পীরগাছায় আইন শৃঙ্খলার অবনতি
পীরগাছা (রংপুর) : সরকারি রাস্তার গাছ কাটার অসুস্থ প্রতিযোগিতা -সংবাদ
রংপুরের পীরগাছায় আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতির অভিযোগ উঠেছে। বেড়েছে চুরি, অজ্ঞান পার্টির কর্মযজ্ঞ ও সরকারি রাস্তার গাছ কাটার অসুস্থ প্রতিযোগিতা। সরকারি গাছ কাটার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে, স্ব-ঘোষিত ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা, কিছু জনপ্রতিনিধি, কিছু সরকারি কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রভাবশালীরা আর এদেরকে সহযোগিতা করছেন ফরেষ্টের পীরগাছা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা। গাছ কাটার বিষয়ে একাধিক দপ্তরে অভিযোগ করেও গাছ ক্ষেকোরা আইনের আওতায় আসছে না। জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে প্রভাবশালীরা সরকারি রাস্তার কেটে নিচ্ছেন আর প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা নিরব। এরইমধ্যে উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়ন রামগোপাল এলাকার মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে জাফর আলীকে দেখা যায় সরকারি রাস্তার গাছ কেটে নিতে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি চক্র দীর্ঘদিন হতে পীরগাছা-তাম্বুলপুর রাস্তাসহ তাম্বুলপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তার গাছ রাতের অন্ধকারে চুরি কেটে নিচ্ছে, কেউ প্রতিবাদ করার সাহস না করায় ও প্রশাসনের নিরবতায় বুধবার (৮ অক্টোবর) দিনের বেলা রামগোপাল মৌজার স্থানীয় ইটা খাওয়া গাছের তল হতে পশ্চিম রামগোপাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যাওয়ার রাস্তার দুই ধারের বিশাল-বিশাল গাছ কেটে নিচ্ছে জাফর বাহিনী। স্থানীয় ইউপি সদস্য সাফিন মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন হতে পশ্চিম রামগোপাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফজলু মাস্টার, বুলেট, সাত্তার ডলার, আলতাফ ও তছিররা রাস্তার গাছ অল্প মূল্যে বিক্রি করেন আর জাফর আলী ও আমিনুল ইসলামরা বেশী লাভের আশায় ক্রয় করেন। এই সিন্ডিকেটটি প্রায় ২০০/২৫০ গাছ অবৈধভাবে বিক্রি করেছেন। তবে ফজলু মাস্টার বলেন, মাত্র ১১৮ টি গাছ কাটা হয়েছে। অভিযুক্ত জাফর আলী গণমাধ্যম কর্মীদের দাম্ভিকতার সহিত বলেন, বর্তমান দেশে নির্বাচিত সরকার নেই, তাই আমরা যখন যেখানে যা করব সেটাই আইন আদালত।
শাহীনুর রশিদ কামাল বলেন, ফজলু মাস্টারদের সংঘবদ্ধ চক্রটি রাস্তার গাছ অবৈধভাবে কেটে সাবার করে দিয়েছে। গ্রাম পুলিশ আম্বার আলী বলেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশে তাম্বুলপুরের কামালের স মিল হতে রাস্তার গাছগুলি উদ্ধার করে পরিষদে নিয়ে এসেছি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেন, কামালের অনুমোদনহীন স মিলে রাস্তার চোরাই গাছ হরহামেশাই ক্রয় করা হয় বা চিরাই করা হয়। অপরদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্থানীয়দের মোবাইলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিন পরিদর্শনের জন্য বনবিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মাঈনুদ্দিন গেলেও পাঁচ হাজার টাকা বকসিস নিয়ে আসার অভিযোগ উঠেছে।
বনবিভাগের পীরগাছা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, আমি অফিসিয়াল কাজে বাহিরে থাকায় নির্বাহী স্যারের মোবাইল নির্দেশনায় মাঈনুদ্দিনকে পাঠিয়েছি, বকসিস নেওয়া ঠিক হয়নি। এটা বড় অপরাধ। ছাওলা ইউনিয়নের দক্ষিণ ছাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তার গাছ স্থানীয় শহিদুল, মুকুল, বকুল, নুরুল হুদা ও তুহিনরা অবৈধভাবে কেটে নেওয়াকে কেন্দ্র করে আজিজুল ইসলাম অভিযোগ দিয়েও অজ্ঞাত কারণে আইনের আওতায় আসছে না।
ছাওলা গ্রামের আকবার আলী মিস্ত্রি গত ৬ অক্টোবর সোমবার বিকেলে তিনটি গরু তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করেন। রাতে সিদ কেটে ঘরে চোর ঢুকে টাকা রাখার বাক্স চুরি করে নিয়ে যায়। বাহিরে বাক্স পাওয়া টাকা পাওয়া যায় নি। পরের দিন সকালে তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা চুরি হওয়া দেখে ও শুনে আকবার আলীর বাবা হানিফ উদ্দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বিকেলে মারা যান।
তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া গ্রামের আবেদ আলী মাস্টারের বাড়িতে গত ১ অক্টোবর দিনগত রাতে প্রায় তিন লাখ টাকার স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়। এরইমধ্যে তিনটি ব্রিক ফিল্ডের নয়টি ও বরেন্দ্র কর্তৃক পরিচালিত গভীর নলকুপের তিনটি ট্রান্সফারসহ ১৪ টি চুরি হয়েছে। তাম্বুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বজলুর রশিদ মুকুল বলেন,“আমি ঘটনাটি জানার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ঘটনা স্থলে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়েছি। গাছ গুলো পরিষদ মাঠে রাখা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলার অবনতি প্রসঙ্গে পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ রোমেল বড়ুয়া বলেন, আপনাদের লেখার মধ্য দিয়ে বুঝা যাচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা শুধু পুলিশের একার কাজ না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মো. রাসেল বলেন,“সরকারি গাছ কাটা একটি গুরুতর অপরাধ। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি
পীরগাছায় আইন শৃঙ্খলার অবনতি
পীরগাছা (রংপুর) : সরকারি রাস্তার গাছ কাটার অসুস্থ প্রতিযোগিতা -সংবাদ
শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
রংপুরের পীরগাছায় আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতির অভিযোগ উঠেছে। বেড়েছে চুরি, অজ্ঞান পার্টির কর্মযজ্ঞ ও সরকারি রাস্তার গাছ কাটার অসুস্থ প্রতিযোগিতা। সরকারি গাছ কাটার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে, স্ব-ঘোষিত ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা, কিছু জনপ্রতিনিধি, কিছু সরকারি কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রভাবশালীরা আর এদেরকে সহযোগিতা করছেন ফরেষ্টের পীরগাছা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা। গাছ কাটার বিষয়ে একাধিক দপ্তরে অভিযোগ করেও গাছ ক্ষেকোরা আইনের আওতায় আসছে না। জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে প্রভাবশালীরা সরকারি রাস্তার কেটে নিচ্ছেন আর প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা নিরব। এরইমধ্যে উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়ন রামগোপাল এলাকার মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে জাফর আলীকে দেখা যায় সরকারি রাস্তার গাছ কেটে নিতে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি চক্র দীর্ঘদিন হতে পীরগাছা-তাম্বুলপুর রাস্তাসহ তাম্বুলপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তার গাছ রাতের অন্ধকারে চুরি কেটে নিচ্ছে, কেউ প্রতিবাদ করার সাহস না করায় ও প্রশাসনের নিরবতায় বুধবার (৮ অক্টোবর) দিনের বেলা রামগোপাল মৌজার স্থানীয় ইটা খাওয়া গাছের তল হতে পশ্চিম রামগোপাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যাওয়ার রাস্তার দুই ধারের বিশাল-বিশাল গাছ কেটে নিচ্ছে জাফর বাহিনী। স্থানীয় ইউপি সদস্য সাফিন মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন হতে পশ্চিম রামগোপাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফজলু মাস্টার, বুলেট, সাত্তার ডলার, আলতাফ ও তছিররা রাস্তার গাছ অল্প মূল্যে বিক্রি করেন আর জাফর আলী ও আমিনুল ইসলামরা বেশী লাভের আশায় ক্রয় করেন। এই সিন্ডিকেটটি প্রায় ২০০/২৫০ গাছ অবৈধভাবে বিক্রি করেছেন। তবে ফজলু মাস্টার বলেন, মাত্র ১১৮ টি গাছ কাটা হয়েছে। অভিযুক্ত জাফর আলী গণমাধ্যম কর্মীদের দাম্ভিকতার সহিত বলেন, বর্তমান দেশে নির্বাচিত সরকার নেই, তাই আমরা যখন যেখানে যা করব সেটাই আইন আদালত।
শাহীনুর রশিদ কামাল বলেন, ফজলু মাস্টারদের সংঘবদ্ধ চক্রটি রাস্তার গাছ অবৈধভাবে কেটে সাবার করে দিয়েছে। গ্রাম পুলিশ আম্বার আলী বলেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশে তাম্বুলপুরের কামালের স মিল হতে রাস্তার গাছগুলি উদ্ধার করে পরিষদে নিয়ে এসেছি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেন, কামালের অনুমোদনহীন স মিলে রাস্তার চোরাই গাছ হরহামেশাই ক্রয় করা হয় বা চিরাই করা হয়। অপরদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্থানীয়দের মোবাইলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিন পরিদর্শনের জন্য বনবিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মাঈনুদ্দিন গেলেও পাঁচ হাজার টাকা বকসিস নিয়ে আসার অভিযোগ উঠেছে।
বনবিভাগের পীরগাছা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, আমি অফিসিয়াল কাজে বাহিরে থাকায় নির্বাহী স্যারের মোবাইল নির্দেশনায় মাঈনুদ্দিনকে পাঠিয়েছি, বকসিস নেওয়া ঠিক হয়নি। এটা বড় অপরাধ। ছাওলা ইউনিয়নের দক্ষিণ ছাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তার গাছ স্থানীয় শহিদুল, মুকুল, বকুল, নুরুল হুদা ও তুহিনরা অবৈধভাবে কেটে নেওয়াকে কেন্দ্র করে আজিজুল ইসলাম অভিযোগ দিয়েও অজ্ঞাত কারণে আইনের আওতায় আসছে না।
ছাওলা গ্রামের আকবার আলী মিস্ত্রি গত ৬ অক্টোবর সোমবার বিকেলে তিনটি গরু তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করেন। রাতে সিদ কেটে ঘরে চোর ঢুকে টাকা রাখার বাক্স চুরি করে নিয়ে যায়। বাহিরে বাক্স পাওয়া টাকা পাওয়া যায় নি। পরের দিন সকালে তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা চুরি হওয়া দেখে ও শুনে আকবার আলীর বাবা হানিফ উদ্দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বিকেলে মারা যান।
তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া গ্রামের আবেদ আলী মাস্টারের বাড়িতে গত ১ অক্টোবর দিনগত রাতে প্রায় তিন লাখ টাকার স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়। এরইমধ্যে তিনটি ব্রিক ফিল্ডের নয়টি ও বরেন্দ্র কর্তৃক পরিচালিত গভীর নলকুপের তিনটি ট্রান্সফারসহ ১৪ টি চুরি হয়েছে। তাম্বুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বজলুর রশিদ মুকুল বলেন,“আমি ঘটনাটি জানার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ঘটনা স্থলে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়েছি। গাছ গুলো পরিষদ মাঠে রাখা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলার অবনতি প্রসঙ্গে পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ রোমেল বড়ুয়া বলেন, আপনাদের লেখার মধ্য দিয়ে বুঝা যাচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা শুধু পুলিশের একার কাজ না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মো. রাসেল বলেন,“সরকারি গাছ কাটা একটি গুরুতর অপরাধ। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি