ঘিওর (মানিকগঞ্জ) : শীতের শুরুতেই কৃষকরা আলু চাষে ব্যস্ত -সংবাদ
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় শীতের শুরুতেই কৃষকরা আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত বছরের লোকসান পুষিয়ে নিতে নতুন আশার আলো নিয়ে সোনালী দিনের রঙ্গীন স্বপ্ন দেখছেন গ্রামাঞ্চলের সাধারন কৃষক। কঠোর পরিশ্রম করে তারা আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা কেউ জমিতে সার দিচ্ছেন, কেউ লাঙ্গল দিচ্ছেন, কেউ আগাছা দমন, কেউ বীজ বপন, কেউ নিড়াণি দিচ্ছেন, কেউবা কোল বেঁধে ক্যানেল দিচ্ছেন। কর্মহীন মানুষেরও মিলছে কাজ। নারী শ্রমিকরা প্রতি দিন তিন বেলা খেয়ে ৪৫০ টাকা এবং পুরুষ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা পাচ্ছে। ৭টি ইউনিয়নের কৃষকেরা রাত দিন কঠোর পরিশ্রম করছেন। এরই মধ্যে কৃষকরা লাল শাক, সিম, পুল কপি, বাঁধা কপি,শশাসহ বিভিন্ন সবজির চাষাবাদ শুরু করেছেন। আর তিন চার সপ্তাহ পরে এসব সবজি তারা বাজারজাত করবেন। সকাল বেলার হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে ক্ষেত পরিচর্চায় করে নতুন আশার আলো দেখছেন নবরুপে। দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ দেখে তাদের আনন্দের সিমা নেই।
ঘিওর, বড়টিয়া, সিংজুরী, বালিয়াখোড়া, বানিয়াজুরী, নালী ও পয়লাতে ডায়মন্ড,ভ্যানালা, গ্র্যানুলা, কারেজ, জামপ্লাস জাতের আলু বপন করেছে সাধারন কৃষক। আলুর ফলন ভালো হওয়ার জন্য কৃষি কর্মকর্তরা মাঠে মাঠে গিয়ে কৃষকদের সকল প্রকার পরামর্শ দিচ্ছেন। ঘিওর, পয়লা, সিংজুরী বালিয়াখোড়া নালী এলাকা এলাকার জমিতে কৃষকেরা আগাম জাতের আলুর বীজ রোপণ করছেন। কৃষকেরা বলেছেন, এবার আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকুলে থাকার দরুন সময়মতো আলু কেটে আলু রোপণ করতে পেরেছেন। মৌসুমের শুরুতেই আলু বাজারে তুলতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যাবে।
আলু চাষি জয়নাল বলেন, গত বছর আলু চাষ করে অনেক টাকা ক্ষতি হয়েছে। কাজেই এবার আগাম আলু চাষ করেছি। প্রতি বিঘাতে ১৫/১৬ হাজার টাকা খরচ হবে। ফলন ভালো হলে ৫০/৬০ হাজার টাকা বিক্রি হবে। তিনি আরো বলেন বাজার যদি ৬০/৭০ টাকা হয়। তাহলে অনেক টাকা বিক্রি। পয়লা ইউনিয়নের কৃষক মজিবর বলেন, আমি এবার ৪ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। আলুর জমিতে সারের জন্য ডিলারদের কাছে গেলে তারা বলেন সার নেই। আবার খোলা বাজারে গেলে বেশি দাম দিলে সার পাওয়া যায়। তার পরেও বেশি দাম দিয়ে সার কিনে জমিতে দিচ্ছি। কারন বীজ লাগানো হয়ে গেছে। সার না দিলে সব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।। বানিয়াজুরী ইউনিয়নের কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, আগে আলু চাষে করে ভালো রোজগার হয়েছে। কিন্তু গত বছরে আলুতে ব্যাপক লোকসানের হয়েছে। তার পরেও আবার আলু চাষ করেছি। গত বছরে লোকসান হবার পরে সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হয়েছে। এবার আগাম আলু লাগিয়েছি। ভালো দাম পেলে আবার অলু চাষে কৃষকেরা এগিয়ে আসবে।
আলু চাষি ফজর আলী বলেন, গত বছর আলু চাষ করে অনেক টাকা লোকসান হয়েছে। কাজেই এবার আগাম আলু চাষ করেছি। বর্তমানে হাট বাজাওে নতুন আলুর দাম ভালো। হয়তো নতুন আলুর দাম পেয়ে গত বছরের লোকসানের বোঝাটা কমিয়ে ফেলতে পারবে চাষিরা। আগাম আলুর পাশাপাশি মাঝারি মৌসুমের চাষও চলছে একসঙ্গে। কৃষকরা যদি ন্যায্য দাম পায়, তাহলে অনেকেই স্বাবলম্বী হবে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরে আলু চাষ করে অনেক কৃষকদের লোকসান হয়েছে। এবার তাদের সকল প্রকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আলুর পাশাপাশি মুলা,বাঁধা