রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) : ঘরবাড়ি ছাড়াই নৌকায় জীবনযাপন -সংবাদ
সোনাই ডাঙা বিলের নীরব জলরাশি যত দূর চোখ যায়, তত দূর পর্যন্ত বাস করে অনিশ্চয়তা। সেই অনিশ্চয়তার মাঝেই ভেসে থাকে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের ধানগড়া ইউনিয়নের বাশুড়িয়া গ্রামের বৃদ্ধ দম্পতিজামাত আলী (৬৫) ও তার স্ত্রী সখিনা। বহু বছর ধরে তাদের সংসার গড়ে উঠেছে এক পুরনো নৌকার ওপর; এটিই তাদের একমাত্র আশ্রয়, একমাত্র ঠিকানা। বাড়িঘর হারিয়ে একসময় জামাত আলী আশ্রয় নেন শ্বশুরবাড়িতে। কিন্তু সেখানে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ ছিল না। শেষ পর্যন্ত জলভরা বিলের ওপর ভাসমান একটি পুরনো নৌকাতেই বাঁধা পড়ে তাদের জীবন। ভোর থেকে গভীর রাত রোদ, বৃষ্টি, ঝড় কিংবা শীত সবকিছু সামলেই চলছে তাদের জীবনের লড়াই। খাওয়া, ঘুম, বৃষ্টি থেকে বাঁচাসবই সেই নৌকাতেই। দুই মেয়ের বিয়ে দিলেও নিজের মাথা গোঁজার মতো একটি ঘর জোটেনি তাদের। বার্ধক্যের ভার আর প্রতিদিনের কষ্ট সঙ্গী করেই তারা বেঁচে আছেন পানির ওপর ভাসমান এই আশ্রয়ে। জামাত আলী বললেন, বিয়ের পর থেকেই ঘর নেই। নৌকাই আমাদের ঘর। কোথায় যাব? একবার বজ্রপাতের সময় প্রাণটাই চলে যাচ্ছিল। কিন্তু থাকার মতো জায়গা তো আর নেই। প্রতিবেশী ইমরাম হোসেন বলেন, ছোটবেলা থেকে দেখছি তারা নৌকার ওপরই থাকে। কষ্ট করে দিন চলে। সমাজকর্মী কাজল দাস জানান, তাদের জীবনটা একদম সংগ্রামে ভরা। সমাজের সচেতন মহল একটু নজর দিলেই হয়তো মানবসম্মতভাবে থাকতে পারতেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও ধানগড়া ইউনিয়নের প্রশাসক ইলিয়াস হাসান শেখ জানান, “বিষয়টি নতুন করে জানা হলো। যদি তাদের বয়স্কভাতা কার্ড না থাকে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আবেদন করলে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিলের বুকভরা নীরবতার মাঝে ভেসে থাকা এই দম্পতির জীবন সমাজের সামনে বড় একটি প্রশ্ন তুলে ধরে— বৃদ্ধ মানুষের মাথা গোঁজার সামান্য আশ্রয় কি পাওয়া এতটাই কঠিন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) : ঘরবাড়ি ছাড়াই নৌকায় জীবনযাপন -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
সোনাই ডাঙা বিলের নীরব জলরাশি যত দূর চোখ যায়, তত দূর পর্যন্ত বাস করে অনিশ্চয়তা। সেই অনিশ্চয়তার মাঝেই ভেসে থাকে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের ধানগড়া ইউনিয়নের বাশুড়িয়া গ্রামের বৃদ্ধ দম্পতিজামাত আলী (৬৫) ও তার স্ত্রী সখিনা। বহু বছর ধরে তাদের সংসার গড়ে উঠেছে এক পুরনো নৌকার ওপর; এটিই তাদের একমাত্র আশ্রয়, একমাত্র ঠিকানা। বাড়িঘর হারিয়ে একসময় জামাত আলী আশ্রয় নেন শ্বশুরবাড়িতে। কিন্তু সেখানে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ ছিল না। শেষ পর্যন্ত জলভরা বিলের ওপর ভাসমান একটি পুরনো নৌকাতেই বাঁধা পড়ে তাদের জীবন। ভোর থেকে গভীর রাত রোদ, বৃষ্টি, ঝড় কিংবা শীত সবকিছু সামলেই চলছে তাদের জীবনের লড়াই। খাওয়া, ঘুম, বৃষ্টি থেকে বাঁচাসবই সেই নৌকাতেই। দুই মেয়ের বিয়ে দিলেও নিজের মাথা গোঁজার মতো একটি ঘর জোটেনি তাদের। বার্ধক্যের ভার আর প্রতিদিনের কষ্ট সঙ্গী করেই তারা বেঁচে আছেন পানির ওপর ভাসমান এই আশ্রয়ে। জামাত আলী বললেন, বিয়ের পর থেকেই ঘর নেই। নৌকাই আমাদের ঘর। কোথায় যাব? একবার বজ্রপাতের সময় প্রাণটাই চলে যাচ্ছিল। কিন্তু থাকার মতো জায়গা তো আর নেই। প্রতিবেশী ইমরাম হোসেন বলেন, ছোটবেলা থেকে দেখছি তারা নৌকার ওপরই থাকে। কষ্ট করে দিন চলে। সমাজকর্মী কাজল দাস জানান, তাদের জীবনটা একদম সংগ্রামে ভরা। সমাজের সচেতন মহল একটু নজর দিলেই হয়তো মানবসম্মতভাবে থাকতে পারতেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও ধানগড়া ইউনিয়নের প্রশাসক ইলিয়াস হাসান শেখ জানান, “বিষয়টি নতুন করে জানা হলো। যদি তাদের বয়স্কভাতা কার্ড না থাকে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আবেদন করলে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিলের বুকভরা নীরবতার মাঝে ভেসে থাকা এই দম্পতির জীবন সমাজের সামনে বড় একটি প্রশ্ন তুলে ধরে— বৃদ্ধ মানুষের মাথা গোঁজার সামান্য আশ্রয় কি পাওয়া এতটাই কঠিন।