alt

উপ-সম্পাদকীয়

সাম্প্রতিক কিছু অগ্নিকাণ্ড ও সিগারেটের জ্বলন্ত অংশ

অরূপরতন চৌধুরী

: বুধবার, ১৭ মে ২০২৩

আবহাওয়ার অত্যধিক তাপদাহে বর্তমানে জনজীবন ওষ্ঠাগত। সারাদেশে (বিশেষ করে ঢাকায়) প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। গ্রীষ্মে স্বাভাবিকভাবেই গরম বাড়ে কিন্তু, বর্তমানে রোদের উত্তাপ অসহনীয়। ঢাকায় যান্ত্রিক যানবাহনের আধিক্য, কংক্রিটের দালানকোঠা ক্রমাগত বৃদ্ধি এবং খোলা উদ্যান, মাটি, গাছপালা, পানির প্রাকৃতিক আধারগুলো কমে যাওয়ায় দিন দিন অবস্থার অবনতি হচ্ছে। দেশে বিদ্যমান আবহাওয়ার সঙ্গে বাতাস এবং আগুনের একটা যোগসূত্র রয়েছে। কেননা, এমন দিনে বিভিন্ন ধাতব বস্তু, অধিক তাপে শুকিয়ে যাওয়া জিনিসপত্র, মচমচে খড়কুটো, শুকনো পাতায় আগুন লাগে খুব সহজেই এবং বাতাসে নিমিশেই ছড়িয়ে অভাবনীয় ক্ষয়-ক্ষতি ও প্রাণহানির কারণ হয়ে থাকে। যা প্রতীয়মান হয়েছে বিগত কিছু দিন থেকেই। কারণ, দেশে সাম্প্রতিক সময়ে ‘অগ্নিকাণ্ড’ অতি আলোচিত একটি বিষয়।

গত মাসের ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজারের চারটি মার্কেটে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে গেছে প্রায় ৫ হাজার দোকান। চার মার্কেটে এবং আশপাশের কয়েকটি মার্কেটের মোট ৩ হাজার ৮৪৫ জন ব্যবসায়ী চরম ক্ষতির শিকার হয়েছেন এ অগ্নিকাণ্ডের কারণে। তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, মৃত্যু বা হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও এতে অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে ১৪ কোটি ৭০ লাখ ও মার্কেটের মালামালের ক্ষতির পরিমাণ ২৮৮ কোটি ৩৫০ লাখ টাকা। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট বা ঘটনাটি নাশকতা নয়, তদন্তকারী দল এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত সিগারেটের আগুন থেকে হয়েছে বলে সর্বাধিক যুক্তি হিসেবে উত্থাপন করেছেন! যা গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশ পেয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিটের সঙ্গে সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যরাও যোগ দিয়েছিলেন। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। রোজার ঈদের ঠিক আগ মুহূর্তে রাজধানী একটি বৃহত্তর পাইকারী কাপড়ের মার্কেটে এমন দুর্ঘটনায় হাজার হাজার ব্যবসায়ীদের অনাকাক্সিক্ষত ক্ষয়-ক্ষতি ও তাদের আহাজারি মনে দাগ কেটেছে সবার। তাদের জন্য মনটা ব্যথিত হয়েছে।

বঙ্গবাজারে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় অগ্নি দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গত ১৫ এপ্রিল ঢাকা নিউমার্কেটে আগুনে পুড়ে যায় অসংখ্য দোকান। এছাড়াও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিপণী বিতান, বাসা বাড়ি ও শিল্প কারখানায় অসংখ্য অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ গণমাধ্যমের কল্যাণে জানা গেছে।

