সাঈদ চৌধুরী
রাসায়নিক চক্রের মাধ্যমে আমাদের খাদ্য ও শরীরে প্রতিনিয়ত ক্যান্সারের জীবাণু ঢুকছে। এবং সেই সুযোগ তৈরি করছি আমরা নিজেরাই। কখনও কি ভেবে দেখেছেন-আজ যে নতুন কাপড়টি বাজার থেকে কিনে আনলেন, ধোয়ার সময় যে রং উঠল, সেই কাঁচা রং আপনাকে আনন্দ দিলেও তা আপনার স্বাস্থ্যের ওপর কতটা ঝুঁকি সৃষ্টি করছে?
বিভিন্ন উৎস থেকে কেমিক্যাল আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে-কখনো মাটির মাধ্যমে ফসল হয়ে, কখনো প্লাস্টিক বা অন্যান্য রাসায়নিকজাত পণ্য সরাসরি স্পর্শের মাধ্যমে। আর যেসব রাসায়নিক আমরা মাটিতে দিচ্ছি, সেগুলোই আবার খাবার হয়ে আমাদের শরীরে ফিরে আসছে
আপনি কি ভেবেছেন-বাজার থেকে যেসব টাটকা সবজি কিনে আনছেন, তার মধ্যেই থাকতে পারে বিপুল পরিমাণ বিষ? আমরা এসব কখনো গুরুত্ব দিয়ে ভাবি না। বরং সেই রঙিন কাপড় পরে শিশুকে দুধ খাওয়াই, নিজেরাও সারাদিন তা পরে থাকি। বাজার থেকে আনা সবজি দ্রুত রান্না করে নিশ্চিন্তে খেয়ে ফেলি-ভাবি, টাটকা বলে নিশ্চয়ই নিরাপদ।
গরমে ঘাম হলে কাপড়ের রং চামড়ায় লেগে যায়-তবু আমাদের কোনো অস্বস্তি নেই। আমরা বুঝি না, এটি এক ধরনের রাসায়নিক জাল। বিভিন্ন উৎস থেকে কেমিক্যাল আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে-কখনো মাটির মাধ্যমে ফসল হয়ে, কখনো প্লাস্টিক বা অন্যান্য রাসায়নিকজাত পণ্য সরাসরি স্পর্শের মাধ্যমে। আর যেসব রাসায়নিক আমরা মাটিতে দিচ্ছি, সেগুলোই আবার খাবার হয়ে আমাদের শরীরে ফিরে আসছে।
এই দূষণের মধ্যে থাকতে পারে কার্সিনোজেনিক উপাদান, থ্যালেট, অ্যামিন বা ভারী ধাতু-যা একসময় না একসময় আমাদের শরীরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবেই। ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগের ঝুঁকি তাই ক্রমেই বাড়ছে। ভেজালযুক্ত খাবার আমাদের প্লেটে সরাসরি আসে, অথচ আমরা বুঝতেই পারি না নিজেদের কী ক্ষতি করছি।
যেখানে ইউরেনিয়াম বা ক্রোমিয়ামের মতো ভারী ধাতু অতিরিক্ত পরিমাণে উপস্থিত, সেখানে নিরাপদ থাকার উপায় নেই। তাই যে কাপড় থেকে সহজে রং উঠে আসে, তা কেনা বা পরা-দুটো থেকেই বিরত থাকা উচিত। নিজের এবং সন্তানের সুস্থতার জন্য এ সতর্কতাই ন্যূনতম প্রয়োজন।
বাজার থেকে আনা সবজি এনে সঙ্গে সঙ্গে রান্না করবেন না। অন্তত একদিন রেখে, পরিষ্কার পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে তারপর রান্না করুন। রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করতে দিলে ভয়াবহ দিন সামনে অপেক্ষা করছে। ইতিমধ্যে অসংখ্য মানুষ ক্যান্সারের মতো রোগ বয়ে বেড়াচ্ছেন-বেশির ভাগই অসহায়।
খাদ্য ও পরিবেশচক্রে রাসায়নিকের ব্যবহার কমাতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। খাদ্যে ভেজাল রোধ, কেমিক্যালের বিস্তার ঠেকানো, অর্গানিক খাবার উৎপাদন বৃদ্ধি ও গবেষণায় বিনিয়োগ-এসবই জরুরি। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকারসহ সবার সচেতনতা ও পদক্ষেপ সময়ের দাবি।
[লেখক: রসায়নবিদ]
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সাঈদ চৌধুরী
বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
রাসায়নিক চক্রের মাধ্যমে আমাদের খাদ্য ও শরীরে প্রতিনিয়ত ক্যান্সারের জীবাণু ঢুকছে। এবং সেই সুযোগ তৈরি করছি আমরা নিজেরাই। কখনও কি ভেবে দেখেছেন-আজ যে নতুন কাপড়টি বাজার থেকে কিনে আনলেন, ধোয়ার সময় যে রং উঠল, সেই কাঁচা রং আপনাকে আনন্দ দিলেও তা আপনার স্বাস্থ্যের ওপর কতটা ঝুঁকি সৃষ্টি করছে?
বিভিন্ন উৎস থেকে কেমিক্যাল আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে-কখনো মাটির মাধ্যমে ফসল হয়ে, কখনো প্লাস্টিক বা অন্যান্য রাসায়নিকজাত পণ্য সরাসরি স্পর্শের মাধ্যমে। আর যেসব রাসায়নিক আমরা মাটিতে দিচ্ছি, সেগুলোই আবার খাবার হয়ে আমাদের শরীরে ফিরে আসছে
আপনি কি ভেবেছেন-বাজার থেকে যেসব টাটকা সবজি কিনে আনছেন, তার মধ্যেই থাকতে পারে বিপুল পরিমাণ বিষ? আমরা এসব কখনো গুরুত্ব দিয়ে ভাবি না। বরং সেই রঙিন কাপড় পরে শিশুকে দুধ খাওয়াই, নিজেরাও সারাদিন তা পরে থাকি। বাজার থেকে আনা সবজি দ্রুত রান্না করে নিশ্চিন্তে খেয়ে ফেলি-ভাবি, টাটকা বলে নিশ্চয়ই নিরাপদ।
গরমে ঘাম হলে কাপড়ের রং চামড়ায় লেগে যায়-তবু আমাদের কোনো অস্বস্তি নেই। আমরা বুঝি না, এটি এক ধরনের রাসায়নিক জাল। বিভিন্ন উৎস থেকে কেমিক্যাল আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে-কখনো মাটির মাধ্যমে ফসল হয়ে, কখনো প্লাস্টিক বা অন্যান্য রাসায়নিকজাত পণ্য সরাসরি স্পর্শের মাধ্যমে। আর যেসব রাসায়নিক আমরা মাটিতে দিচ্ছি, সেগুলোই আবার খাবার হয়ে আমাদের শরীরে ফিরে আসছে।
এই দূষণের মধ্যে থাকতে পারে কার্সিনোজেনিক উপাদান, থ্যালেট, অ্যামিন বা ভারী ধাতু-যা একসময় না একসময় আমাদের শরীরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবেই। ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগের ঝুঁকি তাই ক্রমেই বাড়ছে। ভেজালযুক্ত খাবার আমাদের প্লেটে সরাসরি আসে, অথচ আমরা বুঝতেই পারি না নিজেদের কী ক্ষতি করছি।
যেখানে ইউরেনিয়াম বা ক্রোমিয়ামের মতো ভারী ধাতু অতিরিক্ত পরিমাণে উপস্থিত, সেখানে নিরাপদ থাকার উপায় নেই। তাই যে কাপড় থেকে সহজে রং উঠে আসে, তা কেনা বা পরা-দুটো থেকেই বিরত থাকা উচিত। নিজের এবং সন্তানের সুস্থতার জন্য এ সতর্কতাই ন্যূনতম প্রয়োজন।
বাজার থেকে আনা সবজি এনে সঙ্গে সঙ্গে রান্না করবেন না। অন্তত একদিন রেখে, পরিষ্কার পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে তারপর রান্না করুন। রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করতে দিলে ভয়াবহ দিন সামনে অপেক্ষা করছে। ইতিমধ্যে অসংখ্য মানুষ ক্যান্সারের মতো রোগ বয়ে বেড়াচ্ছেন-বেশির ভাগই অসহায়।
খাদ্য ও পরিবেশচক্রে রাসায়নিকের ব্যবহার কমাতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। খাদ্যে ভেজাল রোধ, কেমিক্যালের বিস্তার ঠেকানো, অর্গানিক খাবার উৎপাদন বৃদ্ধি ও গবেষণায় বিনিয়োগ-এসবই জরুরি। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকারসহ সবার সচেতনতা ও পদক্ষেপ সময়ের দাবি।
[লেখক: রসায়নবিদ]