ঢাকা শহরের গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে একটি গুরুতর সমস্যা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা দিনে দিনে আরও জটিল হয়ে উঠেছে। সরকার যেসব নিয়ম-কানুন নির্ধারণ করেছে, তার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। একে কেন্দ্র করে বহু মানুষের অসুবিধা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষত গ্যাস সংযোগের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক লাইনের প্রদান এবং বাড়ির মালিকদের পক্ষ থেকে সেটি নিয়ে অব্যবস্থাপনা গ্যাসের সুষম বিতরণে বড় বাধা সৃষ্টি করছে। সরকারি দিক থেকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সংযোগের জন্য নির্দিষ্ট বিধিমালা রয়েছে। সাধারণত একটি বাসা বা একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ইউনিটের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক গ্যাস লাইন দেওয়া হয়। এই লাইনগুলো মূলত একটি নির্দিষ্ট বাসা বা কমপ্লেক্সের জন্যই বরাদ্দ থাকে। যাতে ঐ বাসার নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্যাসের চাহিদা পূরণ হয়। তবে বাস্তবতা হলো অধিকাংশ সময় বাড়ির মালিকরা এই নির্ধারিত লাইনগুলো দিয়ে পুরো বিল্ডিং বা ভবনের গ্যাস সরবরাহ করে থাকেন। একাধিক ফ্ল্যাট বা ইউনিটের জন্য একটি লাইন ব্যবহার করা হয়। যার ফলে অনেকেই প্রয়োজন অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ পায় না। বাড়ির মালিকেরা এই কাজটি মূলত খরচ কমানোর জন্য বা অতিরিক্ত মুনাফার আশায় করে থাকেন। কারণ গ্যাসের বিল মূলত নির্দিষ্ট লাইন অনুসারে গণনা করা হয়। যখন একাধিক পরিবার একটি লাইনের মাধ্যমে গ্যাস ব্যবহার করেন, তখন গ্যাসের চাপ কমে যায় এবং কিছু পরিবার গ্যাস পায় না বা গ্যাসের চাপ এতটাই কমে যায় যে রান্না বা অন্যান্য গ্যাস ব্যবহারের কাজ করাও সম্ভব হয় না। এই অব্যবস্থাপনা শুধু কিছু পরিবারের ক্ষতির কারণ হচ্ছে না, বরং পুরো বিল্ডিংয়ের বাসিন্দাদের জন্য এটি অস্বস্তির সৃষ্টি করছে। অনেক সময় বাসিন্দারা দিনের পর দিন গ্যাসের অভাবে রান্না করতে পারেন না বা গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন না। যারা গ্যাসের লাইন সরবরাহ পায় না, তারা অন্য কোন উৎস থেকে গ্যাস কিনতে বাধ্য হন। যা তাদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
গ্যাসের এই অব্যবস্থাপনা দূর করতে সরকার কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। যেমন:- নির্দিষ্ট সংযোগের উপর কঠোর নজরদারি। সেইসব বাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্তৃপক্ষকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যারা একটি লাইন দিয়ে একাধিক ইউনিটে গ্যাস সরবরাহ করছেন। গ্যাস সরবরাহের চাপ ঠিকভাবে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা এবং প্রয়োজনে চাপ বৃদ্ধি করা। বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা, যাতে তারা গ্যাসের সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারে। নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়ার সময় নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী সংযোগ দেওয়া এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বেশি লাইন প্রদান করা। অসৎ মালিকদের শাস্তির আওতায় আনা। ঢাকা শহরের গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা এবং ব্যবহার সংক্রান্ত বর্তমান সমস্যা শুধু সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য নয়,বরং পুরো সমাজের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্যাস ব্যবহারের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে হলে মালিক পক্ষের অব্যবস্থাপনা বন্ধ করতে হবে এবং সরকারের পক্ষ থেকে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।
শহিদুজ্জামান শাকিল
শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ
বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
ঢাকা শহরের গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে একটি গুরুতর সমস্যা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা দিনে দিনে আরও জটিল হয়ে উঠেছে। সরকার যেসব নিয়ম-কানুন নির্ধারণ করেছে, তার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। একে কেন্দ্র করে বহু মানুষের অসুবিধা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষত গ্যাস সংযোগের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক লাইনের প্রদান এবং বাড়ির মালিকদের পক্ষ থেকে সেটি নিয়ে অব্যবস্থাপনা গ্যাসের সুষম বিতরণে বড় বাধা সৃষ্টি করছে। সরকারি দিক থেকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সংযোগের জন্য নির্দিষ্ট বিধিমালা রয়েছে। সাধারণত একটি বাসা বা একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ইউনিটের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক গ্যাস লাইন দেওয়া হয়। এই লাইনগুলো মূলত একটি নির্দিষ্ট বাসা বা কমপ্লেক্সের জন্যই বরাদ্দ থাকে। যাতে ঐ বাসার নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্যাসের চাহিদা পূরণ হয়। তবে বাস্তবতা হলো অধিকাংশ সময় বাড়ির মালিকরা এই নির্ধারিত লাইনগুলো দিয়ে পুরো বিল্ডিং বা ভবনের গ্যাস সরবরাহ করে থাকেন। একাধিক ফ্ল্যাট বা ইউনিটের জন্য একটি লাইন ব্যবহার করা হয়। যার ফলে অনেকেই প্রয়োজন অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ পায় না। বাড়ির মালিকেরা এই কাজটি মূলত খরচ কমানোর জন্য বা অতিরিক্ত মুনাফার আশায় করে থাকেন। কারণ গ্যাসের বিল মূলত নির্দিষ্ট লাইন অনুসারে গণনা করা হয়। যখন একাধিক পরিবার একটি লাইনের মাধ্যমে গ্যাস ব্যবহার করেন, তখন গ্যাসের চাপ কমে যায় এবং কিছু পরিবার গ্যাস পায় না বা গ্যাসের চাপ এতটাই কমে যায় যে রান্না বা অন্যান্য গ্যাস ব্যবহারের কাজ করাও সম্ভব হয় না। এই অব্যবস্থাপনা শুধু কিছু পরিবারের ক্ষতির কারণ হচ্ছে না, বরং পুরো বিল্ডিংয়ের বাসিন্দাদের জন্য এটি অস্বস্তির সৃষ্টি করছে। অনেক সময় বাসিন্দারা দিনের পর দিন গ্যাসের অভাবে রান্না করতে পারেন না বা গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন না। যারা গ্যাসের লাইন সরবরাহ পায় না, তারা অন্য কোন উৎস থেকে গ্যাস কিনতে বাধ্য হন। যা তাদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
গ্যাসের এই অব্যবস্থাপনা দূর করতে সরকার কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। যেমন:- নির্দিষ্ট সংযোগের উপর কঠোর নজরদারি। সেইসব বাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্তৃপক্ষকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যারা একটি লাইন দিয়ে একাধিক ইউনিটে গ্যাস সরবরাহ করছেন। গ্যাস সরবরাহের চাপ ঠিকভাবে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা এবং প্রয়োজনে চাপ বৃদ্ধি করা। বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা, যাতে তারা গ্যাসের সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারে। নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়ার সময় নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী সংযোগ দেওয়া এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বেশি লাইন প্রদান করা। অসৎ মালিকদের শাস্তির আওতায় আনা। ঢাকা শহরের গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা এবং ব্যবহার সংক্রান্ত বর্তমান সমস্যা শুধু সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য নয়,বরং পুরো সমাজের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্যাস ব্যবহারের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে হলে মালিক পক্ষের অব্যবস্থাপনা বন্ধ করতে হবে এবং সরকারের পক্ষ থেকে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।
শহিদুজ্জামান শাকিল
শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