ভালুকা (ময়মনসিংহ) : পতিত জমিতে কলা চাষ -সংবাদ
ফেলে রাখা পতিত চালা জমি বর্গা নিয়ে বানিজ্যিক ভাবে কলার আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন ভালুকার বিভিন্ন গ্রামের কলা চাষীরা। শুধু কলা বিক্রিই নয় কলার চারা বিক্রি করে অধিক মুনাফা পাচ্ছেন অনেকে।
উপজেলার মল্লিকবাড়ী, উথুরা, ডাকাতিয়া, হবিরবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অনেক চাষী বিভিন্ন জাতের কলার আবাদ করে ব্যাপক সয়লতা পেয়েছেন। এসব গ্রামের বিভিন্ন চালায় মাটির আইলে সাড়ি সাড়ি সবুজ পাতার গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে কাদি ধরা কলার ছড়ি। গতকাল বুধবার উথুরা ইউনিয়নের ধলিকুড়ি গ্রামে গিয়ে দেখাযায় বাগান থেকে কলার ছড়ি কেটে এনে জরো করছেন ঢাকায় নিয়ে বিক্রির জন্য। এ সময় কথা হয় কলা চাষী কিবরিয়ার সাথে। তিনি জানান বেশ কয়েক বছর যাবৎ তিনি কলা চাষ করে মোটামোটি ভাবে সফল হয়েছেন।
এ বছর তিনি এক একর জমিতে কলার আবাদ করেছেন। জমি ভাড়া, ক্ষেত তৈরী, চারা রোপন, সার, সেচ ও শ্রমিক খরচ বাবদ প্রায় ৩ লাখ টাকার মত সর্বমোট খরচ হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রোগ বালাই না হলে খরচ বাদ দিয়ে বাজার ভাল হলে এক একর জমি হতে এ বছর ৫ থেকে সারে ৫ লাখ টাকার কলা বিক্রি করতে পারবেন। শুধু কলা নয় চারা বিক্রি করেও তারা প্রচুর টাকা আয়করে থাকেন।
চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সবরি, চাপা ও অমৃত সাগর ও জি-নাইন জাতের কলার আবাদ হয়েছে। স্থানীয় বাজারে বর্তমানে একটি ছড়ি ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা ঢাকার তেজগাঁও আরদে ৪০০ টাকা হতে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। তিনি জানান ছড়ি হতে কলা কাদি কেটে প্রক্রিয়াজাত করে ট্রাক ভরে ঢাকার তেজগাঁও আরদে নিয়ে পোন হিসাবে বিক্রি করেন। প্রতি পোন অর্থাৎ ২০ হালি কলা বিক্রি হয় ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। এতে তাদের মুনাফা বেশী আসে।
তিনি জানান প্রতি বছর কলা উঠানো শেষ হলে পৌষ মাসে ক্ষেত তৈরী করে মাঘ মাসে চারা রোপন করে থাকেন। সেচের জন্য নিজস্ব অর্থায়নে চালায় সাবমার্সিবল নলকূপ বসিয়েছেন। ঠিকমত সেচ, সার, কীটনাশক ও পরিচর্যার জন্য শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে। চারা রোপনের ১০ মাস হতে এক বছরের মাথায় কলা বিক্রিয় যোগ্য হয়ে যায়। তিনি ব্যাতিত ওই গ্রাম ও আশাশের গ্রামে আরও শতাধিক চাষী বানিজ্যিক ভাবে কলা আবাদ করে অর্থনৈতিক সাচ্ছন্দ এনেছেন প্রত্যেকের জীবনে।
চাষীরা জানান সরকারী সাহায্য ও কৃষি বিভাগের আধুনিক প্রযুক্তিগত সহযোগিতা পেলে অর্থকরী ফসল হিসাবে কলাচাষ ব্যাক্তির লাভের পাশাপাশি জাতীয় ভাবে কৃষি উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এ সময় উপযোগি হওয়ায় চারিদিকে চাষীরা ছড়ি কেটে বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভালুকার বিভিন্ন গ্রাম হতে প্রতিদিন ট্রাক ভরে চাষীরা কলা নিয়ে ঢাকার কারওয়ান বাজার সহ বিভিন্ন আরদে বিক্রি করছেন। আবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ফরিয়ারা এসে কৃষকের বাগান থেকে সরাসরি কলার ছড়ি কিনে নিয়ে যাচ্ছে। কলা থেকে চিপস,জ্যাম ও জেলি তৈরী করে স্থায়ীভাবে প্রসেসড পন্য উৎপাদনের মাধ্যমে উদ্যোক্তাগণ নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তৈরী করতে পারবেন।
অধিকাংশ চাষীদের দাবী কৃষি বিভাগ যদি সহজ শর্তে প্রান্তিক চাষীদের ঋণ সহায়তা প্রদান করে তাহলে তারা দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশের বাজারে কলা রপ্তানী করতে সক্ষম হবেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত জামান জানান, চলতি মৌসুমে ভালুকায় ৩২০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের কলার আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। এটি একটি লাভ জনক কৃষি ফসল। সরকারী প্রনোদনা পেলে অনেক চাষী কলা চাষে আগ্রহী হবেন।
ভালুকা (ময়মনসিংহ) : পতিত জমিতে কলা চাষ -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
ফেলে রাখা পতিত চালা জমি বর্গা নিয়ে বানিজ্যিক ভাবে কলার আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন ভালুকার বিভিন্ন গ্রামের কলা চাষীরা। শুধু কলা বিক্রিই নয় কলার চারা বিক্রি করে অধিক মুনাফা পাচ্ছেন অনেকে।
উপজেলার মল্লিকবাড়ী, উথুরা, ডাকাতিয়া, হবিরবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অনেক চাষী বিভিন্ন জাতের কলার আবাদ করে ব্যাপক সয়লতা পেয়েছেন। এসব গ্রামের বিভিন্ন চালায় মাটির আইলে সাড়ি সাড়ি সবুজ পাতার গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে কাদি ধরা কলার ছড়ি। গতকাল বুধবার উথুরা ইউনিয়নের ধলিকুড়ি গ্রামে গিয়ে দেখাযায় বাগান থেকে কলার ছড়ি কেটে এনে জরো করছেন ঢাকায় নিয়ে বিক্রির জন্য। এ সময় কথা হয় কলা চাষী কিবরিয়ার সাথে। তিনি জানান বেশ কয়েক বছর যাবৎ তিনি কলা চাষ করে মোটামোটি ভাবে সফল হয়েছেন।
এ বছর তিনি এক একর জমিতে কলার আবাদ করেছেন। জমি ভাড়া, ক্ষেত তৈরী, চারা রোপন, সার, সেচ ও শ্রমিক খরচ বাবদ প্রায় ৩ লাখ টাকার মত সর্বমোট খরচ হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রোগ বালাই না হলে খরচ বাদ দিয়ে বাজার ভাল হলে এক একর জমি হতে এ বছর ৫ থেকে সারে ৫ লাখ টাকার কলা বিক্রি করতে পারবেন। শুধু কলা নয় চারা বিক্রি করেও তারা প্রচুর টাকা আয়করে থাকেন।
চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সবরি, চাপা ও অমৃত সাগর ও জি-নাইন জাতের কলার আবাদ হয়েছে। স্থানীয় বাজারে বর্তমানে একটি ছড়ি ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা ঢাকার তেজগাঁও আরদে ৪০০ টাকা হতে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। তিনি জানান ছড়ি হতে কলা কাদি কেটে প্রক্রিয়াজাত করে ট্রাক ভরে ঢাকার তেজগাঁও আরদে নিয়ে পোন হিসাবে বিক্রি করেন। প্রতি পোন অর্থাৎ ২০ হালি কলা বিক্রি হয় ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। এতে তাদের মুনাফা বেশী আসে।
তিনি জানান প্রতি বছর কলা উঠানো শেষ হলে পৌষ মাসে ক্ষেত তৈরী করে মাঘ মাসে চারা রোপন করে থাকেন। সেচের জন্য নিজস্ব অর্থায়নে চালায় সাবমার্সিবল নলকূপ বসিয়েছেন। ঠিকমত সেচ, সার, কীটনাশক ও পরিচর্যার জন্য শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে। চারা রোপনের ১০ মাস হতে এক বছরের মাথায় কলা বিক্রিয় যোগ্য হয়ে যায়। তিনি ব্যাতিত ওই গ্রাম ও আশাশের গ্রামে আরও শতাধিক চাষী বানিজ্যিক ভাবে কলা আবাদ করে অর্থনৈতিক সাচ্ছন্দ এনেছেন প্রত্যেকের জীবনে।
চাষীরা জানান সরকারী সাহায্য ও কৃষি বিভাগের আধুনিক প্রযুক্তিগত সহযোগিতা পেলে অর্থকরী ফসল হিসাবে কলাচাষ ব্যাক্তির লাভের পাশাপাশি জাতীয় ভাবে কৃষি উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এ সময় উপযোগি হওয়ায় চারিদিকে চাষীরা ছড়ি কেটে বাজারজাত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভালুকার বিভিন্ন গ্রাম হতে প্রতিদিন ট্রাক ভরে চাষীরা কলা নিয়ে ঢাকার কারওয়ান বাজার সহ বিভিন্ন আরদে বিক্রি করছেন। আবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ফরিয়ারা এসে কৃষকের বাগান থেকে সরাসরি কলার ছড়ি কিনে নিয়ে যাচ্ছে। কলা থেকে চিপস,জ্যাম ও জেলি তৈরী করে স্থায়ীভাবে প্রসেসড পন্য উৎপাদনের মাধ্যমে উদ্যোক্তাগণ নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনা তৈরী করতে পারবেন।
অধিকাংশ চাষীদের দাবী কৃষি বিভাগ যদি সহজ শর্তে প্রান্তিক চাষীদের ঋণ সহায়তা প্রদান করে তাহলে তারা দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশের বাজারে কলা রপ্তানী করতে সক্ষম হবেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত জামান জানান, চলতি মৌসুমে ভালুকায় ৩২০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের কলার আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। এটি একটি লাভ জনক কৃষি ফসল। সরকারী প্রনোদনা পেলে অনেক চাষী কলা চাষে আগ্রহী হবেন।