তিন পুত্র খেতে পড়তে দেয় না সত্তুরউর্দ্ধ নীলিমা খাতুন ও তার শয্যাশায়ী স্বামীকে। তাই প্রতিদিন ৬০ টাকা হাজিরায় প্রতিবেশী নারীদের সাথে চুল বাছায়ের কাজ করেন বৃদ্ধ এই নারী। দুই দিনের কাজের টাকা জমিয়ে অসুস্থ্য শয্যাশায়ী স্বামীর একদিনের ওষুধ কেনেন। দিনে একবার একপোয়া চাউলের ভাত রাঁধেন। বৃদ্ধ-দম্পতি নুন-ফ্যান খেয়ে বেঁচে আছেন। সন্তানে তার দুঃখ ঘুচলো না।কুষ্টিয়ার খোকসার জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাশালিয়া গ্রাম। এ গ্রামে চুল ব্যবসায়ীদের কারখানায় কাজ করেন বয়বৃদ্ধ নীলিমা খাতুন। তিনি তিন পুত্র ও তিন কন্যা সন্তানের মা। ছেলেরা বড় হয়ে আলাদা ঘর সংসার করছে। মেয়েদের বিয়ে দিতে সামান্য চাষের জমিটুকু বিক্রি করে ফেলেছেন। দুই বছর আগে বৃদ্ধা নীলিমার স্বামী আব্দুল্লাহ (৮৫) অসুস্থ্য হয়ে শয্যাশায়ী হয়। তিন ছেলে মা বাবার দিকে আর ফিরেও তাকায়নি। অথচ বৃদ্ধার স্বামীর নামের ৬ শতক জমির উপর ছেলেরা বসবাস করে। কিন্তু বাবা মায়ের ভাত কাপড় তাদের কাছে ভার হয়ে গেছে।
শয্যাশায়ী স্বামীর চিকিৎসা ও খাবার জোঠাতে প্রথমে অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন নীলিমা। সেখানে শুধু দুই বেলা দুই মুঠো খাবার জুটলেও ওষুধ কেনা অসম্ভব হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ৬ মাস আগে এই চুল বাছা কারখানায় কাজ নেন তিনি। এখানে বৃদ্ধার এক নাতীসহ প্রায় ১২ জন নারী শ্রমিক কাজ করেন। তারা সবাই সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত কাজ করে হাজিরা পায় ৬০ টাকা।
বুধবার দুপুরে কারখানায় চুল বাছায়ের কাজ করতে করতে নীলিমা বলেন, ছেলেদেরই নাকি সংসার চলে না। তারা আবার বৃদ্ধ বাবা মা’র খাবার দেবে কি করে মেয়েদের বিয়ে দিতে সামান্য জমিটুকু বিক্রি করে ফেলেছি। স্বামী আব্দুল্লা সুস্থ্য থাকতে জোন-পাট (দিন মুজুর) দিতে সংসার চালাতেন। এখন পঙ্গু হয়ে ঘরে পরে আছেন। তাদের আর কে দেখবে। কয়েক বছর আগে স্থানীয় ওয়ার্ডের মেম্বর রেজন আলী ওই বৃদ্ধার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিয়ে ছিলেন। প্রায় ৫/৬ মাস আগে থেকে তার ভাতার টাকা আর আসে না।
বৃদ্ধা নীলিমা খাতুন আরও জানান, প্রতিদিন সকালে এক পোয়া চাউল রান্না করেন। অসুস্থ স্বামীকে তিন বার খাওয়ান। নিজে কোন দিন একবার খান নাও খান। কারখানার কাজের টাকার সাথে বয়স্ক ভাতার টাকাটা হলে স্বামীর চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারতেন।
কান্না জড়িত কন্ঠে বৃদ্ধা নীলিমা বলেন, ঈদ উৎসব আসলে গ্রামের মানুষ তাদের সাহায্য করে। কিন্তু ঈদ পার্বনে ছেলেরা বৃদ্ধ বাবা মা’র একবেলা খাবারতো দূরের কথা। জানতেও চায়না বাবা মা বেঁচে আছে না মরে গেছে।
জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাকিব খান টিপু বলেন, বাবা মা’র ভড়ন পোষনের দায়িত্ব সন্তানদের। কিন্তু তারা বাবার মার দেখে না এ হতে দেওয়া যাবে না। মোবাইল সিমের কারনে বৃদ্ধার টাকা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তার সাথে অসহায় পরিবারটি কষ্ট শেয়ার করেনি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি প্রথম শুনলেন। এখন দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।
বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫
তিন পুত্র খেতে পড়তে দেয় না সত্তুরউর্দ্ধ নীলিমা খাতুন ও তার শয্যাশায়ী স্বামীকে। তাই প্রতিদিন ৬০ টাকা হাজিরায় প্রতিবেশী নারীদের সাথে চুল বাছায়ের কাজ করেন বৃদ্ধ এই নারী। দুই দিনের কাজের টাকা জমিয়ে অসুস্থ্য শয্যাশায়ী স্বামীর একদিনের ওষুধ কেনেন। দিনে একবার একপোয়া চাউলের ভাত রাঁধেন। বৃদ্ধ-দম্পতি নুন-ফ্যান খেয়ে বেঁচে আছেন। সন্তানে তার দুঃখ ঘুচলো না।কুষ্টিয়ার খোকসার জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাশালিয়া গ্রাম। এ গ্রামে চুল ব্যবসায়ীদের কারখানায় কাজ করেন বয়বৃদ্ধ নীলিমা খাতুন। তিনি তিন পুত্র ও তিন কন্যা সন্তানের মা। ছেলেরা বড় হয়ে আলাদা ঘর সংসার করছে। মেয়েদের বিয়ে দিতে সামান্য চাষের জমিটুকু বিক্রি করে ফেলেছেন। দুই বছর আগে বৃদ্ধা নীলিমার স্বামী আব্দুল্লাহ (৮৫) অসুস্থ্য হয়ে শয্যাশায়ী হয়। তিন ছেলে মা বাবার দিকে আর ফিরেও তাকায়নি। অথচ বৃদ্ধার স্বামীর নামের ৬ শতক জমির উপর ছেলেরা বসবাস করে। কিন্তু বাবা মায়ের ভাত কাপড় তাদের কাছে ভার হয়ে গেছে।
শয্যাশায়ী স্বামীর চিকিৎসা ও খাবার জোঠাতে প্রথমে অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন নীলিমা। সেখানে শুধু দুই বেলা দুই মুঠো খাবার জুটলেও ওষুধ কেনা অসম্ভব হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ৬ মাস আগে এই চুল বাছা কারখানায় কাজ নেন তিনি। এখানে বৃদ্ধার এক নাতীসহ প্রায় ১২ জন নারী শ্রমিক কাজ করেন। তারা সবাই সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত কাজ করে হাজিরা পায় ৬০ টাকা।
বুধবার দুপুরে কারখানায় চুল বাছায়ের কাজ করতে করতে নীলিমা বলেন, ছেলেদেরই নাকি সংসার চলে না। তারা আবার বৃদ্ধ বাবা মা’র খাবার দেবে কি করে মেয়েদের বিয়ে দিতে সামান্য জমিটুকু বিক্রি করে ফেলেছি। স্বামী আব্দুল্লা সুস্থ্য থাকতে জোন-পাট (দিন মুজুর) দিতে সংসার চালাতেন। এখন পঙ্গু হয়ে ঘরে পরে আছেন। তাদের আর কে দেখবে। কয়েক বছর আগে স্থানীয় ওয়ার্ডের মেম্বর রেজন আলী ওই বৃদ্ধার নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিয়ে ছিলেন। প্রায় ৫/৬ মাস আগে থেকে তার ভাতার টাকা আর আসে না।
বৃদ্ধা নীলিমা খাতুন আরও জানান, প্রতিদিন সকালে এক পোয়া চাউল রান্না করেন। অসুস্থ স্বামীকে তিন বার খাওয়ান। নিজে কোন দিন একবার খান নাও খান। কারখানার কাজের টাকার সাথে বয়স্ক ভাতার টাকাটা হলে স্বামীর চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারতেন।
কান্না জড়িত কন্ঠে বৃদ্ধা নীলিমা বলেন, ঈদ উৎসব আসলে গ্রামের মানুষ তাদের সাহায্য করে। কিন্তু ঈদ পার্বনে ছেলেরা বৃদ্ধ বাবা মা’র একবেলা খাবারতো দূরের কথা। জানতেও চায়না বাবা মা বেঁচে আছে না মরে গেছে।
জয়ন্তী হাজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাকিব খান টিপু বলেন, বাবা মা’র ভড়ন পোষনের দায়িত্ব সন্তানদের। কিন্তু তারা বাবার মার দেখে না এ হতে দেওয়া যাবে না। মোবাইল সিমের কারনে বৃদ্ধার টাকা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তার সাথে অসহায় পরিবারটি কষ্ট শেয়ার করেনি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি প্রথম শুনলেন। এখন দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।