alt

একের পর এক কারখানা বন্ধ, টালমাটাল অর্থনীতি

: মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সবচেয়ে বড় উৎস হলো পোশাকশিল্প এবং অন্যান্য উৎপাদনশীল কারখানা। এই শিল্প শুধু রপ্তানির চাকাকে সচল রাখে না, বরং দেশের লাখো নারী-পুরুষ শ্রমিকের জীবিকার ব্যবস্থা করে, শহর ও বন্দরনগরে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে এবং পুরো অর্থনৈতিক চেইনের প্রবাহ সচল রাখে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনীতির এই মেরুদণ্ড গভীর সংকটে পড়েছে।

রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যাংক ঋণের জটিলতা, বৈদেশিক ক্রেতাদের অর্ডার কমে যাওয়া, এলসি জটিলতা ও শ্রমিক অসন্তোষ-সব মিলিয়ে শিল্পখাত এখন বেসামাল অবস্থায় রয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছড়িয়ে পড়া ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনের অবসান ঘটিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্ম দেয়। এই পরিবর্তন কেবল রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, সমাজ ও অর্থনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলে। এর পরপরই পোশাক, টেক্সটাইল, চামড়া, ফার্নিচারসহ বিভিন্ন উৎপাদনমুখী কারখানা বন্ধ হতে শুরু করে। অভ্যুত্থানকালে প্রায় ১০০টিরও বেশি কারখানা লুটপাট ও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার মধ্যে ৬০টিরও বেশি ছিল পোশাক কারখানা। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর তথ্য অনুযায়ী, এতে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়।

পোশাকশিল্পের পাশাপাশি টেক্সটাইল, চামড়া, ফার্নিচার ও সিরামিক শিল্পও গভীর সংকটে পড়ে। ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে টেক্সটাইল শিল্পে ১৫০টি কারখানা বন্ধ হয়, যাতে এক লক্ষ শ্রমিক চাকরি হারান। চামড়া শিল্পে পরিবেশগত বিধিনিষেধ ও রপ্তানি হ্রাসের কারণে ৮০টি কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়। গ্যাস সংকট ও শ্রমিকের অভাবে ঢাকার আশপাশে ১০০টিরও বেশি সিরামিক কারখানাও বন্ধ হয়ে যায়। এতে বেকারত্ব বাড়ে এবং নারী শ্রমিকদের ওপর প্রভাব আরও বেশি পড়ে। এভাবে চলতে থাকলে বেকারত্বের হার ও লিঙ্গবৈষম্য আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ডে যে ফাটল দেখা দিয়েছে, তা কেবল কারখানার দরজা বন্ধ করেনি-এটি একটি জাতির স্বপ্নকে ভেঙে দিয়েছে। যদি জুলাই অভ্যুত্থানের আগুন পরিবর্তনের বীজ বপন করে থাকে, তবে এখন সময় সেই বীজ থেকে পুনর্গঠনের ফসল ফলানোর। কেবল তখনই অর্জিত হবে প্রকৃত পরিবর্তনের সফলতা।

প্রজ্ঞা দাস

ছবি

অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলনে বাড়ছে নদীভাঙন

খেলার মাঠ নেই, হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব ও শহরের প্রাণ

নদীমাতৃক দেশ এখন নদীহীন হওয়ার পথে

বাল্যবিবাহ রোধে দরকার সচেতনতা ও সহায়তা

বৈষম্যের স্বীকার প্রাথমিক শিক্ষক

ছবি

নরোত্তমপুর কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ, ভোগান্তিতে গ্রামীণ জনগণ

রেলওয়ের টিকেট বুকিং একাউন্টে নম্বর পরিবর্তন

বাইক থেকে ইজিবাইক : নগর জীবনে গতি, ঝুঁকি ও বাস্তবতা

বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করা সময়ের দাবি

নদী বাঁচাতে হবে, জীবন বাঁচাতে হবে

ছবি

পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করুন

পারিবারিক বন্ধনের ভাঙন

উপকূলে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার

নারী শ্রমিকের সুরক্ষা

বৃষ্টিতে অদৃশ্য ড্রেনের প্রাণঘাতী ফাঁদ

শিক্ষার্থীদের হাফভাড়া ন্যায্যতার দাবি

ফেনীর দেওয়ানগঞ্জে ময়লার পাহাড়

তাদের গল্প থেমে গেছে, কারণ আমরা আর শুনি না

দুবলার চরের রাসমেলা হতে পারে পর্যটকদের জন্য এক বিস্ময়ভ্রমণ

ছবি

খাদ্য অপচয় রোধে সচেতনতা এখন জরুরি

ছবি

জিপিএ ৫: পরিশ্রমের প্রতিবিম্ব, তবে ভবিষ্যৎ গড়ার মানদণ্ড নয়

ছবি

কোথায় হারালো বাবুই পাখি ও তাদের বাসা

ছবি

সাইবার বুলিয়িং-এর বাস্তবতা

প্রাণীর প্রতি সহমর্মিতা

র‌্যাগিং: শিক্ষাঙ্গনের ছায়ায় বেড়ে ওঠা এক অমানবিকতার সংস্কৃতি

বর্জ্য অব্যবস্থাপনায় হুমকির মুখে নগরের ভবিষ্যত

ঢাকায় তাল-নারকেল-সুপারির সবুজ সম্ভাবনা

শকুন বাঁচানো মানে ভবিষ্যৎ বাঁচানো

ছবি

এআই যুগে নিরাপত্তার সংকট : প্রযুক্তির অন্ধকার দিক

রাজধানীর নগর জীবন : ঝুঁকি, দূষণ ও মানুষের নিরাপত্তা

সরকারি স্বাস্থ্যসেবা : গ্রামীণ রোগীর পাশে আছে কি?

ছবি

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি : সাধারণ মানুষের নৈরাশ্যের কারণ

জিপিএ-৫ এবং শিক্ষার প্রকৃত মান

প্রবাসী শ্রমিকদের মর্যাদা ফিরিয়ে আনা জরুরি

ছবি

এইচএসসি ফল : শিক্ষার বাস্তব চিত্র

ছবি

গার্মেন্টস শ্রমিকের মানবিক অধিকার নিশ্চিতকরণ জরুরি

tab

একের পর এক কারখানা বন্ধ, টালমাটাল অর্থনীতি

মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সবচেয়ে বড় উৎস হলো পোশাকশিল্প এবং অন্যান্য উৎপাদনশীল কারখানা। এই শিল্প শুধু রপ্তানির চাকাকে সচল রাখে না, বরং দেশের লাখো নারী-পুরুষ শ্রমিকের জীবিকার ব্যবস্থা করে, শহর ও বন্দরনগরে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে এবং পুরো অর্থনৈতিক চেইনের প্রবাহ সচল রাখে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনীতির এই মেরুদণ্ড গভীর সংকটে পড়েছে।

রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যাংক ঋণের জটিলতা, বৈদেশিক ক্রেতাদের অর্ডার কমে যাওয়া, এলসি জটিলতা ও শ্রমিক অসন্তোষ-সব মিলিয়ে শিল্পখাত এখন বেসামাল অবস্থায় রয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছড়িয়ে পড়া ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনের অবসান ঘটিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্ম দেয়। এই পরিবর্তন কেবল রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, সমাজ ও অর্থনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলে। এর পরপরই পোশাক, টেক্সটাইল, চামড়া, ফার্নিচারসহ বিভিন্ন উৎপাদনমুখী কারখানা বন্ধ হতে শুরু করে। অভ্যুত্থানকালে প্রায় ১০০টিরও বেশি কারখানা লুটপাট ও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার মধ্যে ৬০টিরও বেশি ছিল পোশাক কারখানা। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর তথ্য অনুযায়ী, এতে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়।

পোশাকশিল্পের পাশাপাশি টেক্সটাইল, চামড়া, ফার্নিচার ও সিরামিক শিল্পও গভীর সংকটে পড়ে। ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে টেক্সটাইল শিল্পে ১৫০টি কারখানা বন্ধ হয়, যাতে এক লক্ষ শ্রমিক চাকরি হারান। চামড়া শিল্পে পরিবেশগত বিধিনিষেধ ও রপ্তানি হ্রাসের কারণে ৮০টি কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়। গ্যাস সংকট ও শ্রমিকের অভাবে ঢাকার আশপাশে ১০০টিরও বেশি সিরামিক কারখানাও বন্ধ হয়ে যায়। এতে বেকারত্ব বাড়ে এবং নারী শ্রমিকদের ওপর প্রভাব আরও বেশি পড়ে। এভাবে চলতে থাকলে বেকারত্বের হার ও লিঙ্গবৈষম্য আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ডে যে ফাটল দেখা দিয়েছে, তা কেবল কারখানার দরজা বন্ধ করেনি-এটি একটি জাতির স্বপ্নকে ভেঙে দিয়েছে। যদি জুলাই অভ্যুত্থানের আগুন পরিবর্তনের বীজ বপন করে থাকে, তবে এখন সময় সেই বীজ থেকে পুনর্গঠনের ফসল ফলানোর। কেবল তখনই অর্জিত হবে প্রকৃত পরিবর্তনের সফলতা।

প্রজ্ঞা দাস

back to top