কপি, ফুল কপি, করলা টমেটোসহ হরেক রকমের সবজি চাষ করেছেন। তা ছাড়া আলুর পাশাপাশি পুল কপি, বাঁধা কপি আবাদ করে ন্যায্য মূল্য থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছে। পয়লা, বানিয়াজুরী ও বালিয়াখোড়া ব্যাপক ভাবে শীত কালীন বসজির চারা তৈরি ও রোপণের কাজে কৃষাণ কৃষানিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৌসুমের শুরুতে শীতকালিন সবজি ঠিকমত আবাদ ও পরিচর্চা করে ঘরে তুলতে পারে। তাহলে কৃষকরা ভালো লাভবান হতে পারবে। খোজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছর পরিবেশ অনুকুলে থাকায় কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই খেত থেকে উঠবে শীতকালীন শাক-সবজী। বেশি লাভ ও বাম্পার ফলন হবে এমনটাই ধারনা সাধারন কৃষকদের। এ কারনে এলাকার অনেক কৃষক অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার অগ্রিম চাষাবাদ শুরু করেছেন।
মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (খামার বাড়ি) শাহজাহান সিরাজ বলেন, মানিকগঞ্জের সব উপজেলাতেই আগাম আলু রোপণ করা হয়েছে। ১৫/২০ দিনের মধ্যেই বাজারে আলু পাওয়া যাবে।
কৃষকরা যদি ন্যায্য দাম পেলে তারা লাভবান হবে। অন্যনন্য বছরের চেয়ে এবার মানিকগঞ্জের কৃষকরা আলু, কপিসহ সকল প্রকার সবজি চাষের ক্ষেত্রে ব্যাপক এগিয়ে রয়েছে। তবে আবহাওয়া ভাল থাকলে আলুর ফলন ভালো হবে। চলতি মৌসুমে জেলাতে ৪ হাজার ৯১৩ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার ৯৯ হেক্টর জমিতে আলু চাষ বেশি হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষ করা হয়েছে। অফিসের সকল কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষদের দিক নিদ্দের্শনা ও বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। আশা করি এবার ্আলুর ফলন ভালো হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ঘিওর (মানিকগঞ্জ) : শীতের শুরুতেই কৃষকরা আলু চাষে ব্যস্ত -সংবাদ
বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় শীতের শুরুতেই কৃষকরা আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত বছরের লোকসান পুষিয়ে নিতে নতুন আশার আলো নিয়ে সোনালী দিনের রঙ্গীন স্বপ্ন দেখছেন গ্রামাঞ্চলের সাধারন কৃষক। কঠোর পরিশ্রম করে তারা আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা কেউ জমিতে সার দিচ্ছেন, কেউ লাঙ্গল দিচ্ছেন, কেউ আগাছা দমন, কেউ বীজ বপন, কেউ নিড়াণি দিচ্ছেন, কেউবা কোল বেঁধে ক্যানেল দিচ্ছেন। কর্মহীন মানুষেরও মিলছে কাজ। নারী শ্রমিকরা প্রতি দিন তিন বেলা খেয়ে ৪৫০ টাকা এবং পুরুষ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা পাচ্ছে। ৭টি ইউনিয়নের কৃষকেরা রাত দিন কঠোর পরিশ্রম করছেন। এরই মধ্যে কৃষকরা লাল শাক, সিম, পুল কপি, বাঁধা কপি,শশাসহ বিভিন্ন সবজির চাষাবাদ শুরু করেছেন। আর তিন চার সপ্তাহ পরে এসব সবজি তারা বাজারজাত করবেন। সকাল বেলার হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে ক্ষেত পরিচর্চায় করে নতুন আশার আলো দেখছেন নবরুপে। দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ দেখে তাদের আনন্দের সিমা নেই।
ঘিওর, বড়টিয়া, সিংজুরী, বালিয়াখোড়া, বানিয়াজুরী, নালী ও পয়লাতে ডায়মন্ড,ভ্যানালা, গ্র্যানুলা, কারেজ, জামপ্লাস জাতের আলু বপন করেছে সাধারন কৃষক। আলুর ফলন ভালো হওয়ার জন্য কৃষি কর্মকর্তরা মাঠে মাঠে গিয়ে কৃষকদের সকল প্রকার পরামর্শ দিচ্ছেন। ঘিওর, পয়লা, সিংজুরী বালিয়াখোড়া নালী এলাকা এলাকার জমিতে কৃষকেরা আগাম জাতের আলুর বীজ রোপণ করছেন। কৃষকেরা বলেছেন, এবার আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকুলে থাকার দরুন সময়মতো আলু কেটে আলু রোপণ করতে পেরেছেন। মৌসুমের শুরুতেই আলু বাজারে তুলতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যাবে।
