alt

সারাদেশ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পলাশের যুবক নিহত, মরদেহ ফেরত ও দালালের বিচার দাবি

প্রতিনিধি, পলাশ (নরসিংদী) : মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

ইচ্ছে ছিল প্রবাসে গিয়ে নিজের ভাগ্য বদল করবেন কিন্তু সেই আশা আর পূরণ হলো না সোহান মিয়ার। দালালের খপ্পরে পড়ে রাশিয়া গিয়ে রুশ বাহিনীর হয়ে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে অংশ নিয়ে অবশেষে প্রাণ গেল নরসিংদীর পলাশ উপজেলার এই যুবকের।

নিহত সোহান মিয়া উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামের মৃত সোহরাব মিয়ার ছেলে। পরিবারে তার মা নূরুন্নাহার ও স্ত্রী হাবিবা আক্তার এবং তার ১৬ মাসের ছেলে ফারহান রয়েছে।

গত শনিবার বেলা সাড়ে ৩টায় সোহানের বন্ধু সহযোদ্ধা জাফরের ফোনের মাধ্যমে সোহানের মায়ের ফোনে খবর আসে সোহান যুদ্ধে মারা গেছে। পরে ফোনে সোহানের মরদেহের ছবিও পাঠায় জাফর। মৃত্যুর খবরে সোহানের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে। রোববার বাদ জোহর গ্রামের বাড়ির পাশের মসজিদে তার গায়েবানা জানাজা পড়েন এলাকাবাসী।

সোহানের বাড়ি ও তার এলাকায় দেখা দেয় শোকের মাতম। চাকরির আশায় বিদেশ পাড়ি জমিয়েছিলেন সোহান মিয়া ও তার বোনের জামাই আকরাম মিয়া। ইচ্ছা ছিল ইউরোপে গিয়ে নিজেদের ভাগ্য বদল করবেন। সেজন্য ধারদেনা করে ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে দেশ ছাড়েন তারা। কিন্তু বিধিবাম। দালালচক্র তাদের রাশিয়া নিয়ে গেলেও তাদের কথামতো চকলেট কারখানায় কাজ না দিয়ে রাশিয়ার কাছে বিক্রি করে দেয়। ফলে সে দেশে গিয়ে সোহানকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে যাওয়ার জন্য অস্ত্রের প্রশিক্ষণে নামতে হয়েছে। তবে তার বোনজামাই আকরাম মিয়া কৌশলে পালিয়ে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থেকে বাড়ি ফিরে আসেন। আকরাম সরকারচর গ্রামের কাজল মিয়ার ছেলে।

সোহানের বড় চাচা রেজাউল আলম রিপন বলেন, ঢাকার বনানীর ড্রিম হোম ট্রাভেলস থেকে জেরিন নামে এক দালালের মাধমে সাইপ্রাস যাওয়ার জন্য কাগজপত্র জমা দেন তারা। কিন্তু দীর্ঘদিন পর দালাল চক্র রাশিয়ার ভিসা করে দেন তাদের। পরে ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর ১০ জনের একটি দল রাশিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়।

‘রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সেখানে তাদের ৪ দিন রাখে। কিন্তু সোহানসহ আরও দুজনকে একদিন পরই সেখান থেকে নিয়ে যায় রাশিয়ার সেনা ক্যাম্পে। নিয়েই শুরু হয় দালাল চক্রের অত্যাচার। যুদ্ধের প্রশিক্ষণে যেতে সামরিক পোশাক দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ নিতে না চাইলে দেয়া হয় হত্যার হুমকি। করা হয় মারধর, দেয়া হয় না খাবার। পরে সোহান আকরামকে এগুলো জানায় এবং সেখান থেকে পালিয়ে যেতে বলে। সোহানের দুদিন পরে আকরামেরও যাওয়ার কথা ছিল। পরে সেখান থেকে আকরাম পালিয়ে গিয়ে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করে দেড় লাখ টাকা নিয়ে টিকিট কেটে গত ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ এ ফিরে আসে।’

সোহানের মা নূরুন্নাহারের কান্নায় আকাশ বাতাস বাড়ি হয়ে উঠছে। কতক্ষন পর পরই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি জানান, ধারদেনা করে ৭ লাখ টাকা দিয়ে তার একমাত্র ছেলেকে বিদেশে পাঠানো হয়। দালাল চক্র সোহানকে রাশিয়ায় সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধে নামিয়ে ছিল তার সন্তানকে। সংসারের একমাত্র উপার্জনশীল সোহান।

তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমি কি করবো। যুদ্ধ চলাকালে মাঝে মধ্যে তার সঙ্গে কথা হতো, সে সারাক্ষণ কান্না করতো দেশে আসার জন্য। তার বন্ধু জাফর আমাকে জানায়, সোহানের শরীরে বোমা বিস্ফোরন হলে সে মারা যায়। আমি দালালদের গ্রেপ্তারসহ বিচার চাই। আর যেন তাদের খপ্পরে পড়ে কোন মায়ের বুক খালি না হয়। সরকারের কাছে তার ছেলের মরদেহ ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন তিনি।

