alt

বৃষ্টিতে ১০ কোটি টাকার ফসল নষ্ট

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী : শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫

রাজশাহী : ধান কাটতে ব্যস্ত কৃষক -ফাইল ফটো

‘বাজারে মুলা তোলার আগেই সব শেষ হইয়া গেল- এই যে জমি, এখন শুধু পানি আর পানি।’ জমির সামনে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহীর পবা উপজেলার শিয়ালবেড় গ্রামের কৃষক রাব্বানী মন্ডল। রাব্বানীর চোখের কোণে পানি, পায়ের নিচেও হাঁটুসমান পানি। একসময় যে জমিতে ভরে উঠেছিল মুলার গাছ, সেই জমি এখন ডুবে আছে বৃষ্টির পানিতে। নভেম্বরের শুরুতেই অপ্রত্যাশিত বৃষ্টিতে এখনও এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে রাজশাহীর পবা, মোহনপুর, বাগমারা, তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলার ফসলের মাঠজুড়ে।

টানা দুই দিনের ওই বৃষ্টিতে জেলার হাজারো কৃষক এখন বড় ক্ষতির মুখে। শাকসবজি, ঢেঁড়স, মুলা, পেঁয়াজ থেকে শুররু করে আমন ধান- সব ফসলই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পপ্রয় ১০ কোটি ২৭ লাখ টাকা, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ৪ হাজার ২০০ জন। দুই দিনের বৃষ্টিতে জেলার ২ হাজার ১৫০ বিঘা ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বাস্তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কৃষকেরা বলছেন, ১৯৮৬ সালের পর এমন বৃষ্টি আর কখনো দেখেননি তারা।

সরেজমিনে পবা উপজেলার শিয়ালবেড় গ্রামে গিয়ে কথা হয় কৃষক রাব্বানী মন্ডলের সঙ্গে। তিনি বলেন, আষাঢ় মাসেও এমন বৃষ্টি হয় না, যে বৃষ্টি এবার হইছে। এখনো পানি নামেনি। পাঁচ বিঘা জমি পানির নিচে। চারপাশে পুকুন, পানি নামারও পথ নাই।

রাব্বানী আরও বলেন, আমাদের মতো গরিব কৃষকের জন্য এই প্রণোদনাই এখন একমাত্র ভরসা। সরকার যদি পাশে থাকে, তাহলে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারব। তা না হলে কঠিন হবে।

পবা উপজেলার শিয়ালবেড়, পাইকপাড়া, দাদপুর ও মুরারীপুর গ্রামের মাঠজুড়ে একই চিত্র। যেদিকে চোখ যায়, এখনও চোখে পড়ে কেবল পানি। কোথাও ধান হেলে পড়েছে, কোথাও শাকসবজি ডুবে আছে পানির নিচে। পাইকপাড়া গগ্রমের কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ১২ কাঠা জমিতে শাকসবজি করেছিলাম, বৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে গেছে। এমন সময় তো বৃষ্টি হয় না।

একই এলাকার কৃষক আব্দুর রাজ্জাক এক বিঘা জমিতে বি-৮৭ জাতের ধান চাষ করেছিলেন। ধান কাটার আগেই নভেম্বরে অসময়ের বৃষ্টিতে জমিতে পানি উঠেছে, বাতাসে ধানের গাছ হেলে পড়েছে। মাঠে দেখা গেল, কৃষকরা কাদামাটি মাড়িয়ে হেলে পড়া ধান কেটে নিচ্ছেন।

সেখানে তার ছেলে সোহানুর রহমান বলেন, এই বৃষ্টিতে অর্ধেক ধান নষ্ট হয়ে যাবে। শ্রমিক খরচও বেশি হবে। মনে হচ্ছে খরচের টাকাও উঠবে না। তিন দিন পরে বৃষ্টি হইলে এই সর্বনাশ হতো না।

পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এমএ মান্নান বলেন, নভেম্বরের শুরুতেই যে বৃষ্টি হয়েছে, সেটি মূলত নিম্নচাপজনিত। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি যেন জমি শুকিয়ে দ্রুত নতুন ফসল লাগাতে পারেন। ইতিমধ্যে সরিষা, গম, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসলের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানান, বৃষ্টিতে জেলার ২ হাজার ১৫০ বিঘা জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি ২৭ লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রণোদনা এলে তা বিতরণ করা হবে।

ছবি

শরীরচর্চা ও সঙ্গীতের মর্যাদা পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ

ছবি

দুমকিতে টাইফয়েড টিকাদানের হার ৯৪%

ছবি

নাগেশ্বরীতে ধান ক্ষেতে বিএলবি রোগ, শঙ্কায় কৃষক

ছবি

ডিমলায় সন্তানকে ফিরে পেতে মায়ের আহাজারি

ছবি

সিরাজগঞ্জে জমে উঠেছে জলপাইয়ের হাট

ছবি

জি-মেইল হ্যাক করে ব্যাংক হিসাব থেকে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুইজন গ্রেপ্তার

ছবি

চার দিনের শুভেচ্ছা সফরে চট্টগ্রামে পৌঁছেছে পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ ‘পিএনএস সাইফ’

ছবি

চান্দিনার শালীখায় বালু উত্তোলন, ঝুঁকিতে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক

ছবি

রামপালে বাস-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে ২ জন নিহত

ছবি

চীনের রণতরি উদ্বোধন, চাপে পড়বে যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

দুর্গাপুরে ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারি আটক

ছবি

পোরশায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন

ছবি

সুইসাইড নোট লিখে যুবকের আত্মহত্যা

ছবি

গজারিয়ায় দাসকান্দী বাজারে অগ্নিকান্ড, ৮ প্রতিষ্ঠান ভস্মীভূত

ছবি

পাঁচবিবিতে মসজিদের উন্নয়নকল্পে সহায়তা

ছবি

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ছেলেকে হত্যার অনুমতি দেয় মা

ছবি

নবীগঞ্জে জুমার নামাজ চলাকালে ছুরিকাঘাতে নিহত

দালালমুক্ত রায়পুর ভূমি অফিস, ফিরেছে আস্থা

ছবি

৫৩ বিজিবি’র পৃথক অভিযানে গবাদিপশুসহ বিড়ি মসলা জব্দ

ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ২

ছবি

স্থানীয়দের তৈরি ফাঁদে ধরা পড়েছে সেই কুমির

ছবি

শহীদ জিয়া এই দেশ এবং জাতিকে পুনর্গঠন করেছেন -গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী

ছবি

লালমনিরহাটে ট্রেনের ধাক্কায় নারী নিহত

চাঁদপুরে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

দশমিনায় কৃষকদের মধ্যে গাছের চারা বিতরণ

ছবি

বেগমগঞ্জে অজ্ঞাত যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার

ছবি

রায়গঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় কৃষক দলের ২ নেতা নিহত

ছবি

বরিশালে মৎস্য দপ্তরের কম্পাউন্ডে জাটকা লুট, ঠেকাতে পারলো না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ছবি

নোয়াখালীতে কান কাটা কাদিরাকে কুপিয়ে হত্যা

সরাইলে পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

ছবি

স্ত্রীকে ফোন দিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন পুলিশ কনস্টেবল

