হয়ে, কখনো প্লাস্টিক বা অন্যান্য রাসায়নিকজাত পণ্য সরাসরি স্পর্শের মাধ্যমে। আর যেসব রাসায়নিক আমরা মাটিতে দিচ্ছি, সেগুলোই আবার খাবার হয়ে আমাদের শরীরে ফিরে আসছে

আপনি কি ভেবেছেন-বাজার থেকে যেসব টাটকা সবজি কিনে আনছেন, তার মধ্যেই থাকতে পারে বিপুল পরিমাণ বিষ? আমরা এসব কখনো গুরুত্ব দিয়ে ভাবি না। বরং সেই রঙিন কাপড় পরে শিশুকে দুধ খাওয়াই, নিজেরাও সারাদিন তা পরে থাকি। বাজার থেকে আনা সবজি দ্রুত রান্না করে নিশ্চিন্তে খেয়ে ফেলি-ভাবি, টাটকা বলে নিশ্চয়ই নিরাপদ।

গরমে ঘাম হলে কাপড়ের রং চামড়ায় লেগে যায়-তবু আমাদের কোনো অস্বস্তি নেই। আমরা বুঝি না, এটি এক ধরনের রাসায়নিক জাল। বিভিন্ন উৎস থেকে কেমিক্যাল আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে-কখনো মাটির মাধ্যমে ফসল হয়ে, কখনো প্লাস্টিক বা অন্যান্য রাসায়নিকজাত পণ্য সরাসরি স্পর্শের মাধ্যমে। আর যেসব রাসায়নিক আমরা মাটিতে দিচ্ছি, সেগুলোই আবার খাবার হয়ে আমাদের শরীরে ফিরে আসছে।

এই দূষণের মধ্যে থাকতে পারে কার্সিনোজেনিক উপাদান, থ্যালেট, অ্যামিন বা ভারী ধাতু-যা একসময় না একসময় আমাদের শরীরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবেই। ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগের ঝুঁকি তাই ক্রমেই বাড়ছে। ভেজালযুক্ত খাবার আমাদের প্লেটে সরাসরি আসে, অথচ আমরা বুঝতেই পারি না নিজেদের কী ক্ষতি করছি।

যেখানে ইউরেনিয়াম বা ক্রোমিয়ামের মতো ভারী ধাতু অতিরিক্ত পরিমাণে উপস্থিত, সেখানে নিরাপদ থাকার উপায় নেই। তাই যে কাপড় থেকে সহজে রং উঠে আসে, তা কেনা বা পরা-দুটো থেকেই বিরত থাকা উচিত। নিজের এবং সন্তানের সুস্থতার জন্য এ সতর্কতাই ন্যূনতম প্রয়োজন।

বাজার থেকে আনা সবজি এনে সঙ্গে সঙ্গে রান্না করবেন না। অন্তত একদিন রেখে, পরিষ্কার পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে তারপর রান্না করুন। রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করতে দিলে ভয়াবহ দিন সামনে অপেক্ষা করছে। ইতিমধ্যে অসংখ্য মানুষ ক্যান্সারের মতো রোগ বয়ে বেড়াচ্ছেন-বেশির ভাগই অসহায়।

খাদ্য ও পরিবেশচক্রে রাসায়নিকের ব্যবহার কমাতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। খাদ্যে ভেজাল রোধ, কেমিক্যালের বিস্তার ঠেকানো, অর্গানিক খাবার উৎপাদন বৃদ্ধি ও গবেষণায় বিনিয়োগ-এসবই জরুরি। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকারসহ সবার সচেতনতা ও পদক্ষেপ সময়ের দাবি।

[লেখক: রসায়নবিদ]

back to top