কুষ্টিয়া : সওজ ও গণপূর্ত অধিদপ্ত সংলগ্ন বাগানের গাছ কাটা হচ্ছে -সংবাদ
কুষ্টিয়া শহরে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের অফিসসংলগ্ন প্রায় এক একর বাগানের ৭০টি গাছ গোপন টেন্ডারের মাধ্যমে কেটে নেওয়ার ঘটনায় বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এদিকে দুই দপ্তরই গাছের মালিকানা দাবি করায় এ নিয়ে রশি টানাটানি শুরু হয়েছে। দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। শুক্রবার নওগাঁর এ এম কে ট্রেডার্স নিলামে কেনা গাছ কাটতে গেলে গণপূর্তের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন।
গণপূর্তের অভিযোগ, গাছ কাটার আদেশ বা কোনো নোটিশ তাদেরকে দেওয়া হয়নি। আদালতে জমির রেকর্ড সংশোধনের মামলা চলমান থাকা অবস্থায় গোপনে টেন্ডার প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে।
গণপূর্ত গাছ রোপন ও গাছের পরিচর্যা করেছে এমন দাবি তুলে গণপূর্তের অফিস সহকারী সোহেল রানা বলেন, মামলা চলমান থাকার মধ্যে গোপনে টেন্ডার করে গাছ বিক্রি করেছে সওজ। আদালতের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গাছ কাটা বন্ধ রাখতে হবে।
গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান হোসেন জানান, সওজের সঙ্গে আমাদের বণ্টন মামলা রয়েছে। ভবন নির্মাণের কাজে যে গাছ কাটার বিষয়টি নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে আগেও একটি স্টে অর্ডার ছিল। স্টে স্থগিত হওয়ার পর আমরা আবার আপিল করেছি। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহাঙ্গীর আলমকে জানিয়েছি। এখন দেখা যাক, পরবর্তী সিদ্ধান্ত কী আসে।
অন্যদিকে সড়ক ও জনপদ দাবি করছে, জমির রেকর্ড তাদের নামে এবং মামলার রায়ও তাদের পক্ষে রয়েছে। সওজের ওয়ার্ক এসিস্ট্যান্ট শরিফুল ইসলাম বলেন, গাছ কাটায় কোনো অবৈধতা নেই। নিলাম বৈধভাবে হয়েছে।
সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মঞ্জুরুল করিম বলেন, জমির রেকর্ড অনুযায়ী সওজই মালিক। মামলা থাকলেও গাছ কাটায় কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। ৭০টি গাছ মাত্র ১ লাখ ৮১ হাজার টাকায় বিক্রি এ নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি বলেন, গাছ গুলো ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমেই বিক্রি হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন এতো বড় বাগানের ৭০টি পরিপক্ক গাছের মূল্য মাত্র ১ লাখ ৮১ হাজার টাকা অস্বাভাবিকভাবে কম।
কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক বলেন, মেহেগুনি পরিপক্ক গাছগুলো ১৮শ-২ হাজার টাকা প্রতি সেফটি বিক্রি হয়। এবং অপরিপক্ক গাছগুলোর ১ হাজার থেকে ১৩শ টাকা বর্তমান মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। গাছগুলো দেখে মনে হচ্ছে প্রতিটা গাছে প্রায় ৭ থেকে ৮ সিফটি করে কাট হবে। সে হিসেবে গাছের মূল্য অনেক কম হয়েছে।
পরিবেশবিদ গৌতম কুমার রায় অভিযোগ করে বলেন, গাছ কাটার নিলামটি ছিল সীমিত পরিসরে, ওপেন টেন্ডার হয়নি। বাজারদরের তুলনায় দামও অস্বাভাবিক কম, যা সরকারি সম্পদ রক্ষায় স্বচ্ছতার ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ রক্ষায় গাছের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধার জন্য অরণ্য ধ্বংসে মদদ দিচ্ছেন, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে জলবায়ু পরিবর্তনে-উষ্ণতা বৃদ্ধি, শীতের তীব্রতা ও অতিবৃষ্টির মতো চরম আবহাওয়া তৈরি হচ্ছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
