alt

স্বাধীনতা দিবস ২০২৫

স্বাধীনতা দিবস কবিতা

: বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

বসন্তের ভাটফুল
পুলিন রায়

চলতে চলতে ভাটফুল আর দীঘিজল

সাথী হয় হাওরপাখিও

রোদ্দুরে পাখনা মেলা চিল ইশারায় ডাকে

মেঘও হাসে মুখ টিপে

নদীর শিয়রে পথ, পথের কিনারে একা বসে আছি

বেতফলের রস পান করে তন্দ্রা জাগে

কোকিল ডাকে না, বসন্তদিন যায় অবহেলায়

অশোকবনে আসর জমাক না বৃষ্টিগান!

শকুন্তলা ঘুরে এসে আমাকে শাসায়

আমার বসন্ত আমারই থাক্

দুঃখের প্রহরে এলে যদি কাছে

হেলাফেলায় চলে যাওয়া বসন্তে

ধরো তবু শেষ নিদানের গান

আমার বসন্তেনা ডাকুক কোকিল

গানে মজাবো মন, সকল অবহেলার জবাবে

ও ভাই ভাটফুল-

তোমার-আমার বসন্ত মিলে যাক একই ধারায়...

কবিতাটির ভাষা খুঁজতে গিয়ে
ফনিন্দ্র সরকার

এই কবিতাটি মনের মাধুরী মিশিয়ে সাজাবো

বলে ভাষা খুঁজে ফিরি প্রকৃতির দ্বারে দ্বারে

কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে থমকে দাঁড়িয়ে, জিজ্ঞেস

করি, রক্তিম ঝরা ফুলের কাছে!

ফুলগুলো সমস্বরে কেঁদে বলে ‘দেখ আমাদের

কাছে ভাষা নেই, ভালোবাসা নেই।

কাঠফাঁটা রোদে ফিরে আসি আমি বসন্ত

বাতাসের কাছে। বাতাস বলে ওঠে-

‘আমি অসহায়, কীভাবে হে কবি নিয়ে

যাবো তোমায় উড়িয়ে ভাষার বাগানে।’

ঠিকানা জানা নেই, অবরুদ্ধ বাগানের।

কবিতার বুকে বড় হাহাকার! কবিতাকে

ছুটি জানিয়ে আছিয়া নামের মায়াবী মেয়েটি

অভিমানে চলে যায় পরপারে।

অষ্টম বর্ষী মেয়েটি কবিতা প্রেমিক হবার সুযোগ

পেল না। মানুষরূপী হায়েনা খাবলে খেল ওকে।

এরকম অনেক আছিয়া লালসার শিকারে হয়েছে

বলী। কবিতা কাঁদে বর্ণহীন শব্দহীনভাবে।

বিদীর্ণ আকাশ, বিমর্ষ ছায়াপথ, অন্ধকারে

সবাই যেন একা একা।

এখানে গাছের ক্রন্দন, নেই পাখির কোলাহল,

কানে ভেসে আসে বীভৎস আওয়াজ,

হে কবি ভাষা নেই প্রেমহীন রক্তাক্ত প্রান্তর

নবান্নে চলে চাপাতি উৎসব।

বিব্রত কবি তবুও আশা নিয়ে বাঁচে

নতুন সূর্য উঠবে বলে,

ঘোর অন্ধকার, যেন কোথাও কেউ নেই।

হ্যা! কবি সকল আসবে ফিরে

স্বপ্ন সাধের কবিতাকে

মহাকাব্যের পূর্ণতা দিতে।

প্রেতাত্মাদের ধ্রুপদী নৃত্য
মাজেদুল হক

সহসাই এক অদ্ভুত তাড়না প্রতিনিয়ত বিভ্রমের দিকে

ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে...

বন্ধনহীন, মমতাহীন এই নি-িদ্র লৌকিকতার

অন্তপুরে শুধুই দেখছি জৈবিক উল্লাস

করোটির ভেতর জন্ম নেওয়া

অনুষঙ্গ একত্রিত হয়ে স্বপ্নের ভেতর

ভাঙতে থাকে কালের নীরবতা

ভাঙতে থাকে জীবনের উপাখ্যান

ভাঙতে থাকে জীবনের সমস্ত জৌলুস

ভাঙতে থাকে কৃষাণের আলবাঁধা মেঠোপথ

ভাঙতে থাকে জোছনাময় রাতের মহেন্দ্রক্ষণ

ভাঙতে থাকে রৌদ্রজ্জ্বল দিনের সূচিশুদ্ধ চিত্রপট।

মেতে উঠা ইচ্ছা-অনিচ্ছার অদৃশ্য আলোর বিচ্ছুরণে সমাদৃত

প্রেতাত্মাদের ধ্রুপদী নগ্ননৃত্য...

বসন্তে ১টি চিরকুট
নাইমুল করিম

এই বসন্তে পথমধ্যে সহসা আমার তোমার দেখা হ’লে

কোনো কফি-চায়ের আমন্ত্রণে না ডাকলা

রেস্তোরাঁ, সিনেপ্লেক্সে পাশাপাশি না বসলা

অন্তত এমনভাব দেখাইও না

যেন আমি কোনদিন তোমার গোপন প্রকাশ্য কিংবা

গোলাপী ঠোঁটের মুচকি হাসির স্বাদ

এই হৃদয়ে গ্রহণ করি নাই?

তুমি কিছুতেই আমারে মনে রাখতে চাইছ না!

কী কারণে সম্পর্কে এত দূরত্ব-

এদেখাতেই সরাসরি জানাইয়া যেও, সুইটহার্ট!

যুদ্ধ-সনদ
আবু আফজাল সালেহ

দুটি শিশু- একটা মেয়ে আর একটা ছেলে

বালুকাময় বিছানা দিয়ে

তাদের মাকে নিয়ে অন্ধকারের দিকে

তাদের বাবা গিয়েছে যুদ্ধে-

আমি বালুতে নিজের পায়ের ছাপ দেখছি-

আমার থেকে দূরে চলে যাচ্ছে

ধূসর থেকে ফেনাময় অন্ধকারের দিকে।

আমি থামাতে পারিনি- আসলে আমি থামাতে চাইনি

আমি শুধু দেখতে চেয়েছি ধুসর আর অন্ধকারের ছবি

আমি রুশো হতে চেয়েছি

আমি আব্রাহাম লিংকন হতে চেয়েছি

কষ্ট-নিপীড়ন না-সয়ে বীর হতে চেয়েছি।

tab

স্বাধীনতা দিবস ২০২৫

স্বাধীনতা দিবস কবিতা

বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

বসন্তের ভাটফুল
পুলিন রায়

চলতে চলতে ভাটফুল আর দীঘিজল

সাথী হয় হাওরপাখিও

রোদ্দুরে পাখনা মেলা চিল ইশারায় ডাকে

মেঘও হাসে মুখ টিপে

নদীর শিয়রে পথ, পথের কিনারে একা বসে আছি

বেতফলের রস পান করে তন্দ্রা জাগে

কোকিল ডাকে না, বসন্তদিন যায় অবহেলায়

অশোকবনে আসর জমাক না বৃষ্টিগান!

শকুন্তলা ঘুরে এসে আমাকে শাসায়

আমার বসন্ত আমারই থাক্

দুঃখের প্রহরে এলে যদি কাছে

হেলাফেলায় চলে যাওয়া বসন্তে

ধরো তবু শেষ নিদানের গান

আমার বসন্তেনা ডাকুক কোকিল

গানে মজাবো মন, সকল অবহেলার জবাবে

ও ভাই ভাটফুল-

তোমার-আমার বসন্ত মিলে যাক একই ধারায়...

কবিতাটির ভাষা খুঁজতে গিয়ে
ফনিন্দ্র সরকার

এই কবিতাটি মনের মাধুরী মিশিয়ে সাজাবো

বলে ভাষা খুঁজে ফিরি প্রকৃতির দ্বারে দ্বারে

কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে থমকে দাঁড়িয়ে, জিজ্ঞেস

করি, রক্তিম ঝরা ফুলের কাছে!

ফুলগুলো সমস্বরে কেঁদে বলে ‘দেখ আমাদের

কাছে ভাষা নেই, ভালোবাসা নেই।

কাঠফাঁটা রোদে ফিরে আসি আমি বসন্ত

বাতাসের কাছে। বাতাস বলে ওঠে-

‘আমি অসহায়, কীভাবে হে কবি নিয়ে

যাবো তোমায় উড়িয়ে ভাষার বাগানে।’

ঠিকানা জানা নেই, অবরুদ্ধ বাগানের।

কবিতার বুকে বড় হাহাকার! কবিতাকে

ছুটি জানিয়ে আছিয়া নামের মায়াবী মেয়েটি

অভিমানে চলে যায় পরপারে।

অষ্টম বর্ষী মেয়েটি কবিতা প্রেমিক হবার সুযোগ

পেল না। মানুষরূপী হায়েনা খাবলে খেল ওকে।

এরকম অনেক আছিয়া লালসার শিকারে হয়েছে

বলী। কবিতা কাঁদে বর্ণহীন শব্দহীনভাবে।

বিদীর্ণ আকাশ, বিমর্ষ ছায়াপথ, অন্ধকারে

সবাই যেন একা একা।

এখানে গাছের ক্রন্দন, নেই পাখির কোলাহল,

কানে ভেসে আসে বীভৎস আওয়াজ,

হে কবি ভাষা নেই প্রেমহীন রক্তাক্ত প্রান্তর

নবান্নে চলে চাপাতি উৎসব।

বিব্রত কবি তবুও আশা নিয়ে বাঁচে

নতুন সূর্য উঠবে বলে,

ঘোর অন্ধকার, যেন কোথাও কেউ নেই।

হ্যা! কবি সকল আসবে ফিরে

স্বপ্ন সাধের কবিতাকে

মহাকাব্যের পূর্ণতা দিতে।

প্রেতাত্মাদের ধ্রুপদী নৃত্য
মাজেদুল হক

সহসাই এক অদ্ভুত তাড়না প্রতিনিয়ত বিভ্রমের দিকে

ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে...

বন্ধনহীন, মমতাহীন এই নি-িদ্র লৌকিকতার

অন্তপুরে শুধুই দেখছি জৈবিক উল্লাস

করোটির ভেতর জন্ম নেওয়া

অনুষঙ্গ একত্রিত হয়ে স্বপ্নের ভেতর

ভাঙতে থাকে কালের নীরবতা

ভাঙতে থাকে জীবনের উপাখ্যান

ভাঙতে থাকে জীবনের সমস্ত জৌলুস

ভাঙতে থাকে কৃষাণের আলবাঁধা মেঠোপথ

ভাঙতে থাকে জোছনাময় রাতের মহেন্দ্রক্ষণ

ভাঙতে থাকে রৌদ্রজ্জ্বল দিনের সূচিশুদ্ধ চিত্রপট।

মেতে উঠা ইচ্ছা-অনিচ্ছার অদৃশ্য আলোর বিচ্ছুরণে সমাদৃত

প্রেতাত্মাদের ধ্রুপদী নগ্ননৃত্য...

বসন্তে ১টি চিরকুট
নাইমুল করিম

এই বসন্তে পথমধ্যে সহসা আমার তোমার দেখা হ’লে

কোনো কফি-চায়ের আমন্ত্রণে না ডাকলা

রেস্তোরাঁ, সিনেপ্লেক্সে পাশাপাশি না বসলা

অন্তত এমনভাব দেখাইও না

যেন আমি কোনদিন তোমার গোপন প্রকাশ্য কিংবা

গোলাপী ঠোঁটের মুচকি হাসির স্বাদ

এই হৃদয়ে গ্রহণ করি নাই?

তুমি কিছুতেই আমারে মনে রাখতে চাইছ না!

কী কারণে সম্পর্কে এত দূরত্ব-

এদেখাতেই সরাসরি জানাইয়া যেও, সুইটহার্ট!

যুদ্ধ-সনদ
আবু আফজাল সালেহ

দুটি শিশু- একটা মেয়ে আর একটা ছেলে

বালুকাময় বিছানা দিয়ে

তাদের মাকে নিয়ে অন্ধকারের দিকে

তাদের বাবা গিয়েছে যুদ্ধে-

আমি বালুতে নিজের পায়ের ছাপ দেখছি-

আমার থেকে দূরে চলে যাচ্ছে

ধূসর থেকে ফেনাময় অন্ধকারের দিকে।

আমি থামাতে পারিনি- আসলে আমি থামাতে চাইনি

আমি শুধু দেখতে চেয়েছি ধুসর আর অন্ধকারের ছবি

আমি রুশো হতে চেয়েছি

আমি আব্রাহাম লিংকন হতে চেয়েছি

কষ্ট-নিপীড়ন না-সয়ে বীর হতে চেয়েছি।

back to top