ছবি

অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত শিবরামপুর গ্রাম

ছবি

শিবপুরে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপন

ছবি

বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২৫

ছবি

ঝালকাঠিতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২

ছবি

কটিয়াদীতে ধান খেতে কারেন্ট পোকা : দিশেহারা কৃষক

tab

বৃষ্টিতে ১০ কোটি টাকার ফসল নষ্ট

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

রাজশাহী : ধান কাটতে ব্যস্ত কৃষক -ফাইল ফটো

শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫

‘বাজারে মুলা তোলার আগেই সব শেষ হইয়া গেল- এই যে জমি, এখন শুধু পানি আর পানি।’ জমির সামনে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহীর পবা উপজেলার শিয়ালবেড় গ্রামের কৃষক রাব্বানী মন্ডল। রাব্বানীর চোখের কোণে পানি, পায়ের নিচেও হাঁটুসমান পানি। একসময় যে জমিতে ভরে উঠেছিল মুলার গাছ, সেই জমি এখন ডুবে আছে বৃষ্টির পানিতে। নভেম্বরের শুরুতেই অপ্রত্যাশিত বৃষ্টিতে এখনও এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে রাজশাহীর পবা, মোহনপুর, বাগমারা, তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলার ফসলের মাঠজুড়ে।

টানা দুই দিনের ওই বৃষ্টিতে জেলার হাজারো কৃষক এখন বড় ক্ষতির মুখে। শাকসবজি, ঢেঁড়স, মুলা, পেঁয়াজ থেকে শুররু করে আমন ধান- সব ফসলই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পপ্রয় ১০ কোটি ২৭ লাখ টাকা, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ৪ হাজার ২০০ জন। দুই দিনের বৃষ্টিতে জেলার ২ হাজার ১৫০ বিঘা ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বাস্তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কৃষকেরা বলছেন, ১৯৮৬ সালের পর এমন বৃষ্টি আর কখনো দেখেননি তারা।

সরেজমিনে পবা উপজেলার শিয়ালবেড় গ্রামে গিয়ে কথা হয় কৃষক রাব্বানী মন্ডলের সঙ্গে। তিনি বলেন, আষাঢ় মাসেও এমন বৃষ্টি হয় না, যে বৃষ্টি এবার হইছে। এখনো পানি নামেনি। পাঁচ বিঘা জমি পানির নিচে। চারপাশে পুকুন, পানি নামারও পথ নাই।

রাব্বানী আরও বলেন, আমাদের মতো গরিব কৃষকের জন্য এই প্রণোদনাই এখন একমাত্র ভরসা। সরকার যদি পাশে থাকে, তাহলে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারব। তা না হলে কঠিন হবে।

পবা উপজেলার শিয়ালবেড়, পাইকপাড়া, দাদপুর ও মুরারীপুর গ্রামের মাঠজুড়ে একই চিত্র। যেদিকে চোখ যায়, এখনও চোখে পড়ে কেবল পানি। কোথাও ধান হেলে পড়েছে, কোথাও শাকসবজি ডুবে আছে পানির নিচে। পাইকপাড়া গগ্রমের কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ১২ কাঠা জমিতে শাকসবজি করেছিলাম, বৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে গেছে। এমন সময় তো বৃষ্টি হয় না।

একই এলাকার কৃষক আব্দুর রাজ্জাক এক বিঘা জমিতে বি-৮৭ জাতের ধান চাষ করেছিলেন। ধান কাটার আগেই নভেম্বরে অসময়ের বৃষ্টিতে জমিতে পানি উঠেছে, বাতাসে ধানের গাছ হেলে পড়েছে। মাঠে দেখা গেল, কৃষকরা কাদামাটি মাড়িয়ে হেলে পড়া ধান কেটে নিচ্ছেন।

সেখানে তার ছেলে সোহানুর রহমান বলেন, এই বৃষ্টিতে অর্ধেক ধান নষ্ট হয়ে যাবে। শ্রমিক খরচও বেশি হবে। মনে হচ্ছে খরচের টাকাও উঠবে না। তিন দিন পরে বৃষ্টি হইলে এই সর্বনাশ হতো না।

পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এমএ মান্নান বলেন, নভেম্বরের শুরুতেই যে বৃষ্টি হয়েছে, সেটি মূলত নিম্নচাপজনিত। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি যেন জমি শুকিয়ে দ্রুত নতুন ফসল লাগাতে পারেন। ইতিমধ্যে সরিষা, গম, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসলের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানান, বৃষ্টিতে জেলার ২ হাজার ১৫০ বিঘা জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি ২৭ লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রণোদনা এলে তা বিতরণ করা হবে।

back to top