শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কাজিয়ারচর ছমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জি.এম. সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে গত ঃবছরের ৫ আগস্ট থেকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়েও অন্য কারো মাধ্যমে হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়টি পরিচালনাও করা হচ্ছে নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সরেজমিনে বিদ্যালয়ে একাধিক দিন গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের সংখ্যানুযায়ী ৫০% শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নেই। গতবছরের জুলাই মাস থেকে হাজিরা খাতা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় গত আগস্ট মাস পর্যন্ত সরকারি ছুটি ও বিদ্যালয়ের অফিসের কাজ ব্যতীত একদিনও অনুপস্থিতি নেই। তবে গত ৩১ আগস্ট থেকে বিদ্যালয়ের সভাপতির অনুমোদনক্রমে নভেম্বরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত ব্যক্তিগত কারন উল্লেখ্য করে ৩ মাসের ছুটি নিয়েছেন।
তবে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, গতবছর ৫ আগস্টের পরে তাকে বিদ্যালয়ের আশেপাশে ৪-৫ দিন দেখা গিয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়ের কোন কার্যক্রমে তাকে দেখা যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জি.এম. সালাউদ্দিন শরীয়তপুর জেলা মৎসজীবী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়াও জাজিরার বিলাসপুরে বিভিন্ন সময়ের সংঘর্ষের ঘটনা তার নেতৃত্বে সংঘটিত হয়েছে। সে কারনে বিস্ফোরকসহ জাজিরা থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এছারাও গতবছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আ.লীগ সরকারের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন তাই গতবছরের ৫ আগস্ট আ.লীগ সরকারের পতনের পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। বর্তমানেও তিনি পলাতক রয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, কাজিয়ারচর ছমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়টি ওই প্রধান শিক্ষকের দাদার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত বিধায় ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ, বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য সভাপতি নির্বাচনসহ সকল কার্যক্রমে একক আধিপত্য বজায় রেখেছেন তিনি। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন তারই আপন ছোটভাই গোলাম নাসিরউদ্দিন।
বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, ‘‘তারা জানুয়ারিতে ভর্তি হওয়ার পর প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিনকে ৩-৪ দিন দেখেছেন। তাও বিদ্যালয়ের কোন কার্যক্রমে নয়।’’
প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিনের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা ও হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর প্রদানের বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও কর্মরত অন্যান্য শিক্ষকদের কাছে জানতে চাইলে তারা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এবিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি গোলাম নাসিরউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মুঠোফোনে সংবাদকে বলেন, ‘‘আমার জানামতে তিনি অনুপস্থিত নয়, ক্লাস করেন। এখন তিনি ছুটিতে আছেন।’’
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক জি.এম. সালাউদ্দিন কর্মস্থল ও নিজ বাড়ীতে উপস্থিত না থাকায় তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার হোয়াটসএ্যাপ মেসেঞ্জারে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
জাজিরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিরাজউদ্দৌলা সংবাদকে বলেন, “প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিন সাহেবের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা ও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের বিষয়ে জানা নেই। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এবিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার(অ:দা) মো: নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কাজিয়ারচর ছমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জি.এম. সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে গত ঃবছরের ৫ আগস্ট থেকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়েও অন্য কারো মাধ্যমে হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়টি পরিচালনাও করা হচ্ছে নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সরেজমিনে বিদ্যালয়ে একাধিক দিন গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের সংখ্যানুযায়ী ৫০% শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নেই। গতবছরের জুলাই মাস থেকে হাজিরা খাতা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় গত আগস্ট মাস পর্যন্ত সরকারি ছুটি ও বিদ্যালয়ের অফিসের কাজ ব্যতীত একদিনও অনুপস্থিতি নেই। তবে গত ৩১ আগস্ট থেকে বিদ্যালয়ের সভাপতির অনুমোদনক্রমে নভেম্বরের ৩০ তারিখ পর্যন্ত ব্যক্তিগত কারন উল্লেখ্য করে ৩ মাসের ছুটি নিয়েছেন।
তবে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, গতবছর ৫ আগস্টের পরে তাকে বিদ্যালয়ের আশেপাশে ৪-৫ দিন দেখা গিয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়ের কোন কার্যক্রমে তাকে দেখা যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জি.এম. সালাউদ্দিন শরীয়তপুর জেলা মৎসজীবী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়াও জাজিরার বিলাসপুরে বিভিন্ন সময়ের সংঘর্ষের ঘটনা তার নেতৃত্বে সংঘটিত হয়েছে। সে কারনে বিস্ফোরকসহ জাজিরা থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এছারাও গতবছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আ.লীগ সরকারের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন তাই গতবছরের ৫ আগস্ট আ.লীগ সরকারের পতনের পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। বর্তমানেও তিনি পলাতক রয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, কাজিয়ারচর ছমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়টি ওই প্রধান শিক্ষকের দাদার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত বিধায় ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ, বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য সভাপতি নির্বাচনসহ সকল কার্যক্রমে একক আধিপত্য বজায় রেখেছেন তিনি। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন তারই আপন ছোটভাই গোলাম নাসিরউদ্দিন।
বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, ‘‘তারা জানুয়ারিতে ভর্তি হওয়ার পর প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিনকে ৩-৪ দিন দেখেছেন। তাও বিদ্যালয়ের কোন কার্যক্রমে নয়।’’
প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিনের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা ও হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর প্রদানের বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও কর্মরত অন্যান্য শিক্ষকদের কাছে জানতে চাইলে তারা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এবিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি গোলাম নাসিরউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মুঠোফোনে সংবাদকে বলেন, ‘‘আমার জানামতে তিনি অনুপস্থিত নয়, ক্লাস করেন। এখন তিনি ছুটিতে আছেন।’’
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক জি.এম. সালাউদ্দিন কর্মস্থল ও নিজ বাড়ীতে উপস্থিত না থাকায় তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার হোয়াটসএ্যাপ মেসেঞ্জারে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
জাজিরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিরাজউদ্দৌলা সংবাদকে বলেন, “প্রধান শিক্ষক সালাউদ্দিন সাহেবের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা ও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের বিষয়ে জানা নেই। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এবিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার(অ:দা) মো: নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান।