সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ইমামপুর ও বাউশিয়া ইউনিয়নে ফসলি কৃষি জমিসহ নালা খাল ভরাটের চিত্র ভয়াবহ। ফসলি জমিতে বালু ভরাটের কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছেন ড্রেজার সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
সরেজমিন দেখা যায়, রসুলপুর, করিম খাঁ, হোগলাকান্দি, পুরান বাউশিয়া, মধ্যে বাউশিয়া, ফরাজি কান্দি, বক্তার কান্দিসহ এর আশপাশে গ্রাম ও নদী খাল সংলগ্ন কৃষি ও ফসলি জমিতে বালু ভরাটের কর্মযজ্ঞ চলছে।
ভুক্তভোগী স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি শক্তিশালী ড্রেজার সিন্ডিকেটের সদস্য ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এসব কাজ পরিচালনা করছেন। বালু ভরাটের কারনে ক্রমেই ফসলি জমি, খাল, ডোবা, নালা ও জলাশয় বিলুপ্তির পথে।
দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা মুক্তার হোসেন, করিম খাঁ গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম দাবি করেন জমির পাশে ভরাট কাজ করতে গিয়ে ড্রেজারের পাইপের চাপে পাশের জমিতে বালু পড়ে উর্বা শক্তি বিনাশ হয়ে যাচ্ছে। ফলে কোনো ফসল ফলাতে পারছি না।
বালু ভরাট কাজে ব্যবহৃত ছিদ্র যুক্ত পাইপের মাধ্যমে ফসলি জমির ওপর দিয়েই ড্রেজারের পাইপ বসানোর কারনে জমি চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
ভুক্তভোগীদের দাবি, অনিয়ন্ত্রিত বালু ভরাটে জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, পানির উৎস দূষিত হচ্ছে এবং পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছ।
প্রশাসনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে এ পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। তাদের মতে, কৃষি ও পরিবেশ উভয়ই হুমকির মুখে পড়েছে। কৃষিজমি ভরাট বন্ধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি জরুরি বলে মনে করছেন ক্ষতিগ্রস্থ ভুমির মালিকেরা।
সমাজকর্মী শফিক ঢালী বলেন, এক দশক আগেও গজারিয়ায় কৃষিজমির পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। এখন আবাসিক ও বাণিজ্যিক স্থাপনার চাপ, নদীভাঙ্গন ও অপরিকল্পিত ভাবে ফসলি জমি ব্যবহারের কারণে কৃষিজমি দ্রুত কমে যাচ্ছে। এতে খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জও বাড়ছে।
এ প্রসঙ্গে গজারিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল আরাফাত বিন সিদ্দিক বলেন, সচেতনতার অভাব এবং নীতিমালা কার্যকর না থাকায় কিছু মানুষ আবাদি জমি ভরাট করছে। তবে সরকারি উদ্যোগে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চলছে। গজারিয়া উপজেলা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র মতে গত ১০ বছরে তিন ফসলি কৃষির পরিমান ৫শ হেক্টরের কাছাকাছি হ্রাস পেয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি গত এক দশকে গজারিয়ায় কৃষি জমির পরিমান হ্রাস পেয়েছে কয়েক হাজার হেক্টর।
গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন বা জমি ভরাট অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনোভাবেই কৃষিজমি নষ্ট হতে দেওয়া হবে না।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে অদূর ভবিষ্যতে গজারিয়ায় আবাদি জমি বলতে কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ইমামপুর ও বাউশিয়া ইউনিয়নে ফসলি কৃষি জমিসহ নালা খাল ভরাটের চিত্র ভয়াবহ। ফসলি জমিতে বালু ভরাটের কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছেন ড্রেজার সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
সরেজমিন দেখা যায়, রসুলপুর, করিম খাঁ, হোগলাকান্দি, পুরান বাউশিয়া, মধ্যে বাউশিয়া, ফরাজি কান্দি, বক্তার কান্দিসহ এর আশপাশে গ্রাম ও নদী খাল সংলগ্ন কৃষি ও ফসলি জমিতে বালু ভরাটের কর্মযজ্ঞ চলছে।
ভুক্তভোগী স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি শক্তিশালী ড্রেজার সিন্ডিকেটের সদস্য ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এসব কাজ পরিচালনা করছেন। বালু ভরাটের কারনে ক্রমেই ফসলি জমি, খাল, ডোবা, নালা ও জলাশয় বিলুপ্তির পথে।
দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা মুক্তার হোসেন, করিম খাঁ গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম দাবি করেন জমির পাশে ভরাট কাজ করতে গিয়ে ড্রেজারের পাইপের চাপে পাশের জমিতে বালু পড়ে উর্বা শক্তি বিনাশ হয়ে যাচ্ছে। ফলে কোনো ফসল ফলাতে পারছি না।
বালু ভরাট কাজে ব্যবহৃত ছিদ্র যুক্ত পাইপের মাধ্যমে ফসলি জমির ওপর দিয়েই ড্রেজারের পাইপ বসানোর কারনে জমি চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
ভুক্তভোগীদের দাবি, অনিয়ন্ত্রিত বালু ভরাটে জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, পানির উৎস দূষিত হচ্ছে এবং পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছ।
প্রশাসনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে এ পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। তাদের মতে, কৃষি ও পরিবেশ উভয়ই হুমকির মুখে পড়েছে। কৃষিজমি ভরাট বন্ধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি জরুরি বলে মনে করছেন ক্ষতিগ্রস্থ ভুমির মালিকেরা।
সমাজকর্মী শফিক ঢালী বলেন, এক দশক আগেও গজারিয়ায় কৃষিজমির পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। এখন আবাসিক ও বাণিজ্যিক স্থাপনার চাপ, নদীভাঙ্গন ও অপরিকল্পিত ভাবে ফসলি জমি ব্যবহারের কারণে কৃষিজমি দ্রুত কমে যাচ্ছে। এতে খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জও বাড়ছে।
এ প্রসঙ্গে গজারিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল আরাফাত বিন সিদ্দিক বলেন, সচেতনতার অভাব এবং নীতিমালা কার্যকর না থাকায় কিছু মানুষ আবাদি জমি ভরাট করছে। তবে সরকারি উদ্যোগে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চলছে। গজারিয়া উপজেলা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র মতে গত ১০ বছরে তিন ফসলি কৃষির পরিমান ৫শ হেক্টরের কাছাকাছি হ্রাস পেয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি গত এক দশকে গজারিয়ায় কৃষি জমির পরিমান হ্রাস পেয়েছে কয়েক হাজার হেক্টর।
গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন বা জমি ভরাট অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনোভাবেই কৃষিজমি নষ্ট হতে দেওয়া হবে না।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে অদূর ভবিষ্যতে গজারিয়ায় আবাদি জমি বলতে কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।