alt

বৃদ্ধা নীলিমার দুঃখ ঘুচলো না

প্রতিনিধি, খোকসা (কুষ্টিয়া) : বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫

তিন পুত্র খেতে পড়তে দেয় না সত্তুরউর্দ্ধ নীলিমা খাতুন ও তার শয্যাশায়ী স্বামীকে। তাই প্রতিদিন ৬০ টাকা হাজিরায় প্রতিবেশী নারীদের সাথে চুল বাছায়ের কাজ করেন বৃদ্ধ এই নারী। দুই দিনের কাজের টাকা জমিয়ে অসুস্থ্য শয্যাশায়ী স্বামীর একদিনের ওষুধ কেনেন। দিনে একবার একপোয়া চাউলের ভাত রাঁধেন। বৃদ্ধ-দম্পতি নুন-ফ্যান খেয়ে বেঁচে আছেন। সন্তানে তার দুঃখ ঘুচলো না।কুষ্টিয়ার খোকসার জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাশালিয়া গ্রাম। এ গ্রামে চুল ব্যবসায়ীদের কারখানায় কাজ করেন বয়বৃদ্ধ নীলিমা খাতুন। তিনি তিন পুত্র ও তিন কন্যা সন্তানের মা। ছেলেরা বড় হয়ে আলাদা ঘর সংসার করছে। মেয়েদের বিয়ে দিতে সামান্য চাষের জমিটুকু বিক্রি করে ফেলেছেন। দুই বছর আগে বৃদ্ধা নীলিমার স্বামী আব্দুল্লাহ (৮৫) অসুস্থ্য হয়ে শয্যাশায়ী হয়। তিন ছেলে মা বাবার দিকে আর ফিরেও তাকায়নি। অথচ বৃদ্ধার স্বামীর নামের ৬ শতক জমির উপর ছেলেরা বসবাস করে। কিন্তু বাবা মায়ের ভাত কাপড় তাদের কাছে ভার হয়ে গেছে।

শয্যাশায়ী স্বামীর চিকিৎসা ও খাবার জোঠাতে প্রথমে অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন নীলিমা। সেখানে শুধু দুই বেলা দুই মুঠো খাবার জুটলেও ওষুধ কেনা অসম্ভব হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ৬ মাস আগে এই চুল বাছা কারখানায় কাজ নেন তিনি। এখানে বৃদ্ধার এক নাতীসহ প্রায় ১২ জন নারী শ্রমিক কাজ করেন। তারা সবাই সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত কাজ করে হাজিরা পায় ৬০ টাকা।

বুধবার দুপুরে কারখানায় চুল বাছায়ের কাজ করতে করতে নীলিমা বলেন, ছেলেদেরই নাকি সংসার চলে না। তারা আবার বৃদ্ধ বাবা মা’র খাবার দেবে কি করে মেয়েদের বিয়ে দিতে সামান্য জমিটুকু বিক্রি করে ফেলেছি। স্বামী আব্দুল্লা সুস্থ্য থাকতে জোন-পাট (দিন মুজুর) দিতে সংসার চালাতেন। এখন পঙ্গু হয়ে ঘরে পরে আছেন। তাদের আর কে দেখবে। কয়েক বছর আগে স্থানীয় ওয়ার্ডের মেম্বর রেজন আলী ওই বৃদ্ধার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিয়ে ছিলেন। প্রায় ৫/৬ মাস আগে থেকে তার ভাতার টাকা আর আসে না।

বৃদ্ধা নীলিমা খাতুন আরও জানান, প্রতিদিন সকালে এক পোয়া চাউল রান্না করেন। অসুস্থ স্বামীকে তিন বার খাওয়ান। নিজে কোন দিন একবার খান নাও খান। কারখানার কাজের টাকার সাথে বয়স্ক ভাতার টাকাটা হলে স্বামীর চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারতেন।

কান্না জড়িত কন্ঠে বৃদ্ধা নীলিমা বলেন, ঈদ উৎসব আসলে গ্রামের মানুষ তাদের সাহায্য করে। কিন্তু ঈদ পার্বনে ছেলেরা বৃদ্ধ বাবা মা’র একবেলা খাবারতো দূরের কথা। জানতেও চায়না বাবা মা বেঁচে আছে না মরে গেছে।

জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাকিব খান টিপু বলেন, বাবা মা’র ভড়ন পোষনের দায়িত্ব সন্তানদের। কিন্তু তারা বাবার মার দেখে না এ হতে দেওয়া যাবে না। মোবাইল সিমের কারনে বৃদ্ধার টাকা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তার সাথে অসহায় পরিবারটি কষ্ট শেয়ার করেনি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি প্রথম শুনলেন। এখন দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।

ছবি

প্রকাশ্যে চলছে শোলমারী নদী দখলের মহোৎসব

ছবি

শরণখোলায় মা ইলিশ রক্ষায় মোবাইল কোর্টের অভিযানে

ছবি

সরাইলে তিতাস নদীতে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

ছবি

সড়ক দুর্ঘটনায় হেফাজত নেতার মৃত্যু, কর্মীদের সড়ক অবরোধ

ছবি

ঝালকাঠিতে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালিত

ছবি

‘সরকার যে টিকা দিচ্ছে তা নিরাপদ’

ছবি

লৌহজংয়ে সরকারি খাসজমি উদ্ধার

ছবি

রামু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী কল্প জাহাজ ভাসা উৎসব সম্পন্ন

ছবি

যশোরে পানিতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু

ছবি

কিডনি বিকলে জীবনযুদ্ধে নাইমুল

ছবি

১৬ জন শিক্ষক-কর্মচারীর মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী ১৫ জন

ছবি

পার্বতীপুর মধ্যপাড়া রেঞ্জ বন বিভাগের ১১০০ একর বনভূমি দখল

ছবি

নবাবগঞ্জে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস পালিত

ছবি

টঙ্গীবাড়ীতে রাস্তা সংস্কারের দাবীতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

ছবি

পাঁচবিবিতে গ্রাম পুলিশদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা

ছবি

গঙ্গাচড়ায় ঘূর্ণিঝড়ের চারদিনেও ফেরেনি বিদ্যুৎ

ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে কৃষকের মাঝে শীতকালীন সবজি বীজ-সার বিতরণ

ছবি

ঝিনাইগাতীতে কৃষিনীতি বাস্তবায়নের জন্য অ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত

ছবি

খানাখন্দে ভরা ঢাকা-পাথরঘাটা মহাসড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

ছবি

হাইমচরে সাপের কামড়ে যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে উত্তেজনা

ছবি

কেশবপুরের জনগণ ভোজ্য তেল হিসেবে সরিষায় ফিরে যাচ্ছে

ছবি

চাটখিলে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালিত

ছবি

নিউ একতা ক্লিনিক ফের চালুর পাঁয়তারা

ছবি

চলনবিলে ব্রিধান-৭৫ আবাদে কৃষকের মাথায় হাত

ছবি

ফরিদপুরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় কৃষকদল নেতার উপর হামলা

ছবি

নর্থ সাউথে কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে টঙ্গীতে মানববন্ধন

ছবি

ঢাকা–সিলেট মহাসড়কে যানজটে আটকা উপদেষ্টা, হেঁটে ও মোটরসাইকেলে পরিদর্শন”

ছবি

বিজিবির অভিযান: উখিয়ায় হত্যা ও মাদক মামলার আসামী মনির আটক

ছবি

টেকনাফে ১৭১ রোহিঙ্গা আটক, পরে ক্যাম্প মাঝিদের কাছে হস্তান্তর

ছবি

ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের দুরবস্থা দেখতে এসে নিজেই দুরবস্থায় উপদেষ্টা

ছবি

গোপালগঞ্জে ছাত্রদল নেতাসহ দুইজনকে মাদক মামলায় কারাদণ্ড

ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উপদেষ্টার সফর: মহাসড়ক মেরামতে তড়িঘড়ি, চলছে ইট-বালুর সাজসজ্জা

ছবি

ডিমলায় বুড়িতিস্তা পুনঃখনন প্রকল্প পরিদর্শনে সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা

ছবি

কালিহাতীতে ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ৩

ছবি

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া শতাংশ হারে দেয়ার অনুরোধ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের

ছবি

অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে অক্সিজেন

tab

বৃদ্ধা নীলিমার দুঃখ ঘুচলো না

প্রতিনিধি, খোকসা (কুষ্টিয়া)

বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫

তিন পুত্র খেতে পড়তে দেয় না সত্তুরউর্দ্ধ নীলিমা খাতুন ও তার শয্যাশায়ী স্বামীকে। তাই প্রতিদিন ৬০ টাকা হাজিরায় প্রতিবেশী নারীদের সাথে চুল বাছায়ের কাজ করেন বৃদ্ধ এই নারী। দুই দিনের কাজের টাকা জমিয়ে অসুস্থ্য শয্যাশায়ী স্বামীর একদিনের ওষুধ কেনেন। দিনে একবার একপোয়া চাউলের ভাত রাঁধেন। বৃদ্ধ-দম্পতি নুন-ফ্যান খেয়ে বেঁচে আছেন। সন্তানে তার দুঃখ ঘুচলো না।কুষ্টিয়ার খোকসার জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাশালিয়া গ্রাম। এ গ্রামে চুল ব্যবসায়ীদের কারখানায় কাজ করেন বয়বৃদ্ধ নীলিমা খাতুন। তিনি তিন পুত্র ও তিন কন্যা সন্তানের মা। ছেলেরা বড় হয়ে আলাদা ঘর সংসার করছে। মেয়েদের বিয়ে দিতে সামান্য চাষের জমিটুকু বিক্রি করে ফেলেছেন। দুই বছর আগে বৃদ্ধা নীলিমার স্বামী আব্দুল্লাহ (৮৫) অসুস্থ্য হয়ে শয্যাশায়ী হয়। তিন ছেলে মা বাবার দিকে আর ফিরেও তাকায়নি। অথচ বৃদ্ধার স্বামীর নামের ৬ শতক জমির উপর ছেলেরা বসবাস করে। কিন্তু বাবা মায়ের ভাত কাপড় তাদের কাছে ভার হয়ে গেছে।

শয্যাশায়ী স্বামীর চিকিৎসা ও খাবার জোঠাতে প্রথমে অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন নীলিমা। সেখানে শুধু দুই বেলা দুই মুঠো খাবার জুটলেও ওষুধ কেনা অসম্ভব হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ৬ মাস আগে এই চুল বাছা কারখানায় কাজ নেন তিনি। এখানে বৃদ্ধার এক নাতীসহ প্রায় ১২ জন নারী শ্রমিক কাজ করেন। তারা সবাই সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত কাজ করে হাজিরা পায় ৬০ টাকা।

বুধবার দুপুরে কারখানায় চুল বাছায়ের কাজ করতে করতে নীলিমা বলেন, ছেলেদেরই নাকি সংসার চলে না। তারা আবার বৃদ্ধ বাবা মা’র খাবার দেবে কি করে মেয়েদের বিয়ে দিতে সামান্য জমিটুকু বিক্রি করে ফেলেছি। স্বামী আব্দুল্লা সুস্থ্য থাকতে জোন-পাট (দিন মুজুর) দিতে সংসার চালাতেন। এখন পঙ্গু হয়ে ঘরে পরে আছেন। তাদের আর কে দেখবে। কয়েক বছর আগে স্থানীয় ওয়ার্ডের মেম্বর রেজন আলী ওই বৃদ্ধার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিয়ে ছিলেন। প্রায় ৫/৬ মাস আগে থেকে তার ভাতার টাকা আর আসে না।

বৃদ্ধা নীলিমা খাতুন আরও জানান, প্রতিদিন সকালে এক পোয়া চাউল রান্না করেন। অসুস্থ স্বামীকে তিন বার খাওয়ান। নিজে কোন দিন একবার খান নাও খান। কারখানার কাজের টাকার সাথে বয়স্ক ভাতার টাকাটা হলে স্বামীর চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারতেন।

কান্না জড়িত কন্ঠে বৃদ্ধা নীলিমা বলেন, ঈদ উৎসব আসলে গ্রামের মানুষ তাদের সাহায্য করে। কিন্তু ঈদ পার্বনে ছেলেরা বৃদ্ধ বাবা মা’র একবেলা খাবারতো দূরের কথা। জানতেও চায়না বাবা মা বেঁচে আছে না মরে গেছে।

জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাকিব খান টিপু বলেন, বাবা মা’র ভড়ন পোষনের দায়িত্ব সন্তানদের। কিন্তু তারা বাবার মার দেখে না এ হতে দেওয়া যাবে না। মোবাইল সিমের কারনে বৃদ্ধার টাকা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তার সাথে অসহায় পরিবারটি কষ্ট শেয়ার করেনি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি প্রথম শুনলেন। এখন দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।

back to top