বাজপাখিদের কথা
হাফিজুর রহমান
পাখা থাকলেও বাজপাখি কখনোই পাখি নয় কোনো
বরং বলতে পারি হিংস্র কোনো উড়–ক্কু সন্ত্রাস
পাখিদের নরম রোদের মতো স্নিগ্ধ অবয়ব, কিংবা
সহজাত মায়াবী শরীর নেই তার, নেই হৃদয়-ঐশ্বর্য;
কী ভীষণ সংহারক দৃষ্টির কাঠিন্য ফুটে থাকে সমস্ত অস্তিত্বে
পাখিদের দেহের ভুগোলে যতোখানি কোমলতা ফুটে থাকে
প্রাকৃতিক দেহের অস্তিত্বে পাখপাখালির শোভন সৌন্দর্যে
বাজপাখি সর্বদাই সেই স্বর্গীয় আনন্দ থেকে বঞ্চিত-প্রাণ এক,
তবুও তো পাখি, যদিও ক্রুরতা নৃশংসতা শব্দ দুটি সমার্থক তার।
পাখির শরীর নিয়ে সে কেবল কোমলতাহীন দেহের ভূগোল
মায়াহীন কায়ার পতাকা আর হিংস্রতার মর্মান্তিক পতাকা বিশেষ।
পাখিদের মায়াবী রোদের গতরে যেন হিং¯্রতার নিন্দিত ভূষণ
তাই পাখিদের কোমল শরীরে যে ঢেউ নাচে প্রকৃতির কোলে
পাখি নামে পৃথিবীতে উড়ে উড়ে সে কেবল তার বিপরীত দাহ।
অমানবিক জুলুমবাজ মানুষ যেমন কলঙ্কিত প্রাণীর শরীর শুধু!
মৃদু হাসে তরঙ্গিনী
শেখ মাসুম কামাল
আমি তারে বলি
এসো, ছৌ নাচ দেখি, রক্তনীলে
ময়ূরভঞ্জ ছৌ
মৃদু হাসে তরঙ্গিনী
পেছনে ভরাট আলো
কাঁপা কাঁপা ঢেউ মৃদঙ্গে।
এরপর
আমি তারে বলি
এসো, ছৌ নাচ দেখি প্রবুদ্ধ চোখে
মনিপুরী ছৌ
মৃদু হাসে তরঙ্গিনী।
বিচ্ছিন্ন দু’ধার, দীর্ঘ ব্যবধান
অবশেষে
আমি তারে বলি
ছৌ নাচ থাক, এসো ফুল তুলি,
এসো মালা গাঁথি
মৃদু হাসে তরঙ্গিনী।
রাত দখল
ফরিদা রানু
আমি একটি রাত দখল করতে চাই
তবে বাংলাদেশ
বা বহির্বিশ্বে নারীরা যেভাবে দখল করে
ঠিক সেভাবে নয়-
পুরুষ কি শুধু পশু?
নয় কারও আশ্রয়?
বঞ্চিতের পাশে দাঁড়ায়
আহ্লাদকে দেয় প্রশ্রয়!
আমিও রাত দখল করতে চাই
একটি নয়, দু’টি নয়
শত হাজার রাত দখল করতে চাই;
তবে পিতৃতন্ত্রের তুলোধুনা করে নয়
বরং মাতৃতন্ত্রের সম্মানে, আবেগে
সমুজ্জ্বল; স্ব-মহিমায়!
পুরুষ ও মেয়ে
তরুন ইউসুফ
পুরুষগুলো হাপিত্যেশ করতে থাকে
একেকটা মেয়ের জন্য
একেকটা মেয়ে হাপিত্যেশ করে
মুক্তি চায়
পুরুষগুলো কারাগারের দেয়ালে
লিখে রাখে মুক্তির গান
মেয়েগুলো গানের টানে
কারাগারে যায়
পুরুষগুলো মেয়ে চায়
মেয়েগুলো মুক্তি
আহা, কেউ কাউকে পায় না!
আগামীকাল রাতে তুমিও এসো
তড়িৎ চক্রবর্তী
সমস্ত শোষণ
আর হত্যার প্রতিবাদে।
বিশ্বব্যাপী মানুষ মারা যুদ্ধের-বিরুদ্ধে।
আমি এনে দেবো,
বিপ্লবের জলোচ্ছ্বাস।
সব প্রিয় মানুষের নতুন ঘর গড়ার কাজ হোক
আমার অস্থি দিয়ে।
সে জল্লাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ করেছিল।
যুদ্ধে ছিঁড়ে তার উৎপত্তিস্থান।
হায়না বলেছিল।
শেয়াল কুকুরে ছিঁড়ে খাবে!
সে হারাইনি- জিতেছে লক্ষ মন।
সে লক্ষ কোটির মা বোন বা মেয়ে।
তোমাকে রক্ষার দায়িত্ব আমার হোক।
তাই।
আজ তারা দখল নেবে রাতের অর্ধেক আকাশ।
কাল পুরো দুনিয়াটা।
বসন্তবৃষ্টি
আকেল হায়দার
এতকাল আমার কাছে
বসন্ত বলে কিছু ছিল না
আমি ছিলাম টালমাটাল
এক রুদ্ধদ্বার নদী!
তুমি এসে বৃষ্টি নামালে-
মৃত গাঙে ঢেউ জাগালে
রুক্ষ ডালে কুঁড়ি ফোটালে
শীতার্ত বনে রোদ ছড়ালে...
আমাকে ফাগুন হাওয়ায়
তোমার আকাশে ওড়ালে
ইচ্ছেগুলো পাখি বানালে
স্বপ্নগুলোর ঘুম ভাঙালে!
সেই থেকে কেবল
উড়ছি আর উড়ছি-
আর তোমার মেঘে মেঘে
বসন্তের বৃষ্টি হয়ে ঝরছি...
বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বাজপাখিদের কথা
হাফিজুর রহমান
পাখা থাকলেও বাজপাখি কখনোই পাখি নয় কোনো
বরং বলতে পারি হিংস্র কোনো উড়–ক্কু সন্ত্রাস
পাখিদের নরম রোদের মতো স্নিগ্ধ অবয়ব, কিংবা
সহজাত মায়াবী শরীর নেই তার, নেই হৃদয়-ঐশ্বর্য;
কী ভীষণ সংহারক দৃষ্টির কাঠিন্য ফুটে থাকে সমস্ত অস্তিত্বে
পাখিদের দেহের ভুগোলে যতোখানি কোমলতা ফুটে থাকে
প্রাকৃতিক দেহের অস্তিত্বে পাখপাখালির শোভন সৌন্দর্যে
বাজপাখি সর্বদাই সেই স্বর্গীয় আনন্দ থেকে বঞ্চিত-প্রাণ এক,
তবুও তো পাখি, যদিও ক্রুরতা নৃশংসতা শব্দ দুটি সমার্থক তার।
পাখির শরীর নিয়ে সে কেবল কোমলতাহীন দেহের ভূগোল
মায়াহীন কায়ার পতাকা আর হিংস্রতার মর্মান্তিক পতাকা বিশেষ।
পাখিদের মায়াবী রোদের গতরে যেন হিং¯্রতার নিন্দিত ভূষণ
তাই পাখিদের কোমল শরীরে যে ঢেউ নাচে প্রকৃতির কোলে
পাখি নামে পৃথিবীতে উড়ে উড়ে সে কেবল তার বিপরীত দাহ।
অমানবিক জুলুমবাজ মানুষ যেমন কলঙ্কিত প্রাণীর শরীর শুধু!
মৃদু হাসে তরঙ্গিনী
শেখ মাসুম কামাল
আমি তারে বলি
এসো, ছৌ নাচ দেখি, রক্তনীলে
ময়ূরভঞ্জ ছৌ
মৃদু হাসে তরঙ্গিনী
পেছনে ভরাট আলো
কাঁপা কাঁপা ঢেউ মৃদঙ্গে।
এরপর
আমি তারে বলি
এসো, ছৌ নাচ দেখি প্রবুদ্ধ চোখে
মনিপুরী ছৌ
মৃদু হাসে তরঙ্গিনী।
বিচ্ছিন্ন দু’ধার, দীর্ঘ ব্যবধান
অবশেষে
আমি তারে বলি
ছৌ নাচ থাক, এসো ফুল তুলি,
এসো মালা গাঁথি
মৃদু হাসে তরঙ্গিনী।
রাত দখল
ফরিদা রানু
আমি একটি রাত দখল করতে চাই
তবে বাংলাদেশ
বা বহির্বিশ্বে নারীরা যেভাবে দখল করে
ঠিক সেভাবে নয়-
পুরুষ কি শুধু পশু?
নয় কারও আশ্রয়?
বঞ্চিতের পাশে দাঁড়ায়
আহ্লাদকে দেয় প্রশ্রয়!
আমিও রাত দখল করতে চাই
একটি নয়, দু’টি নয়
শত হাজার রাত দখল করতে চাই;
তবে পিতৃতন্ত্রের তুলোধুনা করে নয়
বরং মাতৃতন্ত্রের সম্মানে, আবেগে
সমুজ্জ্বল; স্ব-মহিমায়!
পুরুষ ও মেয়ে
তরুন ইউসুফ
পুরুষগুলো হাপিত্যেশ করতে থাকে
একেকটা মেয়ের জন্য
একেকটা মেয়ে হাপিত্যেশ করে
মুক্তি চায়
পুরুষগুলো কারাগারের দেয়ালে
লিখে রাখে মুক্তির গান
মেয়েগুলো গানের টানে
কারাগারে যায়
পুরুষগুলো মেয়ে চায়
মেয়েগুলো মুক্তি
আহা, কেউ কাউকে পায় না!
আগামীকাল রাতে তুমিও এসো
তড়িৎ চক্রবর্তী
সমস্ত শোষণ
আর হত্যার প্রতিবাদে।
বিশ্বব্যাপী মানুষ মারা যুদ্ধের-বিরুদ্ধে।
আমি এনে দেবো,
বিপ্লবের জলোচ্ছ্বাস।
সব প্রিয় মানুষের নতুন ঘর গড়ার কাজ হোক
আমার অস্থি দিয়ে।
সে জল্লাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ করেছিল।
যুদ্ধে ছিঁড়ে তার উৎপত্তিস্থান।
হায়না বলেছিল।
শেয়াল কুকুরে ছিঁড়ে খাবে!
সে হারাইনি- জিতেছে লক্ষ মন।
সে লক্ষ কোটির মা বোন বা মেয়ে।
তোমাকে রক্ষার দায়িত্ব আমার হোক।
তাই।
আজ তারা দখল নেবে রাতের অর্ধেক আকাশ।
কাল পুরো দুনিয়াটা।
বসন্তবৃষ্টি
আকেল হায়দার
এতকাল আমার কাছে
বসন্ত বলে কিছু ছিল না
আমি ছিলাম টালমাটাল
এক রুদ্ধদ্বার নদী!
তুমি এসে বৃষ্টি নামালে-
মৃত গাঙে ঢেউ জাগালে
রুক্ষ ডালে কুঁড়ি ফোটালে
শীতার্ত বনে রোদ ছড়ালে...
আমাকে ফাগুন হাওয়ায়
তোমার আকাশে ওড়ালে
ইচ্ছেগুলো পাখি বানালে
স্বপ্নগুলোর ঘুম ভাঙালে!
সেই থেকে কেবল
উড়ছি আর উড়ছি-
আর তোমার মেঘে মেঘে
বসন্তের বৃষ্টি হয়ে ঝরছি...