নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের ডাংগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আছে মাত্র ছয় জন। আর এই ছয় শিক্ষার্থীকে পাঠদানের জন্য প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়োজিত রয়েছেন চারজন শিক্ষক। ছয় শিক্ষার্থী আর চার শিক্ষক দিয়েই চলছে এই বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম।
সরেজমিনে স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে নিয়োজিত চারজন শিক্ষক আর সঙ্গে উপস্থিত আছে মাত্র ছয় শিক্ষার্থী। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিকে, প্রথম শ্রেণিতে আর দ্বিতীয়, চতুর্থ শ্রেণিতে কোনও শিক্ষার্থী নেই। তৃতীয় শ্রেণিতে দুজন ও পঞ্চম শ্রেণীতে চারজন শিক্ষার্থী। বিদ্যালয় ভবনে পরিপাটি শ্রেণিকক্ষে অধিকাংশ শ্রেণিকক্ষ ফাঁকা। গড়ে প্রতিদিন চারজন থেকে ছয়জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৭০ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। কয়েক বছর আগেও অনেক শিক্ষার্থী ছিল। প্রতিষ্ঠানে কাগজে-কলমে শিক্ষার্থী সংখ্যা এখন দেখানো হয়েছে ৮৯ জন। তবে প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে ৬ জন শিক্ষার্থীই ক্লাসে আসে। এখন শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহ নেই। অনেকে ভর্তি হলেও পরে অন্য বিদ্যালয়ে চলে যায়। পাশেই অসংখ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহ ব্রাক ও মাদ্রাসা থাকায় শিক্ষার্থী আসছে না। শুধু তাই নয় বিদ্যালয়টিতে ৬ জন শিক্ষকের পদ থাকলেও রয়েছে ৪ জন।
তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী লিমন ইসলাম বলেন, আমরা ক্লাসে ২/৩ জনের বেশি আসে না। তাই বিদ্যালয়ে আসতে ইচ্ছে করে না। আমাদের খেলার কোনো সহপাঠী নেই ।
পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রেখা বলেন, কিছুদিন আগেও আমাদের বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী ছিলো ইদানিং আমার সহপাঠীরা স্কুলে আসছে না। সহপাঠীদের বেশির ভাগ মাদ্রাসা ও এনজিওর স্কুলে ভর্তি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, পাশেই স্কুলের সামনে একটা মাদ্রাসা আছে আমাদের বিদ্যালয়ের ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী সেখানে ভর্তি হয়েছে। আমরা স্কুলে এসে শিক্ষার্থী না পেলে মন খারাপ হয়ে যায়। তারপরও কম শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস করাতে হয়। আমরা স্কুলে শিক্ষার্থীদের পাঠাতে অভিভাবক সমাবেশ করছি। প্রতিটি অভিভাবকের বাসায় যাচ্ছি তাতেও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না অভিভাবকরা।
স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. নূরুজ্জামান সরকার জানান, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ আমরা চারজন আছি। আগে অনেক শিক্ষার্থী ছিলো, কিন্তু এলাকায় কয়েকটি বেসরকারি বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা থাকায় শিক্ষার্থী কমে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষার্থী বাড়ানোর।
এ বিষয়ে ডাংগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. রুহুল আমিন বলেন, কয়েক বছর আগেও আমাদের বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী ছিলো। কিন্তু বিদ্যালয়ের পাশেই মাদ্রাসা থাকায় শিক্ষার্থীরা সবাই সেখানে চলে গেছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা অভিভাবকদের বুঝিয়েছে যে, প্রাইমারি স্কুলে পড়াশোনা হয় না। আর এ কারণেই অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে দিচ্ছে না। আমরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের বুঝিয়ে চেষ্টা করছি শিক্ষার্থী বাড়ানোর।
বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের ডাংগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আছে মাত্র ছয় জন। আর এই ছয় শিক্ষার্থীকে পাঠদানের জন্য প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়োজিত রয়েছেন চারজন শিক্ষক। ছয় শিক্ষার্থী আর চার শিক্ষক দিয়েই চলছে এই বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম।
সরেজমিনে স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে নিয়োজিত চারজন শিক্ষক আর সঙ্গে উপস্থিত আছে মাত্র ছয় শিক্ষার্থী। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিকে, প্রথম শ্রেণিতে আর দ্বিতীয়, চতুর্থ শ্রেণিতে কোনও শিক্ষার্থী নেই। তৃতীয় শ্রেণিতে দুজন ও পঞ্চম শ্রেণীতে চারজন শিক্ষার্থী। বিদ্যালয় ভবনে পরিপাটি শ্রেণিকক্ষে অধিকাংশ শ্রেণিকক্ষ ফাঁকা। গড়ে প্রতিদিন চারজন থেকে ছয়জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৭০ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। কয়েক বছর আগেও অনেক শিক্ষার্থী ছিল। প্রতিষ্ঠানে কাগজে-কলমে শিক্ষার্থী সংখ্যা এখন দেখানো হয়েছে ৮৯ জন। তবে প্রতিদিন গড়ে ৪ থেকে ৬ জন শিক্ষার্থীই ক্লাসে আসে। এখন শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহ নেই। অনেকে ভর্তি হলেও পরে অন্য বিদ্যালয়ে চলে যায়। পাশেই অসংখ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহ ব্রাক ও মাদ্রাসা থাকায় শিক্ষার্থী আসছে না। শুধু তাই নয় বিদ্যালয়টিতে ৬ জন শিক্ষকের পদ থাকলেও রয়েছে ৪ জন।
তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী লিমন ইসলাম বলেন, আমরা ক্লাসে ২/৩ জনের বেশি আসে না। তাই বিদ্যালয়ে আসতে ইচ্ছে করে না। আমাদের খেলার কোনো সহপাঠী নেই ।
পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রেখা বলেন, কিছুদিন আগেও আমাদের বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী ছিলো ইদানিং আমার সহপাঠীরা স্কুলে আসছে না। সহপাঠীদের বেশির ভাগ মাদ্রাসা ও এনজিওর স্কুলে ভর্তি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, পাশেই স্কুলের সামনে একটা মাদ্রাসা আছে আমাদের বিদ্যালয়ের ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী সেখানে ভর্তি হয়েছে। আমরা স্কুলে এসে শিক্ষার্থী না পেলে মন খারাপ হয়ে যায়। তারপরও কম শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস করাতে হয়। আমরা স্কুলে শিক্ষার্থীদের পাঠাতে অভিভাবক সমাবেশ করছি। প্রতিটি অভিভাবকের বাসায় যাচ্ছি তাতেও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না অভিভাবকরা।
স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. নূরুজ্জামান সরকার জানান, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ আমরা চারজন আছি। আগে অনেক শিক্ষার্থী ছিলো, কিন্তু এলাকায় কয়েকটি বেসরকারি বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা থাকায় শিক্ষার্থী কমে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষার্থী বাড়ানোর।
এ বিষয়ে ডাংগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. রুহুল আমিন বলেন, কয়েক বছর আগেও আমাদের বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী ছিলো। কিন্তু বিদ্যালয়ের পাশেই মাদ্রাসা থাকায় শিক্ষার্থীরা সবাই সেখানে চলে গেছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা অভিভাবকদের বুঝিয়েছে যে, প্রাইমারি স্কুলে পড়াশোনা হয় না। আর এ কারণেই অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে দিচ্ছে না। আমরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের বুঝিয়ে চেষ্টা করছি শিক্ষার্থী বাড়ানোর।