নেত্রকোনা : বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ভবন -সংবাদ
অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের অভিযোগ তদন্ত করতে বেড়িয়ে এসেছে দীর্ঘদিনের অবৈধ মিটার সংযোগ চক্রের সন্ধান। সম্প্রতি দুদকে উত্থাপিত এক ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসায়ীর অভিযোগ তদন্তে গিয়ে মিটার জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে নেত্রকোনা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। আর এই অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগে একদিকে যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার তেমনি অতিরিক্ত লোডশেডিং ও বাড়তি বিল গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। অবৈধ সংযোগ স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করছেন সাধারণ গ্রাহকরা।
জানাগেছে, জেলা শহরসহ আশপাশের ৪৬২ কিলোমিটার অংশে রয়েছে পিডিবির অন্তত ৬০ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক। কিন্তু সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে একাধিক স্থানে রয়েছে অবৈধ সংযোগ। ফলে ঘাটতি পুরনে অতিরিক্ত লোডশেডিং ও মাস শেষে বাড়তি বিল গুনতে হয় সাধারণ গ্রাহকদের।
প্রায় ১৬ বছর আগে ডিজিটাল মিটার স্থাপন শুরু করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। ডিজিটালের নামে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের অভিযোগ বেশ পুরনো। সম্প্রতি দুদকের শুনানিতে উঠে আসে অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিলের একাধিক অভিযোগ। ভাবমূর্তি সঙ্কটে পরে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি সামলাতে তদন্তে নামলে উঠে আসে অবৈধ মিটার সংযোগ দেয়া চক্রের সন্ধান। আর এই চক্রের সাথে অভিযোগকারী ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসায়ী খোকন চন্দ্র দাসেরও সংস্লিষ্টতা রয়েছে বলে প্রমান পেয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। নেত্রকোনা পিডিবর এসিস্টেন্ট ইন্জিনিয়ার আশরাফুল আলম জানান, ডিজিটাল মিটারগুলো উপরে যেই নাম্বার ডিপ্লেতে সেই নাম্বার শো করার কথা। কিন্তু শুনানীতে উত্থাপিত অতিরিক্ত বিলের অভিযোগকারীর মিটারটি অবৈধ।
সরেজমিন তদন্তে দেখা যায়, নেত্রকোনা পৌর শহেরের নাগড়া এলাকার বাসিন্দা খোকন দাসের বাসার ভাড়াটিয়া জীগেন্দ্র সরকার। কয়েক বছরের মধ্যে গত এপ্রিল মাসে বিদ্যুৎ বিল আসে প্রায় তিন লাখ টাকা। এরই প্রেক্ষিতে দুদকে অভিযোগ করেন বাড়ির মালিক খোকন চন্দ্র দাস। কিন্তু তদন্তে পরিলক্ষিত হয় তার মিটারের বাহির ও ডিসপ্লে নাম্বারে রয়েছে ভিন্নতা। এতে প্রাথমিকভাবে মিটারটি টেম্পারিং করে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তবে অভযোগকারী খোকন চন্দ্র দাস জানান, পিডিবির লাইনম্যান রানা ও হৃদয়ের মধ্যস্থতায় এই মিটারটি সংযোগ দিয়েছেন। এটি বৈধ না অবৈধ তা তিনি জানতেন না।
তবে এই চক্রে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি করেছেন মোক্তারপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল ও আনন্দ বাজার এলাকার এ কে এম আব্দুল্লাহ। তারা জানান, জেলার বিভিন্ন স্থানেই ব্যাটারি চালিত অটো রিশকার গ্যারেজ রয়েছে। এর অনেক গুলোতেই অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। ফলে অতিরিক্ত লোডশেডিং ও মাস শেষে ঘাটতি পুরনে বাড়তি বিল গুনতে হয় গ্রাহকদের। এই চক্রে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেন তারা।
এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাহ্ উদ্দীন জানান, অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন চিহ্নিত করতে মাঠে কাজ করছে কতৃপক্ষ। অচিরেই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি জানান, প্রতিমাসে পিডিবিতে বিদ্যুৎ চাহিদা বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ মেগাওয়াট। যার বিক্রয় মূল্য প্রায় আট কোটি টাকা। বিদ্যুৎ চুরি চক্রে সংস্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা হবে।
নেত্রকোনা : বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ভবন -সংবাদ
মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের অভিযোগ তদন্ত করতে বেড়িয়ে এসেছে দীর্ঘদিনের অবৈধ মিটার সংযোগ চক্রের সন্ধান। সম্প্রতি দুদকে উত্থাপিত এক ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসায়ীর অভিযোগ তদন্তে গিয়ে মিটার জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে নেত্রকোনা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। আর এই অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগে একদিকে যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার তেমনি অতিরিক্ত লোডশেডিং ও বাড়তি বিল গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। অবৈধ সংযোগ স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করছেন সাধারণ গ্রাহকরা।
জানাগেছে, জেলা শহরসহ আশপাশের ৪৬২ কিলোমিটার অংশে রয়েছে পিডিবির অন্তত ৬০ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক। কিন্তু সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে একাধিক স্থানে রয়েছে অবৈধ সংযোগ। ফলে ঘাটতি পুরনে অতিরিক্ত লোডশেডিং ও মাস শেষে বাড়তি বিল গুনতে হয় সাধারণ গ্রাহকদের।
প্রায় ১৬ বছর আগে ডিজিটাল মিটার স্থাপন শুরু করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। ডিজিটালের নামে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের অভিযোগ বেশ পুরনো। সম্প্রতি দুদকের শুনানিতে উঠে আসে অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিলের একাধিক অভিযোগ। ভাবমূর্তি সঙ্কটে পরে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি সামলাতে তদন্তে নামলে উঠে আসে অবৈধ মিটার সংযোগ দেয়া চক্রের সন্ধান। আর এই চক্রের সাথে অভিযোগকারী ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসায়ী খোকন চন্দ্র দাসেরও সংস্লিষ্টতা রয়েছে বলে প্রমান পেয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। নেত্রকোনা পিডিবর এসিস্টেন্ট ইন্জিনিয়ার আশরাফুল আলম জানান, ডিজিটাল মিটারগুলো উপরে যেই নাম্বার ডিপ্লেতে সেই নাম্বার শো করার কথা। কিন্তু শুনানীতে উত্থাপিত অতিরিক্ত বিলের অভিযোগকারীর মিটারটি অবৈধ।
সরেজমিন তদন্তে দেখা যায়, নেত্রকোনা পৌর শহেরের নাগড়া এলাকার বাসিন্দা খোকন দাসের বাসার ভাড়াটিয়া জীগেন্দ্র সরকার। কয়েক বছরের মধ্যে গত এপ্রিল মাসে বিদ্যুৎ বিল আসে প্রায় তিন লাখ টাকা। এরই প্রেক্ষিতে দুদকে অভিযোগ করেন বাড়ির মালিক খোকন চন্দ্র দাস। কিন্তু তদন্তে পরিলক্ষিত হয় তার মিটারের বাহির ও ডিসপ্লে নাম্বারে রয়েছে ভিন্নতা। এতে প্রাথমিকভাবে মিটারটি টেম্পারিং করে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তবে অভযোগকারী খোকন চন্দ্র দাস জানান, পিডিবির লাইনম্যান রানা ও হৃদয়ের মধ্যস্থতায় এই মিটারটি সংযোগ দিয়েছেন। এটি বৈধ না অবৈধ তা তিনি জানতেন না।
তবে এই চক্রে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি করেছেন মোক্তারপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল ও আনন্দ বাজার এলাকার এ কে এম আব্দুল্লাহ। তারা জানান, জেলার বিভিন্ন স্থানেই ব্যাটারি চালিত অটো রিশকার গ্যারেজ রয়েছে। এর অনেক গুলোতেই অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। ফলে অতিরিক্ত লোডশেডিং ও মাস শেষে ঘাটতি পুরনে বাড়তি বিল গুনতে হয় গ্রাহকদের। এই চক্রে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেন তারা।
এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাহ্ উদ্দীন জানান, অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন চিহ্নিত করতে মাঠে কাজ করছে কতৃপক্ষ। অচিরেই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি জানান, প্রতিমাসে পিডিবিতে বিদ্যুৎ চাহিদা বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ মেগাওয়াট। যার বিক্রয় মূল্য প্রায় আট কোটি টাকা। বিদ্যুৎ চুরি চক্রে সংস্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা হবে।