ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মায়ের লাশ দেখতে না দেয়ায় গোষ্ঠি নিয়ে বিরোধে জড়িয়েছে ৬ ছেলে। এ ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন। আহত-৩০।
গতকাল শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত মো. নাসির উদ্দিন (৬৫) বিরামপুর গ্রামের মৃত মইজ উদ্দিনের ছেলে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার বিরামপুর গ্রামের মৃত হাসেম মিয়ার স্ত্রী মোসাম্মৎ বেগম (৯৫) মারা যান। তার ছয় ছেলের মধ্যে নোয়াব মিয়া, আব্দুল হক মিয়া, ফজল হক মিয়া ও শহীদুল হক মিয়া অনেক আগেই বাড়ি ছেড়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের গোষ্ঠীতে চলে যান। বাকি দুই ছেলে জহিরুল হক ও নূরুল হকের সঙ্গে থাকতেন তাদের মা বেগম। তারা একই গ্রামের ইকবাল হোসেন, বর্তমান ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান ও ব্যবসায়ী সাচ্চু মিয়ার পক্ষের অনুসারী।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান হারুন আর রশিদের পক্ষের সঙ্গে একই গ্রামের ইকবাল হোসেন, বর্তমান ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান ও ব্যবসায়ী সাচ্চু মিয়ার পক্ষের লোকজনের পূর্ব থেকে বিরোধ চলে আসছিল। গত রমজান মাসে লুডু খেলা নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একাধিকবার সালিশে বসে বিষয়টি মিমাংসা হয়। সেসময় হারুন অর রশিদের পক্ষের লোকজনকে কয়েক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এদিকে গতকাল শুক্রবার বিকেলে বিরামপুর গ্রামের এক বৃদ্ধা মোসাম্মৎ বেগম মারা গেলে হারুনুর রশিদের পক্ষে থাকা বৃদ্ধার ৪ ছেলেকে মায়ের মরদেহ না দেখার এবং দাফনে অংশগ্রহণের সুযোগ না দিয়ে সাচ্চু মিয়ার পক্ষের অনুসারী অন্য দুই ছেলে জহিরুল ও নূরুল গতকাল শুক্রবার রাতেই জানাযা শেষে গ্রামের কবরস্থানে মায়ের লাশ দাফন করেন। এতে বৃদ্ধার অন্য চার ছেলে ও হারুন অর রশিদের পক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। এই নিয়ে গতকাল শুক্রবার রাত থেকে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
লুডু খেলা নিয়ে পূর্ব বিরোধ এবং লাশ না দেখিয়ে দাফন করার ঘটনায় গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে উভয়পক্ষের লোকজন বল্লম, টেটা, ছুরি, দাসহ দেশীয় অস্ত্র শাস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উভয়পক্ষের লোকজনের অনেকে হেলমেট, গায়ে লাইফ জ্যাকেট ও পায়ে ক্রিকেট প্যাড পরে সংঘর্ষে যুক্ত হন। সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে ককটেল বিস্ফোরণসহ উভয়পক্ষের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাট লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সংঘর্ষে সাচ্চু, ইকবাল ও আনিছুরের পক্ষে নাসির উদ্দিন নিহত হন এবং উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। খবর পেয়ে সদর থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বেলা ১১টা পর্যন্ত উভয়পক্ষের সংঘর্ষ চলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম জানান, গোষ্ঠিগত বিরোধ নিয়ে পূর্ব থেকেই সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ ও গ্রামের ব্যবসায়ী সাচ্চুর মিয়ার পক্ষে লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
গতকাল শুক্রবার গ্রামের এক বৃদ্ধা মারা যান। তার ছয় ছেলের মধ্যে চারজন সাবেক চেয়ারম্যান হারুন ও দুইজন সাচ্চুর পক্ষের অনুসারী। শনিবার,(২৫ অক্টোবর ২০২৫) চার ভাইকে না দেখে মায়ের লাশ দাফন করে বাকি দুই ভাই। এসব নিয়েই সংঘর্ষে হয়।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মায়ের লাশ দেখতে না দেয়ায় গোষ্ঠি নিয়ে বিরোধে জড়িয়েছে ৬ ছেলে। এ ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন। আহত-৩০।
গতকাল শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত মো. নাসির উদ্দিন (৬৫) বিরামপুর গ্রামের মৃত মইজ উদ্দিনের ছেলে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার বিরামপুর গ্রামের মৃত হাসেম মিয়ার স্ত্রী মোসাম্মৎ বেগম (৯৫) মারা যান। তার ছয় ছেলের মধ্যে নোয়াব মিয়া, আব্দুল হক মিয়া, ফজল হক মিয়া ও শহীদুল হক মিয়া অনেক আগেই বাড়ি ছেড়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের গোষ্ঠীতে চলে যান। বাকি দুই ছেলে জহিরুল হক ও নূরুল হকের সঙ্গে থাকতেন তাদের মা বেগম। তারা একই গ্রামের ইকবাল হোসেন, বর্তমান ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান ও ব্যবসায়ী সাচ্চু মিয়ার পক্ষের অনুসারী।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সাবেক চেয়ারম্যান হারুন আর রশিদের পক্ষের সঙ্গে একই গ্রামের ইকবাল হোসেন, বর্তমান ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান ও ব্যবসায়ী সাচ্চু মিয়ার পক্ষের লোকজনের পূর্ব থেকে বিরোধ চলে আসছিল। গত রমজান মাসে লুডু খেলা নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একাধিকবার সালিশে বসে বিষয়টি মিমাংসা হয়। সেসময় হারুন অর রশিদের পক্ষের লোকজনকে কয়েক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এদিকে গতকাল শুক্রবার বিকেলে বিরামপুর গ্রামের এক বৃদ্ধা মোসাম্মৎ বেগম মারা গেলে হারুনুর রশিদের পক্ষে থাকা বৃদ্ধার ৪ ছেলেকে মায়ের মরদেহ না দেখার এবং দাফনে অংশগ্রহণের সুযোগ না দিয়ে সাচ্চু মিয়ার পক্ষের অনুসারী অন্য দুই ছেলে জহিরুল ও নূরুল গতকাল শুক্রবার রাতেই জানাযা শেষে গ্রামের কবরস্থানে মায়ের লাশ দাফন করেন। এতে বৃদ্ধার অন্য চার ছেলে ও হারুন অর রশিদের পক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়। এই নিয়ে গতকাল শুক্রবার রাত থেকে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
লুডু খেলা নিয়ে পূর্ব বিরোধ এবং লাশ না দেখিয়ে দাফন করার ঘটনায় গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে উভয়পক্ষের লোকজন বল্লম, টেটা, ছুরি, দাসহ দেশীয় অস্ত্র শাস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উভয়পক্ষের লোকজনের অনেকে হেলমেট, গায়ে লাইফ জ্যাকেট ও পায়ে ক্রিকেট প্যাড পরে সংঘর্ষে যুক্ত হন। সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে ককটেল বিস্ফোরণসহ উভয়পক্ষের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাট লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সংঘর্ষে সাচ্চু, ইকবাল ও আনিছুরের পক্ষে নাসির উদ্দিন নিহত হন এবং উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। খবর পেয়ে সদর থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বেলা ১১টা পর্যন্ত উভয়পক্ষের সংঘর্ষ চলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম জানান, গোষ্ঠিগত বিরোধ নিয়ে পূর্ব থেকেই সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ ও গ্রামের ব্যবসায়ী সাচ্চুর মিয়ার পক্ষে লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
গতকাল শুক্রবার গ্রামের এক বৃদ্ধা মারা যান। তার ছয় ছেলের মধ্যে চারজন সাবেক চেয়ারম্যান হারুন ও দুইজন সাচ্চুর পক্ষের অনুসারী। শনিবার,(২৫ অক্টোবর ২০২৫) চার ভাইকে না দেখে মায়ের লাশ দাফন করে বাকি দুই ভাই। এসব নিয়েই সংঘর্ষে হয়।