নড়াইলে গরুচোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার (৩০ অক্টোবর) ভোররাতে সদর উপজেলার তুলারামপুর এলাকার নড়াইল-ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে বলে নড়াইল সদর থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম জানান। তারা হলেন-নুরনবী (৩০), দুলাল মিয়া (২৮) ও জান্নাতুল শেখ (৩০)। তাদের বাড়ি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তুলারামপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। ভোরে ওই এলাকার তরফদার বখতিয়ার হোসেন হান্নান নামের একজনের বাড়িতে তিনজন গরু চুরি করতে যায়। এ সময় কুকুর ডাকার শব্দে বাড়ির মালিক টের পেয়ে চিৎকার শুরু করেন।
এ সময় গ্রামবাসী চোরদের ধাওয়া করে গণপিটুনি দিলে তিনজন নিহত হয়। পরে তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনে কথা বলে জানা যায় যে, ওই তিনজনের মধ্যে দুইজনের বাড়ি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জে। ওসি সাজেদুল বলেন, ‘নিহতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
এলাকাবাসী আরও জানান, তুলারামপুরসহ আশেপাশের গ্রামগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। এরই ধারাবাহিকতায় অবসরপ্রাপ্ত সেনাসার্জেন্ট তরফদার বখতিয়ার হোসেন হান্নানের বাড়িতে চোরেরা গরু চুরি করতে যায়। কুকুরের ডাকে বাড়ির মালিক বিষয়টি টের পেয়ে আশেপাশের সবাইকে মোবাইলে ফোন করেন। একপর্যায়ে গ্রামের মসজিদ থেকে মাইকিং করা হয়। গ্রামবাসী মিলে চোরদের ধাওয়া করে গণপিটুনী দিলে তিনজন ঘটনাস্থলে নিহত হয়।
তুলারামপুর গ্রামের শিহাবুর রহমান শিহাব, বাবু কাজীসহ ভুক্তভোগী গ্রামবাসী বলেন, প্রায় এক বছর ধরে আমাদের গ্রামে গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে নড়াইল-ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়কের পাশের বাড়িগুলো (তুলারামপুর) থেকে প্রায় রাতেই গরু চুরি হচ্ছে। গত পাঁচ মাসে ২৮টি গরু চুরি হয়েছে। এতে ২৫ লাখ টাকার গরু চুরি হয়েছে। এ কারণে গ্রামবাসী কমিটি করে রাতে পাহারার ব্যবস্থা করেছেন।
কলেজ শিক্ষক তুলারামপুর গ্রামের রেজাউল তরফদার জানান, চোরেরা স্প্রে ব্যবহারে অজ্ঞান করে অনেকের গরু নিয়ে যাচ্ছে। এর আগেও তুলারামপুর এলাকায় গরুচুরির কারণে দুইজনকে এবং ২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর নড়াইল পৌরসভার উজিরপুর ও বিড়গ্রামে আরও দুইজনকে পিটিয়ে হত্যা করে ভুক্তভোগী গ্রামবাসী।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে গণপিটুনিতে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটার প্রেক্ষাপটে কঠোর হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। পুলিশ সদর দপ্তরের এক বার্তায় বলা হয়েছে, ‘মব জাস্টিসের’ নামে আইন নিজের হাতে তুলে নিলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি কোথাও কোথাও গণপিটুনি দিয়ে মানুষ হত্যার নৃশংস ঘটনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ ধরনের মব জাস্টিস কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ পুলিশ বদ্ধপরিকর।’ কেউ অন্যায় করলে বা অপরাধী হলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিচার করা হবে জানিয়ে পুলিশ বলছে, ‘আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার অধিকার কারো নেই। কোনো ব্যক্তি অন্যায় এবং অপরাধ করলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে।’ কোনো ধরনের অন্যায় কর্মকা- হতে দেখলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে অথবা কাছাকাছি থানায় যোগাযোগ করতে বলেছে পুলিশ। মব জাস্টিস বা গণপিটুনির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দেশের প্রতিটি সচেতন নাগরিকের সহযোগিতা কামনার পাশাপাশি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে পুলিশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানানো হয় ওই বার্তায়।
বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
নড়াইলে গরুচোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার (৩০ অক্টোবর) ভোররাতে সদর উপজেলার তুলারামপুর এলাকার নড়াইল-ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে বলে নড়াইল সদর থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম জানান। তারা হলেন-নুরনবী (৩০), দুলাল মিয়া (২৮) ও জান্নাতুল শেখ (৩০)। তাদের বাড়ি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তুলারামপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। ভোরে ওই এলাকার তরফদার বখতিয়ার হোসেন হান্নান নামের একজনের বাড়িতে তিনজন গরু চুরি করতে যায়। এ সময় কুকুর ডাকার শব্দে বাড়ির মালিক টের পেয়ে চিৎকার শুরু করেন।
এ সময় গ্রামবাসী চোরদের ধাওয়া করে গণপিটুনি দিলে তিনজন নিহত হয়। পরে তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনে কথা বলে জানা যায় যে, ওই তিনজনের মধ্যে দুইজনের বাড়ি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জে। ওসি সাজেদুল বলেন, ‘নিহতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
এলাকাবাসী আরও জানান, তুলারামপুরসহ আশেপাশের গ্রামগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। এরই ধারাবাহিকতায় অবসরপ্রাপ্ত সেনাসার্জেন্ট তরফদার বখতিয়ার হোসেন হান্নানের বাড়িতে চোরেরা গরু চুরি করতে যায়। কুকুরের ডাকে বাড়ির মালিক বিষয়টি টের পেয়ে আশেপাশের সবাইকে মোবাইলে ফোন করেন। একপর্যায়ে গ্রামের মসজিদ থেকে মাইকিং করা হয়। গ্রামবাসী মিলে চোরদের ধাওয়া করে গণপিটুনী দিলে তিনজন ঘটনাস্থলে নিহত হয়।
তুলারামপুর গ্রামের শিহাবুর রহমান শিহাব, বাবু কাজীসহ ভুক্তভোগী গ্রামবাসী বলেন, প্রায় এক বছর ধরে আমাদের গ্রামে গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে নড়াইল-ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়কের পাশের বাড়িগুলো (তুলারামপুর) থেকে প্রায় রাতেই গরু চুরি হচ্ছে। গত পাঁচ মাসে ২৮টি গরু চুরি হয়েছে। এতে ২৫ লাখ টাকার গরু চুরি হয়েছে। এ কারণে গ্রামবাসী কমিটি করে রাতে পাহারার ব্যবস্থা করেছেন।
কলেজ শিক্ষক তুলারামপুর গ্রামের রেজাউল তরফদার জানান, চোরেরা স্প্রে ব্যবহারে অজ্ঞান করে অনেকের গরু নিয়ে যাচ্ছে। এর আগেও তুলারামপুর এলাকায় গরুচুরির কারণে দুইজনকে এবং ২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর নড়াইল পৌরসভার উজিরপুর ও বিড়গ্রামে আরও দুইজনকে পিটিয়ে হত্যা করে ভুক্তভোগী গ্রামবাসী।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে গণপিটুনিতে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটার প্রেক্ষাপটে কঠোর হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। পুলিশ সদর দপ্তরের এক বার্তায় বলা হয়েছে, ‘মব জাস্টিসের’ নামে আইন নিজের হাতে তুলে নিলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি কোথাও কোথাও গণপিটুনি দিয়ে মানুষ হত্যার নৃশংস ঘটনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ ধরনের মব জাস্টিস কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ পুলিশ বদ্ধপরিকর।’ কেউ অন্যায় করলে বা অপরাধী হলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিচার করা হবে জানিয়ে পুলিশ বলছে, ‘আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার অধিকার কারো নেই। কোনো ব্যক্তি অন্যায় এবং অপরাধ করলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে।’ কোনো ধরনের অন্যায় কর্মকা- হতে দেখলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে অথবা কাছাকাছি থানায় যোগাযোগ করতে বলেছে পুলিশ। মব জাস্টিস বা গণপিটুনির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দেশের প্রতিটি সচেতন নাগরিকের সহযোগিতা কামনার পাশাপাশি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে পুলিশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানানো হয় ওই বার্তায়।