জয়পুরহাট : করলা খেতে পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক -সংবাদ
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় করলা চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ধান আর আলু প্রধান জেলায় এ উপজেলায় প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে নিজস্ব মেধা আর প্রযুক্তিতে করলা চাষ করে ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন এলাকার কৃষকরা। ফলে ধান ও আলুর স্থান ধীরে ধীরে দখল করে নিচ্ছে করলা চাষ। বিঘার পর বিঘা মাঠের জমিতে মাচায় ঝুলছে করলা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষেতলাল উপজেলার হাটশহর, বাখরা, মুনঝাড়, কলিঙ্গা, ঘুগোইল, কুসুমশহর, আঁটিদাশড়া, কোনিয়াপাড়া গ্রামের মাঠগুলোতে। এক সময় এখানকার দুই-এক জন কৃষক করলা চাষ করলেও এখন শতভাগ পরিবার কোনো না কোনোভাবে যুক্ত করলা চাষে। বছরের বেশিরভাগ সময়জুড়ে মানুষ আর প্রকৃতি কথা বলে করলা নিয়ে। মানুষ এখন এই গ্রামগুলোকে চেনে করলা গ্রাম নামে।
অধিকাংশ কৃষক বাণিজ্যিকভাবে করলা চাষ করে বদলে গেছে তাদের ভাগ্য। এখানকার উৎপাদিত করলা যাচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে। প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাইকাররা আসেন এই গ্রামগুলোতে। শুধু তাই নয়, জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়ে থাকে। এখানকার করলা গুনগত মানে বেশ ভাল হওয়ায় অন্য জেলায় এর চাহিদা অনেকটায় বেশি। আর এ কারনে ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। এসব করলা বাজারজাত করতে স্থানীয় ভাবে গড়ে উঠেছে কয়েকটি স্থানে করলার হাট। এদিকে করলার ভালো দাম পেয়ে কৃষকরাও বেশ খুশি। অন্যদিকে কর্মসংস্থান সুযোগও হয়েছে এলাকার অনেক দিনমজুরের।
কৃষকরা বলছেন, উৎপাদন খরচ কম এবং লাভ বেশী, এছাড়া স্বল্প সময়ে এ ফসল উঠানো যায় বলে করলা চাষে দিন দিন ঝুঁকে পরছেন তারা। তাছাড়া কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগীতায় কৃষকদের প্রশিক্ষিত করতে পারলে বেশি উৎপাদনের পাশাপাশি এলাকায় করলা চাষে আরো সফলতা মিলবে।
উপজেলার হাটশহর গ্রামের কৃষক আশিকুর রহমান বলেন, তুলনামুলক অন্য ফসলের চেয়ে করলার ফলন বেশি হয়ে থাকে। এতে সেচ খরচ যেমন কম তেমনি রোগবালাই আর পোকা মাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে।
উপজেলার মুনঝাড় গ্রামের কৃষক তারাজুল ইসলাম বলেন, এক সময় অভাবের কারণে অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটলেও করলা চাষে সফলতা আসায় এখন সে অনেকটায় স্বাবলম্বী। তিনি আরো বলেন, বীজ, জৈবসার, বালাইনাশক, করলার মাঁচাসহ সব মিলিয়ে এক বিঘা জমিতে করলা চাষ করতে খরচ হয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা ফলন ভালো হলে এক বিঘা জমি থেকে প্রায় ২ লাখ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত করলা বিক্রি করা যায়।
উপজেলার কলিঙ্গা গ্রামের কৃষক আবু নাসের বলেন, করলা রোপণের ২ মাসের মধ্যে করলা তোলা শুরু হয়। এক টানা ৫ মাস করলা তোলা যায়। আর করলার চাহিদা সারা বছরই থাকে। অন্য ফসলের চেয়ে করলা চাষে লাভ বেশি। আর সে কারণেই করলা চাষে করেছি। বর্তমানে প্রতি কেজি করলা প্রকারভেদে ৫০-৮০ টাকা পর্যন্ত পাইকারী বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে আবার সেই করলা ৮০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান বলেন, উপজেলায় এবার করলার চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। কৃষি বিভাগের সহযোগীতায় করলা চাষ দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাবে।
জয়পুরহাট : করলা খেতে পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক -সংবাদ
সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় করলা চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ধান আর আলু প্রধান জেলায় এ উপজেলায় প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে নিজস্ব মেধা আর প্রযুক্তিতে করলা চাষ করে ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন এলাকার কৃষকরা। ফলে ধান ও আলুর স্থান ধীরে ধীরে দখল করে নিচ্ছে করলা চাষ। বিঘার পর বিঘা মাঠের জমিতে মাচায় ঝুলছে করলা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষেতলাল উপজেলার হাটশহর, বাখরা, মুনঝাড়, কলিঙ্গা, ঘুগোইল, কুসুমশহর, আঁটিদাশড়া, কোনিয়াপাড়া গ্রামের মাঠগুলোতে। এক সময় এখানকার দুই-এক জন কৃষক করলা চাষ করলেও এখন শতভাগ পরিবার কোনো না কোনোভাবে যুক্ত করলা চাষে। বছরের বেশিরভাগ সময়জুড়ে মানুষ আর প্রকৃতি কথা বলে করলা নিয়ে। মানুষ এখন এই গ্রামগুলোকে চেনে করলা গ্রাম নামে।
অধিকাংশ কৃষক বাণিজ্যিকভাবে করলা চাষ করে বদলে গেছে তাদের ভাগ্য। এখানকার উৎপাদিত করলা যাচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে। প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাইকাররা আসেন এই গ্রামগুলোতে। শুধু তাই নয়, জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়ে থাকে। এখানকার করলা গুনগত মানে বেশ ভাল হওয়ায় অন্য জেলায় এর চাহিদা অনেকটায় বেশি। আর এ কারনে ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। এসব করলা বাজারজাত করতে স্থানীয় ভাবে গড়ে উঠেছে কয়েকটি স্থানে করলার হাট। এদিকে করলার ভালো দাম পেয়ে কৃষকরাও বেশ খুশি। অন্যদিকে কর্মসংস্থান সুযোগও হয়েছে এলাকার অনেক দিনমজুরের।
কৃষকরা বলছেন, উৎপাদন খরচ কম এবং লাভ বেশী, এছাড়া স্বল্প সময়ে এ ফসল উঠানো যায় বলে করলা চাষে দিন দিন ঝুঁকে পরছেন তারা। তাছাড়া কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগীতায় কৃষকদের প্রশিক্ষিত করতে পারলে বেশি উৎপাদনের পাশাপাশি এলাকায় করলা চাষে আরো সফলতা মিলবে।
উপজেলার হাটশহর গ্রামের কৃষক আশিকুর রহমান বলেন, তুলনামুলক অন্য ফসলের চেয়ে করলার ফলন বেশি হয়ে থাকে। এতে সেচ খরচ যেমন কম তেমনি রোগবালাই আর পোকা মাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে।
উপজেলার মুনঝাড় গ্রামের কৃষক তারাজুল ইসলাম বলেন, এক সময় অভাবের কারণে অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটলেও করলা চাষে সফলতা আসায় এখন সে অনেকটায় স্বাবলম্বী। তিনি আরো বলেন, বীজ, জৈবসার, বালাইনাশক, করলার মাঁচাসহ সব মিলিয়ে এক বিঘা জমিতে করলা চাষ করতে খরচ হয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা ফলন ভালো হলে এক বিঘা জমি থেকে প্রায় ২ লাখ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত করলা বিক্রি করা যায়।
উপজেলার কলিঙ্গা গ্রামের কৃষক আবু নাসের বলেন, করলা রোপণের ২ মাসের মধ্যে করলা তোলা শুরু হয়। এক টানা ৫ মাস করলা তোলা যায়। আর করলার চাহিদা সারা বছরই থাকে। অন্য ফসলের চেয়ে করলা চাষে লাভ বেশি। আর সে কারণেই করলা চাষে করেছি। বর্তমানে প্রতি কেজি করলা প্রকারভেদে ৫০-৮০ টাকা পর্যন্ত পাইকারী বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে আবার সেই করলা ৮০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান বলেন, উপজেলায় এবার করলার চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। কৃষি বিভাগের সহযোগীতায় করলা চাষ দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাবে।