রাজশাহীর অব্যাহত দাবদাহ, বৃষ্টি নেই, গাছের আম ঝরে পড়ছে। অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। সেই জন্য রাজশাহী অঞ্চলের বৃষ্টি নামাতে বিয়ের পিঁড়িতে ইউসুফ ও হাবিবা নামে দুই ব্যঙের বিয়ে দেওয়া হয়েছে চারঘাট তাতারপুর গ্রামে।
অন্যদিকে গতকাল দুপুরে আড়ানী পৌর এলাকার গোচর গ্রামে বাড়ি বাড়ি চাল ডাল তুলে আরো দুই ব্যঙের বিয়ের আয়োজন করা হয়।
জানা যায়, স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস ব্যঙের সঙ্গে ব্যঙের বিয়ে দিলে অনাবৃষ্টি কেটে যাবে। গোচর গ্রামের মন্টু আলী ও রোকেয়া বেগমের উদ্যোগে গ্রামের অর্ধশতাধিক ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি বাড়ি চাল, ডাল তুলে বিয়ের আয়োজন করা হয়। পরে রান্না করে খাওয়া দাওয়া শেষে বৃষ্টির আশায় ধুমধাম করে ব্যঙের বিয়ে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে মন্টু আলী বলেন, তীব্র গরমে মানুষের নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। কিছুদিন থেকে টিউবওয়েলে পানি উঠছে না, চাষাবাদের জন্য পানি পাওয়া যাচ্ছে না। আম ও লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। একারণে যাতে বৃষ্টি হয়, সে জন্য ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করা হয়।
রোকেয়া বেগম বলেন, রীতি অনুযায়ী অনেক বছর ধরে ব্যাঙের বিয়ে প্রথা চালু আছে। দীর্ঘদিন থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় এই গ্রামের সবাই মিলে ব্যাঙের বিয়ে দেয়া হয়। আমাদের বিশ্বাস ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হবে। সেই আশাতে ব্যঙের বিয়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে বৃষ্টির আশায় রাজশাহীর চারঘাটে ব্যঙের বিয়ে দেয়া হয়েছে। গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চারঘাট থানার ২ নং শলুয়া ইউনিয়নের তাতারপুর ৮ নং ওয়ার্ড মন্ডপাড়া গ্রামে প্রায় অর্ধশত বাড়িতে বৃষ্টির জন্য গান গাওয়া শেষে বিয়ের অনুষ্ঠানের আায়োজন করে। আর বিয়ে শেষে সন্ধ্যায় ছিল খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন। ব্যঙ বর ইউসুফ ও কনে হাবিবা খাতুন নাম দিয়ে দুই ব্যঙ এর বিয়ে দেয়া হয় ।
ব্যঙের বিয়ে আয়োজনের ব্যাপারে ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বলেন, বৃষ্টি নেই, তাপমাত্রা বাড়ছে। গাছের আম ঝরে পড়ছে। অন্যান্য ফসলেরও ক্ষতি হচ্ছে। এই অবস্থায় আমরা গ্রামের লোকজনকে নিয়ে ব্যঙের বিয়ে আয়োজন করি। গ্রামের ৬০ থেকে ৭০টি বাড়িতে বৃষ্টির জন্য ‘আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে, ছায়া দে রে’ গানটি গাওয়া হয়েছে। পরে ব্যঙের বিয়ে দিয়ে একটি প্রতীকী পুকুর খনন করে সেখানে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ সন্ধ্যায় গ্রামের ওসিমুদ্দিন মন্ডলের আমবাগানে ভোজের আয়োজন করা হয়।
তাতারপুর গ্রামের গৃহবধূ আয়েশা বেগম বলেন, আমরা গ্রামের রোজিনা খাতুন, মমতাজসহ গ্রামের একদল শিশুও আয়োজনে করি। গ্রামের শিশুরা নেচেগেয়ে আবির মেখে সারা গ্রামে ঘুরে বেড়ান। আর ইউসুফ আলী ও হাবিবা খাতুন ব্যঙ বর-বধূকে কলাগাছের খোলের মধ্যে ভরে নিয়ে ঘোরেন গ্রামের মানুষ জন।
বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির দেখা নেই। নিদারুণ কষ্টে দিন কাটছে খেটে খাওয়া মানুষের।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সর্বশেষ গত ১৪ এপ্রিল মাত্র দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে। এর আগে গত ৩০ মার্চ রাতে জেলায় মাত্র ১ মিলিমিটার হয়েছিল।
গত সোমবার জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দুই দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মিঠুন কুমার রবি দাস বলেন, উপজেলায় দুই হাজার ৯৫১টি হ্যান্ড টিউবয়েল বসানো হয়েছিল। এর মধ্যে ৫২৭টি টিউবয়েলে বর্তমানে পানি উঠছে না। সেগুলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
রাজশাহীর অব্যাহত দাবদাহ, বৃষ্টি নেই, গাছের আম ঝরে পড়ছে। অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। সেই জন্য রাজশাহী অঞ্চলের বৃষ্টি নামাতে বিয়ের পিঁড়িতে ইউসুফ ও হাবিবা নামে দুই ব্যঙের বিয়ে দেওয়া হয়েছে চারঘাট তাতারপুর গ্রামে।
অন্যদিকে গতকাল দুপুরে আড়ানী পৌর এলাকার গোচর গ্রামে বাড়ি বাড়ি চাল ডাল তুলে আরো দুই ব্যঙের বিয়ের আয়োজন করা হয়।
জানা যায়, স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস ব্যঙের সঙ্গে ব্যঙের বিয়ে দিলে অনাবৃষ্টি কেটে যাবে। গোচর গ্রামের মন্টু আলী ও রোকেয়া বেগমের উদ্যোগে গ্রামের অর্ধশতাধিক ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি বাড়ি চাল, ডাল তুলে বিয়ের আয়োজন করা হয়। পরে রান্না করে খাওয়া দাওয়া শেষে বৃষ্টির আশায় ধুমধাম করে ব্যঙের বিয়ে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে মন্টু আলী বলেন, তীব্র গরমে মানুষের নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। কিছুদিন থেকে টিউবওয়েলে পানি উঠছে না, চাষাবাদের জন্য পানি পাওয়া যাচ্ছে না। আম ও লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। একারণে যাতে বৃষ্টি হয়, সে জন্য ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করা হয়।
রোকেয়া বেগম বলেন, রীতি অনুযায়ী অনেক বছর ধরে ব্যাঙের বিয়ে প্রথা চালু আছে। দীর্ঘদিন থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় এই গ্রামের সবাই মিলে ব্যাঙের বিয়ে দেয়া হয়। আমাদের বিশ্বাস ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হবে। সেই আশাতে ব্যঙের বিয়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে বৃষ্টির আশায় রাজশাহীর চারঘাটে ব্যঙের বিয়ে দেয়া হয়েছে। গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চারঘাট থানার ২ নং শলুয়া ইউনিয়নের তাতারপুর ৮ নং ওয়ার্ড মন্ডপাড়া গ্রামে প্রায় অর্ধশত বাড়িতে বৃষ্টির জন্য গান গাওয়া শেষে বিয়ের অনুষ্ঠানের আায়োজন করে। আর বিয়ে শেষে সন্ধ্যায় ছিল খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন। ব্যঙ বর ইউসুফ ও কনে হাবিবা খাতুন নাম দিয়ে দুই ব্যঙ এর বিয়ে দেয়া হয় ।
ব্যঙের বিয়ে আয়োজনের ব্যাপারে ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বলেন, বৃষ্টি নেই, তাপমাত্রা বাড়ছে। গাছের আম ঝরে পড়ছে। অন্যান্য ফসলেরও ক্ষতি হচ্ছে। এই অবস্থায় আমরা গ্রামের লোকজনকে নিয়ে ব্যঙের বিয়ে আয়োজন করি। গ্রামের ৬০ থেকে ৭০টি বাড়িতে বৃষ্টির জন্য ‘আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে, ছায়া দে রে’ গানটি গাওয়া হয়েছে। পরে ব্যঙের বিয়ে দিয়ে একটি প্রতীকী পুকুর খনন করে সেখানে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ সন্ধ্যায় গ্রামের ওসিমুদ্দিন মন্ডলের আমবাগানে ভোজের আয়োজন করা হয়।
তাতারপুর গ্রামের গৃহবধূ আয়েশা বেগম বলেন, আমরা গ্রামের রোজিনা খাতুন, মমতাজসহ গ্রামের একদল শিশুও আয়োজনে করি। গ্রামের শিশুরা নেচেগেয়ে আবির মেখে সারা গ্রামে ঘুরে বেড়ান। আর ইউসুফ আলী ও হাবিবা খাতুন ব্যঙ বর-বধূকে কলাগাছের খোলের মধ্যে ভরে নিয়ে ঘোরেন গ্রামের মানুষ জন।
বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির দেখা নেই। নিদারুণ কষ্টে দিন কাটছে খেটে খাওয়া মানুষের।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সর্বশেষ গত ১৪ এপ্রিল মাত্র দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে। এর আগে গত ৩০ মার্চ রাতে জেলায় মাত্র ১ মিলিমিটার হয়েছিল।
গত সোমবার জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দুই দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মিঠুন কুমার রবি দাস বলেন, উপজেলায় দুই হাজার ৯৫১টি হ্যান্ড টিউবয়েল বসানো হয়েছিল। এর মধ্যে ৫২৭টি টিউবয়েলে বর্তমানে পানি উঠছে না। সেগুলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে।