মানব সভ্যতার আদিলগ্ন থেকে কৃষিকাজ, মৎস্য চাষ, গবাদিপশু পালন থেকে শুরু করে অনেক কাজেই মানুষ নদ-নদীর পানির ওপর নির্ভরশীল। নদ-নদী শুধু মানুষ নয়, জীববৈচিত্র্যের অপরিহার্য অংশ। নদ-নদীর এই পানি লবণাক্ত হয়ে পড়লে সমূহ বিপদ ঘটে। লবণাক্ততার প্রভাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ, কৃষি ও মৎস্যসম্পদ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দেশের চাষযোগ্য জমির ৪০ ভাগই রয়েছে উপকূলীয় অঞ্চলে। লবণাক্ততার প্রভাবে এই এলাকায় কমছে চাষযোগ্য জমি।
দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততার সমস্যা নতুন নয়। যত দিন যাচ্ছে সমস্যাটি তত প্রকট হচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের মধ্যভাগের নদ-নদীর পানির লবণাক্ততা বেড়েই চলেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বরিশালের কির্তনখোলা নদীতে লবণাক্ততার মাত্রা ছিল প্রায় ৯শ’ পিপিএম, যা ২০০৬ সালে ছিল ৬১০-৬৩০ পার্সেন্ট পার মিলিয়ন-পিপিএম। উজান থেকে পানি আসছে প্রয়োজনের তুলনায় কম। নদ-নদীর নাব্য কমেছে। বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় কম। এই অবস্থায় সাগরের পানি ঢুকে নদ-নদীর লবণাক্ততা বাড়িয়ে দিচ্ছে। সংবাদ-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, গত পূর্ণিমার ভরা জোয়ারের সময় বঙ্গোপসাগরের লবণাক্ত পানি সাগর মোহনা থেকে ১০০ কিলোমিটার উজানে চাঁদপুরের মেঘনা পর্যন্ত প্রবেশ করে।
ভাটির দেশ হিসেবে নদ-নদীতে পানির পানির প্রবাহের জন্য আমাদের নির্ভর করতে হয় উজানের দেশগুলোর ওপর। ৫৪টি অভিন্ন নদ-নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝে পেলে দেশের নদ-নদীর এমন দূরবস্থা হতো না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। উজানে পানির প্রবাহ বৃদ্ধির জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের কোন বিকল্প নেই বলে তারা মত দিয়েছেন। তিস্তার মতো আন্তর্জাতিক নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝে পেতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
সরকার আশা করছে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে লবণাক্ততার মতো সমস্যা প্রতিরোধ করে উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষা করা সম্ভব হবে। নদ-নদীর নাব্য বাড়ানোর জন্য অব্যাহত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। পরিকল্পিত বনায়ন করা সম্ভব হলে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। কাজগুলো করা না গেলে লবণাক্ততা বাড়তেই থাকবে।
পাশাপাশি লবণ সহিষ্ণু ফসল আবাদ করায় জোর দিতে হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য পুকুর খনন করে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বৃষ্টির পানির সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করতে হবে। এর জন্য কার্যকর ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে।
বৃহস্পতিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২১
মানব সভ্যতার আদিলগ্ন থেকে কৃষিকাজ, মৎস্য চাষ, গবাদিপশু পালন থেকে শুরু করে অনেক কাজেই মানুষ নদ-নদীর পানির ওপর নির্ভরশীল। নদ-নদী শুধু মানুষ নয়, জীববৈচিত্র্যের অপরিহার্য অংশ। নদ-নদীর এই পানি লবণাক্ত হয়ে পড়লে সমূহ বিপদ ঘটে। লবণাক্ততার প্রভাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ, কৃষি ও মৎস্যসম্পদ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দেশের চাষযোগ্য জমির ৪০ ভাগই রয়েছে উপকূলীয় অঞ্চলে। লবণাক্ততার প্রভাবে এই এলাকায় কমছে চাষযোগ্য জমি।
দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততার সমস্যা নতুন নয়। যত দিন যাচ্ছে সমস্যাটি তত প্রকট হচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের মধ্যভাগের নদ-নদীর পানির লবণাক্ততা বেড়েই চলেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বরিশালের কির্তনখোলা নদীতে লবণাক্ততার মাত্রা ছিল প্রায় ৯শ’ পিপিএম, যা ২০০৬ সালে ছিল ৬১০-৬৩০ পার্সেন্ট পার মিলিয়ন-পিপিএম। উজান থেকে পানি আসছে প্রয়োজনের তুলনায় কম। নদ-নদীর নাব্য কমেছে। বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় কম। এই অবস্থায় সাগরের পানি ঢুকে নদ-নদীর লবণাক্ততা বাড়িয়ে দিচ্ছে। সংবাদ-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, গত পূর্ণিমার ভরা জোয়ারের সময় বঙ্গোপসাগরের লবণাক্ত পানি সাগর মোহনা থেকে ১০০ কিলোমিটার উজানে চাঁদপুরের মেঘনা পর্যন্ত প্রবেশ করে।
ভাটির দেশ হিসেবে নদ-নদীতে পানির পানির প্রবাহের জন্য আমাদের নির্ভর করতে হয় উজানের দেশগুলোর ওপর। ৫৪টি অভিন্ন নদ-নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝে পেলে দেশের নদ-নদীর এমন দূরবস্থা হতো না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। উজানে পানির প্রবাহ বৃদ্ধির জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের কোন বিকল্প নেই বলে তারা মত দিয়েছেন। তিস্তার মতো আন্তর্জাতিক নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝে পেতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
সরকার আশা করছে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে লবণাক্ততার মতো সমস্যা প্রতিরোধ করে উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষা করা সম্ভব হবে। নদ-নদীর নাব্য বাড়ানোর জন্য অব্যাহত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। পরিকল্পিত বনায়ন করা সম্ভব হলে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। কাজগুলো করা না গেলে লবণাক্ততা বাড়তেই থাকবে।
পাশাপাশি লবণ সহিষ্ণু ফসল আবাদ করায় জোর দিতে হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য পুকুর খনন করে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বৃষ্টির পানির সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করতে হবে। এর জন্য কার্যকর ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে।