alt

শেরপুরে মিনি রাতারগুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধতা খুঁজছেন শত শত পর্যটক

প্রতিনিধি, শেরপুর (বগুড়া) : শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

কার্তিকের মিষ্টি রোদ আর নদীর যৌবনে জীবন্ত হয়ে উঠেছে শেরপুর উপজেলার ভাদাই ও ভদ্রাবতী নদী। নদীর দুই তীরে ছড়ানো ছিটানো গাছের সারি, বুনো লতা-গুল্ম আর সরু খালের মতো প্রবাহমান নদীটির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে ছুটে আসছেন আশেপাশের নানা এলাকার শত শত পর্যটক। অনেকেই একে সিলেটের বিখ্যাত রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টের সাথে তুলনা করে ডাকছেন মিনি রাতারগুল নামে।

শেরপুর উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে নন্দিগ্রাম উপজেলার সীমানা ঘেঁষা মুরাদপুর বাজার সংলগ্ন এই নদীটি শীতকালে শুকিয়ে গেলেও বর্ষা ও শরতে ফিরে পায় নতুন প্রাণ। স্থানীয়রা জানান, কয়েক বছর আগেও নদীর এমন রূপ ছিল না। প্রাকৃতিক পরিবর্তন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিপোস্টের মাধ্যমে এটি এখন একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় গবেষক মো. আজিজুল হক (মাষ্টার) জানান, ভাদাই নদী বগুড়া সদরের শাবরুল গ্রামের একটি ঐতিহাসিক দীঘি থেকে উৎপত্তি হয়ে বগুড়া সদর, শাজাহানপুর, শেরপুর, নন্দিগ্রাম, নাটোরের সিংড়া এবং সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা হয়ে চলনবিলে গিয়ে মিশেছে। এই নদীটি শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই নয়, বরং এর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বের জন্যও উল্লেখযোগ্য। ভাদাই ও ভদ্রাবতী নদীর নামকরণের পেছনে রয়েছে একটি জনপ্রিয় উপকথা।

স্থানীয় জনশ্রুতি অনুসারে, ভাদাই (ভাই) ও বন্দানি (বোন) নামে দুই ভাই-বোনের গল্পের সঙ্গে নদীর নাম জড়িত। একদিন বন্দানি তার প্রিয় সোনার থালা ধৌত করতে গিয়ে দীঘিতে ফেলে দেন। ভাই ভাদাই প্রতিজ্ঞা করেন যে, তিনি থালা উদ্ধার না করা পর্যন্ত ফিরবেন না। কিন্তু তিনি আর ফিরে আসেননি। এই গল্প থেকেই নদীর নাম ভাদাই হয়েছে বলে মনে করা হয়। অন্যদিকে, ভদ্রাবতী নদীর নামকরণ কমলাপুর রাজ্যের রাজকন্যা ভদ্রাবতীর স্মৃতির সঙ্গে জড়িত। সুলতান কামাল খাঁর নেতৃত্বে রাজা অচ্যুত সেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভদ্রাবতীর স্বামী নিহত হন। রাজকন্যার স্ম্রতি অম্লান রাখতে এই নদীর নাম ভদ্রাবতী রাখা হয়। এই ঐতিহাসিক গল্প পর্যটকদের কাছে নদীটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। বেড়াতে আসা সোহেল রানা জানান, বন্ধুদের সাথে মিলে মুরাদপুরে মিনি রাতারগুল দেখতে এসেছি। নদীর স্বচ্ছ পানি, দু’ধারে গাছপালার সারি আর নৌকা ভ্রমণ সব মিলিয়ে এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা। রিমা খাতুন, বলেন, ইউটিউব দেখে ঘুরতে দেখতে এসেছি । নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাকে খুব টানে। যদি সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে এর আরো উন্নয়ন হয়, তবে এটা বড় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা মনে করেন,অল্প একটু পরিচর্যা আর কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন যেমন ঘাট তৈরি, সাইনবোর্ড, সৌন্দর্যবর্ধন করলে এখানে ভ্রমণকারীদের সংখ্যা আরও বাড়বে। এতে স্থানীয় অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে। তবে, নদীর প্রবাহ বজায় রাখতে এবং পরিবেশ সংরক্ষণে স্থানীয়দের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগও প্রয়োজন বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন।

ছবি

ভোলায় উচ্ছেদ অভিযানে সংঘর্ষ: তিনটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, আহত ১৫

ছবি

দামুড়হুদায় শীতের আগমনে লেপ তৈরীর কারিগরদের ব্যস্ততা

ছবি

তিন ছেলে থাকা সত্ত্বেও বৃদ্ধা মায়ের ঠাঁই হলো গোয়ালঘরে

ছবি

মহেশপুর ভৈরবা বাজারে ঐতিহ্যবাহী ‘ঝাঁপান খেলা’ অনুষ্ঠিত

ছবি

নগেশ্বরীতে বউ-শাশুড়ী মেলা

ছবি

সুবর্ণচরে পাচারকালে ৩০০ বস্তা ইউরিয়া সার জব্দ

ছবি

টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশের সহায়তায় হাফিজ ফিরে পেল একমাত্র জীবিকার অবলম্বন

ছবি

বিএনপিতে ফিরলেন গঙ্গাচড়ার সাবেক চেয়ারম্যান সুজন

ছবি

শহীদ ময়েজউদ্দিন সেতুতে বিনা রশিদে টোল আদায়

ছবি

দশমিনায় দেশি প্রজাতির মাছের উৎপাদন কম

ছবি

ইবিতে লোডশেডিং হলেই বন্ধ হয় মোবাইল নেটওয়ার্ক-ইন্টারনেট

ছবি

স্বাস্থ্যসেবায় রংপুর বিভাগে দ্বিতীয় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

ছবি

অর্থাভাবে চিকিৎসা বন্ধ, যুবক আলমগীরের ‘জীবন এখন শিকলবন্দি’

ছবি

ডিমলার ধুম নদীর বিধ্বস্ত ব্রিজ যেন মরণ ফাঁদ

ছবি

সিরাজগঞ্জের কৃষকরা এখন শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত

ছবি

নোয়াখালীতে ইয়াবাসহ বাসের সুপারভাইজার গ্রেপ্তার

ছবি

চৌগাছায় ট্রলির সাথে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দুই কিশোর নিহত

ছবি

বোয়ালমারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত, আহত ৫

মোহনগঞ্জে যাত্রাপথে আনন্দ গান মেঠোসুর পরিষদের কর্মশালা

ছবি

বেগমগঞ্জে গাঁজাসহ মাদক কারবারী গ্রেপ্তার

ছবি

যশোরে ফেনসিডিলের মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন

ছবি

গরু চুরির সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ১,আহত ৩

ছবি

যশোরের রং ও কেমিক্যাল দিয়ে আইসক্রিম তৈরি, জরিমানা

ছবি

নড়াইলে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি

ছবি

উলিপুরে বিরোধের জেরে অবরুদ্ধ এক পরিবার

ছবি

নালিতাবাড়ীতে পানির বোরিংয়ে মিলল গ্যাস, চাঞ্চল্যে স্থানীয়রা

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিক্ষোভ

ছবি

জয়পুরহাটে দুই বছরেও চালু হয়নি ম্যাটস ভবন

ছবি

মহেশপুর সীমান্তে বিজিবির অভিযানে আটক ১১

ছবি

৫ ইউনিয়নে নদী ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ

ছবি

কচুয়া পাথৈর উবিতে ভবনের অভাবে পাঠদান ব্যাহত

ছবি

জীবননগরে শীতকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা

ছবি

ফরিদপুরে ট্রাক-ভ্যান মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৫

ছবি

বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে বদলে যাবে চরফ্যাসনের ভাগ্য

ছবি

নন্দীগ্রামে সওজের জায়গা দখল করে দোকানপাট নির্মাণ, জনদুর্ভোগ চরমে

ছবি

কাঠালিয়ায় দুইশ বছরের পুরোনো মেলা

tab

শেরপুরে মিনি রাতারগুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধতা খুঁজছেন শত শত পর্যটক

প্রতিনিধি, শেরপুর (বগুড়া)

শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

কার্তিকের মিষ্টি রোদ আর নদীর যৌবনে জীবন্ত হয়ে উঠেছে শেরপুর উপজেলার ভাদাই ও ভদ্রাবতী নদী। নদীর দুই তীরে ছড়ানো ছিটানো গাছের সারি, বুনো লতা-গুল্ম আর সরু খালের মতো প্রবাহমান নদীটির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে ছুটে আসছেন আশেপাশের নানা এলাকার শত শত পর্যটক। অনেকেই একে সিলেটের বিখ্যাত রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টের সাথে তুলনা করে ডাকছেন মিনি রাতারগুল নামে।

শেরপুর উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে নন্দিগ্রাম উপজেলার সীমানা ঘেঁষা মুরাদপুর বাজার সংলগ্ন এই নদীটি শীতকালে শুকিয়ে গেলেও বর্ষা ও শরতে ফিরে পায় নতুন প্রাণ। স্থানীয়রা জানান, কয়েক বছর আগেও নদীর এমন রূপ ছিল না। প্রাকৃতিক পরিবর্তন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিপোস্টের মাধ্যমে এটি এখন একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় গবেষক মো. আজিজুল হক (মাষ্টার) জানান, ভাদাই নদী বগুড়া সদরের শাবরুল গ্রামের একটি ঐতিহাসিক দীঘি থেকে উৎপত্তি হয়ে বগুড়া সদর, শাজাহানপুর, শেরপুর, নন্দিগ্রাম, নাটোরের সিংড়া এবং সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা হয়ে চলনবিলে গিয়ে মিশেছে। এই নদীটি শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই নয়, বরং এর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বের জন্যও উল্লেখযোগ্য। ভাদাই ও ভদ্রাবতী নদীর নামকরণের পেছনে রয়েছে একটি জনপ্রিয় উপকথা।

স্থানীয় জনশ্রুতি অনুসারে, ভাদাই (ভাই) ও বন্দানি (বোন) নামে দুই ভাই-বোনের গল্পের সঙ্গে নদীর নাম জড়িত। একদিন বন্দানি তার প্রিয় সোনার থালা ধৌত করতে গিয়ে দীঘিতে ফেলে দেন। ভাই ভাদাই প্রতিজ্ঞা করেন যে, তিনি থালা উদ্ধার না করা পর্যন্ত ফিরবেন না। কিন্তু তিনি আর ফিরে আসেননি। এই গল্প থেকেই নদীর নাম ভাদাই হয়েছে বলে মনে করা হয়। অন্যদিকে, ভদ্রাবতী নদীর নামকরণ কমলাপুর রাজ্যের রাজকন্যা ভদ্রাবতীর স্মৃতির সঙ্গে জড়িত। সুলতান কামাল খাঁর নেতৃত্বে রাজা অচ্যুত সেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভদ্রাবতীর স্বামী নিহত হন। রাজকন্যার স্ম্রতি অম্লান রাখতে এই নদীর নাম ভদ্রাবতী রাখা হয়। এই ঐতিহাসিক গল্প পর্যটকদের কাছে নদীটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। বেড়াতে আসা সোহেল রানা জানান, বন্ধুদের সাথে মিলে মুরাদপুরে মিনি রাতারগুল দেখতে এসেছি। নদীর স্বচ্ছ পানি, দু’ধারে গাছপালার সারি আর নৌকা ভ্রমণ সব মিলিয়ে এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা। রিমা খাতুন, বলেন, ইউটিউব দেখে ঘুরতে দেখতে এসেছি । নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাকে খুব টানে। যদি সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে এর আরো উন্নয়ন হয়, তবে এটা বড় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা মনে করেন,অল্প একটু পরিচর্যা আর কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন যেমন ঘাট তৈরি, সাইনবোর্ড, সৌন্দর্যবর্ধন করলে এখানে ভ্রমণকারীদের সংখ্যা আরও বাড়বে। এতে স্থানীয় অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে। তবে, নদীর প্রবাহ বজায় রাখতে এবং পরিবেশ সংরক্ষণে স্থানীয়দের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগও প্রয়োজন বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন।

back to top