চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসে পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়িত হয়েছে। এই সময়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার ৩৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ যা আগের পাঁচ অর্থবছরের একই সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন।
এ দিকে টাকা খরচের দিক থেকে এবারের এডিপি বেশ পিছিয়ে আছে। গতবারের একই সময়ের (জুলাই-মার্চ) চেয়ে এবার ২৪ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা কম খরচ হয়েছে। এবার জুলাই-মার্চ সময়ে ৮২ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। গতবার একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৭ হাজার ৬১২ কোটি টাকা।
গত বৃহস্পতিবার চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসের এডিপি বাস্তবায়নের হালনাগাদ চিত্র প্রকাশ করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলন; ক্ষমতার পটপরিবর্তন এবং ঠিকাদার ও প্রকল্প পরিচালকদের খুঁজে না পাওয়া- সবকিছুর প্রভাব পড়েছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে। চলতি অর্থবছরে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকার এডিপি নেওয়া হয়েছে। পরে এডিপি কাটছাঁট করে ২ লাখ ২৬ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা করা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে দুর্নীতি দমন কমিশনের দুটি প্রকল্পে ৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বরাদ্দ আছে। কিন্তু ৯ মাসে এক টাকাও খরচ হয়নি। দুনীতি দমন কমিশনের এডিপি বাস্তবায়নের হার শূন্য। এ ছাড়া এডিপিতে সব মিলিয়ে ১৩টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ আছে, যারা অর্থবছরের ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও তাদের বরাদ্দের ২৫ শতাংশও খরচ করতে পারেনি। দুর্নীতি দমন কমিশন ছাড়া অন্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলো স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ; প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়; স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ; জননিরাপত্তা বিভাগ; প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিভাগ; ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ; সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়; ভূমি মন্ত্রণালয়; নির্বাচন কমিশন সচিবালয়; পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়; অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ; বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার চলতি অর্থবছরে এডিপিতে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখে বাজেট পাস করেছিল। ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে সরকার পতনকে কেন্দ্র করে জুলাই-অগাস্ট জুড়ে জ্বালাও পোড়াওয়ের পর এডিপি বাস্তবায়নে ধস নামে।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দায়িত্বে আসা অন্তর্বর্তী সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে জোর দেয়। আগের সরকারের নেওয়া অনেক প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়া হয়। এতে চলমান অনেক প্রকল্পের কাজও স্থবির হয়ে যায়। এসব মিলিয়ে এডিপির বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় কমে যায় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য। সাধারণত অর্থবছরের প্রথমদিকে এডিপির ব্যয়ের পরিমাণ কম থাকে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এবার তা আরও কমে গেছে।
একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ী নীতির প্রভাবও পড়েছে এডিপি বাস্তবায়নে। সরকার কম ব্যয়ের দিকে ধাবিত হয়ে এটি কাটছাঁটও করেছে। সংশোধিত এডিপিতে টাকার অঙ্কে কমানো হয়েছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া চলতি অর্থবছরের ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এডিপি কমিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা করেছে। সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দসহ ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার এডিপি চূড়ান্ত হয়েছিল। কমানোর পর এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যয়ের বরাদ্দসহ আরএডিপির আকার দাঁড়ায় ২ লাখ ২৬ হাজার ১২৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা; অর্থ্যাৎ কমেছে ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশ বা ৫২ হাজার ১৬২ কোটি টাকা।
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মাসে পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়িত হয়েছে। এই সময়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার ৩৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ যা আগের পাঁচ অর্থবছরের একই সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন।
এ দিকে টাকা খরচের দিক থেকে এবারের এডিপি বেশ পিছিয়ে আছে। গতবারের একই সময়ের (জুলাই-মার্চ) চেয়ে এবার ২৪ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা কম খরচ হয়েছে। এবার জুলাই-মার্চ সময়ে ৮২ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। গতবার একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৭ হাজার ৬১২ কোটি টাকা।
গত বৃহস্পতিবার চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসের এডিপি বাস্তবায়নের হালনাগাদ চিত্র প্রকাশ করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলন; ক্ষমতার পটপরিবর্তন এবং ঠিকাদার ও প্রকল্প পরিচালকদের খুঁজে না পাওয়া- সবকিছুর প্রভাব পড়েছে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে। চলতি অর্থবছরে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকার এডিপি নেওয়া হয়েছে। পরে এডিপি কাটছাঁট করে ২ লাখ ২৬ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা করা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে দুর্নীতি দমন কমিশনের দুটি প্রকল্পে ৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বরাদ্দ আছে। কিন্তু ৯ মাসে এক টাকাও খরচ হয়নি। দুনীতি দমন কমিশনের এডিপি বাস্তবায়নের হার শূন্য। এ ছাড়া এডিপিতে সব মিলিয়ে ১৩টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ আছে, যারা অর্থবছরের ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও তাদের বরাদ্দের ২৫ শতাংশও খরচ করতে পারেনি। দুর্নীতি দমন কমিশন ছাড়া অন্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলো স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ; প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়; স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ; জননিরাপত্তা বিভাগ; প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিভাগ; ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ; সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়; ভূমি মন্ত্রণালয়; নির্বাচন কমিশন সচিবালয়; পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়; অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ; বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার চলতি অর্থবছরে এডিপিতে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখে বাজেট পাস করেছিল। ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে সরকার পতনকে কেন্দ্র করে জুলাই-অগাস্ট জুড়ে জ্বালাও পোড়াওয়ের পর এডিপি বাস্তবায়নে ধস নামে।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দায়িত্বে আসা অন্তর্বর্তী সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে জোর দেয়। আগের সরকারের নেওয়া অনেক প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়া হয়। এতে চলমান অনেক প্রকল্পের কাজও স্থবির হয়ে যায়। এসব মিলিয়ে এডিপির বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় কমে যায় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য। সাধারণত অর্থবছরের প্রথমদিকে এডিপির ব্যয়ের পরিমাণ কম থাকে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এবার তা আরও কমে গেছে।
একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ী নীতির প্রভাবও পড়েছে এডিপি বাস্তবায়নে। সরকার কম ব্যয়ের দিকে ধাবিত হয়ে এটি কাটছাঁটও করেছে। সংশোধিত এডিপিতে টাকার অঙ্কে কমানো হয়েছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া চলতি অর্থবছরের ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এডিপি কমিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা করেছে। সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দসহ ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার এডিপি চূড়ান্ত হয়েছিল। কমানোর পর এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যয়ের বরাদ্দসহ আরএডিপির আকার দাঁড়ায় ২ লাখ ২৬ হাজার ১২৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা; অর্থ্যাৎ কমেছে ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশ বা ৫২ হাজার ১৬২ কোটি টাকা।