জুলাইযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং পরিবহন শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে ঢাকা ও ময়মনসিংহের মধ্যে যানবাহন সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর স্বাভাবিক হয়েছে।
তবে ময়মনসিংহ-ঢাকা পথে চলাচলকারী ইউনাইটেড সার্ভিস ও সৌখিন পরিবহনের বাস এখনও বন্ধ রয়েছে।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম শনিবার বিকালে সাংবাদিকদের জানান, “ঢাকা-ময়মনসিংহ পথে ইউনাইটেড সার্ভিসের ১৬টি বাস বন্ধের সিদ্ধান্তের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং পরিবহন শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি প্রত্যাহার হয়েছে। কিন্তু নিজেদের মধ্যে সমস্যার কারণে দুটি পরিবহনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।”
পুলিশ জানায়, হালুয়াঘাটের জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হান শুক্রবার রাতে বাসে ওঠার সময় পরিবহন শ্রমিক অরুণ ঝন্টুর শরীরে ধাক্কা লাগে। এ ঘটনায় নিজেকে জুলাইযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে রায়হান একাধিকবার দুঃখপ্রকাশ করার পরও অরুণ ঝন্টু তার প্রতি অশালীন আচরণ ও কটূক্তি করে বাস থেকে নামিয়ে দেন।
এরপর রাত ৯টা থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা এলাকার ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের ইউনাইটেড সার্ভিসের কাউন্টারের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে ইউনাইটেড পরিবহনের শ্রমিক অরুণ ঝন্টুকে আটক করে পুলিশ।
এর জেরে শনিবার বেলা ১১টা থেকে পরিবহন শ্রমিকরা শহরের বাইপাসে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, শেরপুর ও জামালপুর থেকে ঢাকাগামী সব বাস আটকা পড়ে। পাশাপাশি ঢাকা থেকে ওই চার জেলাগামী গাড়িও বাইপাস এলাকায় আটকা পড়ে। এতে দীর্ঘ জটের সৃষ্টি হয়। উভয়পাশের যাত্রীরা সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। কেউ কেউ বাস থেকে নেমে গন্তব্যের পথে রওনা হন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা দাবি করেন, দোষীদের বিচারসহ জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ সাগর হত্যা মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগের জেলার সহসভাপতি আমিনুল হক শামীমকে গ্রেপ্তার এবং তার মালিকানাধীন ইউনাইটেড সার্ভিসের সব বাস বন্ধ রাখা। এই সার্ভিসে আমিনুল হক শামীমের ১৬টি বাস রয়েছে।
অপরদিকে পরিবহন শ্রমিকদের দাবি ছিল, আটক শ্রমিককে মুক্তি দিতে হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এই অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও পরিবহন শ্রমিক নেতাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হয়। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সিদ্ধান্ত হয়, আমিনুল হক শামীমের ১৬টি বাসের চলাচল বন্ধ থাকবে।
এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা মাসকান্দা বাস কাউন্টার থেকে সরে যান। অপরদিকে পরিবহন শ্রমিকরাও বাইপাস থেকে অবরোধ তুলে নেন। তখন সেখানে আটকে পড়া বাসগুলো গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
পরিবহন শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এরপর ইউনাইটেড পরিবহনের ময়মনসিংহ কাউন্টারের প্রতিনিধিরা ঢাকায় মহাখালীতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন সেখান থেকে ইউনাইটেড ও সৌখিন পরিবহনের বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত আসে। ফলে অন্যান্য বাস চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও এ দুটি পরিবহনের বাস চলাচল করছে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ মহানগরের সাবেক সদস্যসচিব আল নূর মোহাম্মদ আয়াস বলেন, “আবু রায়হানকে লাঞ্ছিতের বিচার, ‘ফ্যাসিস্ট’ আমিনুল হক শামীম নিয়ন্ত্রিত ১৬ বাস বন্ধ, ম্যানেজারকে প্রত্যাহার এবং সব দোসরকে চাকরিচ্যুত করার আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে।”
জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হান বলেন, “প্রশাসন এবং শ্রমিক নেতারা আমাদের দাবি মেনে নেওয়ায় যাত্রী দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। আমরা চাই না মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ডে ফ্যাসিস্টের কোনো স্মৃতিচিহ্ন থাকুক। তবে দাবি মেনে নেওয়ার পর শুনেছি, মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড থেকে ইউনাইটেড এবং সৌখিন পরিবহনের কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। সেটি একান্তই তাদের বিষয়। কিন্তু যাত্রী দুর্ভোগ বাড়লে আমরা বসে থাকব না।”
ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম বলেন, “আমিনুল হক শামীম পরিচালিত ১৬ বাস বন্ধের পাশাপাশি একটি মনিটরিং টিম গঠন করার সিদ্ধান্ত হওয়ায় বাস চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু ঢাকার নেতৃবৃন্দ তা মানতে নারাজ, যার কারণে ইউনাইটেড এবং সৌখিন পরিবহন বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
ইউনাইটেড পরিবহনের চালক সোহেল রানা বলেন, “শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত মালিক পক্ষ বাস চলাচলে নিষেধ করেছেন। প্রথমত গ্রেপ্তার শ্রমিককে মুক্তি দিতে হবে।”
শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
জুলাইযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং পরিবহন শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে ঢাকা ও ময়মনসিংহের মধ্যে যানবাহন সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর স্বাভাবিক হয়েছে।
তবে ময়মনসিংহ-ঢাকা পথে চলাচলকারী ইউনাইটেড সার্ভিস ও সৌখিন পরিবহনের বাস এখনও বন্ধ রয়েছে।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম শনিবার বিকালে সাংবাদিকদের জানান, “ঢাকা-ময়মনসিংহ পথে ইউনাইটেড সার্ভিসের ১৬টি বাস বন্ধের সিদ্ধান্তের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং পরিবহন শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি প্রত্যাহার হয়েছে। কিন্তু নিজেদের মধ্যে সমস্যার কারণে দুটি পরিবহনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।”
পুলিশ জানায়, হালুয়াঘাটের জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হান শুক্রবার রাতে বাসে ওঠার সময় পরিবহন শ্রমিক অরুণ ঝন্টুর শরীরে ধাক্কা লাগে। এ ঘটনায় নিজেকে জুলাইযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে রায়হান একাধিকবার দুঃখপ্রকাশ করার পরও অরুণ ঝন্টু তার প্রতি অশালীন আচরণ ও কটূক্তি করে বাস থেকে নামিয়ে দেন।
এরপর রাত ৯টা থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা এলাকার ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের ইউনাইটেড সার্ভিসের কাউন্টারের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে ইউনাইটেড পরিবহনের শ্রমিক অরুণ ঝন্টুকে আটক করে পুলিশ।
এর জেরে শনিবার বেলা ১১টা থেকে পরিবহন শ্রমিকরা শহরের বাইপাসে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, শেরপুর ও জামালপুর থেকে ঢাকাগামী সব বাস আটকা পড়ে। পাশাপাশি ঢাকা থেকে ওই চার জেলাগামী গাড়িও বাইপাস এলাকায় আটকা পড়ে। এতে দীর্ঘ জটের সৃষ্টি হয়। উভয়পাশের যাত্রীরা সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। কেউ কেউ বাস থেকে নেমে গন্তব্যের পথে রওনা হন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা দাবি করেন, দোষীদের বিচারসহ জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ সাগর হত্যা মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগের জেলার সহসভাপতি আমিনুল হক শামীমকে গ্রেপ্তার এবং তার মালিকানাধীন ইউনাইটেড সার্ভিসের সব বাস বন্ধ রাখা। এই সার্ভিসে আমিনুল হক শামীমের ১৬টি বাস রয়েছে।
অপরদিকে পরিবহন শ্রমিকদের দাবি ছিল, আটক শ্রমিককে মুক্তি দিতে হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এই অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও পরিবহন শ্রমিক নেতাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হয়। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সিদ্ধান্ত হয়, আমিনুল হক শামীমের ১৬টি বাসের চলাচল বন্ধ থাকবে।
এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা মাসকান্দা বাস কাউন্টার থেকে সরে যান। অপরদিকে পরিবহন শ্রমিকরাও বাইপাস থেকে অবরোধ তুলে নেন। তখন সেখানে আটকে পড়া বাসগুলো গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
পরিবহন শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এরপর ইউনাইটেড পরিবহনের ময়মনসিংহ কাউন্টারের প্রতিনিধিরা ঢাকায় মহাখালীতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন সেখান থেকে ইউনাইটেড ও সৌখিন পরিবহনের বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত আসে। ফলে অন্যান্য বাস চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও এ দুটি পরিবহনের বাস চলাচল করছে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ মহানগরের সাবেক সদস্যসচিব আল নূর মোহাম্মদ আয়াস বলেন, “আবু রায়হানকে লাঞ্ছিতের বিচার, ‘ফ্যাসিস্ট’ আমিনুল হক শামীম নিয়ন্ত্রিত ১৬ বাস বন্ধ, ম্যানেজারকে প্রত্যাহার এবং সব দোসরকে চাকরিচ্যুত করার আশ্বাসে অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে।”
জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হান বলেন, “প্রশাসন এবং শ্রমিক নেতারা আমাদের দাবি মেনে নেওয়ায় যাত্রী দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। আমরা চাই না মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ডে ফ্যাসিস্টের কোনো স্মৃতিচিহ্ন থাকুক। তবে দাবি মেনে নেওয়ার পর শুনেছি, মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড থেকে ইউনাইটেড এবং সৌখিন পরিবহনের কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। সেটি একান্তই তাদের বিষয়। কিন্তু যাত্রী দুর্ভোগ বাড়লে আমরা বসে থাকব না।”
ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম বলেন, “আমিনুল হক শামীম পরিচালিত ১৬ বাস বন্ধের পাশাপাশি একটি মনিটরিং টিম গঠন করার সিদ্ধান্ত হওয়ায় বাস চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু ঢাকার নেতৃবৃন্দ তা মানতে নারাজ, যার কারণে ইউনাইটেড এবং সৌখিন পরিবহন বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
ইউনাইটেড পরিবহনের চালক সোহেল রানা বলেন, “শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত মালিক পক্ষ বাস চলাচলে নিষেধ করেছেন। প্রথমত গ্রেপ্তার শ্রমিককে মুক্তি দিতে হবে।”