সোহানের স্ত্রী হাবিবা আক্তার জানান, আমার স্বামীকে ফিরিয়ে আনতে ড্রিম হোম ট্রাভেলসে যোগাযোগ করা হয়েছে অনেকবার। পুনরায় আড়াই লাখ টাকা দিয়ে বলেছিল জানুয়ারি ২৬ তারিখ সোহানকে এনে দিবে। কিন্তু তার বদলে সে এখন লাশ হয়ে বিদেশের মাটিতে পড়ে রয়েছে।

সাটুরিয়ায় শিশু ধর্ষণ মামলা নেয়নি থানা, পরে আদালতে মামলা

ছবি

দোয়ারাবাজারের সড়কে ঝুঁকিপূর্ণ মরা গাছ, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

ছবি

তুচ্ছ ঘটনায় সিরাজদিখানে দুই গ্রামের টেঁটাযুদ্ধ, আহত ১০

বাসের ধাক্কায় বাবা-মেয়ে নিহত

হরিজন জনগোষ্ঠীর মানবিক ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সভা

বন্যহাতির হামলায় গর্ভবতীর মৃত্যু

বেনাপোলের ধর্ষণ মামলায় কৃষক দলের নেতা কারাগারে

দর্শনায় ট্রেন স্টপেজের দাবিতে অবরোধ

ছবি

বিষ দিয়ে ৮০ হাজার টাকার মাছ নিধন

ছবি

২০০ তরুণ-তরুণীর নেতৃত্ব গড়ার যুব প্রশিক্ষণ সম্পন্ন

ছবি

পাটগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ফের শিশুসহ ৭ জনকে বিএসএফের পুশইন

উখিয়ায় ডাকাতের গুলিতে নিহত ১

৬ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গেটে অবস্থান কর্মসূচি

অবৈধ আইসক্রিম তৈরি করায় কারখানা সিলগালা, জরিমানা

নড়াইলে গ্রাম আদালতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি বিষয়ক কর্মশালা

ধান মাড়াইকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক ব্যক্তির মৃত্যু

ছবি

খোকসায় হাসপাতালে আসা রোগীরা ভোগান্তির শিকার

ছবি

মহেশপুরে পিপিআর টিকায় ছাগল মৃত্যুর অভিযোগ, আতঙ্কে খামারিরা

বাগেরহাটে স্কুল ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

ধর্ষিতার পরিবারকে ভয়ভীতি সরিষাবাড়ীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার ৩

ছবি

মোহনগঞ্জে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

ঝিনাইদহে ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি

ছবি

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৮০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত, নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছেন বাসিন্দারা

জামায়াত বিএনপির পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

ছবি

পোরশায় আমের ব্যবসা হবে ৯শ কোটি টাকা

ছবি

কুষ্টিয়ায় স্কুলের জমিতে জোরপূর্বক সড়ক নির্মাণের অভিযোগ

কালীগঞ্জে ৬ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের ২ ঘণ্টা কর্মবিরতি

ভূমিহীন কৃষকের ব্রি ধান-১০২, ১০৮ ছড়িয়ে পড়ার গল্প উঠে এলো পার্টনার কংগ্রেসে

মতলব উত্তরে ঘুমন্ত স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে নিয়ে স্ত্রী পলাতক

ইয়াবা বিক্রি, দুজনের ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১ বছরের কারাদণ্ড

নালিতাবাড়ী সীমান্তে অর্ধকোটি টাকার ভারতীয় শাড়ি জব্দ

ছবি

মাদারগঞ্জে সমিতির ৩ কোটি টাকা উদ্ধারে দাবিতে বিক্ষোভ

লালপুরে আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা

ছবি

বেতন বৈষম্য দূরীকরণসহ ছয় দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের বিক্ষোভ

ছবি

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আশুলিয়া গণহত্যা মামলার শুনানি ২ জুলাই

ছবি

ভোলায় চরাঞ্চলের দুধ সংগ্রহে কুলিং ট্যাংকার স্থাপন

tab

সারাদেশ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পলাশের যুবক নিহত, মরদেহ ফেরত ও দালালের বিচার দাবি

প্রতিনিধি, পলাশ (নরসিংদী)

মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

ইচ্ছে ছিল প্রবাসে গিয়ে নিজের ভাগ্য বদল করবেন কিন্তু সেই আশা আর পূরণ হলো না সোহান মিয়ার। দালালের খপ্পরে পড়ে রাশিয়া গিয়ে রুশ বাহিনীর হয়ে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে অংশ নিয়ে অবশেষে প্রাণ গেল নরসিংদীর পলাশ উপজেলার এই যুবকের।

নিহত সোহান মিয়া উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামের মৃত সোহরাব মিয়ার ছেলে। পরিবারে তার মা নূরুন্নাহার ও স্ত্রী হাবিবা আক্তার এবং তার ১৬ মাসের ছেলে ফারহান রয়েছে।

গত শনিবার বেলা সাড়ে ৩টায় সোহানের বন্ধু সহযোদ্ধা জাফরের ফোনের মাধ্যমে সোহানের মায়ের ফোনে খবর আসে সোহান যুদ্ধে মারা গেছে। পরে ফোনে সোহানের মরদেহের ছবিও পাঠায় জাফর। মৃত্যুর খবরে সোহানের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে। রোববার বাদ জোহর গ্রামের বাড়ির পাশের মসজিদে তার গায়েবানা জানাজা পড়েন এলাকাবাসী।

সোহানের বাড়ি ও তার এলাকায় দেখা দেয় শোকের মাতম। চাকরির আশায় বিদেশ পাড়ি জমিয়েছিলেন সোহান মিয়া ও তার বোনের জামাই আকরাম মিয়া। ইচ্ছা ছিল ইউরোপে গিয়ে নিজেদের ভাগ্য বদল করবেন। সেজন্য ধারদেনা করে ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে দেশ ছাড়েন তারা। কিন্তু বিধিবাম। দালালচক্র তাদের রাশিয়া নিয়ে গেলেও তাদের কথামতো চকলেট কারখানায় কাজ না দিয়ে রাশিয়ার কাছে বিক্রি করে দেয়। ফলে সে দেশে গিয়ে সোহানকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে যাওয়ার জন্য অস্ত্রের প্রশিক্ষণে নামতে হয়েছে। তবে তার বোনজামাই আকরাম মিয়া কৌশলে পালিয়ে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থেকে বাড়ি ফিরে আসেন। আকরাম সরকারচর গ্রামের কাজল মিয়ার ছেলে।

সোহানের বড় চাচা রেজাউল আলম রিপন বলেন, ঢাকার বনানীর ড্রিম হোম ট্রাভেলস থেকে জেরিন নামে এক দালালের মাধমে সাইপ্রাস যাওয়ার জন্য কাগজপত্র জমা দেন তারা। কিন্তু দীর্ঘদিন পর দালাল চক্র রাশিয়ার ভিসা করে দেন তাদের। পরে ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর ১০ জনের একটি দল রাশিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়।

‘রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সেখানে তাদের ৪ দিন রাখে। কিন্তু সোহানসহ আরও দুজনকে একদিন পরই সেখান থেকে নিয়ে যায় রাশিয়ার সেনা ক্যাম্পে। নিয়েই শুরু হয় দালাল চক্রের অত্যাচার। যুদ্ধের প্রশিক্ষণে যেতে সামরিক পোশাক দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ নিতে না চাইলে দেয়া হয় হত্যার হুমকি। করা হয় মারধর, দেয়া হয় না খাবার। পরে সোহান আকরামকে এগুলো জানায় এবং সেখান থেকে পালিয়ে যেতে বলে। সোহানের দুদিন পরে আকরামেরও যাওয়ার কথা ছিল। পরে সেখান থেকে আকরাম পালিয়ে গিয়ে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করে দেড় লাখ টাকা নিয়ে টিকিট কেটে গত ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ এ ফিরে আসে।’

সোহানের মা নূরুন্নাহারের কান্নায় আকাশ বাতাস বাড়ি হয়ে উঠছে। কতক্ষন পর পরই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি জানান, ধারদেনা করে ৭ লাখ টাকা দিয়ে তার একমাত্র ছেলেকে বিদেশে পাঠানো হয়। দালাল চক্র সোহানকে রাশিয়ায় সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধে নামিয়ে ছিল তার সন্তানকে। সংসারের একমাত্র উপার্জনশীল সোহান।

তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমি কি করবো। যুদ্ধ চলাকালে মাঝে মধ্যে তার সঙ্গে কথা হতো, সে সারাক্ষণ কান্না করতো দেশে আসার জন্য। তার বন্ধু জাফর আমাকে জানায়, সোহানের শরীরে বোমা বিস্ফোরন হলে সে মারা যায়। আমি দালালদের গ্রেপ্তারসহ বিচার চাই। আর যেন তাদের খপ্পরে পড়ে কোন মায়ের বুক খালি না হয়। সরকারের কাছে তার ছেলের মরদেহ ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন তিনি।

সোহানের স্ত্রী হাবিবা আক্তার জানান, আমার স্বামীকে ফিরিয়ে আনতে ড্রিম হোম ট্রাভেলসে যোগাযোগ করা হয়েছে অনেকবার। পুনরায় আড়াই লাখ টাকা দিয়ে বলেছিল জানুয়ারি ২৬ তারিখ সোহানকে এনে দিবে। কিন্তু তার বদলে সে এখন লাশ হয়ে বিদেশের মাটিতে পড়ে রয়েছে।

back to top