তরিকুল ইসলাম
সড়ক দুর্ঘটনা মানবঘাতক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বর্তমান সময়গুলোতে বাংলাদেশ সড়ক দুর্ঘটনায় অনেক দূর এগিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশ বর্তমান সময়ে বহুবিদ বিষয়ে এগিয়ে আছে। বিশ্বের দেশে দেশে আমাদের দেশের সুনাম ও সুখ্যাতি ব্যাপকভাবে অগ্রগামী। আর ওই সুনাম আর সুখ্যাতিকে মলিন করে দিচ্ছে দেশের সড়ক দুর্ঘটনা। এমন কোন দিন নেই, এমন কোন সময় নেই যে আমাদের দেশের সড়ক ও মহাসড়কগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে না এবং সড়কে ও মহাসড়কে আহতদের আর্তনাদ আর নিহতদের পরিবার পরিজনের বুকভরা কান্না যেকোন মানুষকে কাঁদিয়ে ছাড়ছে। সড়ক দুর্ঘটনার অন্যাতম কারণগুলোর মধ্যে নিয়ন্ত্রণহীন গতিতে অর্থাৎ অতিরিক্ত গতিতে যানবাহন পরিচালনা। সড়কে সড়কে দুর্ঘটনা নয়, রক্তঝরা নয়, লাশ নয়, নিরাপদ সড়কই একমাত্র তার সমাধান, সড়ক ও মহাসড়কগুলো নিরাপদ রাখাই বর্তমানের সর্বাপেক্ষা কাজ।
শুধু গত অক্টোবর মাসে ৩১ দিনে তিন হাজার ৬৬০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০৭ জন নিহত হয়েছে। এতে দেখা যায় গত মাসে গড়ে প্রতিদিন ১৬ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছে আরও তিন হাজার ৭৭৫ জন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের হিসাবে, ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণে বছরব্যাপী লকডাউনে পরিবহন বন্ধ থাকা অবস্থায় ৪৮৯১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৬৮৬ জন নিহত ও ৮ হাজার ৬০০ জন আহত হয়েছে। বিগত ৬ বছরে ৩১ হাজার ৭৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৩ হাজার ৮৫৬ জন নিহত, ৯১ হাজার ৩৫৮ জন আহত হয়েছে।
২০২১ সালে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫ হাজার ৩৭১টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ২৮৪ জন এবং আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৪৬৮ জন। নিহতদের মধ্যে ৮০৩ জন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।
আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ৪ হাজার ১৬৬ জন নিহত হয়েছেন। আগস্ট মাসে সারাদেশে ৪৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১৯ জন নিহত ও ৯৬১ জন আহত হয়েছেন। সেপ্টেম্বর মাসে দেশে ৪০৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৬ জন নিহত হয়েছেন। এই অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সারাদেশে ৩২২টি সড়ক দুর্ঘটনা ৬৩ জন নিহত ও ২৪৪ জন আহত হয়েছেন।
সংখ্যা যাই হোক, সড়কে মৃত্যুর মিছিল যে থামানো যাচ্ছে না তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির প্রায় ৪৭ শতাংশ পথচারী। আমাদের সড়ক-মহাড়কে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ, সিটবেল্ট ব্যবহার, ড্রিংক ড্রাইভ, মানসম্মত হেলমেট ও শিশু আসন ব্যবহার নিশ্চত করা গেলে প্রাণহানি অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব। জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল দুর্ঘটনারোধে একটি সময়োপযোগী সড়ক পরিবহণ আইন করার। আইন হয়েছে। কিন্তু বিধিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন না হওয়ায় এর সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে না।
সরকারি তথ্য বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠান এআরআই বলছে, দেশে ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে। আর চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে ৩৭ শতাংশ। একই সঙ্গে সড়ক নির্মাণে প্রকৌশলগত ত্রুটি ও পথচারীদের অসচেতনতাও দায়ী।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৮ সালের সড়ক দুর্ঘটনাসংক্রান্ত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, সড়ক দুর্ঘটনায় সারাবিশ্বে বছরে সাড়ে ১৩ লাখ মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে ৩০ শতাংশের বয়স ২৫ বছরের কম। বিশ্বে তরুণরা যেসব কারণে বেশি হতাহত হন, এর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা সবার শীর্ষে। এ প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি বছর প্রাণহানি হয় ২৫ হাজার মানুষের।
দেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার উঁচু। কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না সড়ক দুর্ঘটনা। প্রতিদিন মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় হতাহতের বহু ঘটনা ঘটছে। গত ১৬ অক্টোবর রোববারে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে দ্রুতগতির মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে এক ব্যাংক কর্মকর্তাসহ দুজন নিহত ও ১৭ অক্টোবর সোমবারে কুষ্টিয়ায় একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে উল্টে দুই তরুণী নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
