জয়দেবপুর রেলক্রসিং এলাকায় প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান -সংবাদ
সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত ‘জয়দেবপুর রেলক্রসিং: অবৈধ দোকান আর অটোরিকশার দাপট, নাগরিক দুর্ভোগ চরমে’ শিরোনামের প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসনের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে বৃহস্পতিবার,(০৬ নভেম্বর ২০২৫) গাজীপুর মহানগরের জয়দেবপুর রেলক্রসিং এলাকায় শুরু হয়েছে ব্যাপক উচ্ছেদ অভিযান। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, মেট্রোপলিটন পুলিশ ও রেলওয়ের সমন্বয়ে পরিচালিত এই অভিযানে রেলক্রসিং ঘিরে গড়ে ওঠা শতাধিক অবৈধ দোকান, অস্থায়ী স্থাপনা ও হকারদের দখল উচ্ছেদ করা হয়।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারিয়া তাসনিম, জয়দেবপুর রেল জংশনের স্টেশন মাস্টার মাহমুদুল হাসান ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগের ইমরান হোসেন। অভিযানে মেট্রোপলিটন পুলিশ, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ ও সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহেল হাসান এ বিষয়ে এক ইতিবাচক বার্তা দিয়ে বলেন, জয়দেবপুর রেলক্রসিং হলো গাজীপুরের প্রাণকেন্দ্র, এখানে প্রতিদিন লাখো মানুষ চলাচল করে। দীর্ঘদিনের দখল ও বিশৃঙ্খলা নগর জীবনে যে অসহনীয় দুর্ভোগ তৈরি করেছে, তা দূর করতেই আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। আজকের উচ্ছেদ শুধু অভিযান নয়- এটি একটি নতুন সূচনা, যেখানে প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, রেলওয়ে ও নাগরিক সমাজ একসঙ্গে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে রেলক্রসিং ও আশপাশের এলাকাকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে একটি সমন্বিত ‘জয়দেবপুর মোবিলিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। এর আওতায় ফ্লাইওভার নির্মাণ, বিকল্প রাস্তা সম্প্রসারণ, ট্রাফিক সিগন্যাল অটোমেশন ও ফুটপাত সংস্কার করা হবে। গাজীপুরকে একটি দখলমুক্ত, পরিচ্ছন্ন ও স্মার্ট নগর হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এদিকে, উচ্ছেদ অভিযানের পর ভাসমান ফল ব্যবসায়ী ও হকাররা দাবি জানিয়েছেন, যাতে তারা আবারও জীবিকা নির্বাহের সুযোগ পান। তারা বলেন, আমরা দিনের পর দিন এই জায়গায় ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছিলাম। আমাদের সংসার এই দোকানের আয়ে চলে। তাই প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, আমাদের জন্য সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো পার্মানেন্ট জায়গা বা পুনর্বাসন ব্যবস্থা করা হোক।
এই প্রসঙ্গে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহেল হাসান সংবাদকে বলেন, আমরা নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে যেমন অবৈধ দখল উচ্ছেদ করছি, তেমনি যারা ভাসমান ব্যবসায়ী, তাদের বিষয়টিও মানবিকভাবে বিবেচনা করা হবে। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে আইনানুগভাবে তাদের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেয়া হবে, যাতে তারা সুশৃঙ্খলভাবে ব্যবসা চালাতে পারেন এবং শহরের সৌন্দর্যও অক্ষুণ্ণ থাকে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার সরফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গাজীপুরের উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি। নাগরিকদের চলাচল সহজ করা, রাস্তাঘাট ও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখা আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার। আজকের এই সমন্বিত উদ্যোগ শহর পুনরুদ্ধারের একটি দৃষ্টান্ত।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন বলেন, আমরা গাজীপুরকে একটি পরিচ্ছন্ন, দখলমুক্ত ও চলাচলযোগ্য শহরে পরিণত করতে প্রতিনিয়ত কাজ করছি। আজকের উচ্ছেদ অভিযান সেই ধারাবাহিকতারই অংশ। নাগরিকদের সহযোগিতা পেলে জয়দেবপুর রেলক্রসিংসহ পুরো নগর এলাকাকে আমরা শৃঙ্খলিত ও আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনায় রূপ দিতে পারবো।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারিয়া তাসনিম বলেন, নগরবাসীর স্বার্থে এ অভিযান নিয়মিতভাবে চলবে। দখলদারদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
অভিযানে গাজীপুর রেলক্রসিং এলাকার শতাধিক অবৈধ দোকান ও হকার উচ্ছেদ করা হয়, যার ফলে ক্রসিং এলাকার দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, দীর্ঘদিনের দখলমুক্তির এই উদ্যোগে শহরে স্বস্তির বাতাস বইছে।
প্রসঙ্গত, জয়দেবপুর রেলক্রসিং অনেকদিন ধরেই নাগরিক ভোগান্তির প্রতীক হিসেবে পরিচিত ছিল। অবৈধ দখল, ব্যাটারিচালিত যান ও হকারদের অনিয়ন্ত্রিত দৌরাত্মে যানজট ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপে আজ গাজীপুরবাসীর সেই গলার কাঁটা সরানো হয়েছে।
গাজীপুরবাসীর প্রত্যাশা, এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে শহরকে একটি দখলমুক্ত, চলাচলযোগ্য ও আধুনিক নগরে রূপ দেয়া হবে, যেখানে নাগরিকরা নির্বিঘেœ শ্বাস নিতে পারবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
জয়দেবপুর রেলক্রসিং এলাকায় প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত ‘জয়দেবপুর রেলক্রসিং: অবৈধ দোকান আর অটোরিকশার দাপট, নাগরিক দুর্ভোগ চরমে’ শিরোনামের প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসনের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে বৃহস্পতিবার,(০৬ নভেম্বর ২০২৫) গাজীপুর মহানগরের জয়দেবপুর রেলক্রসিং এলাকায় শুরু হয়েছে ব্যাপক উচ্ছেদ অভিযান। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, মেট্রোপলিটন পুলিশ ও রেলওয়ের সমন্বয়ে পরিচালিত এই অভিযানে রেলক্রসিং ঘিরে গড়ে ওঠা শতাধিক অবৈধ দোকান, অস্থায়ী স্থাপনা ও হকারদের দখল উচ্ছেদ করা হয়।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারিয়া তাসনিম, জয়দেবপুর রেল জংশনের স্টেশন মাস্টার মাহমুদুল হাসান ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগের ইমরান হোসেন। অভিযানে মেট্রোপলিটন পুলিশ, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ ও সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহেল হাসান এ বিষয়ে এক ইতিবাচক বার্তা দিয়ে বলেন, জয়দেবপুর রেলক্রসিং হলো গাজীপুরের প্রাণকেন্দ্র, এখানে প্রতিদিন লাখো মানুষ চলাচল করে। দীর্ঘদিনের দখল ও বিশৃঙ্খলা নগর জীবনে যে অসহনীয় দুর্ভোগ তৈরি করেছে, তা দূর করতেই আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। আজকের উচ্ছেদ শুধু অভিযান নয়- এটি একটি নতুন সূচনা, যেখানে প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, রেলওয়ে ও নাগরিক সমাজ একসঙ্গে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে রেলক্রসিং ও আশপাশের এলাকাকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে একটি সমন্বিত ‘জয়দেবপুর মোবিলিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। এর আওতায় ফ্লাইওভার নির্মাণ, বিকল্প রাস্তা সম্প্রসারণ, ট্রাফিক সিগন্যাল অটোমেশন ও ফুটপাত সংস্কার করা হবে। গাজীপুরকে একটি দখলমুক্ত, পরিচ্ছন্ন ও স্মার্ট নগর হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এদিকে, উচ্ছেদ অভিযানের পর ভাসমান ফল ব্যবসায়ী ও হকাররা দাবি জানিয়েছেন, যাতে তারা আবারও জীবিকা নির্বাহের সুযোগ পান। তারা বলেন, আমরা দিনের পর দিন এই জায়গায় ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছিলাম। আমাদের সংসার এই দোকানের আয়ে চলে। তাই প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, আমাদের জন্য সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো পার্মানেন্ট জায়গা বা পুনর্বাসন ব্যবস্থা করা হোক।
এই প্রসঙ্গে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহেল হাসান সংবাদকে বলেন, আমরা নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে যেমন অবৈধ দখল উচ্ছেদ করছি, তেমনি যারা ভাসমান ব্যবসায়ী, তাদের বিষয়টিও মানবিকভাবে বিবেচনা করা হবে। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে আইনানুগভাবে তাদের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেয়া হবে, যাতে তারা সুশৃঙ্খলভাবে ব্যবসা চালাতে পারেন এবং শহরের সৌন্দর্যও অক্ষুণ্ণ থাকে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার সরফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গাজীপুরের উন্নয়ন এখন সময়ের দাবি। নাগরিকদের চলাচল সহজ করা, রাস্তাঘাট ও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখা আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার। আজকের এই সমন্বিত উদ্যোগ শহর পুনরুদ্ধারের একটি দৃষ্টান্ত।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন বলেন, আমরা গাজীপুরকে একটি পরিচ্ছন্ন, দখলমুক্ত ও চলাচলযোগ্য শহরে পরিণত করতে প্রতিনিয়ত কাজ করছি। আজকের উচ্ছেদ অভিযান সেই ধারাবাহিকতারই অংশ। নাগরিকদের সহযোগিতা পেলে জয়দেবপুর রেলক্রসিংসহ পুরো নগর এলাকাকে আমরা শৃঙ্খলিত ও আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনায় রূপ দিতে পারবো।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারিয়া তাসনিম বলেন, নগরবাসীর স্বার্থে এ অভিযান নিয়মিতভাবে চলবে। দখলদারদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
অভিযানে গাজীপুর রেলক্রসিং এলাকার শতাধিক অবৈধ দোকান ও হকার উচ্ছেদ করা হয়, যার ফলে ক্রসিং এলাকার দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, দীর্ঘদিনের দখলমুক্তির এই উদ্যোগে শহরে স্বস্তির বাতাস বইছে।
প্রসঙ্গত, জয়দেবপুর রেলক্রসিং অনেকদিন ধরেই নাগরিক ভোগান্তির প্রতীক হিসেবে পরিচিত ছিল। অবৈধ দখল, ব্যাটারিচালিত যান ও হকারদের অনিয়ন্ত্রিত দৌরাত্মে যানজট ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপে আজ গাজীপুরবাসীর সেই গলার কাঁটা সরানো হয়েছে।
গাজীপুরবাসীর প্রত্যাশা, এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে শহরকে একটি দখলমুক্ত, চলাচলযোগ্য ও আধুনিক নগরে রূপ দেয়া হবে, যেখানে নাগরিকরা নির্বিঘেœ শ্বাস নিতে পারবে।