বেতাগী (বরগুনা) : প্রাণপ্রবাহ বিষখালী নদীতে কাঙ্খিত ইলিশ মিলছে না -সংবাদ
বর্তমানে ইলিশের মৌসুম চলছে পুরোদমে। বরগুনার বেতাগী উপজেলার প্রাণপ্রবাহ বিষখালী নদীতে কাঙ্খিত ইলিশ মিলছে না। প্রতিদিনই শত শত জেলে নদীতে মাছ ধরতে গেলেও ফিরছেন হতাশ হয়ে। জালে উঠে আসছে ২-৪টি ছোট আকারের মাছ, কখনও কিছুই মিলছে না। এতে জেলেদের মাঝে হতাশা বাড়ছে, আর বাজারে ইলিশের দাম হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
বেতাগীর মোকামঘাট নামে পরিচিত, ঝোপখালী, পুটিয়াখালী, মোকামিয়া, বদনীখালী, কালিকাবাড়ি ও বিবিচিনি ইউনিয়নের ফুলতলা এলাকার বিভিন্ন জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নদীতে ইলিশ কমে যাওয়ায় আয়-রোজগার বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। দিনভর পরিশ্রম করেও ন্যূনতম খরচ তুলতে পারছেন না তারা। নদীতে এখন যে ইলিশ মিলছে, তা বেশিরভাগই ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজনের। বড় আকারের ইলিশ মিলছে না। দুয়েকটা কেজি ওজনের মাঝে মধ্যে পাওয়া গেলে দাম নাগালের বাহিরে।
ঝোপখালী গ্রামের জেলে মোশারেফ হোসেন বলেন, ‘একসময় এই নদী ছিল ইলিশে ভরপুর।
এখন সারা রাত জাল ফেলেও অনেক সময় একটা ইলিশও পাওয়া যায় না’ একই গ্রামের জলিল হাওলাদার নামে আরেক জেলে বলেন, জ্বালানি তেল, বরফ, খাবার—সব মিলে দিনপ্রতি ১৫০০ টাকার এত খরচ হয়, কিন্তু আয় হচ্ছে ৫০০ টাকারো কম। আবার কোনো কোনো দিন সমান সমান থাকা যাচ্ছে। এদিকে, বাজারে ইলিশের দাম দিন দিন চড়া হচ্ছে। বেতাগী পৌরসভার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকায়। আর এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের দাম উঠেছে ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা দরে। আবার বাজারে কম সংখ্যক ইলিশ থাকলে স্থানীয় খুচরা বিক্রেতারা এককেজি ওজনের ইলিশ ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। দাম বেশি হওয়ায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ ইলিশ কিনতে পারছেন না।
বেতাগী বাজারের মাছ ব্যবসায়ী সুনীল হাওলাদার বলেন, আমরা চাহিদা অনুযায়ী মাছ পাচ্ছি না। জেলেরা নদীতে যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু মাছ নিয়ে ফিরছে না। ফলে বাজারে সংকট বেড়েছে। এজন্য দাম চড়া।
বেতাগী পৌর শহরে মৎস্য ব্যবসায়ী কমল দাস ও জাকির হোসেনসহ একাধিক জেলে অভিযোগ করে বলেন, নদীতে বালুচর জমে নাব্যতা হারিয়েছে, এজন্য জেলেদের জালে পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ছে না।
এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. তুরান বলেন, ইলিশ চলাচলে বাধা সৃষ্টিকারী সব বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি। জেলেদের সচেতন করা হচ্ছে। ইলিশের নিষেধাজ্ঞার সময় ব্যাপক উপজেলা প্রশাসন ও গঠিত টাস্ক ফোর্স কমিটি মাঠ পর্যায়ে যথাযথভাবে কাজ করছে।
কেন বিষখালীতে পর্যাপ্ত ইলিশ মিলছে না, এমন প্রশ্নের উত্তরে মৎস্য কর্মকর্তা তুরান বলেন,’ এবিষয় গবেষণা চলছে, বিষখালী নদীর বিভিন্ন অংশে বালুচর জমে নাব্যতা হারিয়েছে। তীব্র খরা, শিল্পবর্জ্য, নদীর প্রবাহ কমে যাওয়া ও অবৈধ জালের ব্যবহার ইলিশের আবাসস্থল নষ্ট করছে। এসব কারণে প্রজননের সময় মাছ নদীতে আসতে পারছে না।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বেতাগী (বরগুনা) : প্রাণপ্রবাহ বিষখালী নদীতে কাঙ্খিত ইলিশ মিলছে না -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
বর্তমানে ইলিশের মৌসুম চলছে পুরোদমে। বরগুনার বেতাগী উপজেলার প্রাণপ্রবাহ বিষখালী নদীতে কাঙ্খিত ইলিশ মিলছে না। প্রতিদিনই শত শত জেলে নদীতে মাছ ধরতে গেলেও ফিরছেন হতাশ হয়ে। জালে উঠে আসছে ২-৪টি ছোট আকারের মাছ, কখনও কিছুই মিলছে না। এতে জেলেদের মাঝে হতাশা বাড়ছে, আর বাজারে ইলিশের দাম হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
বেতাগীর মোকামঘাট নামে পরিচিত, ঝোপখালী, পুটিয়াখালী, মোকামিয়া, বদনীখালী, কালিকাবাড়ি ও বিবিচিনি ইউনিয়নের ফুলতলা এলাকার বিভিন্ন জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নদীতে ইলিশ কমে যাওয়ায় আয়-রোজগার বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। দিনভর পরিশ্রম করেও ন্যূনতম খরচ তুলতে পারছেন না তারা। নদীতে এখন যে ইলিশ মিলছে, তা বেশিরভাগই ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ওজনের। বড় আকারের ইলিশ মিলছে না। দুয়েকটা কেজি ওজনের মাঝে মধ্যে পাওয়া গেলে দাম নাগালের বাহিরে।
ঝোপখালী গ্রামের জেলে মোশারেফ হোসেন বলেন, ‘একসময় এই নদী ছিল ইলিশে ভরপুর।
এখন সারা রাত জাল ফেলেও অনেক সময় একটা ইলিশও পাওয়া যায় না’ একই গ্রামের জলিল হাওলাদার নামে আরেক জেলে বলেন, জ্বালানি তেল, বরফ, খাবার—সব মিলে দিনপ্রতি ১৫০০ টাকার এত খরচ হয়, কিন্তু আয় হচ্ছে ৫০০ টাকারো কম। আবার কোনো কোনো দিন সমান সমান থাকা যাচ্ছে। এদিকে, বাজারে ইলিশের দাম দিন দিন চড়া হচ্ছে। বেতাগী পৌরসভার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকায়। আর এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের দাম উঠেছে ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা দরে। আবার বাজারে কম সংখ্যক ইলিশ থাকলে স্থানীয় খুচরা বিক্রেতারা এককেজি ওজনের ইলিশ ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। দাম বেশি হওয়ায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ ইলিশ কিনতে পারছেন না।
বেতাগী বাজারের মাছ ব্যবসায়ী সুনীল হাওলাদার বলেন, আমরা চাহিদা অনুযায়ী মাছ পাচ্ছি না। জেলেরা নদীতে যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু মাছ নিয়ে ফিরছে না। ফলে বাজারে সংকট বেড়েছে। এজন্য দাম চড়া।
বেতাগী পৌর শহরে মৎস্য ব্যবসায়ী কমল দাস ও জাকির হোসেনসহ একাধিক জেলে অভিযোগ করে বলেন, নদীতে বালুচর জমে নাব্যতা হারিয়েছে, এজন্য জেলেদের জালে পর্যাপ্ত ইলিশ ধরা পড়ছে না।
এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. তুরান বলেন, ইলিশ চলাচলে বাধা সৃষ্টিকারী সব বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি। জেলেদের সচেতন করা হচ্ছে। ইলিশের নিষেধাজ্ঞার সময় ব্যাপক উপজেলা প্রশাসন ও গঠিত টাস্ক ফোর্স কমিটি মাঠ পর্যায়ে যথাযথভাবে কাজ করছে।
কেন বিষখালীতে পর্যাপ্ত ইলিশ মিলছে না, এমন প্রশ্নের উত্তরে মৎস্য কর্মকর্তা তুরান বলেন,’ এবিষয় গবেষণা চলছে, বিষখালী নদীর বিভিন্ন অংশে বালুচর জমে নাব্যতা হারিয়েছে। তীব্র খরা, শিল্পবর্জ্য, নদীর প্রবাহ কমে যাওয়া ও অবৈধ জালের ব্যবহার ইলিশের আবাসস্থল নষ্ট করছে। এসব কারণে প্রজননের সময় মাছ নদীতে আসতে পারছে না।