alt

সম্পাদকীয়

সীমান্তহত্যা বন্ধে ভারতকে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে

: মঙ্গলবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেছেন, সীমান্তহত্যা বাংলাদেশের জন্য দুঃখের, ভারতের জন্য লজ্জার। একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় তিনি ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে এ কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি প্রচার করা হয় গতকাল সোমবার। এর তিনদিন আগে শুক্রবার কুড়িগ্রামের দাঁতভাঙা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশের একজন নাগরিক মারা গেছে। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি মারা যায় গত ২৯ আগস্ট। জুলাই মাসেও সীমান্তে হত্যার শিকার হয়েছে বাংলাদেশের একাধিক নাগরিক।

সীমান্তহত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার জন্য ভারত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ২০১৮ সালে করা বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে সীমান্ত অতিক্রমের ঘটনায় প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার না করার প্রশ্নে দুই দেশ একমত হয়। বাস্তবে সীমান্তহত্যা বন্ধ হয়নি।

এমন কোন মাস বা বছর নেই, নাগরিকরা সীমান্ত হত্যার শিকার হচ্ছে না। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর হিসাব অনুযায়ী, গত বছর সীমান্তে বিএসএফ ৪৮ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার মধ্যেও থেমে নেই সীমান্তহত্যা, বরং বেড়েছে। গত ১০ বছরের তুলনায় ২০২০ সালেই সীমান্তহত্যার ঘটনা বেশি ঘটেছে। ২০১৯ ও ২০১৮ সালে সীমান্তহত্যার শিকার হয়েছিল যথাক্রমে ৩৮ ও ১৪ জন বাংলাদেশের নাগরিক। পররাষ্ট্রমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, সীমান্তে হত্যা বাংলাদেশের জন্য দুঃখের। তবে ভারতের জন্য লজ্জার কি না সেটা একটা প্রশ্ন। বিএসএফ সীমান্তহত্যাকে ‘অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু’ বলে আখ্যায়িত করে। বিশেষজ্ঞরা এটাকে দায় এড়ানোর কৌশল বলে মনে করেন। সংশ্লিষ্ট ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বলে, আত্মরক্ষার জন্য বিএসএফকে গুলি ছুড়তে হয়। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বিভিন্ন সময়ের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তাদের গুলিতে নিরস্ত্র মানুষ মারা যায়। প্রসঙ্গক্রমে, ২০১১ সালে ফেলানী হত্যার কথা বলা যায়। বিএসএফের হাতে গ্রেপ্তারকৃতরা নির্যাতনের শিকার হন বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সীমান্তে নানান অপরাধের কথা বলে। আমরা বলতে চাই, কেউ অপরাধ করলে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের হাতে সোপর্দ করা যেতে পারে। অপরাধ হয়েছে এমন সন্দেহের প্রেক্ষিতে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার বা মানুষ হত্যা করা চলে না।

সীমান্তহত্যা বন্ধে ভারত যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আমরা তার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন দেখতে চাই। মানুষের জীবনের অধিকারকে সব অবস্থাতেই রক্ষা করে চলতে হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেন, সীমান্তে একটি হত্যার ঘটনা ঘটলেও সেটি দুঃখজনক। তখন তিনি বলেছিলেন, সীমান্তে যেন হত্যার ঘটনা না ঘটে সেটাই দুই দেশের অভীষ্ট লক্ষ্য হওয়া উচিত।

আমরা বলতে চাই, বন্ধুপ্রতীম দুটি দেশের পক্ষে সীমান্তহত্যা বন্ধ করা কঠিন কোন কাজ নয়। দু’দেশ বিশেষ করে ভারত আন্তরিকভাবে চাইলে এটা তৎক্ষণাত বন্ধ করা সম্ভব। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, এক্ষেত্রে ভারতের আন্তরিকতার অভাব নেই। বাস্তবক্ষেত্রে এর প্রতিফলন ঘটানো হলে সীমান্তে বাংলাদেশের জন্য দুঃখের বা ভারতের জন্য লজ্জাজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ হবে।

ভূমিধসের হুমকি ও প্রস্তুতি

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ নারী দল : অভিনন্দন

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট : দ্রুত সমাধান প্রয়োজন

উপজেলা স্বাস্থ্যসেবায় সংকট

বজ্রপাত মোকাবিলায় চাই বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন

মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি অনেক, ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ

আর্সেনিক দূষণ : জনস্বাস্থ্যের নীরব সংকট

ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে ‘মব জাস্টিস’ : সমাধান কোথায়?

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

tab

সম্পাদকীয়

সীমান্তহত্যা বন্ধে ভারতকে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে

মঙ্গলবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেছেন, সীমান্তহত্যা বাংলাদেশের জন্য দুঃখের, ভারতের জন্য লজ্জার। একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় তিনি ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে এ কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি প্রচার করা হয় গতকাল সোমবার। এর তিনদিন আগে শুক্রবার কুড়িগ্রামের দাঁতভাঙা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশের একজন নাগরিক মারা গেছে। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি মারা যায় গত ২৯ আগস্ট। জুলাই মাসেও সীমান্তে হত্যার শিকার হয়েছে বাংলাদেশের একাধিক নাগরিক।

সীমান্তহত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার জন্য ভারত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ২০১৮ সালে করা বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে সীমান্ত অতিক্রমের ঘটনায় প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার না করার প্রশ্নে দুই দেশ একমত হয়। বাস্তবে সীমান্তহত্যা বন্ধ হয়নি।

এমন কোন মাস বা বছর নেই, নাগরিকরা সীমান্ত হত্যার শিকার হচ্ছে না। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর হিসাব অনুযায়ী, গত বছর সীমান্তে বিএসএফ ৪৮ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার মধ্যেও থেমে নেই সীমান্তহত্যা, বরং বেড়েছে। গত ১০ বছরের তুলনায় ২০২০ সালেই সীমান্তহত্যার ঘটনা বেশি ঘটেছে। ২০১৯ ও ২০১৮ সালে সীমান্তহত্যার শিকার হয়েছিল যথাক্রমে ৩৮ ও ১৪ জন বাংলাদেশের নাগরিক। পররাষ্ট্রমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, সীমান্তে হত্যা বাংলাদেশের জন্য দুঃখের। তবে ভারতের জন্য লজ্জার কি না সেটা একটা প্রশ্ন। বিএসএফ সীমান্তহত্যাকে ‘অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু’ বলে আখ্যায়িত করে। বিশেষজ্ঞরা এটাকে দায় এড়ানোর কৌশল বলে মনে করেন। সংশ্লিষ্ট ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বলে, আত্মরক্ষার জন্য বিএসএফকে গুলি ছুড়তে হয়। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বিভিন্ন সময়ের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তাদের গুলিতে নিরস্ত্র মানুষ মারা যায়। প্রসঙ্গক্রমে, ২০১১ সালে ফেলানী হত্যার কথা বলা যায়। বিএসএফের হাতে গ্রেপ্তারকৃতরা নির্যাতনের শিকার হন বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সীমান্তে নানান অপরাধের কথা বলে। আমরা বলতে চাই, কেউ অপরাধ করলে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের হাতে সোপর্দ করা যেতে পারে। অপরাধ হয়েছে এমন সন্দেহের প্রেক্ষিতে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার বা মানুষ হত্যা করা চলে না।

সীমান্তহত্যা বন্ধে ভারত যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আমরা তার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন দেখতে চাই। মানুষের জীবনের অধিকারকে সব অবস্থাতেই রক্ষা করে চলতে হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেন, সীমান্তে একটি হত্যার ঘটনা ঘটলেও সেটি দুঃখজনক। তখন তিনি বলেছিলেন, সীমান্তে যেন হত্যার ঘটনা না ঘটে সেটাই দুই দেশের অভীষ্ট লক্ষ্য হওয়া উচিত।

আমরা বলতে চাই, বন্ধুপ্রতীম দুটি দেশের পক্ষে সীমান্তহত্যা বন্ধ করা কঠিন কোন কাজ নয়। দু’দেশ বিশেষ করে ভারত আন্তরিকভাবে চাইলে এটা তৎক্ষণাত বন্ধ করা সম্ভব। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, এক্ষেত্রে ভারতের আন্তরিকতার অভাব নেই। বাস্তবক্ষেত্রে এর প্রতিফলন ঘটানো হলে সীমান্তে বাংলাদেশের জন্য দুঃখের বা ভারতের জন্য লজ্জাজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ হবে।

back to top