দেশের সংবিধানে মূলনীতি থাকা আদৌ প্রয়োজনীয় কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। সংবিধানের ১৯৭২ সালের মূলনীতি ও পরবর্তী সংশোধনীর মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত ‘দলীয় আদর্শভিত্তিক’ মূলনীতিগুলো বাতিলের দাবিও জানিয়েছে দলটি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে একদিনব্যাপী আলোচনার পর শনিবার বিকেলে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সংবিধানের এককেন্দ্রিক ক্ষমতা কাঠামো সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে তার দল।
তিনি বলেন, “আমাদের প্রস্তাবে এসেছে—এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন না। এমনকি কেউ একবার প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন না। আমরা মন্ত্রিপরিষদ-শাসিত সরকার চেয়েছি, যেখানে ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর একক হাতে থাকবে না।”
এনসিপি সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বে উচ্চকক্ষ গঠনের পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচনের আগেই উচ্চকক্ষের প্রার্থীদের নাম ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছে। তারা সরাসরি ভোটে ১০০ নারী আসনে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষেও মত দিয়েছে।
সংবিধানের মূলনীতির বিষয়ে দলটির অবস্থান তুলে ধরে নাহিদ ইসলাম বলেন, “দলীয় রাজনৈতিক অবস্থান সংবিধানে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং মৌলিক অধিকার থাকলে আলাদা করে মূলনীতির প্রয়োজন আছে কি না, তা ভাবার সময় এসেছে। বিশেষ করে দলীয়ভাবে যেসব মূলনীতি পরবর্তীতে ঢোকানো হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “সংবিধানে প্রতিটি জাতিসত্তার স্বীকৃতি এবং অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া, মৌলিক অধিকার আদালত দ্বারা বাস্তবায়নযোগ্য করার দাবিও জানিয়েছি।”
আলোচনায় শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, নারীর ক্ষমতায়ন, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের বাধ্যবাধকতা, ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনসহ বেশকিছু গঠনমূলক প্রস্তাব দেয় এনসিপি।
বিচার বিভাগের বিষয়ে নাহিদ বলেন, “বিচার বিভাগে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে আলাদা সচিবালয়, আর্থিক স্বাধীনতা, বিভাগীয় বেঞ্চ এবং সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছি।”
সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা নিয়েও দলের অবস্থান স্পষ্ট করে সরোয়ার তুষার বলেন, “অর্থ বিল এবং অনাস্থা প্রস্তাব ছাড়া সংসদ সদস্যরা দলীয় অবস্থানের বাইরে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন—এই অধিকার থাকা উচিত।”
সংসদীয় সীমানা পুনর্নির্ধারণ, স্বচ্ছ নির্বাচন ও ন্যায্য ক্ষমতা হস্তান্তরের কাঠামো প্রতিষ্ঠায় জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছে দলটি। সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, “নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো নিয়ে আরও আলোচনার সুযোগ আছে। আমরা উপদেষ্টাদের নাম ও ক্ষমতা কাঠামো নিয়ে কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করছি।”
আলোচনায় এনসিপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার, সামান্তা শারমিন, হাসনাত আবদুল্লাহ, জাবেদ রাসিন, নাহিদা সারোয়ার এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
অন্যদিকে কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।
রোববার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
দেশের সংবিধানে মূলনীতি থাকা আদৌ প্রয়োজনীয় কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। সংবিধানের ১৯৭২ সালের মূলনীতি ও পরবর্তী সংশোধনীর মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত ‘দলীয় আদর্শভিত্তিক’ মূলনীতিগুলো বাতিলের দাবিও জানিয়েছে দলটি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে একদিনব্যাপী আলোচনার পর শনিবার বিকেলে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সংবিধানের এককেন্দ্রিক ক্ষমতা কাঠামো সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে তার দল।
তিনি বলেন, “আমাদের প্রস্তাবে এসেছে—এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন না। এমনকি কেউ একবার প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন না। আমরা মন্ত্রিপরিষদ-শাসিত সরকার চেয়েছি, যেখানে ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর একক হাতে থাকবে না।”
এনসিপি সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বে উচ্চকক্ষ গঠনের পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচনের আগেই উচ্চকক্ষের প্রার্থীদের নাম ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছে। তারা সরাসরি ভোটে ১০০ নারী আসনে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষেও মত দিয়েছে।
সংবিধানের মূলনীতির বিষয়ে দলটির অবস্থান তুলে ধরে নাহিদ ইসলাম বলেন, “দলীয় রাজনৈতিক অবস্থান সংবিধানে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং মৌলিক অধিকার থাকলে আলাদা করে মূলনীতির প্রয়োজন আছে কি না, তা ভাবার সময় এসেছে। বিশেষ করে দলীয়ভাবে যেসব মূলনীতি পরবর্তীতে ঢোকানো হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “সংবিধানে প্রতিটি জাতিসত্তার স্বীকৃতি এবং অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া, মৌলিক অধিকার আদালত দ্বারা বাস্তবায়নযোগ্য করার দাবিও জানিয়েছি।”
আলোচনায় শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, নারীর ক্ষমতায়ন, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের বাধ্যবাধকতা, ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনসহ বেশকিছু গঠনমূলক প্রস্তাব দেয় এনসিপি।
বিচার বিভাগের বিষয়ে নাহিদ বলেন, “বিচার বিভাগে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে আলাদা সচিবালয়, আর্থিক স্বাধীনতা, বিভাগীয় বেঞ্চ এবং সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছি।”
সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা নিয়েও দলের অবস্থান স্পষ্ট করে সরোয়ার তুষার বলেন, “অর্থ বিল এবং অনাস্থা প্রস্তাব ছাড়া সংসদ সদস্যরা দলীয় অবস্থানের বাইরে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন—এই অধিকার থাকা উচিত।”
সংসদীয় সীমানা পুনর্নির্ধারণ, স্বচ্ছ নির্বাচন ও ন্যায্য ক্ষমতা হস্তান্তরের কাঠামো প্রতিষ্ঠায় জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছে দলটি। সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, “নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো নিয়ে আরও আলোচনার সুযোগ আছে। আমরা উপদেষ্টাদের নাম ও ক্ষমতা কাঠামো নিয়ে কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করছি।”
আলোচনায় এনসিপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার, সামান্তা শারমিন, হাসনাত আবদুল্লাহ, জাবেদ রাসিন, নাহিদা সারোয়ার এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
অন্যদিকে কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।