মওলানা ভাসানী সেতুর নিচে গো-চারণ ভূমি -সংবাদ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত মাওলানা ভাসানী সেতুর তলদেশ গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। এলজিইডি ৯২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪৯০ মিটার সেতু নির্মাণ করলেও তিস্তা নদী খনন, ড্রেজিং ও শাসন না করায় বর্তমানে সেতুর তলদেশ গো-চারণ ভূমিতে রূপ নিয়েছে। বর্তমানে সেতুর নিচে মাত্র ২০ মিটার এলাকায় পানি রয়েছে। তাও আবার হেঁটে পার হওয়া যায়। গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামবাসীর যোগোযোগে অভূতপূর্ব পরিবর্তন হলেও নৌ-পথের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এলাকাবাসীর দাবি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে মাওলানা ভাসানী সেতু এলাকায় নৌ-পথে বৃহৎ
বাণিজ্যিক জোনে পরিণত হবে।
হরিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. নাফিউল ইসলাম জিমি বলেন, মাওলানা ভাসানী সেতু নির্মিত হওয়ায় গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় স্মরণকালের পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু চরবাসীর ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাদের দুঃখ এবং ভাগ্যের পরিবর্তন তখনই হবে, যখন, তিস্তা নদী খনন, ড্রেজিং, শাসন ও সংস্কার হবে। চরবাসী তখন তাদের বাপ-দাদার ভিটে মাটিতে আবাদ করতে পারবে এবং নৌ-পথে ব্যবসা করতে পারবে। যোগাযোগের জন্য সেতুটি দুই জেলার মধ্যে মাইল ফলক হয়ে থাকবে। তবে এলাকার উন্নয়ন বা চরবাসীর উন্নয়নের জন্য তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি মাত্র।
স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এসএএস এর নিবার্হী পরিচালক এ. বি. এম নুরুল আকতার মজনু, মাওলানা ভাসানী সেতু এলাকায় নদী খনন এবং ড্রেজিং করা জরুরি হয়ে পড়েছে। নদী খনন ও ড্রেজিং না করলে এ ভাসানী সেতু নৌ-পথের কোনো কাজে আসবে না। উজানের ঢলে পলি জমে প্রতিবছর যে হারে নদী ভরে উঠছে তাতে করে আগামী ১০ বছরের মধ্যে ভরা তিস্তা মরায় পরিণত হবে। বর্তমানে মূল নদীর ২০ মিটার বাদে ভাসানী সেতুর তলদেশসহ গোটা চর এলাকা গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। সেই সঙ্গে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে চরবাসীর দুঃখ অনেকটা লাঘব হবে।
গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোজহারুল ইসলাম বলেন, তিস্তা মহাপরিল্পনা বাস্তবায়ন হলে মাওলানা ভাসানী সেতু এলাকায় নৌ-বাণিজ্যিক এলাকায় পরিণত হবে।
মাওলানা ভাসানী সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলনের নেতা প্রবীণ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আ.ব.ম. শরিওতুল্লাহ মাষ্টার বলেন, ২০০০ সাল থেকে তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলন শুরু করা হয়। ২০১২ সালে এসে তিস্তা সেতু নির্মাণ আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। এরপর সাবেক প্রধান প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম প্রামানিকের সার্বিক সহযোগিতায় ২০১৪ সালে সেতু নির্মাণ কাজের সূচনা হয়। ২০২৫ সালের ২০ আগস্ট সেতুটি খুলে দেয়া হয়। এটি শুধু সেতু নয়, এটি একটি বিনোদন কেন্দ্র এবং ব্যবসায়িক জোন। শুধু সেতুর জন্য আন্দোলন করিনি। তিস্তার রূপ ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করেছি।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীরবাজার- কুড়িগ্রামের চিলমারি উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর ওপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করছেন চায়না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সেতুটির প্রস্থ ৯.৮ মিটার। এতে স্প্যান রয়েছে ৩১টি এবং পিলার রয়েছে ৩২টি। সেতুটি নির্মাণে অর্থ প্রদান করছেন সৌদি ডেভেলপমেন্ট ফান্ড। এতে ব্যয় হবে ৯২৫ কোটি টাকা।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মওলানা ভাসানী সেতুর নিচে গো-চারণ ভূমি -সংবাদ
শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত মাওলানা ভাসানী সেতুর তলদেশ গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। এলজিইডি ৯২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪৯০ মিটার সেতু নির্মাণ করলেও তিস্তা নদী খনন, ড্রেজিং ও শাসন না করায় বর্তমানে সেতুর তলদেশ গো-চারণ ভূমিতে রূপ নিয়েছে। বর্তমানে সেতুর নিচে মাত্র ২০ মিটার এলাকায় পানি রয়েছে। তাও আবার হেঁটে পার হওয়া যায়। গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামবাসীর যোগোযোগে অভূতপূর্ব পরিবর্তন হলেও নৌ-পথের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এলাকাবাসীর দাবি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে মাওলানা ভাসানী সেতু এলাকায় নৌ-পথে বৃহৎ
বাণিজ্যিক জোনে পরিণত হবে।
হরিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. নাফিউল ইসলাম জিমি বলেন, মাওলানা ভাসানী সেতু নির্মিত হওয়ায় গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় স্মরণকালের পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু চরবাসীর ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাদের দুঃখ এবং ভাগ্যের পরিবর্তন তখনই হবে, যখন, তিস্তা নদী খনন, ড্রেজিং, শাসন ও সংস্কার হবে। চরবাসী তখন তাদের বাপ-দাদার ভিটে মাটিতে আবাদ করতে পারবে এবং নৌ-পথে ব্যবসা করতে পারবে। যোগাযোগের জন্য সেতুটি দুই জেলার মধ্যে মাইল ফলক হয়ে থাকবে। তবে এলাকার উন্নয়ন বা চরবাসীর উন্নয়নের জন্য তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি মাত্র।
স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এসএএস এর নিবার্হী পরিচালক এ. বি. এম নুরুল আকতার মজনু, মাওলানা ভাসানী সেতু এলাকায় নদী খনন এবং ড্রেজিং করা জরুরি হয়ে পড়েছে। নদী খনন ও ড্রেজিং না করলে এ ভাসানী সেতু নৌ-পথের কোনো কাজে আসবে না। উজানের ঢলে পলি জমে প্রতিবছর যে হারে নদী ভরে উঠছে তাতে করে আগামী ১০ বছরের মধ্যে ভরা তিস্তা মরায় পরিণত হবে। বর্তমানে মূল নদীর ২০ মিটার বাদে ভাসানী সেতুর তলদেশসহ গোটা চর এলাকা গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। সেই সঙ্গে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে চরবাসীর দুঃখ অনেকটা লাঘব হবে।
গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোজহারুল ইসলাম বলেন, তিস্তা মহাপরিল্পনা বাস্তবায়ন হলে মাওলানা ভাসানী সেতু এলাকায় নৌ-বাণিজ্যিক এলাকায় পরিণত হবে।
মাওলানা ভাসানী সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলনের নেতা প্রবীণ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আ.ব.ম. শরিওতুল্লাহ মাষ্টার বলেন, ২০০০ সাল থেকে তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলন শুরু করা হয়। ২০১২ সালে এসে তিস্তা সেতু নির্মাণ আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। এরপর সাবেক প্রধান প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম প্রামানিকের সার্বিক সহযোগিতায় ২০১৪ সালে সেতু নির্মাণ কাজের সূচনা হয়। ২০২৫ সালের ২০ আগস্ট সেতুটি খুলে দেয়া হয়। এটি শুধু সেতু নয়, এটি একটি বিনোদন কেন্দ্র এবং ব্যবসায়িক জোন। শুধু সেতুর জন্য আন্দোলন করিনি। তিস্তার রূপ ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করেছি।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীরবাজার- কুড়িগ্রামের চিলমারি উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর ওপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করছেন চায়না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সেতুটির প্রস্থ ৯.৮ মিটার। এতে স্প্যান রয়েছে ৩১টি এবং পিলার রয়েছে ৩২টি। সেতুটি নির্মাণে অর্থ প্রদান করছেন সৌদি ডেভেলপমেন্ট ফান্ড। এতে ব্যয় হবে ৯২৫ কোটি টাকা।