কুষ্টিয়া : সওজ ও গণপূর্ত অধিদপ্ত সংলগ্ন বাগানের গাছ কাটা হচ্ছে -সংবাদ
শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
কুষ্টিয়া শহরে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের অফিসসংলগ্ন প্রায় এক একর বাগানের ৭০টি গাছ গোপন টেন্ডারের মাধ্যমে কেটে নেওয়ার ঘটনায় বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এদিকে দুই দপ্তরই গাছের মালিকানা দাবি করায় এ নিয়ে রশি টানাটানি শুরু হয়েছে। দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। শুক্রবার নওগাঁর এ এম কে ট্রেডার্স নিলামে কেনা গাছ কাটতে গেলে গণপূর্তের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন।
গণপূর্তের অভিযোগ, গাছ কাটার আদেশ বা কোনো নোটিশ তাদেরকে দেওয়া হয়নি। আদালতে জমির রেকর্ড সংশোধনের মামলা চলমান থাকা অবস্থায় গোপনে টেন্ডার প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে।
গণপূর্ত গাছ রোপন ও গাছের পরিচর্যা করেছে এমন দাবি তুলে গণপূর্তের অফিস সহকারী সোহেল রানা বলেন, মামলা চলমান থাকার মধ্যে গোপনে টেন্ডার করে গাছ বিক্রি করেছে সওজ। আদালতের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গাছ কাটা বন্ধ রাখতে হবে।
গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান হোসেন জানান, সওজের সঙ্গে আমাদের বণ্টন মামলা রয়েছে। ভবন নির্মাণের কাজে যে গাছ কাটার বিষয়টি নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে আগেও একটি স্টে অর্ডার ছিল। স্টে স্থগিত হওয়ার পর আমরা আবার আপিল করেছি। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহাঙ্গীর আলমকে জানিয়েছি। এখন দেখা যাক, পরবর্তী সিদ্ধান্ত কী আসে।
অন্যদিকে সড়ক ও জনপদ দাবি করছে, জমির রেকর্ড তাদের নামে এবং মামলার রায়ও তাদের পক্ষে রয়েছে। সওজের ওয়ার্ক এসিস্ট্যান্ট শরিফুল ইসলাম বলেন, গাছ কাটায় কোনো অবৈধতা নেই। নিলাম বৈধভাবে হয়েছে।
সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মঞ্জুরুল করিম বলেন, জমির রেকর্ড অনুযায়ী সওজই মালিক। মামলা থাকলেও গাছ কাটায় কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। ৭০টি গাছ মাত্র ১ লাখ ৮১ হাজার টাকায় বিক্রি এ নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি বলেন, গাছ গুলো ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমেই বিক্রি হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন এতো বড় বাগানের ৭০টি পরিপক্ক গাছের মূল্য মাত্র ১ লাখ ৮১ হাজার টাকা অস্বাভাবিকভাবে কম।
কাঠ ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক বলেন, মেহেগুনি পরিপক্ক গাছগুলো ১৮শ-২ হাজার টাকা প্রতি সেফটি বিক্রি হয়। এবং অপরিপক্ক গাছগুলোর ১ হাজার থেকে ১৩শ টাকা বর্তমান মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। গাছগুলো দেখে মনে হচ্ছে প্রতিটা গাছে প্রায় ৭ থেকে ৮ সিফটি করে কাট হবে। সে হিসেবে গাছের মূল্য অনেক কম হয়েছে।
পরিবেশবিদ গৌতম কুমার রায় অভিযোগ করে বলেন, গাছ কাটার নিলামটি ছিল সীমিত পরিসরে, ওপেন টেন্ডার হয়নি। বাজারদরের তুলনায় দামও অস্বাভাবিক কম, যা সরকারি সম্পদ রক্ষায় স্বচ্ছতার ঘাটতির ইঙ্গিত দেয়।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ রক্ষায় গাছের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধার জন্য অরণ্য ধ্বংসে মদদ দিচ্ছেন, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে জলবায়ু পরিবর্তনে-উষ্ণতা বৃদ্ধি, শীতের তীব্রতা ও অতিবৃষ্টির মতো চরম আবহাওয়া তৈরি হচ্ছে।