সিলেটের সদর উপজেলার একবারে শেষপ্রান্তে ছালিয়া গ্রাম। সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ মহাসড়ক লাগোয়া এই গ্রামের কাঁচা-ভাঙাচোরা আর সরু সড়ক মাড়িয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর চোখ আটকে যাবে চমতকার নির্মাণশৈলির কিছু ভবনে। ১৫০ শতক জায়গাজুড়ে লাল টিনের একতলা সারি সারি এসব ভবন নজর কাড়বে যে কারো। এই ভবনগুলোতে চালু হবে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। তবে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বলতেই যেখানে বিপুল খরচের ব্যাপার, এখানে তার ব্যতিক্রম। বৃটিশ কারিকুলামের এই স্কুলে পড়া যাবে বিনামূল্যে। সম্পূর্ণ আবাসিক এ স্কুলে থাকা খাওয়াও একদম ফ্রি। আর এখানে পড়ার সুযোগ পাবে এতিম শিশুরা। সমাজে যারা সুবিধাবঞ্চিত হিসেবে পরিচিত। অনাথ শিশুদের জন্য এই স্কুলটি নির্মাণ করছে সেচ্ছাসেবী সংস্থা ক্যাপ ফাউন্ডেশন। ‘ক্যাপ ফাউন্ডেশন ভিলেজ দ্য গার্ডিয়ানস’ নামের এই প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ক্যাপ ফাউন্ডেশনের ফাউন্ডার ও সিইও আব্দুল নূর হুমায়ুন জানান, ১০০ জন এতিম শিশু নিয়ে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে এই স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে বাছাইকৃত এতিম শিশুদের এনে এখানে ভর্তি করা হবে।তিনি জানান, এই স্কুলে ৩য় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সুযোগ থাকবে। পরে উচ্চ শিক্ষার জন্য এখানকার শিক্ষার্থীদের ক্যাপ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বৃত্তি দেওয়া হবে। কর্মসংস্থানেও সহায়তা করা হবে। এই স্কুলের পাশে ক্যাপ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে একটি ট্যাকনিকেল কলেজ নির্মান করা হবে বলেও জানান তিনি। সম্প্রতি সরেজমিনে স্কুল ঘুরে ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্কুলে শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য ৩টি ডরমেটরি, একাডেমিক ভবন, একটি মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, লাইব্রেরি, প্রশাসনিক ভবন, ইন্টোর স্পোর্টস কমপ্লেক্স ও মসজিদ রয়েছে। এছাড়া স্টাফদের জন্য ৫টি স্টাফ হাউস রয়েছে। স্কুল ক্যাম্পসের ভেতরেই রয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন লেক ও খেলার মাঠ।এই প্রজেক্টের কো-অর্ডিনেটর দেলোয়ার হোসেন, ২০২১ সাল থেকে এই স্কুল নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৫ কোটি টাকা। তবে এখনও কিছু আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্র ক্রয় বাকি রয়েছে। ক্যাপ ফাউন্ডেশনের চিফ প্যাট্রন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সাঈদ মোহাম্মদ বাকীর বলেন, এটি একটি পাইলট প্রকল্প। এই উদ্যোগ সফল হলে এরকম আরও স্কুল করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১২ থেকে সিলেটে কাজ শুরু করে ক্যাপ ফাউন্ডেশন। মূলত দুর্যোগ, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানি নিয়ে কাজ করে এনজিও ব্যুরোর নিবন্ধনভূক্ত এ প্রতিষ্ঠানটি। পরিদর্শনে পর্তুগীজ রাজপরিবারের সদস্যরাগত ১৩ নভেম্বর ‘ক্যাপ ফাউন্ডেশন ভিলেজ দ্য গার্ডিয়ানস’ প্রকল্পটি পরিদর্শনে আসেন পর্তুগিজ রাজপরিবারের তিন সদস্য। প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দেখার পাশাপাশি তারা প্রকল্পের অভ্যন্তরে লেকের উদ্বোধন করেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির আঙ্গিনায় স্মৃতি স্মারক হিসেবে তিনটি বৃক্ষও রোপন করেন। পর্তুগিজ রাজ পরিবারের সদস্যরা হলেন- এইচআরএইচ দ্যুম ডুয়ার্থ পিই ডি ব্রাগানজা, এইচআরএইচ ইসাবেল ইনেস ডি কাস্ত্রো সি. ডি হেরেডিয়া ডি ব্রাগানজা এবং এইচআরএইচ আফোন্সো ডি সান্তা মারিয়া ডি ব্রাগানজা।
এসময় তারা এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এটি একটি চমতকার উদ্যোগ। আমরা এসেছি মানবিক সহায়তা ও শুভেচ্ছা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে।’ক্যাপ ফাউন্ডেশনের অনাথ ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কল্যাণে তারাও কাজ করবেন বলে জানান।ক্যাপ ফাউন্ডেশনের পক্ষে এসময় উপস্থিত ছিলেন- প্রতিষ্ঠানটির চিফ প্যাট্রন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সাঈদ মোহাম্মদ বাকীর, লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ব্যারিস্টার মইনুল ইসলাম এবং ফাউন্ডার ও সিইও আব্দুল নূর হুমায়ুন প্রমুখ।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
সিলেটের সদর উপজেলার একবারে শেষপ্রান্তে ছালিয়া গ্রাম। সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ মহাসড়ক লাগোয়া এই গ্রামের কাঁচা-ভাঙাচোরা আর সরু সড়ক মাড়িয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর চোখ আটকে যাবে চমতকার নির্মাণশৈলির কিছু ভবনে। ১৫০ শতক জায়গাজুড়ে লাল টিনের একতলা সারি সারি এসব ভবন নজর কাড়বে যে কারো। এই ভবনগুলোতে চালু হবে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। তবে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বলতেই যেখানে বিপুল খরচের ব্যাপার, এখানে তার ব্যতিক্রম। বৃটিশ কারিকুলামের এই স্কুলে পড়া যাবে বিনামূল্যে। সম্পূর্ণ আবাসিক এ স্কুলে থাকা খাওয়াও একদম ফ্রি। আর এখানে পড়ার সুযোগ পাবে এতিম শিশুরা। সমাজে যারা সুবিধাবঞ্চিত হিসেবে পরিচিত। অনাথ শিশুদের জন্য এই স্কুলটি নির্মাণ করছে সেচ্ছাসেবী সংস্থা ক্যাপ ফাউন্ডেশন। ‘ক্যাপ ফাউন্ডেশন ভিলেজ দ্য গার্ডিয়ানস’ নামের এই প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ক্যাপ ফাউন্ডেশনের ফাউন্ডার ও সিইও আব্দুল নূর হুমায়ুন জানান, ১০০ জন এতিম শিশু নিয়ে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে এই স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে বাছাইকৃত এতিম শিশুদের এনে এখানে ভর্তি করা হবে।তিনি জানান, এই স্কুলে ৩য় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সুযোগ থাকবে। পরে উচ্চ শিক্ষার জন্য এখানকার শিক্ষার্থীদের ক্যাপ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বৃত্তি দেওয়া হবে। কর্মসংস্থানেও সহায়তা করা হবে। এই স্কুলের পাশে ক্যাপ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে একটি ট্যাকনিকেল কলেজ নির্মান করা হবে বলেও জানান তিনি। সম্প্রতি সরেজমিনে স্কুল ঘুরে ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্কুলে শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য ৩টি ডরমেটরি, একাডেমিক ভবন, একটি মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, লাইব্রেরি, প্রশাসনিক ভবন, ইন্টোর স্পোর্টস কমপ্লেক্স ও মসজিদ রয়েছে। এছাড়া স্টাফদের জন্য ৫টি স্টাফ হাউস রয়েছে। স্কুল ক্যাম্পসের ভেতরেই রয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন লেক ও খেলার মাঠ।এই প্রজেক্টের কো-অর্ডিনেটর দেলোয়ার হোসেন, ২০২১ সাল থেকে এই স্কুল নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৫ কোটি টাকা। তবে এখনও কিছু আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্র ক্রয় বাকি রয়েছে। ক্যাপ ফাউন্ডেশনের চিফ প্যাট্রন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সাঈদ মোহাম্মদ বাকীর বলেন, এটি একটি পাইলট প্রকল্প। এই উদ্যোগ সফল হলে এরকম আরও স্কুল করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১২ থেকে সিলেটে কাজ শুরু করে ক্যাপ ফাউন্ডেশন। মূলত দুর্যোগ, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানি নিয়ে কাজ করে এনজিও ব্যুরোর নিবন্ধনভূক্ত এ প্রতিষ্ঠানটি। পরিদর্শনে পর্তুগীজ রাজপরিবারের সদস্যরাগত ১৩ নভেম্বর ‘ক্যাপ ফাউন্ডেশন ভিলেজ দ্য গার্ডিয়ানস’ প্রকল্পটি পরিদর্শনে আসেন পর্তুগিজ রাজপরিবারের তিন সদস্য। প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দেখার পাশাপাশি তারা প্রকল্পের অভ্যন্তরে লেকের উদ্বোধন করেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির আঙ্গিনায় স্মৃতি স্মারক হিসেবে তিনটি বৃক্ষও রোপন করেন। পর্তুগিজ রাজ পরিবারের সদস্যরা হলেন- এইচআরএইচ দ্যুম ডুয়ার্থ পিই ডি ব্রাগানজা, এইচআরএইচ ইসাবেল ইনেস ডি কাস্ত্রো সি. ডি হেরেডিয়া ডি ব্রাগানজা এবং এইচআরএইচ আফোন্সো ডি সান্তা মারিয়া ডি ব্রাগানজা।
এসময় তারা এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এটি একটি চমতকার উদ্যোগ। আমরা এসেছি মানবিক সহায়তা ও শুভেচ্ছা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে।’ক্যাপ ফাউন্ডেশনের অনাথ ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কল্যাণে তারাও কাজ করবেন বলে জানান।ক্যাপ ফাউন্ডেশনের পক্ষে এসময় উপস্থিত ছিলেন- প্রতিষ্ঠানটির চিফ প্যাট্রন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সাঈদ মোহাম্মদ বাকীর, লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ব্যারিস্টার মইনুল ইসলাম এবং ফাউন্ডার ও সিইও আব্দুল নূর হুমায়ুন প্রমুখ।