২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক বাণিজ্য পূর্বাভাস বাড়িয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। কৃষ্ণ সাগরীয় খাদ্যশস্য রপ্তানিসংক্রান্ত চুক্তি সম্প্রসারণ বাণিজ্য বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে। এছাড়া প্রধান প্রধান কয়েকটি দেশে সম্প্রতি উৎপাদন বৃদ্ধির পূর্বাভাসও বাণিজ্য প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা জাগিয়েছে। ওয়ার্ল্ড গ্রেইন।
এফএওর পূর্বাভাসে বলা হয়, ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক বাণিজ্য ৪৭ কোটি ২০ লাখ টনে পৌঁছতে পারে। আগের পূর্বাভাসের তুলনায় বাণিজ্য বাড়তে পারে ২৭ লাখ টন। তবে গত মৌসুমের তুলনায় বাণিজ্য ১ দশমিক ৯ শতাংশ বা ৯২ লাখ টন কমতে পারে। এর প্রধান কারণ বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা, সরবরাহ চেইনে প্রলম্বিত জটিলতা ও বৈরী আবহাওয়া।
বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া হামলা চালানোর পর থেকেই খাদ্যশস্য রফতানি নিয়ে বিপাকে পড়ে ইউক্রেন। ছয় মাস ধরে অবরুদ্ধ থাকায় কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দর দিয়ে রপ্তানি তলানিতে নেমে আসে। এ সময় দেশটি স্থল, রেল ও নদীপথ দিয়ে সামান্য পরিমাণে রপ্তানি অব্যাহত রেখেছিল। সংশ্লিষ্টরা জানান, যুদ্ধের আগে ইউক্রেন প্রতি মাসে গড়ে ৬০ লাখ টন খাদ্যশস্য রপ্তানি করত। কিন্তু যুদ্ধের পর তা ১০ লাখ টনে নেমে আসে।
এতে বিশ্বজুড়ে খাদ্যনিরাপত্তা চরম ঝুঁকির মুখে পড়ে। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে উদ্যোগ নেয় জাতিসংঘ ও তুরস্ক। তাদের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে গত জুলাইয়ের শেষেরদিকে একটি চুক্তি হয়। এরপর ইউক্রেন আবারো কৃষ্ণ সাগর দিয়ে শস্য রপ্তানি শুরু করে। দ্রুতই রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি আসে। কিন্তু এখনও তা যুদ্ধপূর্ব অবস্থায় ফিরে যেতে পারেনি। গত মাসে চুক্তিটি সম্প্রসারণ নিয়ে ব্যাপক অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। রাশিয়া চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণাও দেয়। কিন্তু মাসের শেষদিকে রাশিয়া ফের চুক্তিতে যোগ দিয়েছে এবং চুক্তিটি চার মাসের জন্য সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
এদিকে বাণিজ্য বাড়ার ফলে মৌসুম শেষের মজুদ কমার আশঙ্কা রয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, গত মৌসুমের তুলনায় মজুদ ২ দশমিক ২ শতাংশ বা ১ কোটি ৮৫ লাখ টন কমতে পারে, যা তিন বছরের সর্বনিম্ন। এছাড়া আগের পূর্বাভাসের তুলনায় মজুদ কমতে পারে ১১ লাখ টন।
চাহিদা ও সরবরাহবিষয়ক এ প্রতিবেদনে এফএও জানায়, এ মৌসুমে খাদ্যশস্যের মজুদ ও ব্যবহারের অনুপাত কমে ২৯ দশমিক ৩ শতাংশে নামতে পারে, যা ২০১৩-১৪ মৌসুমের পর সর্বনিম্ন। ২০২১-২২ মৌসুমে অনুপাত ছিল ৩০ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে মজুদ ও ব্যবহারের অনুপাত কমলেও সরবরাহ পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে থাকবে বলে জানিয়েছে এফএও।
চলতি মৌসুম খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক উৎপাদন কমারও পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি। এতে বলা হয়, ২০২২ সালে উৎপাদন ৭২ লাখ টন করে কমতে পারে। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৭৫ কোটি ৬০ লাখ টনে, যা গত বছরের তুলনায় ২ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে খাদ্যশস্যের ব্যবহার ২৭৭ কোটি ৭০ লাখ টনে পৌঁছবে বলে জানিয়েছে এফএও। গত মৌসুমের তুলনায় প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে ব্যবহার। সংস্থাটি বলছে, ২০২১-২২ সালের তুলনায় ব্যবহার মাত্র দশমিক ৭ শতাংশ বা ২ কোটি ১০ লাখ টন কমতে পারে।
এদিকে এফএওতে খাদ্যশস্যের মূল্যসূচক এক মাসের ব্যবধানে ১ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। যদিও এটি গত বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। গত মাসে বিশ্ববাজারে গমের দাম আগের মাসের তুলনায় ২ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ভুট্টার দাম ১ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। কৃষ্ণসাগরীয় খাদ্যশস্য রপ্তানি চুক্তি সম্প্রসারণই দাম কমিয়েছে। তবে চালের দাম আগের মাসের তুলনায় ২ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে।
শুক্রবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২২
২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক বাণিজ্য পূর্বাভাস বাড়িয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। কৃষ্ণ সাগরীয় খাদ্যশস্য রপ্তানিসংক্রান্ত চুক্তি সম্প্রসারণ বাণিজ্য বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে। এছাড়া প্রধান প্রধান কয়েকটি দেশে সম্প্রতি উৎপাদন বৃদ্ধির পূর্বাভাসও বাণিজ্য প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা জাগিয়েছে। ওয়ার্ল্ড গ্রেইন।
এফএওর পূর্বাভাসে বলা হয়, ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক বাণিজ্য ৪৭ কোটি ২০ লাখ টনে পৌঁছতে পারে। আগের পূর্বাভাসের তুলনায় বাণিজ্য বাড়তে পারে ২৭ লাখ টন। তবে গত মৌসুমের তুলনায় বাণিজ্য ১ দশমিক ৯ শতাংশ বা ৯২ লাখ টন কমতে পারে। এর প্রধান কারণ বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা, সরবরাহ চেইনে প্রলম্বিত জটিলতা ও বৈরী আবহাওয়া।
বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া হামলা চালানোর পর থেকেই খাদ্যশস্য রফতানি নিয়ে বিপাকে পড়ে ইউক্রেন। ছয় মাস ধরে অবরুদ্ধ থাকায় কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দর দিয়ে রপ্তানি তলানিতে নেমে আসে। এ সময় দেশটি স্থল, রেল ও নদীপথ দিয়ে সামান্য পরিমাণে রপ্তানি অব্যাহত রেখেছিল। সংশ্লিষ্টরা জানান, যুদ্ধের আগে ইউক্রেন প্রতি মাসে গড়ে ৬০ লাখ টন খাদ্যশস্য রপ্তানি করত। কিন্তু যুদ্ধের পর তা ১০ লাখ টনে নেমে আসে।
এতে বিশ্বজুড়ে খাদ্যনিরাপত্তা চরম ঝুঁকির মুখে পড়ে। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে উদ্যোগ নেয় জাতিসংঘ ও তুরস্ক। তাদের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে গত জুলাইয়ের শেষেরদিকে একটি চুক্তি হয়। এরপর ইউক্রেন আবারো কৃষ্ণ সাগর দিয়ে শস্য রপ্তানি শুরু করে। দ্রুতই রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি আসে। কিন্তু এখনও তা যুদ্ধপূর্ব অবস্থায় ফিরে যেতে পারেনি। গত মাসে চুক্তিটি সম্প্রসারণ নিয়ে ব্যাপক অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। রাশিয়া চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণাও দেয়। কিন্তু মাসের শেষদিকে রাশিয়া ফের চুক্তিতে যোগ দিয়েছে এবং চুক্তিটি চার মাসের জন্য সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
এদিকে বাণিজ্য বাড়ার ফলে মৌসুম শেষের মজুদ কমার আশঙ্কা রয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, গত মৌসুমের তুলনায় মজুদ ২ দশমিক ২ শতাংশ বা ১ কোটি ৮৫ লাখ টন কমতে পারে, যা তিন বছরের সর্বনিম্ন। এছাড়া আগের পূর্বাভাসের তুলনায় মজুদ কমতে পারে ১১ লাখ টন।
চাহিদা ও সরবরাহবিষয়ক এ প্রতিবেদনে এফএও জানায়, এ মৌসুমে খাদ্যশস্যের মজুদ ও ব্যবহারের অনুপাত কমে ২৯ দশমিক ৩ শতাংশে নামতে পারে, যা ২০১৩-১৪ মৌসুমের পর সর্বনিম্ন। ২০২১-২২ মৌসুমে অনুপাত ছিল ৩০ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে মজুদ ও ব্যবহারের অনুপাত কমলেও সরবরাহ পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে থাকবে বলে জানিয়েছে এফএও।
চলতি মৌসুম খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক উৎপাদন কমারও পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি। এতে বলা হয়, ২০২২ সালে উৎপাদন ৭২ লাখ টন করে কমতে পারে। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৭৫ কোটি ৬০ লাখ টনে, যা গত বছরের তুলনায় ২ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে খাদ্যশস্যের ব্যবহার ২৭৭ কোটি ৭০ লাখ টনে পৌঁছবে বলে জানিয়েছে এফএও। গত মৌসুমের তুলনায় প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে ব্যবহার। সংস্থাটি বলছে, ২০২১-২২ সালের তুলনায় ব্যবহার মাত্র দশমিক ৭ শতাংশ বা ২ কোটি ১০ লাখ টন কমতে পারে।
এদিকে এফএওতে খাদ্যশস্যের মূল্যসূচক এক মাসের ব্যবধানে ১ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। যদিও এটি গত বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। গত মাসে বিশ্ববাজারে গমের দাম আগের মাসের তুলনায় ২ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ভুট্টার দাম ১ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। কৃষ্ণসাগরীয় খাদ্যশস্য রপ্তানি চুক্তি সম্প্রসারণই দাম কমিয়েছে। তবে চালের দাম আগের মাসের তুলনায় ২ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে।