alt

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

শামসুজ্জামান খান : কালের আয়নায় তার ছবি

আমিনুর রহমান সুলতান

: শনিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২১
image

‘কালের ধুলোয় লেখা’ কবি শামসুর রাহমানের একটি গ্রন্থ। গ্রন্থটিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করে শামসুজ্জামান খান একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। শিরোনাম- ‘শামসুর রাহমান: কালের ধুলোয় স্বর্ণরেণু’। পরে একটি গ্রন্থের শিরোনাম করেছেন- ‘কালের ধুলোয় স্বর্ণরেণু’। গ্রন্থটিতে কাজী আবদুল ওদুদ, আবদুল হক, আবদুল হক চৌধুরী, সন্তোষ গুপ্ত, ওয়াহিদুল হক, যতীন সরকার, জাহানারা ইমাম, ড. নীলিমা ইব্রাহিম এমন ২২ জন খ্যাতিমানদের জীবনাদর্শনের জয়গান করেছেন শামসুজ্জামান খান।

তার সাহিত্যকর্ম, সমাজবিকাশ ও দায়িত্বশীল ভূমিকার জন্য কালের আয়নায় ছবি হয়ে থাকবেন তিনি। বৈশ্বিক মহামারী করোনা জয়ী তিনি হতে পারেননি কিন্তু তাই বলে মৃত্যু কখনও মুছে দিতে পারবে না কালের ধুলোয় যে পদচিহ্ন রেখে গেছেন। নববর্ষকে স্বাগত জানানোর সময়েই তিনি চলে গেলেন- না ফেরার দেশে (১ লা বৈশাখ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ; ১৪ই এপ্রিল ২০২১ খ্রিস্টাব্দ)।

জন্মেছেন ১৯৪০ সালে সার্টিফিকেটে যদিও উল্লেখ রয়েছে ২৯ ডিসেম্বর, প্রকৃত জন্ম আষাঢ়ষ্য প্রথম দিবসে। জন্মতারিখ নিয়ে আমার মতো অনেকেই হোঁচট খেতেন তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে। জন্ম তার মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চারিগ্রামে। তার বাবা এম আর খান মৃত্যুবরণ করেন তার বয়স যখন মাত্র দুই বছর। তার পূর্বপুরুষ আদালত খান ভারতবর্ষে একজন খ্যাতিমান বুদ্ধিজীবী ছিলেন। বাবাকে হারিয়ে মা ও দাদির তত্ত্বাবধানেই বেড়ে ওঠেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ‘স্নাতক সম্মান (১৯৬৩) ও স্নাতকোত্তর (১৯৬৪)’ ডিগ্রি অর্জন শেষে ওই বছরেই অধ্যাপনা শুরু করেন মুন্সীগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজে। তারপর জগন্নাথ কলেজে এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন ১৯৬৮-৭৩ সাল পর্যন্ত। অধ্যাপনার চাকরি ছেড়ে তিনি যোগ দেন বাংলা একাডেমিতে। অবসর গ্রহণ শেষে মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও বাংলা একাডেমিতে। বাংলা একাডেমির তিনি তিনবার মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ারের অধ্যাপক পদেও অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন ১ অক্টোবর ২০১৮ সালে।

মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বাংলা একাডেমির সভাপতির পদ অলঙ্কৃত করেন। তিনি একাধারে লোকবিজ্ঞানী ও সমাজবিজ্ঞানী। স্বাধীনতা পূর্ব ও স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে ২০ শতকের আশির দশক পর্যন্ত লোকসংস্কৃতির চর্চা হতো লোকসাহিত্য কেন্দ্রিক। আধুনিক ফোকলোর চর্চার ধারা শুরুর ক্ষেত্রে শামসুজ্জামান খানের ভূমিকা অগ্রগণ্য। আশির দশকের মাঝামাঝি সময় থেকেই আধুনিক ফোকলোর চর্চার ফলে আমরা নতুনভাবে যে পাঠ গ্রহণ করি সেখানে উপলব্ধিতে আসে ‘লোকসাহিত্য’ ফোকলোরের একটি বিশেষ এবহৎধ। ফোকলোর-এর পরিসর বিস্তৃত। তিনি আধুনিক ফোকলোর চর্চার বিকাশে অনেক গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন। লিখেছেন গবেষণামূলক, তাত্ত্বিক ও ক্ষেত্রসমীক্ষার আলোকে প্রচুর প্রবন্ধ, একাধিক গ্রন্থ। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে- ‘আধুনিক ফোকলোর চিন্তা’, ‘সাম্প্রতিক ফোকলোর ভাবনা’, ‘বাংলাদেশের উৎসব’। সম্পাদনা করেছেন- ‘বাংলাদেশের লোকঐতিহ্য’ শিরোনামে দুই খন্ডের গ্রন্থ। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য সম্পাদনার মধ্যে রয়েছে- বাংলা একাডেমি ফোকলোর সংগ্রহমালা (১৩৪টি খন্ড, উপদেষ্টা সম্পাদক), বাংলা একাডেমি লোকসংস্কৃতি গ্রন্থমালা (৬৪ জেলা)। উল্লেখ্য, ৬৪ জেলার গ্রন্থটির কাজের সঙ্গে আমরাও নিবিড় সম্পৃক্ততা রয়েছে। আমি সহযোগী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। তিনি ছিলেন প্রধান সম্পাদক।

ফোকলোর ছাড়াও তার চিন্তার বিস্তৃতি ছিল সমাজবিকাশে, রাষ্ট্রচিন্তায়। ‘মৃদুভাষী, সজ্জন, সহৃদয় ও আদর্শবাদী এই মানুষটি আমাদের সংস্কৃতি অঙ্গনের প্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। বাংলা, বাঙালিত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের মৌলিক সত্তা রক্ষার সংগ্রামের আপোষহীন যোদ্ধা তিনি এবং সেই সঙ্গে বিজ্ঞানমনস্ক ও প্রগতিশীল বিশ্বনাগরিক।’ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ প্রাপ্তির ইতিহাসকে তিনি ধরে রেখেছেন বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস চতুর্থ খন্ডের পাঁচটি পর্বের অধ্যাপক অজয় রায়ের সঙ্গে যৌথ সম্পাদনা করে। এই ক্ষেত্রেও উল্লেখ্য পাঁচটি পর্বের ৪টি পর্বে আমি অপরেশ কুমার ব্যানার্জী ও মোবারক হোসেনের সঙ্গে যৌথ যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি।

অসাম্প্রাদায়িক চেতনা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চাকে লালন করেছেন। গ্রন্থও লিখেছেন- ‘মুক্তবুদ্ধি ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমকাল’ শিরোনামে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ তাকে উজ্জীবিত করে রেখেছে। তাকে নিয়েও রয়েছে গ্রন্থ ‘বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলাপ ও প্রাসঙ্গিক কথকথা এবং লেখক বঙ্গবন্ধু ও অন্যান্য’।

সাহিত্য সাধনা, গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, প্রথম ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার যথাক্রমে স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকও লাভ করেছেন।

জলবায়ু পরিবর্তন: স্বাস্থ্যঝুঁকি

ছবি

অস্থির পেঁয়াজের বাজার: আমদানি কি সত্যিই সমাধান?

মূল্যবৃদ্ধির ঘেরাটোপ: সংকটাক্রান্ত পরিবার ও সামাজিক রূপান্তর

বায়দূষণে অকালমৃত্যু

লাশের বদলে লাশই যদি চুড়ান্ত হয়, তবে রাষ্ট্রের দরকার কী?

ভিক্ষাবৃত্তি যেখানে অন্যতম পেশা

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

আদিবাসীদের ভূমি অধিকার ও নিরাপত্তা সংকট

“মুনীর চৌধুরীর কবর...”

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

জলবায়ু সংকট ও খাদ্য নিরাপত্তা

স্বাধীন তদন্ত কমিশন দাবির নেপথ্যে কি দায়মুক্তি?

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

প্রহর গুনি কোন আশাতে!

বিজয়ের রক্তাক্ত সূর্য ও আমাদের ঋণের হিসাব

বিজয় দিবস: নতুন প্রজন্মের রাষ্ট্রচিন্তার দিকদর্শন

ছবি

আমাদের বিজয়ের অন্তর্নিহিত বার্তা

প্রাণিসম্পদ: দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি

জমির জরিপ: ন্যায়বিচার প্রসঙ্গ

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

উন্নয়নের আড়ালে রোগীর ভোগান্তি: আস্থা সংকটে স্বাস্থ্যসেবা

ছবি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: অমিত শক্তির উৎস

ছবি

বেগম রোকেয়া এখনো জাগ্রত

পশ্চিমবঙ্গ: বামপন্থীদের ‘বাংলা বাঁচাও’-এর ডাক

সবার বাংলাদেশ কবে প্রতিষ্ঠিত হবে?

বিদেশি বিনিয়োগ : প্রয়োজন আইনের শাসন ও সামাজিক স্থিতি

চিকিৎসা যখন অসহনীয় ব্যয়, তখন প্রতিবাদই ন্যায়

মস্কোর কৌশলগত পুনর্গঠন

“সব শিয়ালের এক রা’ মারা গেল কুমিরের ছা”

ছবি

বিচূর্ণ দর্পণের মুখ

নিজের চেতনায় নিজেরই ঘা দেয়া জরুরি

ঋণ অবলোপনের প্রভাব

ভেজাল গুড়ের মরণফাঁদ: বাঙালির ঐতিহ্য, জনস্বাস্থ্য ও আস্থার নীরব বিপর্যয়

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস

জোটের ভোট নাকি ভোটের জোট, কৌশলটা কী?

প্রমাণ তো করতে হবে আমরা হাসিনার চেয়ে ভালো

tab

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

শামসুজ্জামান খান : কালের আয়নায় তার ছবি

আমিনুর রহমান সুলতান

image

শনিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২১

‘কালের ধুলোয় লেখা’ কবি শামসুর রাহমানের একটি গ্রন্থ। গ্রন্থটিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করে শামসুজ্জামান খান একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন। শিরোনাম- ‘শামসুর রাহমান: কালের ধুলোয় স্বর্ণরেণু’। পরে একটি গ্রন্থের শিরোনাম করেছেন- ‘কালের ধুলোয় স্বর্ণরেণু’। গ্রন্থটিতে কাজী আবদুল ওদুদ, আবদুল হক, আবদুল হক চৌধুরী, সন্তোষ গুপ্ত, ওয়াহিদুল হক, যতীন সরকার, জাহানারা ইমাম, ড. নীলিমা ইব্রাহিম এমন ২২ জন খ্যাতিমানদের জীবনাদর্শনের জয়গান করেছেন শামসুজ্জামান খান।

তার সাহিত্যকর্ম, সমাজবিকাশ ও দায়িত্বশীল ভূমিকার জন্য কালের আয়নায় ছবি হয়ে থাকবেন তিনি। বৈশ্বিক মহামারী করোনা জয়ী তিনি হতে পারেননি কিন্তু তাই বলে মৃত্যু কখনও মুছে দিতে পারবে না কালের ধুলোয় যে পদচিহ্ন রেখে গেছেন। নববর্ষকে স্বাগত জানানোর সময়েই তিনি চলে গেলেন- না ফেরার দেশে (১ লা বৈশাখ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ; ১৪ই এপ্রিল ২০২১ খ্রিস্টাব্দ)।

জন্মেছেন ১৯৪০ সালে সার্টিফিকেটে যদিও উল্লেখ রয়েছে ২৯ ডিসেম্বর, প্রকৃত জন্ম আষাঢ়ষ্য প্রথম দিবসে। জন্মতারিখ নিয়ে আমার মতো অনেকেই হোঁচট খেতেন তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে। জন্ম তার মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চারিগ্রামে। তার বাবা এম আর খান মৃত্যুবরণ করেন তার বয়স যখন মাত্র দুই বছর। তার পূর্বপুরুষ আদালত খান ভারতবর্ষে একজন খ্যাতিমান বুদ্ধিজীবী ছিলেন। বাবাকে হারিয়ে মা ও দাদির তত্ত্বাবধানেই বেড়ে ওঠেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ‘স্নাতক সম্মান (১৯৬৩) ও স্নাতকোত্তর (১৯৬৪)’ ডিগ্রি অর্জন শেষে ওই বছরেই অধ্যাপনা শুরু করেন মুন্সীগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজে। তারপর জগন্নাথ কলেজে এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন ১৯৬৮-৭৩ সাল পর্যন্ত। অধ্যাপনার চাকরি ছেড়ে তিনি যোগ দেন বাংলা একাডেমিতে। অবসর গ্রহণ শেষে মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও বাংলা একাডেমিতে। বাংলা একাডেমির তিনি তিনবার মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ারের অধ্যাপক পদেও অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন ১ অক্টোবর ২০১৮ সালে।

মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত বাংলা একাডেমির সভাপতির পদ অলঙ্কৃত করেন। তিনি একাধারে লোকবিজ্ঞানী ও সমাজবিজ্ঞানী। স্বাধীনতা পূর্ব ও স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে ২০ শতকের আশির দশক পর্যন্ত লোকসংস্কৃতির চর্চা হতো লোকসাহিত্য কেন্দ্রিক। আধুনিক ফোকলোর চর্চার ধারা শুরুর ক্ষেত্রে শামসুজ্জামান খানের ভূমিকা অগ্রগণ্য। আশির দশকের মাঝামাঝি সময় থেকেই আধুনিক ফোকলোর চর্চার ফলে আমরা নতুনভাবে যে পাঠ গ্রহণ করি সেখানে উপলব্ধিতে আসে ‘লোকসাহিত্য’ ফোকলোরের একটি বিশেষ এবহৎধ। ফোকলোর-এর পরিসর বিস্তৃত। তিনি আধুনিক ফোকলোর চর্চার বিকাশে অনেক গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন। লিখেছেন গবেষণামূলক, তাত্ত্বিক ও ক্ষেত্রসমীক্ষার আলোকে প্রচুর প্রবন্ধ, একাধিক গ্রন্থ। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে- ‘আধুনিক ফোকলোর চিন্তা’, ‘সাম্প্রতিক ফোকলোর ভাবনা’, ‘বাংলাদেশের উৎসব’। সম্পাদনা করেছেন- ‘বাংলাদেশের লোকঐতিহ্য’ শিরোনামে দুই খন্ডের গ্রন্থ। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য সম্পাদনার মধ্যে রয়েছে- বাংলা একাডেমি ফোকলোর সংগ্রহমালা (১৩৪টি খন্ড, উপদেষ্টা সম্পাদক), বাংলা একাডেমি লোকসংস্কৃতি গ্রন্থমালা (৬৪ জেলা)। উল্লেখ্য, ৬৪ জেলার গ্রন্থটির কাজের সঙ্গে আমরাও নিবিড় সম্পৃক্ততা রয়েছে। আমি সহযোগী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। তিনি ছিলেন প্রধান সম্পাদক।

ফোকলোর ছাড়াও তার চিন্তার বিস্তৃতি ছিল সমাজবিকাশে, রাষ্ট্রচিন্তায়। ‘মৃদুভাষী, সজ্জন, সহৃদয় ও আদর্শবাদী এই মানুষটি আমাদের সংস্কৃতি অঙ্গনের প্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। বাংলা, বাঙালিত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের মৌলিক সত্তা রক্ষার সংগ্রামের আপোষহীন যোদ্ধা তিনি এবং সেই সঙ্গে বিজ্ঞানমনস্ক ও প্রগতিশীল বিশ্বনাগরিক।’ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ প্রাপ্তির ইতিহাসকে তিনি ধরে রেখেছেন বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস চতুর্থ খন্ডের পাঁচটি পর্বের অধ্যাপক অজয় রায়ের সঙ্গে যৌথ সম্পাদনা করে। এই ক্ষেত্রেও উল্লেখ্য পাঁচটি পর্বের ৪টি পর্বে আমি অপরেশ কুমার ব্যানার্জী ও মোবারক হোসেনের সঙ্গে যৌথ যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি।

অসাম্প্রাদায়িক চেতনা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চাকে লালন করেছেন। গ্রন্থও লিখেছেন- ‘মুক্তবুদ্ধি ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমকাল’ শিরোনামে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ তাকে উজ্জীবিত করে রেখেছে। তাকে নিয়েও রয়েছে গ্রন্থ ‘বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলাপ ও প্রাসঙ্গিক কথকথা এবং লেখক বঙ্গবন্ধু ও অন্যান্য’।

সাহিত্য সাধনা, গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, প্রথম ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার যথাক্রমে স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকও লাভ করেছেন।

back to top