বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলছে। সপ্তাহখানেক আগেও প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। এখন তা ৭০-৮০ টাকা। শুধু এই একটি পণ্যেরই দাম বাড়েনি। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার অজুহাতে বেড়েছে ভোজ্যতেল, চিনি ও ডালের দাম। ভরা মৌসুমেও দেশের চালের বাজার চড়া। নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের প্রোটিনের প্রধান উৎস বলে খ্যাত ব্রয়লার মুরগির দামও চড়া। বাজারে এখন প্রতি কেজি ব্রয়লারের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০-১৪০ টাকা। সবজির বাজারেও রয়েছে অস্বস্তি।
নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে নিম্নবিত্ত, খেটে খাওয়া ও সীমিত আয়ের মানুষের ওপর বাড়তি অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করে। একটি দুটি পণ্যের দাম বাড়লেই সীমিত আয়ের মানুষের পকেটে টান পড়ে। পরিবার নিয়ে তাদের টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে যায়। মৌসুমভেদে কোন কোন পণ্যের দাম যৌক্তিক কারণে বাড়লে সেটার সঙ্গে সাধারণ মানুষ মানিয়ে নেয়ার প্রাণান্তকর চেষ্টা করে। কিন্তু কোন কারণ ছাড়া নিত্যপণ্যের দাম যখন লাগামহীন বাড়তে থাকে তখন সাধারণ মানুষের পক্ষে এর চাপ সামলানো সম্ভব হয় না। বাড়তি দামের বোঝায় চিড়ে-চ্যাপ্টা হওয়া এসব মানুষের খবর কেউ রাখে বলে মনে হয় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোন প্রচেষ্টা দেখা যায় না।
দাম বাড়ার অজুহাত হিসেবে অনেক কারণের কথাই বলা হয়। সপ্তাহখানেক আগে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে। আমদানিও কিছুটা কমেছে বলে জানা গেছে। এ খবরেই দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। অথচ দেশি পেঁয়াজের এবার ঘাটতি নেই। বরং এবার সাড়ে ছয় লাখ টন বাড়তি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। আমদানি কম হওয়ার খবরেই যদি পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়, তাহলে সত্যি সত্যি আমদানি বন্ধ হলে এর দাম কোথায় গিয়ে পৌঁছবে সেটা ভেবে আমরা শঙ্কিত। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে আকস্মিকভাবে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিলে এর দাম ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
কারণে-অকারণে যদি কোন পণ্যের দাম বাড়ে তখন রাতারাতি সেটা দ্বিগুণ হয়ে যায়। আর দেশে একবার কোন পণ্যের দাম বাড়লে তা আর সহজে কমতে চায় না। কেন কমে না সেটার কারণ খতিয়ে দেখা বা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয় না।
শোনা যাচ্ছে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগামীকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে পেঁয়াজ আমদানির ওপর আরোপিত ৫ শতাংশ কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেয়া হতে পারে। অতীতেও এমন অনেক বৈঠক হয়েছে। কিন্তু তার সুফল পাওয়া যায়নি। এবার যেন সুফল মেলে সেটা আমাদের প্রত্যাশা।
যেকোন মূল্যে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। এজন্য বাজার মনিটর করতে হবে। অনেক মজুদদার অন্যায়ভবে মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা করেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সবজিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে উন্নত বিপণন ব্যবস্থা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে টিসিবির বিপণন কার্যক্রম আরও জোরদার ও এর পরিধি বিস্তৃত করতে হবে। বিপণন ব্যবস্থা এমন হতে হবে যেন মধ্যবিত্তরাও নিঃসংকোচে টিসিবির পণ্য কিনতে পারে।
শনিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২১
বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলছে। সপ্তাহখানেক আগেও প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। এখন তা ৭০-৮০ টাকা। শুধু এই একটি পণ্যেরই দাম বাড়েনি। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার অজুহাতে বেড়েছে ভোজ্যতেল, চিনি ও ডালের দাম। ভরা মৌসুমেও দেশের চালের বাজার চড়া। নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের প্রোটিনের প্রধান উৎস বলে খ্যাত ব্রয়লার মুরগির দামও চড়া। বাজারে এখন প্রতি কেজি ব্রয়লারের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০-১৪০ টাকা। সবজির বাজারেও রয়েছে অস্বস্তি।
নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে নিম্নবিত্ত, খেটে খাওয়া ও সীমিত আয়ের মানুষের ওপর বাড়তি অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করে। একটি দুটি পণ্যের দাম বাড়লেই সীমিত আয়ের মানুষের পকেটে টান পড়ে। পরিবার নিয়ে তাদের টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে যায়। মৌসুমভেদে কোন কোন পণ্যের দাম যৌক্তিক কারণে বাড়লে সেটার সঙ্গে সাধারণ মানুষ মানিয়ে নেয়ার প্রাণান্তকর চেষ্টা করে। কিন্তু কোন কারণ ছাড়া নিত্যপণ্যের দাম যখন লাগামহীন বাড়তে থাকে তখন সাধারণ মানুষের পক্ষে এর চাপ সামলানো সম্ভব হয় না। বাড়তি দামের বোঝায় চিড়ে-চ্যাপ্টা হওয়া এসব মানুষের খবর কেউ রাখে বলে মনে হয় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোন প্রচেষ্টা দেখা যায় না।
দাম বাড়ার অজুহাত হিসেবে অনেক কারণের কথাই বলা হয়। সপ্তাহখানেক আগে ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে। আমদানিও কিছুটা কমেছে বলে জানা গেছে। এ খবরেই দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। অথচ দেশি পেঁয়াজের এবার ঘাটতি নেই। বরং এবার সাড়ে ছয় লাখ টন বাড়তি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। আমদানি কম হওয়ার খবরেই যদি পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়, তাহলে সত্যি সত্যি আমদানি বন্ধ হলে এর দাম কোথায় গিয়ে পৌঁছবে সেটা ভেবে আমরা শঙ্কিত। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে আকস্মিকভাবে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিলে এর দাম ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
কারণে-অকারণে যদি কোন পণ্যের দাম বাড়ে তখন রাতারাতি সেটা দ্বিগুণ হয়ে যায়। আর দেশে একবার কোন পণ্যের দাম বাড়লে তা আর সহজে কমতে চায় না। কেন কমে না সেটার কারণ খতিয়ে দেখা বা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয় না।
শোনা যাচ্ছে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগামীকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে পেঁয়াজ আমদানির ওপর আরোপিত ৫ শতাংশ কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেয়া হতে পারে। অতীতেও এমন অনেক বৈঠক হয়েছে। কিন্তু তার সুফল পাওয়া যায়নি। এবার যেন সুফল মেলে সেটা আমাদের প্রত্যাশা।
যেকোন মূল্যে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। এজন্য বাজার মনিটর করতে হবে। অনেক মজুদদার অন্যায়ভবে মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা করেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সবজিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে উন্নত বিপণন ব্যবস্থা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে টিসিবির বিপণন কার্যক্রম আরও জোরদার ও এর পরিধি বিস্তৃত করতে হবে। বিপণন ব্যবস্থা এমন হতে হবে যেন মধ্যবিত্তরাও নিঃসংকোচে টিসিবির পণ্য কিনতে পারে।