লালপুর (নাটোর) : খেজুর গাছ পরিচর্যা করছেন গাছি -সংবাদ
আসন্ন শীত মৌসুমকে কেন্দ্র করে নাটোরের লালপুর উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা অঞ্চলে খেজুরের মিষ্টি রস সংগ্রহের প্রস্তুতির জন্য ব্যস্ত গাছিরা। গৌরব ও ঐতিহ্যের প্রতীক মধু বৃক্ষ এই খেজুরের গাছ। শীতকাল আসলে বাড়ে অযত্নে ও অবহেলায় বেড়ে ওঠা এই খেজুর গাছের কদর। খেজুরের গাছ অন্য ফসলের ক্ষতি করে না। খেজুরের গাছের জন্য বাড়তি কোনো খরচ করতে হয় না। ঝোপ-জঙ্গলে কোনো প্রকার যত্নে ছাড়াই বড় হয়ে ওঠে এই খেজুর গাছ। শুধুমাত্র শীত মৌসুম আসলে নিয়মিত পরিষ্কার করে রস সংগ্রহ করতে হয়। খেজুরের গাছ মিষ্টি রস দেয়। আর এই রস থেকে তৈরি হয় গুড়। যার ঘ্রানে ম-ম করে পুরো এলাকার বাতাস। গ্রামীণ জীবনে প্রাত্যহিক উৎসব শুরু হয় খেজুরের মিষ্টি রস ও গুড়কে ঘিরে। পুরো শীত মৌসুমে চলে সুস্বাদে ভরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা।
এ ছাড়া পায়েস আর পুলিসহ নানা রকমের খাওয়ার আয়োজন। শীত মৌসুমে রস ও গুড়সহ পিঠা খেতে শহর থেকে বাবা ও মায়ের সঙ্গে দাদা ও নানার বাড়ি বেড়াতে আসেন অনেকেই। শীতের সকালে রৌদ্রে খেজুরের রস আর মুড়ি খাওয়ার আসর বসে বাড়ির আঙিনায়। শীত মৌসুমে গ্রাম অঞ্চলের বাড়িতে বাড়িতে উৎসবমুখর পরিবেশে খেজুরের গুড় দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরির আয়োজন করা হয়। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ১০ ইউনিয়নে ও ১টি পৌরসভা অঞ্চলের সড়কের ও রেল লাইনের দুই পাশে ও জমির আইলসহ বাড়ির আঙিনায় ছড়িয়ে আছে প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার খেজুরের গাছ। এসব গাছ থেকে গুড় সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৫শ’ মেট্রিকটন। একজন গাছি প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৫৫টি খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে থাকেন। শীত মৌসুমে একজন গাছি ১শ’ ৩০ দিনে একটি খেজুর গাছ থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ কেজি গুড় পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া খেজুরের পাতা দিয়ে মাদুর তৈরি করা হয়। খেজুরের পাতা ও ডালসহ গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। উপজেলার চংধুপইঁল ইউনিয়নের পুকন্দা গ্রামের গাছি আশিক বলেন, প্রথমদিকে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০টি খেজুরের গাছ প্রস্তুত করতে পারি। কিন্তু খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য ৫০ থেকে ৬০টি খেজুর গাছ প্রস্তুত করি।
গোপালপুর পৌরসভা এলাকার বিষ্টপুর গ্রামের গাছি মন্টু মিয়া বলেন, প্রতিদিন ৩৫টি খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করি। ১৬ থেকে ২০ কেজি গুড় হয়। শালেশ্বর গ্রামের গাছি সান্টু বলেন, ৩০ থেকে ৪০টি খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করি। আমাদের সংসারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে গুড় বিক্রি করি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, আমরা কৃষকদের খেজুর গাছ লাগানোর জন্য পরমর্শ দিয়ে থাকি। কৃষকদের রস ও গুড়ের চাহিদা মিটাবে। এ ছাড়া খেজুরের রস ও গুড় বিক্রি করে সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা বয়ে আনবে।
লালপুর (নাটোর) : খেজুর গাছ পরিচর্যা করছেন গাছি -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
আসন্ন শীত মৌসুমকে কেন্দ্র করে নাটোরের লালপুর উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা অঞ্চলে খেজুরের মিষ্টি রস সংগ্রহের প্রস্তুতির জন্য ব্যস্ত গাছিরা। গৌরব ও ঐতিহ্যের প্রতীক মধু বৃক্ষ এই খেজুরের গাছ। শীতকাল আসলে বাড়ে অযত্নে ও অবহেলায় বেড়ে ওঠা এই খেজুর গাছের কদর। খেজুরের গাছ অন্য ফসলের ক্ষতি করে না। খেজুরের গাছের জন্য বাড়তি কোনো খরচ করতে হয় না। ঝোপ-জঙ্গলে কোনো প্রকার যত্নে ছাড়াই বড় হয়ে ওঠে এই খেজুর গাছ। শুধুমাত্র শীত মৌসুম আসলে নিয়মিত পরিষ্কার করে রস সংগ্রহ করতে হয়। খেজুরের গাছ মিষ্টি রস দেয়। আর এই রস থেকে তৈরি হয় গুড়। যার ঘ্রানে ম-ম করে পুরো এলাকার বাতাস। গ্রামীণ জীবনে প্রাত্যহিক উৎসব শুরু হয় খেজুরের মিষ্টি রস ও গুড়কে ঘিরে। পুরো শীত মৌসুমে চলে সুস্বাদে ভরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা।
এ ছাড়া পায়েস আর পুলিসহ নানা রকমের খাওয়ার আয়োজন। শীত মৌসুমে রস ও গুড়সহ পিঠা খেতে শহর থেকে বাবা ও মায়ের সঙ্গে দাদা ও নানার বাড়ি বেড়াতে আসেন অনেকেই। শীতের সকালে রৌদ্রে খেজুরের রস আর মুড়ি খাওয়ার আসর বসে বাড়ির আঙিনায়। শীত মৌসুমে গ্রাম অঞ্চলের বাড়িতে বাড়িতে উৎসবমুখর পরিবেশে খেজুরের গুড় দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরির আয়োজন করা হয়। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ১০ ইউনিয়নে ও ১টি পৌরসভা অঞ্চলের সড়কের ও রেল লাইনের দুই পাশে ও জমির আইলসহ বাড়ির আঙিনায় ছড়িয়ে আছে প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার খেজুরের গাছ। এসব গাছ থেকে গুড় সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৫শ’ মেট্রিকটন। একজন গাছি প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৫৫টি খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে থাকেন। শীত মৌসুমে একজন গাছি ১শ’ ৩০ দিনে একটি খেজুর গাছ থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ কেজি গুড় পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া খেজুরের পাতা দিয়ে মাদুর তৈরি করা হয়। খেজুরের পাতা ও ডালসহ গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। উপজেলার চংধুপইঁল ইউনিয়নের পুকন্দা গ্রামের গাছি আশিক বলেন, প্রথমদিকে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০টি খেজুরের গাছ প্রস্তুত করতে পারি। কিন্তু খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য ৫০ থেকে ৬০টি খেজুর গাছ প্রস্তুত করি।
গোপালপুর পৌরসভা এলাকার বিষ্টপুর গ্রামের গাছি মন্টু মিয়া বলেন, প্রতিদিন ৩৫টি খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করি। ১৬ থেকে ২০ কেজি গুড় হয়। শালেশ্বর গ্রামের গাছি সান্টু বলেন, ৩০ থেকে ৪০টি খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করি। আমাদের সংসারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে গুড় বিক্রি করি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, আমরা কৃষকদের খেজুর গাছ লাগানোর জন্য পরমর্শ দিয়ে থাকি। কৃষকদের রস ও গুড়ের চাহিদা মিটাবে। এ ছাড়া খেজুরের রস ও গুড় বিক্রি করে সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা বয়ে আনবে।