alt

সম্পাদকীয়

মহান মে দিবস

: শুক্রবার, ৩০ এপ্রিল ২০২১

আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে ১ মে পালন করা শুরু হয় ১৮৯০ সাল থেকে। ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ১৮৮৬ সালের ৪ মে শিকাগোর হে মার্কেটে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে একটি শ্রমিক সমাবেশে সংঘটিত রক্তাক্ত ঘটনাবলি। পুলিশ সেদিন গুলি চালিয়ে ৫ শ্রমিককে হত্যা এবং শ্রমিক নেতাদের গ্রেপ্তার করে। সেদিন শ্রমিকরা শুধু ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতেই সমাবেশ আহ্বান করেননি, তার আগের দিন অর্থাৎ ৩ মে ধর্মঘটি শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়ে পুলিশ এক শ্রমিককে হত্যা করেছিল, সেই শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদ জানাতেও শ্রমিকরা এসেছিলেন ওই সমাবেশে।

শিকাগো শহরে ১৮৮৬ সালের ৪ মে’র শ্রমিক হত্যা ও শ্রমিকদের মৃত্যুদন্ড শ্রমিক আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে পারেনি। ইউরোপে শ্রমিকদের সংগঠন দ্বিতীয় ইন্টারন্যাশনাল ১৮৮৯ সালে এক সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেয় যে, পরবর্তী বছর অর্থাৎ ১৮৯০ সাল থেকে শিকাগোর শ্রমিকদের আন্দোলনের দিনটি স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতি বছর ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে পালন করা হবে। এভাবেই প্রতি বছর পৃথিবীর দেশে দেশে শ্রমিক শ্রেণী তথা মেহনতি মানুষ মহান মে দিবস পালন করে আসছেন।

কালক্রমে শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি পৃথিবীব্যাপী স্বীকৃতি পায়। আইএলও সনদের শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি স্বীকৃতি পেয়েছে। এখন সেটা সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনেও ছড়িয়ে পড়েছে।

এখনও গার্মেন্টসহ অন্যান্য কারখানার শ্রমিকরা অনেক ক্ষেত্রে তাদের ন্যায্য মজুরি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার এখনও নেই গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প খাতে। রানা প্লাজার শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের পুনর্বাসন এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। নিরাপদ শিল্প এখনও একশ’ ভাগ নিশ্চিত হয়নি। আজকের বাংলাদেশে নিরাপদ কর্মপরিবেশ একটি বড় ইস্যু সন্দেহ নেই। শিল্প ও শ্রমিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লড়াই হোক এবারের মে দিবসের ডাক।

‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’ স্লোগানের মধ্যে একদিন এ দেশের মেহনতি মানুষ তার শক্তির সন্ধান পেত, এটা এখন অভ্যাসগত স্লোগানে পরিণত হয়েছে। বাস্তবে ক্ষুদ্রস্বার্থ, অসৎ উপায়ে অর্থাগম, রাজনৈতিক ও পেশীশক্তি প্রয়োগ ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে বিপথগামী করছে এবং এক শ্রেণীর মধ্যস্বত্বভোগী গোষ্ঠীর জন্ম দিয়েছিল। তা বিশেষ কোন রাজনৈতিক দল, আদর্শ ও পক্ষের অনুসারী নয়। তার নির্ভরতা ও বিশ্বাস পেশিশক্তির ওপর, এদের মদতদাতা হলো রাজনৈতিক অঙ্গনের সন্ত্রাসী শক্তি, যারা দায়বদ্ধ অর্থ ও ক্ষমতার কাছে। এ অবস্থা থেকে শ্রমিক শ্রেণীর স্বার্থরক্ষাকারী সংগঠন ট্রেড ইউনিয়নকে উদ্ধার করাই এবারের মহান মে দিবসের সংকল্প হওয়া জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও শিল্প বিকাশের স্বার্থে দুর্নীতিমুক্ত ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন গড়ে তোলা, বন্ধ কারখানা চালু করার আন্দোলন আজকের দিবসের দাবি।

মহান মে দিবসটি পালনের জন্য আমরা সবার সঙ্গে মিলে ও সবার শুভবুদ্ধির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেই পথের যাত্রী হবো, আর তখনই ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’ স্লোগানের সার্থকতা এই বিশ্বায়নের যুগে এক নতুন মাত্রা যুক্ত করবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট : দ্রুত সমাধান প্রয়োজন

উপজেলা স্বাস্থ্যসেবায় সংকট

বজ্রপাত মোকাবিলায় চাই বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন

মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি অনেক, ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ

আর্সেনিক দূষণ : জনস্বাস্থ্যের নীরব সংকট

ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে ‘মব জাস্টিস’ : সমাধান কোথায়?

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

tab

সম্পাদকীয়

মহান মে দিবস

শুক্রবার, ৩০ এপ্রিল ২০২১

আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে ১ মে পালন করা শুরু হয় ১৮৯০ সাল থেকে। ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ১৮৮৬ সালের ৪ মে শিকাগোর হে মার্কেটে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে একটি শ্রমিক সমাবেশে সংঘটিত রক্তাক্ত ঘটনাবলি। পুলিশ সেদিন গুলি চালিয়ে ৫ শ্রমিককে হত্যা এবং শ্রমিক নেতাদের গ্রেপ্তার করে। সেদিন শ্রমিকরা শুধু ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতেই সমাবেশ আহ্বান করেননি, তার আগের দিন অর্থাৎ ৩ মে ধর্মঘটি শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়ে পুলিশ এক শ্রমিককে হত্যা করেছিল, সেই শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদ জানাতেও শ্রমিকরা এসেছিলেন ওই সমাবেশে।

শিকাগো শহরে ১৮৮৬ সালের ৪ মে’র শ্রমিক হত্যা ও শ্রমিকদের মৃত্যুদন্ড শ্রমিক আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে পারেনি। ইউরোপে শ্রমিকদের সংগঠন দ্বিতীয় ইন্টারন্যাশনাল ১৮৮৯ সালে এক সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেয় যে, পরবর্তী বছর অর্থাৎ ১৮৯০ সাল থেকে শিকাগোর শ্রমিকদের আন্দোলনের দিনটি স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতি বছর ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে পালন করা হবে। এভাবেই প্রতি বছর পৃথিবীর দেশে দেশে শ্রমিক শ্রেণী তথা মেহনতি মানুষ মহান মে দিবস পালন করে আসছেন।

কালক্রমে শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি পৃথিবীব্যাপী স্বীকৃতি পায়। আইএলও সনদের শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি স্বীকৃতি পেয়েছে। এখন সেটা সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনেও ছড়িয়ে পড়েছে।

এখনও গার্মেন্টসহ অন্যান্য কারখানার শ্রমিকরা অনেক ক্ষেত্রে তাদের ন্যায্য মজুরি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার এখনও নেই গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প খাতে। রানা প্লাজার শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের পুনর্বাসন এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। নিরাপদ শিল্প এখনও একশ’ ভাগ নিশ্চিত হয়নি। আজকের বাংলাদেশে নিরাপদ কর্মপরিবেশ একটি বড় ইস্যু সন্দেহ নেই। শিল্প ও শ্রমিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লড়াই হোক এবারের মে দিবসের ডাক।

‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’ স্লোগানের মধ্যে একদিন এ দেশের মেহনতি মানুষ তার শক্তির সন্ধান পেত, এটা এখন অভ্যাসগত স্লোগানে পরিণত হয়েছে। বাস্তবে ক্ষুদ্রস্বার্থ, অসৎ উপায়ে অর্থাগম, রাজনৈতিক ও পেশীশক্তি প্রয়োগ ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে বিপথগামী করছে এবং এক শ্রেণীর মধ্যস্বত্বভোগী গোষ্ঠীর জন্ম দিয়েছিল। তা বিশেষ কোন রাজনৈতিক দল, আদর্শ ও পক্ষের অনুসারী নয়। তার নির্ভরতা ও বিশ্বাস পেশিশক্তির ওপর, এদের মদতদাতা হলো রাজনৈতিক অঙ্গনের সন্ত্রাসী শক্তি, যারা দায়বদ্ধ অর্থ ও ক্ষমতার কাছে। এ অবস্থা থেকে শ্রমিক শ্রেণীর স্বার্থরক্ষাকারী সংগঠন ট্রেড ইউনিয়নকে উদ্ধার করাই এবারের মহান মে দিবসের সংকল্প হওয়া জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও শিল্প বিকাশের স্বার্থে দুর্নীতিমুক্ত ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন গড়ে তোলা, বন্ধ কারখানা চালু করার আন্দোলন আজকের দিবসের দাবি।

মহান মে দিবসটি পালনের জন্য আমরা সবার সঙ্গে মিলে ও সবার শুভবুদ্ধির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেই পথের যাত্রী হবো, আর তখনই ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’ স্লোগানের সার্থকতা এই বিশ্বায়নের যুগে এক নতুন মাত্রা যুক্ত করবে।

back to top