alt

পাঠকের চিঠি

গৌরবের প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

: বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

এ দেশের শিক্ষা বিস্তার, গবেষণা কার্যক্রম ও সব আন্দোলন সংগ্রামে এক গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের তথা পূর্ব বাংলার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালের ১ জুলাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।

ঢাকা হলের প্রথম প্রভোস্ট ছিলেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ এফ. সি. সি. টার্নার। শুরুতে একমাত্র ঢাকা হলেরই নিজস্ব ভবনে ছিল; কার্জন হল মিলনায়তনটি তার অধিকারভুক্ত ছিল সে কারণে একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের শিক্ষাবহির্ভূত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে ঢাকা হল ছাত্র সংসদের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। দেশ বিভাগের পর ঢাকা হলই ছিল প্রগতিশীল বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের সূতিকাগার, ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলন মহান গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়েছিল ঢাকা হলের প্রগতিশীল ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামানের শহীদ হওয়ার মাধ্যমে।

১৯২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢাকা আসেন এবং কার্জন হলে ১০ ফেব্রুয়ারি দি মিনিং অব আর্ট এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি দি বিগ অ্যান্ড দি কমপ্লেক্স বিষয়ে বক্তৃতা প্রদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম তিনটি হল থেকে রবীন্দ্রনাথকে সংবর্ধনা জানানোর আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণে রবীন্দ্রনাথ কেবল মুসলিম হলের সংবর্ধনা সভায় যোগদান করতে পেরেছিলেন। ১৯২৫ সালের ১৯ জানুয়ারি মুসলিম সাহিত্য সমাজ গঠিত হয়। এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন অধ্যাপক আবুল হোসেন।

মুসলিম সাহিত্য সমাজের মুখপাত্র ছিল শিখা নামক বার্ষিকী। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম সাহিত্য সমাজের প্রথম বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ১৯২৭ সালে। ১৯৩৫-৩৬ সালে শ্রীমতী করুণাকণা গুপ্তা ইতিহাস বিভাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা শিক্ষিকা হলেন। ১৯২১ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সে সময়ে রমনা এলাকা ছিল ঢাকার সবচেয়ে অভিজাত এবং সৌন্দর্যম-িত এলাকা। এই অঞ্চলের প্রায় ৬০০ একর জমির উপরে বিভিন্ন ভবন এবং ঢাকা কলেজের বর্তমান কার্জন হল ভবনসমূহে সমন্বয়ে গড়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই দিনটি অর্থাৎ পহেলা জুলাই প্রতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তিনটি অনুষদ এবং বারোটা বিভাগ নিয়ে তার যাত্রা শুরু করে। ঢাকা কলেজ এবং জগন্নাথ কলেজ বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি কলেজে অধ্যায়নরত ছাত্রদের নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষাক্রম শুরু করে। শুধু ছাত্র নয় শিক্ষক এবং লাইব্রেরি ও অন্যান্য উপকরণ দিয়েও এই দুটি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতিতে সাহায্য করে।

প্রথম শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন বিভাগে মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৮৭৭। জন অপরদিকে শিক্ষক ছিল ৬০ জন। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠিত হলে, তখন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল আর তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এর ফলে এ দেশের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা আবার উজ্জীবিত হয়। নতুন উদ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। তখনকার পূর্ববাংলায় অবস্থিত ৫৫টি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত দেশের প্রয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অনেক ছাত্র-ছাত্রী নিহত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের গৌরবের প্রতিষ্ঠান। আমাদের সব আন্দোলন সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু।

এস ডি সুব্রত

কনভেনশন হলের প্রতারণা

ছবি

অনলাইন জুয়া বন্ধে এগিয়ে আসুন

প্রতিষ্ঠান পানিতে ভাসছে

নতুন শিক্ষা কারিকুলামে ইংরেজি শিক্ষা

রাজধানীতে ছিনতাই বন্ধ হচ্ছে না কেন

ছবি

সিলেটে ভয়াবহ বন্যার কারণ

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান কী

কুমিল্লায় কিশোর গ্যাং

ছবি

হাকালুকি হাওরের গুরুত্ব

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি কি?

চবির আলাওল হলে প্রভোস্ট চাই

গণিত ও ইংরেজিতে কেন এত দুর্বলতা

ছবি

যানজটে অপচয় হচ্ছে কর্মঘণ্টা

ছবি

প্লাস্টিক দূষণ প্রতিকার প্রসঙ্গে

কুষ্টিয়ায় শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয় চাই

এসআই ও সার্জেন্ট নিয়োগে বয়সসীমা বাড়ানো হোক

ছবি

স্কাউটে আছে আনন্দের জগৎ

সম্মাননা স্মারক কি শুধুই একটি শব্দ

মোবাইল আসক্তি

খেলাপি ঋণ আদায়ে পদক্ষেপ নিন

বই হোক প্রকৃত বন্ধু

ছবি

তীব্র তাপপ্রবাহে সচেতনতা জরুরি

ব্রিজ চাই

প্রসঙ্গ : পরিযায়ী পাখি

ছবি

পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগাতে হবে

ছবি

গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুতের লোডশেডিং কমাতে হবে

কেন এত আত্মহত্যা

দুর্নীতি বন্ধ হবে কবে

ছবি

বজ্রপাত থেকে বাঁচতে চাই সচেতনতা

পিতা-মাতার স্থান হোক সন্তানের কাছে, বৃদ্ধাশ্রমে নয়

ছবি

ট্রেনের বিলম্বে যাত্রীদের দুর্ভোগ

অভিনব কৌশলে প্রতারণা

ট্রেনে ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা হোক

ঈদে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে তৎপর হতে হবে

পথশিশুদের পাশে দাঁড়ান

ছবি

অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ হোক

tab

পাঠকের চিঠি

গৌরবের প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

এ দেশের শিক্ষা বিস্তার, গবেষণা কার্যক্রম ও সব আন্দোলন সংগ্রামে এক গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের তথা পূর্ব বাংলার প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালের ১ জুলাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।

ঢাকা হলের প্রথম প্রভোস্ট ছিলেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ এফ. সি. সি. টার্নার। শুরুতে একমাত্র ঢাকা হলেরই নিজস্ব ভবনে ছিল; কার্জন হল মিলনায়তনটি তার অধিকারভুক্ত ছিল সে কারণে একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের শিক্ষাবহির্ভূত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে ঢাকা হল ছাত্র সংসদের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। দেশ বিভাগের পর ঢাকা হলই ছিল প্রগতিশীল বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের সূতিকাগার, ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলন মহান গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়েছিল ঢাকা হলের প্রগতিশীল ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামানের শহীদ হওয়ার মাধ্যমে।

১৯২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢাকা আসেন এবং কার্জন হলে ১০ ফেব্রুয়ারি দি মিনিং অব আর্ট এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি দি বিগ অ্যান্ড দি কমপ্লেক্স বিষয়ে বক্তৃতা প্রদান করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম তিনটি হল থেকে রবীন্দ্রনাথকে সংবর্ধনা জানানোর আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণে রবীন্দ্রনাথ কেবল মুসলিম হলের সংবর্ধনা সভায় যোগদান করতে পেরেছিলেন। ১৯২৫ সালের ১৯ জানুয়ারি মুসলিম সাহিত্য সমাজ গঠিত হয়। এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন অধ্যাপক আবুল হোসেন।

মুসলিম সাহিত্য সমাজের মুখপাত্র ছিল শিখা নামক বার্ষিকী। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম সাহিত্য সমাজের প্রথম বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ১৯২৭ সালে। ১৯৩৫-৩৬ সালে শ্রীমতী করুণাকণা গুপ্তা ইতিহাস বিভাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা শিক্ষিকা হলেন। ১৯২১ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সে সময়ে রমনা এলাকা ছিল ঢাকার সবচেয়ে অভিজাত এবং সৌন্দর্যম-িত এলাকা। এই অঞ্চলের প্রায় ৬০০ একর জমির উপরে বিভিন্ন ভবন এবং ঢাকা কলেজের বর্তমান কার্জন হল ভবনসমূহে সমন্বয়ে গড়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই দিনটি অর্থাৎ পহেলা জুলাই প্রতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তিনটি অনুষদ এবং বারোটা বিভাগ নিয়ে তার যাত্রা শুরু করে। ঢাকা কলেজ এবং জগন্নাথ কলেজ বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি কলেজে অধ্যায়নরত ছাত্রদের নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষাক্রম শুরু করে। শুধু ছাত্র নয় শিক্ষক এবং লাইব্রেরি ও অন্যান্য উপকরণ দিয়েও এই দুটি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতিতে সাহায্য করে।

প্রথম শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন বিভাগে মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৮৭৭। জন অপরদিকে শিক্ষক ছিল ৬০ জন। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠিত হলে, তখন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল আর তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এর ফলে এ দেশের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা আবার উজ্জীবিত হয়। নতুন উদ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। তখনকার পূর্ববাংলায় অবস্থিত ৫৫টি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত দেশের প্রয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণের শিকার হয়। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অনেক ছাত্র-ছাত্রী নিহত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের গৌরবের প্রতিষ্ঠান। আমাদের সব আন্দোলন সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু।

এস ডি সুব্রত

back to top