বাংলাদেশে সুলতানি আমলের অপূর্ব স্থাপত্য নিদর্শনগুলোর অন্যতম হবিগঞ্জ সদর উপজেলার উচাইল গ্রামের শঙ্করপাশা শাহী মসজিদ। হবিগঞ্জ সদর রাজিউড়া ইউনিয়নের উচাইল গ্রামে ছয় একর বিস্তৃত ভূমিতে একটি টিলার ওপর এই মসজিদ অবস্থিত।
জানা যায়, পঞ্চদশ শতাব্দীতে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। হজরত শাহজালাল (র.)-এর সিলেট বিজয়ের পর তার যে ১২ জন সহকর্মীকে তরফ অঞ্চলে সামরিক অভিযান পরিচালনার জন্য পাঠানো হয়, তাদের অন্যতম ছিলেন শাহ মজলিশ আমিন। তিনিই এখানে প্রথম মসজিদ স্থাপন করেন। পরবর্তী সময়ে মুসলিম বাংলার শাসনকর্তা সুলতান আলাউদ্দিন হোসাইন শাহের (১৪৯৩-১৫১৯) আমলে সুদৃশ্য ইমারতটি নির্মাণ করা হয়। ইমারতটি দৈর্ঘ্যে ২১ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং প্রস্থেও সমান মাপের। বারান্দা ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি। মূল ভবনের ওপর একটি বড় গম্বুজ এবং বারান্দার ওপর অপেক্ষাকৃত ছোট তিনটি গম্বুজ রয়েছে। দরজা জানালার সংখ্যা মোট ১৪টি। জানালাগুলো অনেকটাই দরজা আকৃতির। তিন দিকের দেওয়ালের পুরুত্ব প্রায় পাঁচ ফুট। পশ্চিম দিকের দেওয়ালের পুরুত্ব প্রায় দ্বিগুণ। সামনের প্রাচীরের কার্নিশ এবং ওপরের ছাদ নির্মিত হয়েছে বাঁকানোভাবে। প্রধান কক্ষের চার কোণে আর বারান্দার দুই কোণে মোট ছয়টি কারুকার্যশোভিত স্তম্ভ রয়েছে।
সুলতানি আমলের স্থাপত্যরীতি পূর্ণাঙ্গ রূপেই প্রকাশ পেয়েছে এই ইমারতে। ইমারতে উন্নতমানের পোড়া ইট কেটে প্রলেপবিহীন দেওয়ালে সেটে শৈল্পিক বৈশিষ্ট্যে সুষমাম-িত কারুকার্য সহজেই দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। দেওয়ালের বাইরের দিকে ইটের ওপর বিভিন্ন নকশা এবং অলংকরণ রয়েছে। শিলালিপিটি কালের চক্রে নষ্ট হয়ে গেছে। স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যে অনন্য এই মসজিদ ভবনের রক্তিম রং সবাইকে বিমোহিত করে।
মসজিদের দক্ষিণ পাশে শাহ মজলিশ আমিনের মাজার রয়েছে। পাশেই বড় দিঘি। প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা বিভিন্ন মানত নিয়ে এখানে হাজির হয়। যথাযথভাবে সংরক্ষণের অভাবে দীর্ঘদিনের এই প্রাচীন মসজিদের সৌন্দর্য অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট শামীম আহমেদ জানান, সরকারি অনুদান ও স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগীতায় মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধিকল্পে উন্নয়ন হয়েছ। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ঐতিহাসিক মসজিদটি দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসেন। তাই তাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ ও এখানে একটি বিশ্রামাগার নির্মাণ করা প্রয়োজন। পইল হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আবদুল মমিন চৌধুরী সাদি জানান, পরিবার নিয়ে মসজিদটি দেখতে পেয়ে অনেক ভালো লাগলো। চুনারুঘাটের উপজেলার বাসিন্দা রুবেল গাজি জানান, সরকারি ছুটি থাকায় গত শুক্রবার শঙ্করপাশা শাহী মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়তে আসছি।
শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলাদেশে সুলতানি আমলের অপূর্ব স্থাপত্য নিদর্শনগুলোর অন্যতম হবিগঞ্জ সদর উপজেলার উচাইল গ্রামের শঙ্করপাশা শাহী মসজিদ। হবিগঞ্জ সদর রাজিউড়া ইউনিয়নের উচাইল গ্রামে ছয় একর বিস্তৃত ভূমিতে একটি টিলার ওপর এই মসজিদ অবস্থিত।
জানা যায়, পঞ্চদশ শতাব্দীতে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। হজরত শাহজালাল (র.)-এর সিলেট বিজয়ের পর তার যে ১২ জন সহকর্মীকে তরফ অঞ্চলে সামরিক অভিযান পরিচালনার জন্য পাঠানো হয়, তাদের অন্যতম ছিলেন শাহ মজলিশ আমিন। তিনিই এখানে প্রথম মসজিদ স্থাপন করেন। পরবর্তী সময়ে মুসলিম বাংলার শাসনকর্তা সুলতান আলাউদ্দিন হোসাইন শাহের (১৪৯৩-১৫১৯) আমলে সুদৃশ্য ইমারতটি নির্মাণ করা হয়। ইমারতটি দৈর্ঘ্যে ২১ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং প্রস্থেও সমান মাপের। বারান্দা ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি। মূল ভবনের ওপর একটি বড় গম্বুজ এবং বারান্দার ওপর অপেক্ষাকৃত ছোট তিনটি গম্বুজ রয়েছে। দরজা জানালার সংখ্যা মোট ১৪টি। জানালাগুলো অনেকটাই দরজা আকৃতির। তিন দিকের দেওয়ালের পুরুত্ব প্রায় পাঁচ ফুট। পশ্চিম দিকের দেওয়ালের পুরুত্ব প্রায় দ্বিগুণ। সামনের প্রাচীরের কার্নিশ এবং ওপরের ছাদ নির্মিত হয়েছে বাঁকানোভাবে। প্রধান কক্ষের চার কোণে আর বারান্দার দুই কোণে মোট ছয়টি কারুকার্যশোভিত স্তম্ভ রয়েছে।
সুলতানি আমলের স্থাপত্যরীতি পূর্ণাঙ্গ রূপেই প্রকাশ পেয়েছে এই ইমারতে। ইমারতে উন্নতমানের পোড়া ইট কেটে প্রলেপবিহীন দেওয়ালে সেটে শৈল্পিক বৈশিষ্ট্যে সুষমাম-িত কারুকার্য সহজেই দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। দেওয়ালের বাইরের দিকে ইটের ওপর বিভিন্ন নকশা এবং অলংকরণ রয়েছে। শিলালিপিটি কালের চক্রে নষ্ট হয়ে গেছে। স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যে অনন্য এই মসজিদ ভবনের রক্তিম রং সবাইকে বিমোহিত করে।
মসজিদের দক্ষিণ পাশে শাহ মজলিশ আমিনের মাজার রয়েছে। পাশেই বড় দিঘি। প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা বিভিন্ন মানত নিয়ে এখানে হাজির হয়। যথাযথভাবে সংরক্ষণের অভাবে দীর্ঘদিনের এই প্রাচীন মসজিদের সৌন্দর্য অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট শামীম আহমেদ জানান, সরকারি অনুদান ও স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগীতায় মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধিকল্পে উন্নয়ন হয়েছ। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ঐতিহাসিক মসজিদটি দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসেন। তাই তাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ ও এখানে একটি বিশ্রামাগার নির্মাণ করা প্রয়োজন। পইল হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আবদুল মমিন চৌধুরী সাদি জানান, পরিবার নিয়ে মসজিদটি দেখতে পেয়ে অনেক ভালো লাগলো। চুনারুঘাটের উপজেলার বাসিন্দা রুবেল গাজি জানান, সরকারি ছুটি থাকায় গত শুক্রবার শঙ্করপাশা শাহী মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়তে আসছি।