মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলাতে চলতি মৌসুমে পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। অল্প খরচে অধিক ফলন এবং অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টার লাভজনক হওযায় এর আবাদ বেড়েছে। কিছু কিছু এলাকাতে ভুট্টা মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ভালো দাম পেয়ে কৃষকের চোখেমুখে হাঁসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।
মানিকগঞ্জের ঘিওর, দৌলতপুর, সাটুরিয়া, সিংগাইর প্রতি বছর ব্যাপকভাবে ভুট্টার আবাদ করে থাকে এলাকার সাধারণ কৃষকেরা। ভুট্টা চাষে অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা ঘুরে দাড়িয়েছে। বিগত সময়ে ফলন ভালো এবং দাম আশানুরুপ পাওয়ায় এলাকার কৃষকেরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া গ্রামের ভুট্টা চাষি নূর আলম জানান, এবার তিনি দেড় বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছেন। সব মিলিয়ে তার ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আশাবাদী চলতি মৌসুম শেষে তিনি তার জমি থেকে ৪৫-৫০ মন ভট্টা ঘরে তুলতে পারবেন। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে প্রতিমণ ভুট্টা ১১শ থেকে ১২শ’৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মাইলাগী গ্রামের কৃষক হারেজ জানান, তিনি চলতি মৌসুমে ৬ বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার তার দ্বিগুন ফলন হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘিওর উপজেলার বাইলজুরি এলাকার কৃষক মোঃ মজিবর জানান, এবছর তিনি প্রায় ৫ বিঘা জামতে ভুট্রা আবাদ করেছেন। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকরা যখন যে পরামর্শ চেয়েছে তা আমরা দেয়া হয়েছে। ফসলের রোগ, পোকামাকড়,দমনে চাষীদের গ্রুপ ভিত্তিক সচেতন সভাসহ প্রতিনিয়ত তাদের সাথে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। ভুট্টার বীজ, কীটনাশক, আগাছা দমন, নিবির পরিচর্য়ার সঠিকভাবে করার পরামর্শ দেয়ার কারনে এবার ভুট্টা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারী ইউনিয়নের জামাল শেখ জানান, চলতি বছরে ৭ বিঘা জমিতে তিনি ভুট্টা আবাদ করেছেন। অনান্য বছরের চেয়ে এবার ফলন ভাল হয়েছে। দামও ভাল পাবেন বলে তিনি জানান। এ বছরে ঘিওর, সাটুরিয়া, সিংগাইর, হরিরামপুর প্রচুর পরিমানে ভুট্টা আবাদ হয়েছে। এই অঞ্চলের কৃষদের ভাগ্যের চাকা ঘুরে দাড়িয়েছে।
সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লি ইউনিয়নের শাহাজাহান জানান, তিনি ৮ বিঘা জমিতে এবার ভুট্টা আবাদ করেছেন। গত বছরের চেয়ে এবার আরো ফলন ভাল হয়েছে। তিনি বলেন, ভুট্রা চাষে একদিকে করচ কম। অন্য দিকে ফলন ও লাভ অনেক বেশি। কারণ হিসাবে তারা বলেন, ভুট্টা চাষে প্রাকৃতিক দুর্যোগে তেমন ক্ষতি হয় না। রবি মৌসুমে ভুট্টার আবাদ বেশি হয়ে থাকে। এ ছাড়া কাচাঁ ভুট্টা জমি থেকে বিক্রি হচ্ছে। ভুট্টার গাছ উন্নতমানের গোখাদ্য হিসাবে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। হাঁস, মুরগীর খাদ্য হিসাবে যথেষ্টে গুরত্ব রয়েছে। ভুট্টার গাছ জ্বালানি হিসাবে বিক্রি হয়। এলাকার কৃষকেরা দাবি, সরকারিভাবে ভুট্টা ক্রয় কেন্দ্র চালু করা হলে কৃষকরা সরাসরি তাদের কাছে ভুট্টা ক্রয় করে লাভবান হবেন।
ঘিওর বাজারের ভুট্টার ব্যবসায়ী মো. শরীফুল ইসলাম শরীফ ও মো. তৈয়বুর রহমান তৈয়ব জানান, জেলার বৃহত্তম হাট ঘিওর। প্রতি বুধবার হাটে আমি প্রায় ৮০ থেকে ৯০ মন ভুট্টা ক্রয় করে থাকি। বর্তমানে ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকা মন ধরে কেনা বেচা হচ্ছে। তবে এবার আবাদ বেশি হওয়ায় প্রতি হাটে শত শত মন ভুট্টা বিভিন্ন এলাকার হাট বাজারে বিক্রয়ের জন্য আসে। মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক (খামারবাড়ি) ড. রবীআহ নূর আহম্মেদ জানান, মানিকগঞ্জের, সিংগাইর ,সাটুরিয়া, ঘিওর, দৌলতপুর অঞ্চলে প্রচুর ভুট্টার আবাদ হয়েছে। এবার রোগ বালায়ের আশংকা কম। জেলায় মোট আবাদি জমির পরিমানে ২১ হাজার ৩৬৫ হে. জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে। গত বছরে আবাদ হয়েছিল ১৭ হাজার ৩২ হেঃ জমিতে। এবার মোট ৪ হাজার ৩৩৩ হে. জমিতে আবাদ বেশি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলাতে চলতি মৌসুমে পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। অল্প খরচে অধিক ফলন এবং অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টার লাভজনক হওযায় এর আবাদ বেড়েছে। কিছু কিছু এলাকাতে ভুট্টা মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ভালো দাম পেয়ে কৃষকের চোখেমুখে হাঁসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।
মানিকগঞ্জের ঘিওর, দৌলতপুর, সাটুরিয়া, সিংগাইর প্রতি বছর ব্যাপকভাবে ভুট্টার আবাদ করে থাকে এলাকার সাধারণ কৃষকেরা। ভুট্টা চাষে অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা ঘুরে দাড়িয়েছে। বিগত সময়ে ফলন ভালো এবং দাম আশানুরুপ পাওয়ায় এলাকার কৃষকেরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া গ্রামের ভুট্টা চাষি নূর আলম জানান, এবার তিনি দেড় বিঘা জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছেন। সব মিলিয়ে তার ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আশাবাদী চলতি মৌসুম শেষে তিনি তার জমি থেকে ৪৫-৫০ মন ভট্টা ঘরে তুলতে পারবেন। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে প্রতিমণ ভুট্টা ১১শ থেকে ১২শ’৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মাইলাগী গ্রামের কৃষক হারেজ জানান, তিনি চলতি মৌসুমে ৬ বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার তার দ্বিগুন ফলন হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘিওর উপজেলার বাইলজুরি এলাকার কৃষক মোঃ মজিবর জানান, এবছর তিনি প্রায় ৫ বিঘা জামতে ভুট্রা আবাদ করেছেন। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকরা যখন যে পরামর্শ চেয়েছে তা আমরা দেয়া হয়েছে। ফসলের রোগ, পোকামাকড়,দমনে চাষীদের গ্রুপ ভিত্তিক সচেতন সভাসহ প্রতিনিয়ত তাদের সাথে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। ভুট্টার বীজ, কীটনাশক, আগাছা দমন, নিবির পরিচর্য়ার সঠিকভাবে করার পরামর্শ দেয়ার কারনে এবার ভুট্টা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারী ইউনিয়নের জামাল শেখ জানান, চলতি বছরে ৭ বিঘা জমিতে তিনি ভুট্টা আবাদ করেছেন। অনান্য বছরের চেয়ে এবার ফলন ভাল হয়েছে। দামও ভাল পাবেন বলে তিনি জানান। এ বছরে ঘিওর, সাটুরিয়া, সিংগাইর, হরিরামপুর প্রচুর পরিমানে ভুট্টা আবাদ হয়েছে। এই অঞ্চলের কৃষদের ভাগ্যের চাকা ঘুরে দাড়িয়েছে।
সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লি ইউনিয়নের শাহাজাহান জানান, তিনি ৮ বিঘা জমিতে এবার ভুট্টা আবাদ করেছেন। গত বছরের চেয়ে এবার আরো ফলন ভাল হয়েছে। তিনি বলেন, ভুট্রা চাষে একদিকে করচ কম। অন্য দিকে ফলন ও লাভ অনেক বেশি। কারণ হিসাবে তারা বলেন, ভুট্টা চাষে প্রাকৃতিক দুর্যোগে তেমন ক্ষতি হয় না। রবি মৌসুমে ভুট্টার আবাদ বেশি হয়ে থাকে। এ ছাড়া কাচাঁ ভুট্টা জমি থেকে বিক্রি হচ্ছে। ভুট্টার গাছ উন্নতমানের গোখাদ্য হিসাবে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। হাঁস, মুরগীর খাদ্য হিসাবে যথেষ্টে গুরত্ব রয়েছে। ভুট্টার গাছ জ্বালানি হিসাবে বিক্রি হয়। এলাকার কৃষকেরা দাবি, সরকারিভাবে ভুট্টা ক্রয় কেন্দ্র চালু করা হলে কৃষকরা সরাসরি তাদের কাছে ভুট্টা ক্রয় করে লাভবান হবেন।
ঘিওর বাজারের ভুট্টার ব্যবসায়ী মো. শরীফুল ইসলাম শরীফ ও মো. তৈয়বুর রহমান তৈয়ব জানান, জেলার বৃহত্তম হাট ঘিওর। প্রতি বুধবার হাটে আমি প্রায় ৮০ থেকে ৯০ মন ভুট্টা ক্রয় করে থাকি। বর্তমানে ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকা মন ধরে কেনা বেচা হচ্ছে। তবে এবার আবাদ বেশি হওয়ায় প্রতি হাটে শত শত মন ভুট্টা বিভিন্ন এলাকার হাট বাজারে বিক্রয়ের জন্য আসে। মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক (খামারবাড়ি) ড. রবীআহ নূর আহম্মেদ জানান, মানিকগঞ্জের, সিংগাইর ,সাটুরিয়া, ঘিওর, দৌলতপুর অঞ্চলে প্রচুর ভুট্টার আবাদ হয়েছে। এবার রোগ বালায়ের আশংকা কম। জেলায় মোট আবাদি জমির পরিমানে ২১ হাজার ৩৬৫ হে. জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে। গত বছরে আবাদ হয়েছিল ১৭ হাজার ৩২ হেঃ জমিতে। এবার মোট ৪ হাজার ৩৩৩ হে. জমিতে আবাদ বেশি হয়েছে।