ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
ইসলামী ব্যাংকে আলোচিত ব্যবসায়ী এস আলমের দেওয়া ‘অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত’ কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবিতে ঢাকাসহ সারা দেশে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার,(০৬ অক্টোবর ২০২৫) রাজধানীর দিলকুশায় ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারের সামনে ইসলামী ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারস ফোরাম মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। একই সময়ে দেশের প্রতিটি শাখার সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৭ সালে এস আলম রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ইসলামী ব্যাংক জবরদখল করেন এবং বৈধ মালিক ও বিদেশি শেয়ারহোল্ডারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিতাড়ন করেন। এরপর নিজের নিয়ন্ত্রণে ব্যাংকে পটিয়া ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের অদক্ষ ব্যক্তিদের কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই নিয়োগ দেন— যা ব্যাংকের সুনাম ও দক্ষ জনবল কাঠামোকে ধ্বংস করেছে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকে ৭ হাজার ২২৪ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যে ৪ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি শুধু পটিয়া উপজেলার। এভাবে ৬৩ জেলার যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে এক জেলার প্রার্থীদের গোপনে নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকের শৃঙ্খলা ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারস ফোরামের নেতারা বলেন, এসব অবৈধ নিয়োগের কারণে ব্যাংক প্রতিবছর প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় বহন করছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি এসব কর্মকর্তার যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর মাধ্যমে মূল্যায়ন পরীক্ষা আয়োজন করেছিল।
তবে আহ্বান জানানো ৫ হাজার ৩৮৫ জনের মধ্যে ৪ হাজার ৯৭১ জন পরীক্ষায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানান।
ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় তাদের ওএসডি (বিশেষ দায়িত্বে সংযুক্ত) করা হয়েছে এবং বিদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত প্রায় ৪০০ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
প্রধান কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন— মো. মোহতাছিম বিল্লাহ, হাফিজুর রহমান, ইমাম হোসাইন, মাহমুদুল হাসান, এটিএম সিরাজুল হক, ড. হারুনুর রশিদ, মো. মুস্তাফিজুর রহমান ও মো. রতন প্রমুখ।
এ সময় ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম, সচেতন ব্যবসায়ী ফোরাম, ইসলামী ব্যাংক প্রাক্তন ব্যাংকার পরিষদ, বৈষম্যবিরোধী চাকরিপ্রত্যাশী পরিষদ, সচেতন পেশাজীবী গ্রুপ, ইসলামী ব্যাংক সিবিএ ও সচেতন ব্যাংকার সমাজ মানববন্ধনে সংহতি জানায়।
বক্তারা বলেন, অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের অপসারণ মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং ৬৩ জেলার মানুষকে বঞ্চিত করে চট্টগ্রামের একাংশকে সুযোগ দেওয়াই মানবাধিকার লঙ্ঘন।
তারা অভিযোগ করেন, এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখলের পর পুরোনো কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছেন। একজন সাবেক ড্রাইভার নূরুল হক জানান, ‘আমাকে এইচআর কর্মকর্তারা পদত্যাগে বাধ্য করেছেন, না করলে সার্ভিস বেনিফিট পাবো না বলে হুমকি দেন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নির্বাহী বলেন, ‘ভুয়া বিনিয়োগের ফাইলে সই না করায় বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে মিডিয়ার সামনে অপরাধীর মতো উপস্থাপন করা হয়।’
বক্তারা আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত সব কর্মকর্তাকে অপসারণ না করলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দেন। তারা বলেন, “দেশের সৎ, যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীদের যাচাইয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দিতে হবে— তবেই ইসলামী ব্যাংককে মাফিয়াদের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব।”
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫
ইসলামী ব্যাংকে আলোচিত ব্যবসায়ী এস আলমের দেওয়া ‘অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত’ কর্মকর্তাদের অপসারণের দাবিতে ঢাকাসহ সারা দেশে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার,(০৬ অক্টোবর ২০২৫) রাজধানীর দিলকুশায় ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারের সামনে ইসলামী ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারস ফোরাম মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। একই সময়ে দেশের প্রতিটি শাখার সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৭ সালে এস আলম রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ইসলামী ব্যাংক জবরদখল করেন এবং বৈধ মালিক ও বিদেশি শেয়ারহোল্ডারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিতাড়ন করেন। এরপর নিজের নিয়ন্ত্রণে ব্যাংকে পটিয়া ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের অদক্ষ ব্যক্তিদের কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই নিয়োগ দেন— যা ব্যাংকের সুনাম ও দক্ষ জনবল কাঠামোকে ধ্বংস করেছে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকে ৭ হাজার ২২৪ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যে ৪ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি শুধু পটিয়া উপজেলার। এভাবে ৬৩ জেলার যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে এক জেলার প্রার্থীদের গোপনে নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকের শৃঙ্খলা ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারস ফোরামের নেতারা বলেন, এসব অবৈধ নিয়োগের কারণে ব্যাংক প্রতিবছর প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় বহন করছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি এসব কর্মকর্তার যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর মাধ্যমে মূল্যায়ন পরীক্ষা আয়োজন করেছিল।
তবে আহ্বান জানানো ৫ হাজার ৩৮৫ জনের মধ্যে ৪ হাজার ৯৭১ জন পরীক্ষায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানান।
ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় তাদের ওএসডি (বিশেষ দায়িত্বে সংযুক্ত) করা হয়েছে এবং বিদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত প্রায় ৪০০ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
প্রধান কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন— মো. মোহতাছিম বিল্লাহ, হাফিজুর রহমান, ইমাম হোসাইন, মাহমুদুল হাসান, এটিএম সিরাজুল হক, ড. হারুনুর রশিদ, মো. মুস্তাফিজুর রহমান ও মো. রতন প্রমুখ।
এ সময় ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম, সচেতন ব্যবসায়ী ফোরাম, ইসলামী ব্যাংক প্রাক্তন ব্যাংকার পরিষদ, বৈষম্যবিরোধী চাকরিপ্রত্যাশী পরিষদ, সচেতন পেশাজীবী গ্রুপ, ইসলামী ব্যাংক সিবিএ ও সচেতন ব্যাংকার সমাজ মানববন্ধনে সংহতি জানায়।
বক্তারা বলেন, অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের অপসারণ মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং ৬৩ জেলার মানুষকে বঞ্চিত করে চট্টগ্রামের একাংশকে সুযোগ দেওয়াই মানবাধিকার লঙ্ঘন।
তারা অভিযোগ করেন, এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখলের পর পুরোনো কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছেন। একজন সাবেক ড্রাইভার নূরুল হক জানান, ‘আমাকে এইচআর কর্মকর্তারা পদত্যাগে বাধ্য করেছেন, না করলে সার্ভিস বেনিফিট পাবো না বলে হুমকি দেন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নির্বাহী বলেন, ‘ভুয়া বিনিয়োগের ফাইলে সই না করায় বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে মিডিয়ার সামনে অপরাধীর মতো উপস্থাপন করা হয়।’
বক্তারা আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত সব কর্মকর্তাকে অপসারণ না করলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দেন। তারা বলেন, “দেশের সৎ, যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীদের যাচাইয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দিতে হবে— তবেই ইসলামী ব্যাংককে মাফিয়াদের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব।”