alt

নরোত্তমপুর কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ, ভোগান্তিতে গ্রামীণ জনগণ

: মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের নরোত্তমপুর গ্রামটি গিয়াসপুর বাজার থেকে সিঙ্গুয়া ভূমি অফিস অভিমুখে ১০৩/৭৭ আল তৌফিকী পরিবার সড়কের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। প্রায় দুই দশক আগে এই গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয় নরোত্তমপুর কমিউনিটি ক্লিনিক, যা গ্রামের দরিদ্র, নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠার কথা ছিল। ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে সমাজসেবক আব্দুল কুদ্দুছ এই ক্লিনিকের জমি দান করেন। সেই সময় সরকারের ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ উদ্যোগ ছিল জনগণের দোরগোড়ায় চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়ার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। নরোত্তমপুর ক্লিনিকের আওতাধীন এলাকার জনসংখ্যা প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজারেরও বেশি। অধিকাংশ মানুষ কৃষক, দিনমজুর ও নিম্নআয়ের। এই ক্লিনিক থেকেই গর্ভবতী মায়েদের পরামর্শ, টিকাদান কর্মসূচি, শিশুর পুষ্টি ও সাধারণ রোগের চিকিৎসা পাওয়ার কথা। কিন্তু বর্তমানে ক্লিনিকটি কার্যত অচল অবস্থায় পড়ে আছে। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি সপ্তাহের পর সপ্তাহ বন্ধ থাকে, আর খোলা থাকলেও নিয়মিত চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীকে পাওয়া যায় না। গত এক সপ্তাহ ধরে ক্লিনিকটি সম্পূর্ণ বন্ধ। আশেপাশের গ্রামের মানুষ প্রতিদিন ওষুধ ও চিকিৎসার আশায় আসে, কিন্তু দরজা বন্ধ দেখে ফিরে যায়।

এই সমস্যার সমাধানে কিছু বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। কমিউনিটি ক্লিনিকের উপস্থিতি ও কার্যক্রম ডিজিটালভাবে মনিটরিং করা যেতে পারে, যাতে জনগণ জানতে পারে ক্লিনিক খোলা আছে কি না এবং কোন স্বাস্থ্যকর্মী দায়িত্বে আছেন। স্থানীয় যুব সমাজকে প্রশিক্ষণ দিয়ে “কমিউনিটি হেলথ ভলান্টিয়ার” হিসেবে যুক্ত করা যেতে পারে, যারা প্রাথমিক চিকিৎসা, টিকাদান বা ওষুধ বিতরণে সহায়তা করবে। ইউনিয়ন পরিষদ, স্বাস্থ্য কমিটি ও সিভিল সার্জন অফিসের মধ্যে সমন্বিত তদারকি কাঠামো গড়ে তোলাও জরুরি। পাশাপাশি সরকারি ক্লিনিকের চারপাশে বেসরকারি হাসপাতাল বা চেম্বারের বিজ্ঞাপন টানানো সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। শুধু নরোত্তমপুর নয়, বাংলাদেশের অনেক গ্রামীণ কমিউনিটি ক্লিনিক আজ একই সংকটে পড়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ওপর জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে এই সমস্যা জাতীয়ভাবে গুরুত্ব পেতে হবে। ক্লিনিক বন্ধ থাকা মানে কেবল একটি ভবনের দরজা বন্ধ নয়, বরং গ্রামের দরিদ্র মানুষের জীবন ও আশার দরজাও বন্ধ হয়ে যাওয়া। সরকারের “সবার জন্য স্বাস্থ্য” অঙ্গীকার তখনই সফল হবে, যখন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো আবার সক্রিয় হবে, ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিত উপস্থিত থাকবেন, আর মানুষ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পারবে।

মোসাম্মৎ ফাতেমা

ছবি

অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলনে বাড়ছে নদীভাঙন

খেলার মাঠ নেই, হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব ও শহরের প্রাণ

নদীমাতৃক দেশ এখন নদীহীন হওয়ার পথে

বাল্যবিবাহ রোধে দরকার সচেতনতা ও সহায়তা

বৈষম্যের স্বীকার প্রাথমিক শিক্ষক

ছবি

একের পর এক কারখানা বন্ধ, টালমাটাল অর্থনীতি

রেলওয়ের টিকেট বুকিং একাউন্টে নম্বর পরিবর্তন

বাইক থেকে ইজিবাইক : নগর জীবনে গতি, ঝুঁকি ও বাস্তবতা

বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করা সময়ের দাবি

নদী বাঁচাতে হবে, জীবন বাঁচাতে হবে

ছবি

পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করুন

পারিবারিক বন্ধনের ভাঙন

উপকূলে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার

নারী শ্রমিকের সুরক্ষা

বৃষ্টিতে অদৃশ্য ড্রেনের প্রাণঘাতী ফাঁদ

শিক্ষার্থীদের হাফভাড়া ন্যায্যতার দাবি

ফেনীর দেওয়ানগঞ্জে ময়লার পাহাড়

তাদের গল্প থেমে গেছে, কারণ আমরা আর শুনি না

দুবলার চরের রাসমেলা হতে পারে পর্যটকদের জন্য এক বিস্ময়ভ্রমণ

ছবি

খাদ্য অপচয় রোধে সচেতনতা এখন জরুরি

ছবি

জিপিএ ৫: পরিশ্রমের প্রতিবিম্ব, তবে ভবিষ্যৎ গড়ার মানদণ্ড নয়

ছবি

কোথায় হারালো বাবুই পাখি ও তাদের বাসা

ছবি

সাইবার বুলিয়িং-এর বাস্তবতা

প্রাণীর প্রতি সহমর্মিতা

র‌্যাগিং: শিক্ষাঙ্গনের ছায়ায় বেড়ে ওঠা এক অমানবিকতার সংস্কৃতি

বর্জ্য অব্যবস্থাপনায় হুমকির মুখে নগরের ভবিষ্যত

ঢাকায় তাল-নারকেল-সুপারির সবুজ সম্ভাবনা

শকুন বাঁচানো মানে ভবিষ্যৎ বাঁচানো

ছবি

এআই যুগে নিরাপত্তার সংকট : প্রযুক্তির অন্ধকার দিক

রাজধানীর নগর জীবন : ঝুঁকি, দূষণ ও মানুষের নিরাপত্তা

সরকারি স্বাস্থ্যসেবা : গ্রামীণ রোগীর পাশে আছে কি?

ছবি

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি : সাধারণ মানুষের নৈরাশ্যের কারণ

জিপিএ-৫ এবং শিক্ষার প্রকৃত মান

প্রবাসী শ্রমিকদের মর্যাদা ফিরিয়ে আনা জরুরি

ছবি

এইচএসসি ফল : শিক্ষার বাস্তব চিত্র

ছবি

গার্মেন্টস শ্রমিকের মানবিক অধিকার নিশ্চিতকরণ জরুরি

tab

নরোত্তমপুর কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ, ভোগান্তিতে গ্রামীণ জনগণ

মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের নরোত্তমপুর গ্রামটি গিয়াসপুর বাজার থেকে সিঙ্গুয়া ভূমি অফিস অভিমুখে ১০৩/৭৭ আল তৌফিকী পরিবার সড়কের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। প্রায় দুই দশক আগে এই গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয় নরোত্তমপুর কমিউনিটি ক্লিনিক, যা গ্রামের দরিদ্র, নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠার কথা ছিল। ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে সমাজসেবক আব্দুল কুদ্দুছ এই ক্লিনিকের জমি দান করেন। সেই সময় সরকারের ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’ উদ্যোগ ছিল জনগণের দোরগোড়ায় চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়ার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। নরোত্তমপুর ক্লিনিকের আওতাধীন এলাকার জনসংখ্যা প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজারেরও বেশি। অধিকাংশ মানুষ কৃষক, দিনমজুর ও নিম্নআয়ের। এই ক্লিনিক থেকেই গর্ভবতী মায়েদের পরামর্শ, টিকাদান কর্মসূচি, শিশুর পুষ্টি ও সাধারণ রোগের চিকিৎসা পাওয়ার কথা। কিন্তু বর্তমানে ক্লিনিকটি কার্যত অচল অবস্থায় পড়ে আছে। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি সপ্তাহের পর সপ্তাহ বন্ধ থাকে, আর খোলা থাকলেও নিয়মিত চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীকে পাওয়া যায় না। গত এক সপ্তাহ ধরে ক্লিনিকটি সম্পূর্ণ বন্ধ। আশেপাশের গ্রামের মানুষ প্রতিদিন ওষুধ ও চিকিৎসার আশায় আসে, কিন্তু দরজা বন্ধ দেখে ফিরে যায়।

এই সমস্যার সমাধানে কিছু বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। কমিউনিটি ক্লিনিকের উপস্থিতি ও কার্যক্রম ডিজিটালভাবে মনিটরিং করা যেতে পারে, যাতে জনগণ জানতে পারে ক্লিনিক খোলা আছে কি না এবং কোন স্বাস্থ্যকর্মী দায়িত্বে আছেন। স্থানীয় যুব সমাজকে প্রশিক্ষণ দিয়ে “কমিউনিটি হেলথ ভলান্টিয়ার” হিসেবে যুক্ত করা যেতে পারে, যারা প্রাথমিক চিকিৎসা, টিকাদান বা ওষুধ বিতরণে সহায়তা করবে। ইউনিয়ন পরিষদ, স্বাস্থ্য কমিটি ও সিভিল সার্জন অফিসের মধ্যে সমন্বিত তদারকি কাঠামো গড়ে তোলাও জরুরি। পাশাপাশি সরকারি ক্লিনিকের চারপাশে বেসরকারি হাসপাতাল বা চেম্বারের বিজ্ঞাপন টানানো সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। শুধু নরোত্তমপুর নয়, বাংলাদেশের অনেক গ্রামীণ কমিউনিটি ক্লিনিক আজ একই সংকটে পড়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ওপর জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে এই সমস্যা জাতীয়ভাবে গুরুত্ব পেতে হবে। ক্লিনিক বন্ধ থাকা মানে কেবল একটি ভবনের দরজা বন্ধ নয়, বরং গ্রামের দরিদ্র মানুষের জীবন ও আশার দরজাও বন্ধ হয়ে যাওয়া। সরকারের “সবার জন্য স্বাস্থ্য” অঙ্গীকার তখনই সফল হবে, যখন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো আবার সক্রিয় হবে, ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিত উপস্থিত থাকবেন, আর মানুষ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পারবে।

মোসাম্মৎ ফাতেমা

back to top