কত পরিবার যে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে নিঃস্ব হয়ে গেছে তার সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই। সড়কের এই নিরাপত্তাহীনতা কি চলতেই থাকবে? আমরা কোনমতেই এমন অনিরাপদ সড়ক চাই না। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।
সড়ক দুর্ঘটনা কমে না, মৃত্যুর হার কমে না। বাড়ে, বাড়তেই থাকে। সংক্রমিত হওয়ার নেশায় উন্মাদ হয়ে থাকে শহর থেকে গ্রামগঞ্জে, সর্বত্র। প্রায় প্রতিদিনই পত্রিকার পাতায়, টিভি চ্যানেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। একটা দিনও থেমে নেই, বিরতি নেই। থামছে না। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের সড়ক, মহাসড়কে এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর তান্ডব অহরহ।
সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসে আমাদের প্রত্যাশিত লক্ষ্যে এখনও পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি। আইনের দুর্বল দিক, আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়া, উপযুক্ত আইন প্রণয়নে ও বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের বাধা, সরকারের সদিচ্ছা ও আমাদের সচেতনতার অভাবের কারণে সড়ক দুর্ঘটনারোধ করা যাচ্ছে না। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ প্রণয়নে গণমাধ্যম যেভাবে এগিয়ে এসেছিল ঠিক একইভাবে গণমাধ্যম এগিয়ে আসলে বিধিমালা দ্রুত প্রণয়ন হবে।
সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিভীষিকা থেকে কিছুতেই যেন রক্ষা পাচ্ছে না মানুষ। ফলে এ থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজতে হবে এবং দুর্ঘটনারোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি হিসাবেই গত এক বছরে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। তবে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনার হার ও মৃত্যু বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। যার মধ্যে অন্যতম হলো বিধিমালার দ্রুত প্রণয়ন।
দেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। সড়ক দুর্ঘটনারোধে দুর্ঘটনার কারণগুলো আমলে নিয়ে সেই মোতাবেক কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে এবং দ্রুত বিধিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
[লেখক : অ্যাডভোকেসি অফিসার, কমিউনিকেশন, রোড সেইফটি প্রকল্প, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন]
তরিকুল ইসলাম
সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২
সড়ক দুর্ঘটনা মানবঘাতক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বর্তমান সময়গুলোতে বাংলাদেশ সড়ক দুর্ঘটনায় অনেক দূর এগিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশ বর্তমান সময়ে বহুবিদ বিষয়ে এগিয়ে আছে। বিশ্বের দেশে দেশে আমাদের দেশের সুনাম ও সুখ্যাতি ব্যাপকভাবে অগ্রগামী। আর ওই সুনাম আর সুখ্যাতিকে মলিন করে দিচ্ছে দেশের সড়ক দুর্ঘটনা। এমন কোন দিন নেই, এমন কোন সময় নেই যে আমাদের দেশের সড়ক ও মহাসড়কগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে না এবং সড়কে ও মহাসড়কে আহতদের আর্তনাদ আর নিহতদের পরিবার পরিজনের বুকভরা কান্না যেকোন মানুষকে কাঁদিয়ে ছাড়ছে। সড়ক দুর্ঘটনার অন্যাতম কারণগুলোর মধ্যে নিয়ন্ত্রণহীন গতিতে অর্থাৎ অতিরিক্ত গতিতে যানবাহন পরিচালনা। সড়কে সড়কে দুর্ঘটনা নয়, রক্তঝরা নয়, লাশ নয়, নিরাপদ সড়কই একমাত্র তার সমাধান, সড়ক ও মহাসড়কগুলো নিরাপদ রাখাই বর্তমানের সর্বাপেক্ষা কাজ।
শুধু গত অক্টোবর মাসে ৩১ দিনে তিন হাজার ৬৬০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০৭ জন নিহত হয়েছে। এতে দেখা যায় গত মাসে গড়ে প্রতিদিন ১৬ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছে আরও তিন হাজার ৭৭৫ জন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের হিসাবে, ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণে বছরব্যাপী লকডাউনে পরিবহন বন্ধ থাকা অবস্থায় ৪৮৯১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৬৮৬ জন নিহত ও ৮ হাজার ৬০০ জন আহত হয়েছে। বিগত ৬ বছরে ৩১ হাজার ৭৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৩ হাজার ৮৫৬ জন নিহত, ৯১ হাজার ৩৫৮ জন আহত হয়েছে।
২০২১ সালে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫ হাজার ৩৭১টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ২৮৪ জন এবং আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৪৬৮ জন। নিহতদের মধ্যে ৮০৩ জন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।
আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ৪ হাজার ১৬৬ জন নিহত হয়েছেন। আগস্ট মাসে সারাদেশে ৪৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১৯ জন নিহত ও ৯৬১ জন আহত হয়েছেন। সেপ্টেম্বর মাসে দেশে ৪০৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৬ জন নিহত হয়েছেন। এই অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সারাদেশে ৩২২টি সড়ক দুর্ঘটনা ৬৩ জন নিহত ও ২৪৪ জন আহত হয়েছেন।
সংখ্যা যাই হোক, সড়কে মৃত্যুর মিছিল যে থামানো যাচ্ছে না তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির প্রায় ৪৭ শতাংশ পথচারী। আমাদের সড়ক-মহাড়কে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ, সিটবেল্ট ব্যবহার, ড্রিংক ড্রাইভ, মানসম্মত হেলমেট ও শিশু আসন ব্যবহার নিশ্চত করা গেলে প্রাণহানি অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব। জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল দুর্ঘটনারোধে একটি সময়োপযোগী সড়ক পরিবহণ আইন করার। আইন হয়েছে। কিন্তু বিধিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন না হওয়ায় এর সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে না।
সরকারি তথ্য বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠান এআরআই বলছে, দেশে ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে। আর চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে ৩৭ শতাংশ। একই সঙ্গে সড়ক নির্মাণে প্রকৌশলগত ত্রুটি ও পথচারীদের অসচেতনতাও দায়ী।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৮ সালের সড়ক দুর্ঘটনাসংক্রান্ত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, সড়ক দুর্ঘটনায় সারাবিশ্বে বছরে সাড়ে ১৩ লাখ মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে ৩০ শতাংশের বয়স ২৫ বছরের কম। বিশ্বে তরুণরা যেসব কারণে বেশি হতাহত হন, এর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা সবার শীর্ষে। এ প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি বছর প্রাণহানি হয় ২৫ হাজার মানুষের।
দেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার উঁচু। কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না সড়ক দুর্ঘটনা। প্রতিদিন মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় হতাহতের বহু ঘটনা ঘটছে। গত ১৬ অক্টোবর রোববারে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে দ্রুতগতির মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে এক ব্যাংক কর্মকর্তাসহ দুজন নিহত ও ১৭ অক্টোবর সোমবারে কুষ্টিয়ায় একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে উল্টে দুই তরুণী নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
কত পরিবার যে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে নিঃস্ব হয়ে গেছে তার সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই। সড়কের এই নিরাপত্তাহীনতা কি চলতেই থাকবে? আমরা কোনমতেই এমন অনিরাপদ সড়ক চাই না। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।
সড়ক দুর্ঘটনা কমে না, মৃত্যুর হার কমে না। বাড়ে, বাড়তেই থাকে। সংক্রমিত হওয়ার নেশায় উন্মাদ হয়ে থাকে শহর থেকে গ্রামগঞ্জে, সর্বত্র। প্রায় প্রতিদিনই পত্রিকার পাতায়, টিভি চ্যানেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। একটা দিনও থেমে নেই, বিরতি নেই। থামছে না। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের সড়ক, মহাসড়কে এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর তান্ডব অহরহ।
সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসে আমাদের প্রত্যাশিত লক্ষ্যে এখনও পর্যন্ত পৌঁছাতে পারিনি। আইনের দুর্বল দিক, আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়া, উপযুক্ত আইন প্রণয়নে ও বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের বাধা, সরকারের সদিচ্ছা ও আমাদের সচেতনতার অভাবের কারণে সড়ক দুর্ঘটনারোধ করা যাচ্ছে না। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ প্রণয়নে গণমাধ্যম যেভাবে এগিয়ে এসেছিল ঠিক একইভাবে গণমাধ্যম এগিয়ে আসলে বিধিমালা দ্রুত প্রণয়ন হবে।
সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর বিভীষিকা থেকে কিছুতেই যেন রক্ষা পাচ্ছে না মানুষ। ফলে এ থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজতে হবে এবং দুর্ঘটনারোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি হিসাবেই গত এক বছরে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। তবে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনার হার ও মৃত্যু বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। যার মধ্যে অন্যতম হলো বিধিমালার দ্রুত প্রণয়ন।
দেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। সড়ক দুর্ঘটনারোধে দুর্ঘটনার কারণগুলো আমলে নিয়ে সেই মোতাবেক কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে এবং দ্রুত বিধিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
[লেখক : অ্যাডভোকেসি অফিসার, কমিউনিকেশন, রোড সেইফটি প্রকল্প, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন]