alt

opinion » post-editorial

সক্ষমতা অনুযায়ী রাজস্বের লক্ষ্য ঠিক করতে হবে

এসএম জাহাঙ্গীর আলম

: বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১

প্রতি বছর বিশাল অঙ্কের জাতীয় বাজেট পেশ করা হয়। এতে প্রধান ভূমিকা থাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)। কিন্তু রাজস্ব আদায়ের বিবেচনায় না নিয়ে প্রতি বছর এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণকে অযৌক্তিক বলে আমি মনে করি। কারণ-জাতীয় বাজেট বিবেচনায় সরকার তার আয়-ব্যয়ের পরিকল্পনা করে থাকেন। যখন রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি দেখা দেয়, পুরো বিষয়ে একটা বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।

তবে সরকারের উচিত প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা। যে কোন দেশে জিডিপি হারের রেশিওর ওপর নির্ভর করে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে আমাদের দেশে ব্যতিক্রম। এনবিআর সক্ষমতা বিবেচনায় না নিয়েই বরাবরই বিশাল অঙ্কের রাজস্ব আদায় নির্ধারণ করে যা অযৌক্তিক। যার ফলে প্রতি বছরই রাজস্ব আদায় ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। ২২ শতাংশের ওপর রাজস্ব আদায় সম্ভব হচ্ছে না। তবে ব্যক্তি করের আওতা কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজস্ব কিছুটা বাড়ছে বলা চলে।

আমাদের দেশে রাজস্ব আদায় মূল উৎস হচ্ছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট। এখাত থেকেই সর্বাধিক রাজস্ব পাওয়া যাচ্ছে। যেমন সদ্য বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের ১০ মাসের হিসাব থেকে দেখা যায় যে, আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট থেকে রাজস্ব পাওয়া গেছে ২১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আমদানি পর্যায়ে সম্পুরক শুল্ক পাওয়া গেছে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, রপ্তানি খাতে আদায়ের পরিমাণ ৫৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলেও এখাতে দশমাসে এক টাকাও পাওয়া যায়নি। আবগারী শুল্ক পাওয়া গেছে ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ, স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট পাওয়া গেছে ৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ, স্থানীয় পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক পাওয়া গেছে ১৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ, স্থানীয় পর্যায়ে অন্যান্য শুল্ক পাওয়া গেছে ১২ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

বিদায়ী অর্থবছরে আয় কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৯ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা আর ১০ মাসে আদায় হয়েছে ৫৪ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা যা ৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ। সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা ভ্রমণ কর ধরা হলেও ১০ মাসে পাওয়া গেছে মাত্র ৮০৮ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ১০ মাসে রাজস্ব খাতে প্রাপ্তির প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৮৭ শতাংশ মাত্র। কাজেই বিদায়ী অর্থবছরেও বড় ধরনের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। রাজস্ব ঘাটতি মেটাতে হলে আদায় কার্যক্রম জোরদার করতে হবে, বাড়াতে হবে সক্ষমতা।

প্রতি বছরই বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিধি বাড়ছে। যার ধারাবাহিকতায় বাড়ছে জাতীয় বাজেটের আকার। কিন্তু বাজেট বাস্তবায়নের সঙ্গে সক্ষমতার কোন মিল নেই। প্রতি বছরই বাজেট ঘাটতি থাকছে। এমকি সংশোধিত রাজেটেও ঘাটতি লক্ষ করা যাচ্ছে। বড় বাজেটে বড় আয়ের লক্ষ্যমাত্রা, কিন্তু সক্ষমতা না থাকায় আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের কোন মিল নেই। আরেকটা বিষয় লক্ষণীয় যে, দুর্নীতি, দুর্বল মনিটরিং আর সক্ষম জনশক্তির অভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয় বা হচ্ছে যে, সক্ষম জনশক্তি গড়ে তোল হবে। কিন্তু সেটা আর হচ্ছে কোথায়?

[লেখক : সাবেক কর কমিশনার, এনবিআর]

শারদীয় পূজার দিনলিপি

ঋণের জন্য আত্মহত্যা, ঋণ নিয়েই চল্লিশা

জাকসু নির্বাচন ও হট্টগোল: আমাদের জন্য শিক্ষণীয় কী?

নরসুন্দর পেশার গুরুত্ব ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন

বিভাগভিত্তিক এমপিআর নির্বাচন পদ্ধতি

প্ল্যাটফর্ম সমাজে বাংলাদেশ: জ্ঞানের ভবিষ্যৎ কার হাতে?

আনন্দবেদনার হাসপাতাল: সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার বাস্তবতা

ছবি

ভিন্ন ধরনের নির্বাচন, ভিন্ন ধরনের ফল

বেসরকারি খাতে সিআইবি’র যাত্রা: ঋণ ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত

স্বাস্থ্যসেবায় মানবিকতা প্রতিষ্ঠা হোক

ছবি

নেপালে সরকার পতন ও বামপন্থীদের ভবিষ্যৎ

ডাকসু নির্বাচন ও সংস্কারপ্রয়াস: রাজনৈতিক চিন্তার নতুন দিগন্ত

নির্বাচন কি সব সমস্যার সমাধান

জিতিয়া উৎসব

ছবি

অলির পর নেপাল কোন পথে?

রম্যগদ্য: “মরেও বাঁচবি নারে পাগলা...”

অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শ্রীপুর পৌরসভা

ভূরিভোজ, উচ্ছেদ এবং আদিবাসী পাহাড়িয়া

অনলাইন সংস্কৃতিতে হাস্যরসের সমাজবিজ্ঞান

মামলাজট নিরসনে দেওয়ানি কার্যবিধির সংস্কার

বাস্তব মস্কো বনাম বিভ্রান্ত ইউরোপ

ছাত্রসংসদ নির্বাচন ও ভবিষ্যৎ ছাত্ররাজনীতির গতিপ্রকৃতি

সড়ক দুর্ঘটনা: কারও মৃত্যু সাধারণ, কারও মৃত্যু বিশেষ

ঐকমত্য ছাড়াও কিছু সংস্কার সম্ভব

আবার বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম : সংকটে সাধারণ মানুষ

ডায়াবেটিস রোগীর সেবা ও জনসচেতনতা

ভিন্ন ধরনের ডাকসু নির্বাচন

ডাকসু নির্বাচন : পেছনে ফেলে আসি

প্রসঙ্গ : এলডিসি তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ

“কোপা চাটিগাঁ...”

ই-কমার্স হতে পারে প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন

ভারত-চীনের নতুন সমীকরণ

সাইবার যুগে মানুষের মর্যাদা ও নিরাপত্তা

ছবি

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

একজন নাগরিকের অভিমানী বিদায় ও রাষ্ট্রের নৈতিক সংকট

tab

opinion » post-editorial

সক্ষমতা অনুযায়ী রাজস্বের লক্ষ্য ঠিক করতে হবে

এসএম জাহাঙ্গীর আলম

বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১

প্রতি বছর বিশাল অঙ্কের জাতীয় বাজেট পেশ করা হয়। এতে প্রধান ভূমিকা থাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)। কিন্তু রাজস্ব আদায়ের বিবেচনায় না নিয়ে প্রতি বছর এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণকে অযৌক্তিক বলে আমি মনে করি। কারণ-জাতীয় বাজেট বিবেচনায় সরকার তার আয়-ব্যয়ের পরিকল্পনা করে থাকেন। যখন রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি দেখা দেয়, পুরো বিষয়ে একটা বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।

তবে সরকারের উচিত প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা। যে কোন দেশে জিডিপি হারের রেশিওর ওপর নির্ভর করে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে আমাদের দেশে ব্যতিক্রম। এনবিআর সক্ষমতা বিবেচনায় না নিয়েই বরাবরই বিশাল অঙ্কের রাজস্ব আদায় নির্ধারণ করে যা অযৌক্তিক। যার ফলে প্রতি বছরই রাজস্ব আদায় ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। ২২ শতাংশের ওপর রাজস্ব আদায় সম্ভব হচ্ছে না। তবে ব্যক্তি করের আওতা কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজস্ব কিছুটা বাড়ছে বলা চলে।

আমাদের দেশে রাজস্ব আদায় মূল উৎস হচ্ছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট। এখাত থেকেই সর্বাধিক রাজস্ব পাওয়া যাচ্ছে। যেমন সদ্য বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের ১০ মাসের হিসাব থেকে দেখা যায় যে, আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট থেকে রাজস্ব পাওয়া গেছে ২১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আমদানি পর্যায়ে সম্পুরক শুল্ক পাওয়া গেছে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, রপ্তানি খাতে আদায়ের পরিমাণ ৫৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলেও এখাতে দশমাসে এক টাকাও পাওয়া যায়নি। আবগারী শুল্ক পাওয়া গেছে ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ, স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট পাওয়া গেছে ৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ, স্থানীয় পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক পাওয়া গেছে ১৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ, স্থানীয় পর্যায়ে অন্যান্য শুল্ক পাওয়া গেছে ১২ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

বিদায়ী অর্থবছরে আয় কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৯ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা আর ১০ মাসে আদায় হয়েছে ৫৪ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা যা ৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ। সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা ভ্রমণ কর ধরা হলেও ১০ মাসে পাওয়া গেছে মাত্র ৮০৮ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ১০ মাসে রাজস্ব খাতে প্রাপ্তির প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৮৭ শতাংশ মাত্র। কাজেই বিদায়ী অর্থবছরেও বড় ধরনের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। রাজস্ব ঘাটতি মেটাতে হলে আদায় কার্যক্রম জোরদার করতে হবে, বাড়াতে হবে সক্ষমতা।

প্রতি বছরই বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিধি বাড়ছে। যার ধারাবাহিকতায় বাড়ছে জাতীয় বাজেটের আকার। কিন্তু বাজেট বাস্তবায়নের সঙ্গে সক্ষমতার কোন মিল নেই। প্রতি বছরই বাজেট ঘাটতি থাকছে। এমকি সংশোধিত রাজেটেও ঘাটতি লক্ষ করা যাচ্ছে। বড় বাজেটে বড় আয়ের লক্ষ্যমাত্রা, কিন্তু সক্ষমতা না থাকায় আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের কোন মিল নেই। আরেকটা বিষয় লক্ষণীয় যে, দুর্নীতি, দুর্বল মনিটরিং আর সক্ষম জনশক্তির অভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয় বা হচ্ছে যে, সক্ষম জনশক্তি গড়ে তোল হবে। কিন্তু সেটা আর হচ্ছে কোথায়?

[লেখক : সাবেক কর কমিশনার, এনবিআর]

back to top