বাংলাদেশে বিভিণ্ন বাণিজ্যিক ভবন, প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়িতে ঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পিছনে বিভিন্ন কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের প্রতিবেদনে অগ্নিকাণ্ডের প্রধান তিনটি কারণ হচ্ছে- বৈদ্যুতিক ক্রটি, সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরো ও চুলা। বৈদ্যুতিক গোলাযোগের কারণে বেশি দুর্ঘটনা ঘটলেও বিড়ি-সিগারেটের জলন্ত টুকরো থেকে অগ্নিকাণ্ড উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। কারণ, বাংলাদেশ পৃথিবীর শীর্ষ ১০টি ধূমপায়ী জনবহুল দেশের মধ্যে অন্যতম একটি। শতকরা ৩৫.৩ (৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ) মানুষ বিভিন্ন উপায়ে তামাকসেবন করেন। ধূমপান তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মাধ্যম।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্যমতে, ২০২১ সালে শুধু বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরো থেকে ৩ হাজার ১৯৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে! যা মোট অগ্নিকাণ্ডের ১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২০২২ সালে একই কারণে ৩ হাজার ৮৭৮টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ২ শতাংশ বেড়ে এই হার দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে। ২০২১-২০২২ সালে এ সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে মোট ৪৮ কোটি টাকার বেশি। ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বিড়ি-সিগারেটের ফেলে দেয়া জ্বলন্ত টুকরো থেকে ১৭ হাজার ৭৯৭টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যা রীতিমতো উদ্বেগজনক!

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের প্রতিবেদনে অগ্নিকাণ্ডের প্রধান তিনটি কারণ হচ্ছে- বৈদ্যুতিক ত্রুটি, সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরো ও চুলা। বৈদ্যুতিক গোলাযোগের কারণে বেশি দুর্ঘটনা ঘটলেও বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরো থেকে অগ্নিকাণ্ড উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে

লক্ষ্য করলে দেখা যায়, গেছে বেশির ভাগ ধূমপায়ী শেষ টান দিয়ে জ্বলন্ত সিগারেটটি যেখানে সেখানে ছুড়ে ফেলে দেন। এর কারণ হলো- আমাদের দেশের মানুষ এইভাবেই জ্বলন্ত সিগারেট ছুড়ে ফেলে দিয়ে অভ্যস্ত। অথচ, এরাই বিদেশে গিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে সিগারেটের উচ্ছিষ্টাংশ বা ময়লা ফেলতে ভুল করেন না। অভ্যস্ততা যেমন এর একটি বড় কারণ, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়া একটি বড় কারণ। আবাসিক এলাকায় নিয়মবহির্ভূত কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থ মজুদসহ বিভিন্ন অনিয়ম অগ্নিদুর্ঘটনায় আগুনের স্ফুলিঙ্গ বাড়িয়ে দেয়।

সিগারেট বা তামাক সেবন : এক ধরনের স্বাস্থ্যহানিকর নেশা। বহুকাল থেকে মানুষ তামাক ধোঁয়াহীন তামাক বা জর্দা, গুল, খৈনী এবং ধোঁয়াযুক্ত তামাক বা সিগারেট, চুরুট, হুক্কা, পাইপ ইত্যাদি ব্যবহার করে আসছে। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের মতে, এই দুই ধরনের তামাকই দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তামাক এবং বিড়ি সিগারেটের ধোঁয়ায় ৭০০০ এর বেশি ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। যার মধ্যে ৭০টি রাসায়নিক পদার্থ সরাসরি ক্যান্সার সৃষ্টি করে। এর মধ্যে নিকোটিন, কার্বণ মনোক্সাইড, হাইড্রোজেন সায়ানাইড, বেনজোপাইরিন, ফরমালডিহাইড, এমোনিয়া, পোলোনিয়াম ২১০ উল্লেখযোগ্য।

তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বিশে^ বছরে ৮৭ লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারায়। বাংলাদেশে তামাকের কারণে বছরে প্রাণহানি ঘটে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি (টোব্যাকো অ্যাটলাস-২০১৮)। পরোক্ষভাবেও তামাক মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে। গ্লোব্যাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস্) ২০১৭ তে দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে ৪২.৭ শতাংশ, গণপরিবহনে প্রায় ৪৪ শতাংশ এবং ৪৯.৭ শতাংশ মানুষ রেস্তোরাঁয় পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। বাড়ি, গণপরিবহন, কর্মক্ষেত্র ও জনসমাগমস্থল মিলিয়ে এই সংখ্যা প্রায় ৮ কোটি! বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৬১,০০০ শিশু পরোক্ষ ধূমপানজনিত বিভিন্ন অসুখে ভোগে। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে পৃথিবীতে বছরে ১২ লাখ মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করে। (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা)। উপরন্তু, সিগারেটের আগুনে পুড়ে আঙ্গার হয়ে যাচ্ছে দেশের সম্পদ, সহায়সম্বল ও মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।

তামাকের বহুমাত্রিক ক্ষতি কমাতে দেশে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন’ (২০১৩ সালে সংশোধিত) প্রণীত হয়েছে তামাক ব্যবহার নিরুৎসাহিত ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্যে। আইন অনুসারে, সবাই ‘পাবলিক প্লেস’ এবং ‘পাবলিক পরিবহন’ ধূমপানমুক্ত। আইন অনুসারে, পাবলিক প্লেসে ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আইনে উল্লেখিত পাবলিক প্লেসে ও পরিবহনে ধূমপান করলে ব্যক্তির ৩০০ টাকা জরিমানা হবে। অফিস এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান প্রধানের পক্ষ থেকেও স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানসমূহ ধূমপানমুক্ত নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ, এই সমস্ত স্থানেই ধূমপান করা হচ্ছে এবং জ্বলন্ত সিগারেট যেখানে সেখানে ফেলে দিয়ে অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনার সূত্রপাত করা হচ্ছে। এমন দায়িত্ব জ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড বন্ধে পাবলিক প্লেসগুলোতে ধূমপান পুরোপুরি বন্ধে কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে।

অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়াবহ সমস্যাকে রোধ করতে হলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সংশ্লিষ্ট নীতি ও নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। সেই সঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন, মেট্রোপলিটন আইন, স্থানীয় সরকার আইন বাস্তব ও কঠিন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে পাবলিক প্লেস, পরিবহনের মালিক/তত্ত্বাবধায়কদের আওতাধীন স্ব-স্ব স্থানগুলোতে আইন অনুসারে ‘ধূমপান হইতে বিরত থাকুন, ইহা শাস্তিযোগ্য অপরাধ’ বার্তা দৃশ্যমান স্থানে টাঙাতে হবে এবং নিয়মিত সেটা মনিটরিং করতে হবে। যাতে জনগণের সেটা নজরে আসে এবং মনিটরিংয়ের ফলে যেন সচেতনতা সৃষ্টি হয়। কারণ, এখনো অনেক অফিস ভবনে কিংবা সিঁড়িতে বা অফিসের বারান্দায় এমনকি ছাদেও মানুষ ধূমপান করে, এবং জ্বলন্ত অংশ না নিভিয়ে ফেলে দেয়, সেখান থেকে আগুণের সূত্রপাত হয়।

বর্তমানে আরেকটি সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, তা হলো ‘ধূমপানের স্থান’। তামাক কোম্পানিগুলো তরুণদের জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টে স্পন্সরের মাধ্যমে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ তৈরি করে দিচ্ছে। এসব স্থানে তামাকের বিজ্ঞাপনও প্রচার করতে দেখা যাচ্ছে। অধিকাংশ রেস্টুরেন্টে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ আশপাশের স্থানকে সুরক্ষিত রাখছে না। ধূমপানের ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের নারী, শিশু ও অসংখ্য অধূমপায়ীকে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার বানাচ্ছে। বাড়িয়ে দিচ্ছে অগ্নিকাণ্ড এবং ঝুঁকি। সামাজিক মেলবন্ধনের জায়গায় কেন ধূমপানের জন্য আলাদা করে স্থান বরাদ্দ করতে হবে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করেই ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করা হোক। এতে ধূমপায়ীরা ধূমপান ত্যাগে উৎসাহিত হতে পারে এবং সুরক্ষিত থাকবে নারী, শিশু, অধূমপায়ীরা। অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাবনাও কমে যাবে।

মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মহান দায়িত্ব রাষ্ট্রের। দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে কিছু সুনির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান আছে তবে, মূল দায়িত্ব আমার, আপনার, সবার। তাই নিজের এবং আশপাশের প্রিয় মানুষগুলোর ক্ষতি হয় এমন খারাপ অভ্যাস ‘ধূমপান’ ত্যাগ করুন। নিজে নিরাপদ থাকুন, অন্যকে নিরাপদ রাখুন।

[লেখক: প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস)]

ফলের রাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছবি

তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি : বামপন্থীরা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারে না

জমি আপনার, দখল অন্যের?

সিধু-কানু : ধ্বংসস্তূপের নিচেও জেগে আছে সাহস

ছবি

বাংলার অনন্য লোকসংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক চেতনা

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান

তিন দিক থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি : করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া

দেশের অর্থ পাচারের বাস্তবতা

খাদ্য নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত

আবারও কি রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবে বিশ্ব?

প্লান্ট ক্লিনিক বদলে দিচ্ছে কৃষির ভবিষ্যৎ

ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরী করতে করণীয়

রম্যগদ্য : ‘ডন ডনা ডন ডন...’

ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব : কে সন্ত্রাসী, কে শিকার?

সুস্থ ও শক্তিশালী জাতি গঠনে শারীরিক শিক্ষার গুরুত্ব

প্রতিরোধই উত্তম : মাদকমুক্ত প্রজন্ম গড়ার ডাক

ছবি

বিকাশের পথকে পরিত্যাগ করা যাবে না

বর্ষা ও বৃক্ষরোপণ : সবুজ বিপ্লবের আহ্বান

প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়া রোধে শিক্ষকের করণীয়

পারমাণবিক ন্যায়বিচার ও বৈশ্বিক ভণ্ডামির প্রতিচ্ছবি

পরিবেশের নীরব রক্ষক : শকুন সংরক্ষণে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন

মশার উপদ্রব : জনস্বাস্থ্য ও নগর ব্যবস্থাপনার চরম ব্যর্থতা

ভুল স্বীকারে গ্লানি নেই

ভাঙনের বুকে টিকে থাকা স্বপ্ন

একটি সফর, একাধিক সংকেত : কে পেল কোন বার্তা?

দেশের কারা ব্যবস্থার বাস্তবতা

ইসলামী ব্যাংক একীভূতকরণ : আস্থা ফেরাতে সংস্কার, না দায়মুক্তির প্রহসন?

রম্যগদ্য : চাঁদাবাজি চলছে, চলবে

বায়ুদূষণ : নীরব ঘাতক

ইসরায়েলের কৌশলগত ঔদ্ধত্য

পরিবার : সুনাগরিক ও সুশাসক তৈরির ভিত্তিমূল

শিল্পে গ্যাস সংকট : দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নিন

আমাদের লড়াইটা আমাদের লড়তে দিন

ব্যাকবেঞ্চারদের পৃথিবী : ব্যর্থতার গায়ে সাফল্যের ছাপ

আমের অ্যানথ্রাকনোজ ও বোঁটা পঁচা রোগ

শিশুদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি : স্কুল ব্যাংকিংয়ের সম্ভাবনা ও সংকট

tab

উপ-সম্পাদকীয়

সাম্প্রতিক কিছু অগ্নিকাণ্ড ও সিগারেটের জ্বলন্ত অংশ

অরূপরতন চৌধুরী

বুধবার, ১৭ মে ২০২৩

আবহাওয়ার অত্যধিক তাপদাহে বর্তমানে জনজীবন ওষ্ঠাগত। সারাদেশে (বিশেষ করে ঢাকায়) প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। গ্রীষ্মে স্বাভাবিকভাবেই গরম বাড়ে কিন্তু, বর্তমানে রোদের উত্তাপ অসহনীয়। ঢাকায় যান্ত্রিক যানবাহনের আধিক্য, কংক্রিটের দালানকোঠা ক্রমাগত বৃদ্ধি এবং খোলা উদ্যান, মাটি, গাছপালা, পানির প্রাকৃতিক আধারগুলো কমে যাওয়ায় দিন দিন অবস্থার অবনতি হচ্ছে। দেশে বিদ্যমান আবহাওয়ার সঙ্গে বাতাস এবং আগুনের একটা যোগসূত্র রয়েছে। কেননা, এমন দিনে বিভিন্ন ধাতব বস্তু, অধিক তাপে শুকিয়ে যাওয়া জিনিসপত্র, মচমচে খড়কুটো, শুকনো পাতায় আগুন লাগে খুব সহজেই এবং বাতাসে নিমিশেই ছড়িয়ে অভাবনীয় ক্ষয়-ক্ষতি ও প্রাণহানির কারণ হয়ে থাকে। যা প্রতীয়মান হয়েছে বিগত কিছু দিন থেকেই। কারণ, দেশে সাম্প্রতিক সময়ে ‘অগ্নিকাণ্ড’ অতি আলোচিত একটি বিষয়।

গত মাসের ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজারের চারটি মার্কেটে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে গেছে প্রায় ৫ হাজার দোকান। চার মার্কেটে এবং আশপাশের কয়েকটি মার্কেটের মোট ৩ হাজার ৮৪৫ জন ব্যবসায়ী চরম ক্ষতির শিকার হয়েছেন এ অগ্নিকাণ্ডের কারণে। তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, মৃত্যু বা হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও এতে অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে ১৪ কোটি ৭০ লাখ ও মার্কেটের মালামালের ক্ষতির পরিমাণ ২৮৮ কোটি ৩৫০ লাখ টাকা। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট বা ঘটনাটি নাশকতা নয়, তদন্তকারী দল এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত সিগারেটের আগুন থেকে হয়েছে বলে সর্বাধিক যুক্তি হিসেবে উত্থাপন করেছেন! যা গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশ পেয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিটের সঙ্গে সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যরাও যোগ দিয়েছিলেন। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। রোজার ঈদের ঠিক আগ মুহূর্তে রাজধানী একটি বৃহত্তর পাইকারী কাপড়ের মার্কেটে এমন দুর্ঘটনায় হাজার হাজার ব্যবসায়ীদের অনাকাক্সিক্ষত ক্ষয়-ক্ষতি ও তাদের আহাজারি মনে দাগ কেটেছে সবার। তাদের জন্য মনটা ব্যথিত হয়েছে।

বঙ্গবাজারে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় অগ্নি দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গত ১৫ এপ্রিল ঢাকা নিউমার্কেটে আগুনে পুড়ে যায় অসংখ্য দোকান। এছাড়াও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিপণী বিতান, বাসা বাড়ি ও শিল্প কারখানায় অসংখ্য অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ গণমাধ্যমের কল্যাণে জানা গেছে।

বাংলাদেশে বিভিণ্ন বাণিজ্যিক ভবন, প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়িতে ঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পিছনে বিভিন্ন কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের প্রতিবেদনে অগ্নিকাণ্ডের প্রধান তিনটি কারণ হচ্ছে- বৈদ্যুতিক ক্রটি, সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরো ও চুলা। বৈদ্যুতিক গোলাযোগের কারণে বেশি দুর্ঘটনা ঘটলেও বিড়ি-সিগারেটের জলন্ত টুকরো থেকে অগ্নিকাণ্ড উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। কারণ, বাংলাদেশ পৃথিবীর শীর্ষ ১০টি ধূমপায়ী জনবহুল দেশের মধ্যে অন্যতম একটি। শতকরা ৩৫.৩ (৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ) মানুষ বিভিন্ন উপায়ে তামাকসেবন করেন। ধূমপান তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মাধ্যম।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্যমতে, ২০২১ সালে শুধু বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরো থেকে ৩ হাজার ১৯৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে! যা মোট অগ্নিকাণ্ডের ১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২০২২ সালে একই কারণে ৩ হাজার ৮৭৮টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ২ শতাংশ বেড়ে এই হার দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে। ২০২১-২০২২ সালে এ সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে মোট ৪৮ কোটি টাকার বেশি। ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বিড়ি-সিগারেটের ফেলে দেয়া জ্বলন্ত টুকরো থেকে ১৭ হাজার ৭৯৭টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যা রীতিমতো উদ্বেগজনক!

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের প্রতিবেদনে অগ্নিকাণ্ডের প্রধান তিনটি কারণ হচ্ছে- বৈদ্যুতিক ত্রুটি, সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরো ও চুলা। বৈদ্যুতিক গোলাযোগের কারণে বেশি দুর্ঘটনা ঘটলেও বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরো থেকে অগ্নিকাণ্ড উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে

লক্ষ্য করলে দেখা যায়, গেছে বেশির ভাগ ধূমপায়ী শেষ টান দিয়ে জ্বলন্ত সিগারেটটি যেখানে সেখানে ছুড়ে ফেলে দেন। এর কারণ হলো- আমাদের দেশের মানুষ এইভাবেই জ্বলন্ত সিগারেট ছুড়ে ফেলে দিয়ে অভ্যস্ত। অথচ, এরাই বিদেশে গিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে সিগারেটের উচ্ছিষ্টাংশ বা ময়লা ফেলতে ভুল করেন না। অভ্যস্ততা যেমন এর একটি বড় কারণ, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়া একটি বড় কারণ। আবাসিক এলাকায় নিয়মবহির্ভূত কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থ মজুদসহ বিভিন্ন অনিয়ম অগ্নিদুর্ঘটনায় আগুনের স্ফুলিঙ্গ বাড়িয়ে দেয়।

সিগারেট বা তামাক সেবন : এক ধরনের স্বাস্থ্যহানিকর নেশা। বহুকাল থেকে মানুষ তামাক ধোঁয়াহীন তামাক বা জর্দা, গুল, খৈনী এবং ধোঁয়াযুক্ত তামাক বা সিগারেট, চুরুট, হুক্কা, পাইপ ইত্যাদি ব্যবহার করে আসছে। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের মতে, এই দুই ধরনের তামাকই দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তামাক এবং বিড়ি সিগারেটের ধোঁয়ায় ৭০০০ এর বেশি ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। যার মধ্যে ৭০টি রাসায়নিক পদার্থ সরাসরি ক্যান্সার সৃষ্টি করে। এর মধ্যে নিকোটিন, কার্বণ মনোক্সাইড, হাইড্রোজেন সায়ানাইড, বেনজোপাইরিন, ফরমালডিহাইড, এমোনিয়া, পোলোনিয়াম ২১০ উল্লেখযোগ্য।

তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বিশে^ বছরে ৮৭ লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারায়। বাংলাদেশে তামাকের কারণে বছরে প্রাণহানি ঘটে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি (টোব্যাকো অ্যাটলাস-২০১৮)। পরোক্ষভাবেও তামাক মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে। গ্লোব্যাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস্) ২০১৭ তে দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে ৪২.৭ শতাংশ, গণপরিবহনে প্রায় ৪৪ শতাংশ এবং ৪৯.৭ শতাংশ মানুষ রেস্তোরাঁয় পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। বাড়ি, গণপরিবহন, কর্মক্ষেত্র ও জনসমাগমস্থল মিলিয়ে এই সংখ্যা প্রায় ৮ কোটি! বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৬১,০০০ শিশু পরোক্ষ ধূমপানজনিত বিভিন্ন অসুখে ভোগে। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে পৃথিবীতে বছরে ১২ লাখ মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করে। (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা)। উপরন্তু, সিগারেটের আগুনে পুড়ে আঙ্গার হয়ে যাচ্ছে দেশের সম্পদ, সহায়সম্বল ও মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।

তামাকের বহুমাত্রিক ক্ষতি কমাতে দেশে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন’ (২০১৩ সালে সংশোধিত) প্রণীত হয়েছে তামাক ব্যবহার নিরুৎসাহিত ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্যে। আইন অনুসারে, সবাই ‘পাবলিক প্লেস’ এবং ‘পাবলিক পরিবহন’ ধূমপানমুক্ত। আইন অনুসারে, পাবলিক প্লেসে ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আইনে উল্লেখিত পাবলিক প্লেসে ও পরিবহনে ধূমপান করলে ব্যক্তির ৩০০ টাকা জরিমানা হবে। অফিস এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান প্রধানের পক্ষ থেকেও স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানসমূহ ধূমপানমুক্ত নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ, এই সমস্ত স্থানেই ধূমপান করা হচ্ছে এবং জ্বলন্ত সিগারেট যেখানে সেখানে ফেলে দিয়ে অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনার সূত্রপাত করা হচ্ছে। এমন দায়িত্ব জ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড বন্ধে পাবলিক প্লেসগুলোতে ধূমপান পুরোপুরি বন্ধে কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে।

অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়াবহ সমস্যাকে রোধ করতে হলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সংশ্লিষ্ট নীতি ও নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। সেই সঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন, মেট্রোপলিটন আইন, স্থানীয় সরকার আইন বাস্তব ও কঠিন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে পাবলিক প্লেস, পরিবহনের মালিক/তত্ত্বাবধায়কদের আওতাধীন স্ব-স্ব স্থানগুলোতে আইন অনুসারে ‘ধূমপান হইতে বিরত থাকুন, ইহা শাস্তিযোগ্য অপরাধ’ বার্তা দৃশ্যমান স্থানে টাঙাতে হবে এবং নিয়মিত সেটা মনিটরিং করতে হবে। যাতে জনগণের সেটা নজরে আসে এবং মনিটরিংয়ের ফলে যেন সচেতনতা সৃষ্টি হয়। কারণ, এখনো অনেক অফিস ভবনে কিংবা সিঁড়িতে বা অফিসের বারান্দায় এমনকি ছাদেও মানুষ ধূমপান করে, এবং জ্বলন্ত অংশ না নিভিয়ে ফেলে দেয়, সেখান থেকে আগুণের সূত্রপাত হয়।

বর্তমানে আরেকটি সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, তা হলো ‘ধূমপানের স্থান’। তামাক কোম্পানিগুলো তরুণদের জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টে স্পন্সরের মাধ্যমে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ তৈরি করে দিচ্ছে। এসব স্থানে তামাকের বিজ্ঞাপনও প্রচার করতে দেখা যাচ্ছে। অধিকাংশ রেস্টুরেন্টে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ আশপাশের স্থানকে সুরক্ষিত রাখছে না। ধূমপানের ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের নারী, শিশু ও অসংখ্য অধূমপায়ীকে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার বানাচ্ছে। বাড়িয়ে দিচ্ছে অগ্নিকাণ্ড এবং ঝুঁকি। সামাজিক মেলবন্ধনের জায়গায় কেন ধূমপানের জন্য আলাদা করে স্থান বরাদ্দ করতে হবে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করেই ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করা হোক। এতে ধূমপায়ীরা ধূমপান ত্যাগে উৎসাহিত হতে পারে এবং সুরক্ষিত থাকবে নারী, শিশু, অধূমপায়ীরা। অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাবনাও কমে যাবে।

মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মহান দায়িত্ব রাষ্ট্রের। দেখভাল ও রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে কিছু সুনির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান আছে তবে, মূল দায়িত্ব আমার, আপনার, সবার। তাই নিজের এবং আশপাশের প্রিয় মানুষগুলোর ক্ষতি হয় এমন খারাপ অভ্যাস ‘ধূমপান’ ত্যাগ করুন। নিজে নিরাপদ থাকুন, অন্যকে নিরাপদ রাখুন।

[লেখক: প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস)]

back to top