আলু চাষি জয়নাল বলেন, গত বছর আলু চাষ করে অনেক টাকা ক্ষতি হয়েছে। কাজেই এবার আগাম আলু চাষ করেছি। প্রতি বিঘাতে ১৫/১৬ হাজার টাকা খরচ হবে। ফলন ভালো হলে ৫০/৬০ হাজার টাকা বিক্রি হবে। তিনি আরো বলেন বাজার যদি ৬০/৭০ টাকা হয়। তাহলে অনেক টাকা বিক্রি। পয়লা ইউনিয়নের কৃষক মজিবর বলেন, আমি এবার ৪ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। আলুর জমিতে সারের জন্য ডিলারদের কাছে গেলে তারা বলেন সার নেই। আবার খোলা বাজারে গেলে বেশি দাম দিলে সার পাওয়া যায়। তার পরেও বেশি দাম দিয়ে সার কিনে জমিতে দিচ্ছি। কারন বীজ লাগানো হয়ে গেছে। সার না দিলে সব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।। বানিয়াজুরী ইউনিয়নের কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, আগে আলু চাষে করে ভালো রোজগার হয়েছে। কিন্তু গত বছরে আলুতে ব্যাপক লোকসানের হয়েছে। তার পরেও আবার আলু চাষ করেছি। গত বছরে লোকসান হবার পরে সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হয়েছে। এবার আগাম আলু লাগিয়েছি। ভালো দাম পেলে আবার অলু চাষে কৃষকেরা এগিয়ে আসবে।
আলু চাষি ফজর আলী বলেন, গত বছর আলু চাষ করে অনেক টাকা লোকসান হয়েছে। কাজেই এবার আগাম আলু চাষ করেছি। বর্তমানে হাট বাজাওে নতুন আলুর দাম ভালো। হয়তো নতুন আলুর দাম পেয়ে গত বছরের লোকসানের বোঝাটা কমিয়ে ফেলতে পারবে চাষিরা। আগাম আলুর পাশাপাশি মাঝারি মৌসুমের চাষও চলছে একসঙ্গে। কৃষকরা যদি ন্যায্য দাম পায়, তাহলে অনেকেই স্বাবলম্বী হবে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরে আলু চাষ করে অনেক কৃষকদের লোকসান হয়েছে। এবার তাদের সকল প্রকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আলুর পাশাপাশি মুলা,বাঁধা কপি, ফুল কপি, করলা টমেটোসহ হরেক রকমের সবজি চাষ করেছেন। তা ছাড়া আলুর পাশাপাশি পুল কপি, বাঁধা কপি আবাদ করে ন্যায্য মূল্য থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছে। পয়লা, বানিয়াজুরী ও বালিয়াখোড়া ব্যাপক ভাবে শীত কালীন বসজির চারা তৈরি ও রোপণের কাজে কৃষাণ কৃষানিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। মৌসুমের শুরুতে শীতকালিন সবজি ঠিকমত আবাদ ও পরিচর্চা করে ঘরে তুলতে পারে। তাহলে কৃষকরা ভালো লাভবান হতে পারবে। খোজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছর পরিবেশ অনুকুলে থাকায় কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই খেত থেকে উঠবে শীতকালীন শাক-সবজী। বেশি লাভ ও বাম্পার ফলন হবে এমনটাই ধারনা সাধারন কৃষকদের। এ কারনে এলাকার অনেক কৃষক অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার অগ্রিম চাষাবাদ শুরু করেছেন।
মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (খামার বাড়ি) শাহজাহান সিরাজ বলেন, মানিকগঞ্জের সব উপজেলাতেই আগাম আলু রোপণ করা হয়েছে। ১৫/২০ দিনের মধ্যেই বাজারে আলু পাওয়া যাবে।
কৃষকরা যদি ন্যায্য দাম পেলে তারা লাভবান হবে। অন্যনন্য বছরের চেয়ে এবার মানিকগঞ্জের কৃষকরা আলু, কপিসহ সকল প্রকার সবজি চাষের ক্ষেত্রে ব্যাপক এগিয়ে রয়েছে। তবে আবহাওয়া ভাল থাকলে আলুর ফলন ভালো হবে। চলতি মৌসুমে জেলাতে ৪ হাজার ৯১৩ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার ৯৯ হেক্টর জমিতে আলু চাষ বেশি হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষ করা হয়েছে। অফিসের সকল কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষদের দিক নিদ্দের্শনা ও বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। আশা করি এবার ্আলুর ফলন ভালো হবে।