বাংলাদেশের জন্মের সূচনালগ্ন থেকে ইতিহাসের বিভিন্ন অংশে ছাত্র আন্দোলন জড়িত। বিভিন্ন সময় দাবি আদায়ের লক্ষ্যে প্রাণ দিতে হয়েছে ছাত্রদের। সেই ৫২ থেকে শুরু করে আজকের ২৪ পর্যন্ত ছাত্র আন্দোলন সফল করতে গিয়ে ছাত্র রাজনীতির সম্পৃক্ততা দেখতে পাওয়া যায়। ছাত্র রাজনীতির অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির জন্য ছাত্র রাজনীতি সমালোচিত হয়েছে অনেকবার। ছাত্র রাজনীতির আড়ালে চাঁদাবাজি, মারামারি, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল দখল ও বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকা- চলতে দেখা গেছে। ফলে বিগত কয়েক বছর ধরে ছাত্ররাজনীতি তার জনপ্রিয়তা হারাতে বসেছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলন কালে এবং জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠে, এক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ রয়েছে।
কিন্তু বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ না করে সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যারা সমন্বায়ক ছিল, বেশিরভাগ সমন্বায়ক কোন না কোন দলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল, যা সাম্প্রতিক কালে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠে৷ এছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণে আন্দোলন সফলতা পায়। ইতোমধ্য বুয়েটসহ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধের ব্যাপারে স্পষ্ট কোন নির্দেশনা আসেনি।
নানান আলোচনা ও সমালোচনার প্রেক্ষিতে ধারণা করা যাচ্ছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়টি ততটা সহজ হবে না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিগত বছরগুলোতে যে ভয়ের রাজনীতি দেখে এসেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি চালু রাখার পক্ষে নন তারা। অপরদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে মতামত দেন নি, তারা মতামত দিয়েছেন সংস্কারের পক্ষে।
তাই সকল দিক বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ক্যাম্পাসে ছাত্র সংগঠনগুলোর সহাবস্থান বিগত বছরগুলোতে তেমন একটা দেখা যায় নি, কেবল সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের একক আধিপত্যের কারণে হয়রানির শিকার হতে হয় অন্যান্য ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের। হল দখল, মারামারি ও ক্যাস্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার জন্য ছাত্র রাজনীতিকে দায়ী করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ছাত্র রাজনীতির শিকার হয়ে বুয়েটে আবরার ফাহাদ হত্যাকে অনেকে উদাহরণ হিসেবে দেখানো যায়। কিন্তু ছাত্র রাজনীতির খারাপ দিকগুলো নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বিপরীতে ভালো দিক থাকলেও তা আলোচনায় নিয়ে আসতে হবে।
মোহাম্মদ আব্দুর রহমান
শিক্ষার্থী,
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪
বাংলাদেশের জন্মের সূচনালগ্ন থেকে ইতিহাসের বিভিন্ন অংশে ছাত্র আন্দোলন জড়িত। বিভিন্ন সময় দাবি আদায়ের লক্ষ্যে প্রাণ দিতে হয়েছে ছাত্রদের। সেই ৫২ থেকে শুরু করে আজকের ২৪ পর্যন্ত ছাত্র আন্দোলন সফল করতে গিয়ে ছাত্র রাজনীতির সম্পৃক্ততা দেখতে পাওয়া যায়। ছাত্র রাজনীতির অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির জন্য ছাত্র রাজনীতি সমালোচিত হয়েছে অনেকবার। ছাত্র রাজনীতির আড়ালে চাঁদাবাজি, মারামারি, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল দখল ও বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকা- চলতে দেখা গেছে। ফলে বিগত কয়েক বছর ধরে ছাত্ররাজনীতি তার জনপ্রিয়তা হারাতে বসেছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলন কালে এবং জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠে, এক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ রয়েছে।
কিন্তু বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ না করে সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যারা সমন্বায়ক ছিল, বেশিরভাগ সমন্বায়ক কোন না কোন দলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল, যা সাম্প্রতিক কালে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠে৷ এছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণে আন্দোলন সফলতা পায়। ইতোমধ্য বুয়েটসহ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধের ব্যাপারে স্পষ্ট কোন নির্দেশনা আসেনি।
নানান আলোচনা ও সমালোচনার প্রেক্ষিতে ধারণা করা যাচ্ছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়টি ততটা সহজ হবে না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিগত বছরগুলোতে যে ভয়ের রাজনীতি দেখে এসেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি চালু রাখার পক্ষে নন তারা। অপরদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে মতামত দেন নি, তারা মতামত দিয়েছেন সংস্কারের পক্ষে।
তাই সকল দিক বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ক্যাম্পাসে ছাত্র সংগঠনগুলোর সহাবস্থান বিগত বছরগুলোতে তেমন একটা দেখা যায় নি, কেবল সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের একক আধিপত্যের কারণে হয়রানির শিকার হতে হয় অন্যান্য ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের। হল দখল, মারামারি ও ক্যাস্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার জন্য ছাত্র রাজনীতিকে দায়ী করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ছাত্র রাজনীতির শিকার হয়ে বুয়েটে আবরার ফাহাদ হত্যাকে অনেকে উদাহরণ হিসেবে দেখানো যায়। কিন্তু ছাত্র রাজনীতির খারাপ দিকগুলো নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বিপরীতে ভালো দিক থাকলেও তা আলোচনায় নিয়ে আসতে হবে।
মোহাম্মদ আব্দুর রহমান
শিক্ষার্থী,
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।