একশ্রেণীর ওষুধ ব্যবসায়ীরা জীবনরক্ষাকারী বিভিন্ন নকল ওষুধ উৎপাদন করে পাইকারি ও খুচরা দোকানে বিক্রি করছে। আবার কেউ কেউ গোডাউনে এসব ওষুধ মজুদ করে গোপনে বিক্রি করছে। রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার পাইকারি ওষুধ মার্কেট থেকে গত শনিবার নকল ও ভেজাল ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় নকল পণ্য মজুদ ও বিক্রির অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহায়তায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে গত রোববার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
উক্ত অভিযানের মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হলো যে, দেশে নকল-ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন চলছেই। নকল-ভেজাল ওষুধবিরোধী অভিযান আগেও হয়েছে, দেশে ভেজাল ওষুধ উৎপাদনের বেশ কয়েকটি কারখানারও সন্ধান মিলেছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারপরেও নকল-ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ হয়নি। তাহলে গলদটা কোথায়। দুর্বলতা কি আইনে, না এর প্রয়োগে- এমন প্রশ্ন উঠেছে।
নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের অভিযোগে যাদের গ্রেপ্তার করা হয় তাদের সাজা নিশ্চিত করা হয় কিনা-সেটা একটা প্রশ্ন। বিচার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে শুধু বিচ্ছিন্ন অভিযান চালিয়ে দু’একজন গ্রেপ্তার করে ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ করা যাবে না।
দেশে নকল বা ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলার বিধান আছে। এই আইনে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান মৃত্যুদন্ড। তবে এই আইনে মামলা হয় খুবই কম। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ক্ষতিকর প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে দুই হাজারেরও বেশি শিশুর মৃত্যু ঘটেছিল। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কয়েকটি কোম্পানির প্যারাসিটামল সিরাপ পরীক্ষা করে তাতে ক্ষতিকারক ড্রাই-ইথিলিন গ্লাইকল নামের বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি পায়। এ কারণে উক্ত সিরাপ সেবনে কিডনি অকেজো হয়ে শিশুদের মৃত্যু ঘটে।
ভেজাল প্যারাসিটামল খেয়ে ৭৬ শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ এনে ১৯৯২ সালে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর পাঁচটি মামলা করে। এসব মামালায় রায় হতে সময় লাগে প্রায় ২২ থেকে ২৭ বছর। মামলাভেদে আসামিদের সর্ব্বোচ্চ ১০ বছর কারাদন্ড দেয়া হয়। ভেজাল প্যারাসিটামল খেয়ে শিশু মৃত্যু হওয়ার অভিযোগে করা কোন কোন মামলায় একজনেরও সাজা হয়নি-এমন নজিরও আছে।
সাধারণত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে অভিযুক্তদের ছেড়ে দেয়া হয়। তাই নকল ও ভেজাল ওষুধ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এই বিষয়ে যথাযথ নজরদারি করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন এবং বিপণনের সঙ্গে জড়িতরা গণহত্যার মতো অপরাধ করছে। আমরা বলতে চাই, এই গণহত্যা এখনই থামাতে হবে। আমরা দেখতে চাই, নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত সব ঘটনার বিচার হচ্ছে, অপরাধীরা সাজা পাচ্ছে এবং সাজা ভোগ করছে। আইনের ফাঁকফোকর গলে তারা যেন বের হয়ে না আসতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক হুমকির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি বদলাবে না।
মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১
একশ্রেণীর ওষুধ ব্যবসায়ীরা জীবনরক্ষাকারী বিভিন্ন নকল ওষুধ উৎপাদন করে পাইকারি ও খুচরা দোকানে বিক্রি করছে। আবার কেউ কেউ গোডাউনে এসব ওষুধ মজুদ করে গোপনে বিক্রি করছে। রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার পাইকারি ওষুধ মার্কেট থেকে গত শনিবার নকল ও ভেজাল ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় নকল পণ্য মজুদ ও বিক্রির অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহায়তায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে গত রোববার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
উক্ত অভিযানের মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হলো যে, দেশে নকল-ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন চলছেই। নকল-ভেজাল ওষুধবিরোধী অভিযান আগেও হয়েছে, দেশে ভেজাল ওষুধ উৎপাদনের বেশ কয়েকটি কারখানারও সন্ধান মিলেছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারপরেও নকল-ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ হয়নি। তাহলে গলদটা কোথায়। দুর্বলতা কি আইনে, না এর প্রয়োগে- এমন প্রশ্ন উঠেছে।
নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের অভিযোগে যাদের গ্রেপ্তার করা হয় তাদের সাজা নিশ্চিত করা হয় কিনা-সেটা একটা প্রশ্ন। বিচার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে শুধু বিচ্ছিন্ন অভিযান চালিয়ে দু’একজন গ্রেপ্তার করে ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ করা যাবে না।
দেশে নকল বা ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলার বিধান আছে। এই আইনে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান মৃত্যুদন্ড। তবে এই আইনে মামলা হয় খুবই কম। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ক্ষতিকর প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে দুই হাজারেরও বেশি শিশুর মৃত্যু ঘটেছিল। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কয়েকটি কোম্পানির প্যারাসিটামল সিরাপ পরীক্ষা করে তাতে ক্ষতিকারক ড্রাই-ইথিলিন গ্লাইকল নামের বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি পায়। এ কারণে উক্ত সিরাপ সেবনে কিডনি অকেজো হয়ে শিশুদের মৃত্যু ঘটে।
ভেজাল প্যারাসিটামল খেয়ে ৭৬ শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ এনে ১৯৯২ সালে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর পাঁচটি মামলা করে। এসব মামালায় রায় হতে সময় লাগে প্রায় ২২ থেকে ২৭ বছর। মামলাভেদে আসামিদের সর্ব্বোচ্চ ১০ বছর কারাদন্ড দেয়া হয়। ভেজাল প্যারাসিটামল খেয়ে শিশু মৃত্যু হওয়ার অভিযোগে করা কোন কোন মামলায় একজনেরও সাজা হয়নি-এমন নজিরও আছে।
সাধারণত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে অভিযুক্তদের ছেড়ে দেয়া হয়। তাই নকল ও ভেজাল ওষুধ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এই বিষয়ে যথাযথ নজরদারি করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন এবং বিপণনের সঙ্গে জড়িতরা গণহত্যার মতো অপরাধ করছে। আমরা বলতে চাই, এই গণহত্যা এখনই থামাতে হবে। আমরা দেখতে চাই, নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত সব ঘটনার বিচার হচ্ছে, অপরাধীরা সাজা পাচ্ছে এবং সাজা ভোগ করছে। আইনের ফাঁকফোকর গলে তারা যেন বের হয়ে না আসতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক হুমকির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি বদলাবে না।